নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৩ আগস্ট ২০২২
গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টার সংলাপ শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকারের অধীন কোনো নির্বাচন নয়—সে ব্যাপারে তাঁরা একমত হয়েছেন। সেই সঙ্গে এ সরকারকে সরানোর জন্য লাগাতার আন্দোলন এবং নির্বাচন-পরবর্তী রাষ্ট্র মেরামতে ‘জাতীয় সরকার’ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও তাঁরা একমত হয়েছেন।
আজ বুধবার বেলা ১১টা থেকে পৌনে একটা পর্যন্ত রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংলাপ হয়।
সংলাপ শেষে গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘খুব ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে এবং আমরা অনেক ব্যাপারে দেখলাম একমত—এখনকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পর আমরা বুঝেছি যে আমরা একই পথে একই চিন্তায় আছি। এটা একটা খুশিকর খবর বিরোধী দলের জন্য, যারা বাংলাদেশের একটা পরিবর্তন চায়, তাদের জন্য।’
বুধবার (৩ আগস্ট) পল্টন গণঅধিকার পরিষদে কার্যালয়ে সংলাপ শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে আলোচনায় অত্যন্ত সন্তুষ্ট হয়েছি। তারা আমাদের সঙ্গে সবগুলো বিষয়ে একইমত ধারণ করেন। বিশেষ করে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়, সেই ব্যাপারে তারা একমত। আমরা একমত হয়েছি যে, এই সরকারকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যায় না। কারণ তারা অত্যন্ত সচেতনভাবে বাংলাদেশের অর্জিত সব অর্জনগুলো- গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা, কথা বলার স্বাধীনতা, সাম্য ও সামাজিক মূল্যবোধ, ন্যায় বিচারের অধিকার সব ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রভৃতি বিষয়ে গণঅধিকারের সঙ্গে ঐকমত্য হয়েছে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি জনগণের পার্লামেন্ট ও সরকার গঠন করতে হবে। যা সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে। তারপর আমরা রাষ্ট্র মেরামতের জন্য সবাইকে নিয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠন করব। এ বিষয়টি আলোচনা মধ্যে আছে।
গণঅধিকার পরিষদে আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, খুব ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে এবং অনেক ব্যাপারে একমত হয়েছি। বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পর বুঝেছি যে, আমরা একই পথে, একই চিন্তায় আছি। খুব বেশি ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই।
এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় আমরা সেটা মনে করি না। অনেক দলের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে, আরও হবে। একটা জাতীয় ঐক্য তৈরি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমাদের দুই দলের অবস্থান খুব কাছাকাছি এবং একসঙ্গে কাজ করব।
গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, দেশের চলমান সংকটে রাজনৈতিক দলগুলোর করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চলমান সংকটকে যেভাবে আমরা দেখি তাতে বিএনপির সঙ্গে আমাদের খুব একটা পার্থক্য নেই। আজকের আলোচনায় আমাদের দশটি বিষয় ছিল। সেই বিষয়গুলোতে আমরা একমত পোষণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারকে হটাতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিএনপির দাবির সঙ্গে আমরাও একমত। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা, সংসদ বিলুপ্ত করা, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত্যের ভিত্তিকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা এবং এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে বর্তমান নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং ইভিএম বাতিল করে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা।