‘এই সরকার জনগণের সরকার নয়, এই সরকার ভারত, চীন, রাশিয়ার সরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘এ কারণে আমরা এই সরকারকে মানতে বাধ্য নই।’আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কালো পতাকা মিছিল শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিল, গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তিসহ এক দফা দাবিতে দেশব্যাপী পালিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীতে এই মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) বিএনপি।গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আজকে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, এই দেশ আমাদের, এই দেশের সমস্যা আমাদের আর তার সমাধান আমরাই করব। হাসিনার সরকার ভারত, রাশিয়া, চীনের সরকার, বাংলাদেশের মানুষের সরকার না। এই সরকার আমরা মানতে বাধ্য নই।’ ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর এটাই বিএনপির বড় জমায়েত। এ সময় নবগঠিত দ্বাদশ সংসদ বাতিল করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন গয়েশ্বর। ঘোষণা অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিনে দেশের সব মহানগর, জেলা, উপজেলা, থানা, পৌরসভাসহ সব ইউনিটে কালো পতাকা মিছিল করবে বিএনপি। গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে চাই।’ মঙ্গলবার আবারও সারা দেশে কালো পতাকা মিছিলের ঘোষণা বিএনপিরমঙ্গলবার আবারও সারা দেশে কালো পতাকা মিছিলের ঘোষণা বিএনপিরসীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বিজিবি সদস্যের মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে সমাবেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কোনো প্রতিবাদ নাই কেন? কী কারণে, কোন অধিকারে তারা আমার দেশের সীমান্তরক্ষীকে গুলি করে? কথায় কথায় ধরে নিয়ে যায়? আমার দেশের সীমান্তরক্ষীরা খালি হাতে অথবা রাইফেল হাতে দাঁড়িয়ে থাকে।’ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আজকে আমরা সরকারের বিদায়ঘণ্টা বাজাতে রাজপথে নেমেছি। জনগণ ৭ জানুয়ারির নির্বাচন চায়নি বলেই ওই নির্বাচন বর্জন করেছে। ভোট বর্জনের মধ্য দিয়ে জনগণ এই সরকারকে নিপাত করেছে।’আবদুল মঈন খান বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ আমাদের চলতেই থাকবে। যত দিন পর্যন্ত না দেশের গণতন্ত্র ফিরে আসে।’ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদের সঞ্চালনায় মিছিল-পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ।বেলা দুইটায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে কালো পতাকা মিছিল উপলক্ষে হাজার হাজার নেতা-কর্মী সমবেত হয়। শনিবার ঢাকাসহ সব মহানগরে কালো পতাকা মিছিল হয়েছে। এর আগের দিন শুক্রবার জেলায় জেলায় কালো পতাকা মিছিল করেছে বিএনপি।সমাবেশের পর আনুষ্ঠানিকভাবে কালো পতাকা মিছিলের উদ্বোধন করেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বেলা সাড়ে তিনটায় মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি নাইটিঙ্গেল রেস্টুরেন্ট মোড় হয়ে ফকিরাপুল, আরামবাগ মোড় হয়ে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৭ জানুয়ারি ২০২৪
এক দফা দাবিতে আগামী ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি সারাদেশে কালো পতাকা মিছিলের ডাক দিয়েছে বিএনপি।রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ডাক দেন।তিনি বলেন, 'দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব নেতার মুক্তি, সব মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার এবং সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবিতে কালো পতাকা মিছিল করবে বিএনপি।'২৬ জানুয়ারি সব জেলা শহর এবং ২৭ জানুয়ারি মহানগরে কালো পতাকা মিছিল করা হবে বলে জানান তিনি।রিজভী অভিযোগ করে বলেন, 'ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে।'
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২১ জানুয়ারি ২০২৪
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে হস্তক্ষেপ চেয়ে জাতিসংঘে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।রোববার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে দলটির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জাগো নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।চিঠিতে বিএনপি জানিয়েছে, বর্তমান সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের দুটি বিতর্কিত নির্বাচনের পটভূমিতে আবারও আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে একটি প্রহসনমূলক ও সহিংস কারচুপির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তথাকথিত এই ‘ডামি নির্বাচন’ সামনে রেখে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যে নাশকতা চলছে, তাতে শুধু গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই নন, নিপীড়ন-নিষ্পেষণের শিকার হচ্ছেন খেটে খাওয়া প্রান্তিক মানুষও। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান-কাঠামোতে, বিশেষত বাস-ট্রেনে পরিকল্পিত হামলার মাধ্যমে জনগণের জানমাল ও নিরাপত্তা-স্বাধীনতা বিনষ্ট করছে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাংশ।সহিংসতার বিষয়টি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, চলমান অগ্নিসংযোগের প্রতিটি ঘটনায় একটি সুনির্দিষ্ট প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যার একমাত্র বেনিফিশিয়ারি আওয়ামী লীগ ও তার অধীনস্থ রাষ্ট্রযন্ত্র। আর প্রধান ভুক্তভোগী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। ক্ষমতাসীন শীর্ষ নেতৃত্ব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোনো তদন্ত, তথ্য বা সূত্র ছাড়াই প্রতিটি ঘটনার পরপর অবলীলায় ও একই সুরে অগ্নিসন্ত্রাসের দায় বিএনপির ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। নিজেদের সুপরিকল্পিত এই ধ্বংসযজ্ঞকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে অপব্যবহার করে তারা রাষ্ট্রীয় দমন-নিপীড়নকে উসকে দিচ্ছেন, যা শেখ হাসিনার প্রতিহিংসামূলক বক্তব্যে বারবার প্রমাণিত হয়েছে।গত ১৯ ডিসেম্বর ট্রেনে মর্মান্তিক ঘটনার উল্লেখ করে জাতিসংঘে পাঠানো এই চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকায় চলন্ত ট্রেনের তিনটি বগিতে অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং চারজন যাত্রী মারা যান। ঘটনার বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয় যে, রাষ্ট্রযন্ত্রের একটি চিহ্নিত অংশের যোগসাজশে এই নাশকতা সংঘটিত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের দুদিন আগেই ১৯ ডিসেম্বরের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বিশেষভাবে সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত শয্যা, জরুরি পরিষেবা, ডাক্তার এবং অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, এই নির্দেশনাটি কোনো কাকতালীয় বিষয় নয়। ডিএমপির এই প্রস্তুতিমূলক উদ্যোগ কেন নেওয়া হয়েছিল, নাশকতার সুস্পষ্ট তথ্য ও পরিকল্পনা তাদের কাছে কীভাবে এলো এবং তারপরও এটি রোধে কেন তারা কোনো ব্যবস্থা নিলেন না, জনমনে এসব প্রশ্ন রয়েছে।চিঠিতে বলা হয়, বিগত বছরগুলোতে বিএনপি যতবার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, আওয়ামী লীগও একই দিনে পরিকল্পিত নাশকতার উদ্দেশে কর্মসূচি আহ্বান করেছে। আমরা দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সর্বদা একটি অহিংস আন্দোলন বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছি এবং সব উসকানি এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছি। গত ২৮ অক্টোবর আমরা ঢাকায় একটি মহাসমাবেশের আয়োজন করেছিলাম, যেখানে সারাদেশ থেকে গণতন্ত্রকামী লাখ লাখ মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। নানা প্রতিকূলতা-প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আবারও প্রমাণ করেছিল, বিএনপির পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে এবং একটি সত্যিকারের নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের বিব্রতকর পরাজয় অনিবার্য। আর তাই আমাদের মহাসমাবেশকে বানচাল ও চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে সেদিন একটি ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে শেখ হাসিনার আজ্ঞাবহ পুলিশের চিহ্নিত অংশ।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩
গত ১৪ ডিসেম্বর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটকের পর নিখোঁজ বগুড়ার বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন হৃদয় ও দেলোয়ার হোসেনের হদিস জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।আগামী ৪ জানুয়ারির মধ্যে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) এই প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।একইসঙ্গে আনোয়ার হোসেন ওরফে হৃদয় ও দেলোয়ার হোসেনকে বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়নি, তা নিশ্চিতে তাদের আদালতে হাজির করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে রুল জারি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র্যাবের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ৩ সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।আজ বুধবার নিখোঁজ দুই নেতার সন্ধান জানতে পৃথক দুই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।এর আগে গতকাল মঙ্গলবার আনোয়ারের ভাগ্নে নুরুন্নবী ও দেলোয়ারের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন আইনজীবী কায়সার কামালের মাধ্যমে পৃথক দুটি রিট করেন।তারা জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন ও দেলোয়ার হোসেনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করলেও গতকাল পর্যন্ত তাদের কোনো আদালতে হাজির করা হয়নি।তারা এ ব্যাপারে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।আনোয়ার হোসেন বগুড়ার কাহালু উপজেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক এবং দেলোয়ার হোসেন উপজেলার বীরকেদার ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুকে আটকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। একই সঙ্গে দুদুর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানিয়েছেন তিনি।সোমবার (৬ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ জনগণ এখন একাত্তরের দুর্বিষহ দিনগুলোর চেয়েও চরম সংকটকাল অতিক্রম করছে। সেই সময় দেশের মানুষ যেমন হানাদার বাহিনীর ভয়ে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পালিয়ে বেড়াতো, স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী কাল পরও তেমনই এদেশের মানুষ এখন আওয়ামী স্বৈরশাসকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।তিনি বলেন, পুলিশ দিনরাত নেতাকর্মীদের ধরতে বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে। টার্গেট ব্যক্তিকে বাসায় না পেয়ে তাদের বাবা-ভাই কিংবা অন্য সদস্যদের অন্যায়ভাবে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে। আটক নেতাকর্মী কিংবা তাদের আত্মীয়-স্বজনকে থানায় নিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন করছে। বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে দেশে শুরু হয়েছে স্বৈরশাহীর মহাতাণ্ডব। তবে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার স্বপ্ন দুঃস্বপ্নই রয়ে যাবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর পতন ঘটাতে বিএনপি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৬ নভেম্বর ২০২৩
বর্তমান সরকার দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।তিনি বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম সরকার জনগণের দাবি মেনে নিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু তারা সেটা না করে জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। একদিকে খাদ্যের চরম মূল্যস্ফীতি, অন্যদিকে কাজের অভাব। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। তারা (সরকার) যতই ভয়ভীতি দেখাক, পদত্যাগ না করলে পালানোর পথ পাবে না।’রোববার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে আগামী শনিবার ঢাকায় মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এক যৌথসভা হয়।যৌথসভা শেষে সাংবাদিকদের বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে ফ্যাসিস্ট লুটেরা ও বেআইনি সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। তারা গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে, নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি রসাতলে নিয়ে গেছে। তারা আবারও একতরফা নির্বাচন করতে চায়। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় সাজা দেওয়া শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত এক হাজার ৩৬০ জনকে গ্রেফতার করেছে।’তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আইনজীবীদের ভবন উদ্বোধন করতে গিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা কোনো নির্বাহী প্রধান বলতে পারেন না। তিনি বিচারাধীন মামলা নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে প্রমাণিত হলো যে, আওয়ামী লীগ সরকার সরাসরি প্রভাব বিস্তার করে ফরমায়েশি রায় দিতে নির্দেশ দিচ্ছে। বিএনপি নেতাদের সাজা দেওয়ার চক্রান্ত কার্যকরী করছে।’বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার কেবল ক্ষমতায় থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করছে। এমনকি আদালতকেও ব্যবহার করছে। আমরা দেশের সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করছি। আমাদের দাবি একটাই, অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। কারণ এই সরকারের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এটা দেশে-বিদেশে সবাই বলছেন। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা একই কথা বলছেন। এটাই আমাদের মূল দাবি।’মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের মানুষ এখন এই সরকারকে দেখতে চায় না। তারা পরিবর্তন চায়। অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তা না হলে প্রতিদিন জনগণ রাজপথে আন্দোলন দানা বাঁধছে। তারা তাদের দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে আদায় করবে। আমাদের দ্বারা কিন্তু কোথাও অহিংস ঘটনা ঘটেনি। তবুও আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা হচ্ছে। এরই মধ্যে মাত্র চার দিনেই ৪৮টি মামলা দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা আমাদের হুমকি দিচ্ছেন। এটা চরম দুর্ভাগ্যজনক। আসলে তারাও বিরোধীদলকে নির্মূল করার জন্য ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে এক হয়েছে।’মহাসমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগামী ২৮ অক্টোবর আমাদের মহাসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। সারাদেশের নেতাকর্মীরা আমাদের মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন। পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলবো- কোথাও কিন্তু আপনারা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবেন না। এটা কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় হবে। ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে তাদের উদ্দেশ্য বোঝা যায়, তারা বিনা কারণে আমাদের অফিসে আক্রমণ করেছে। আমরা আবারও বলছি, ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। এজন্য নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা আমাদের থাকবে। আমরা কোনো নেতাকর্মীকে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেইনি।’মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি এই সরকার বর্তমান সংসদ অধিবেশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাস করে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারে। অন্যথায় দেশে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার জন্য এই সরকারকেই দায় বহন করতে হবে। কারণ তারা জানে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। সেজন্যই তো বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হচ্ছে। এই সরকারের সব পদক্ষেপ হচ্ছে দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২২ অক্টোবর ২০২৩
এক দফা দাবি আদায়ে রাজধানীকে কেন্দ্র করে চূড়ান্ত পরিকল্পনা নিচ্ছে বিএনপি। দেশব্যাপী সমাবেশ ও রোডমার্চ কর্মসূচি শেষে রাজধানী ঢাকা মহানগরীকে এবার আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে চায় দলটি। এ জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থাপনা ঘেরাও, গণ অবস্থান, হরতাল, অবরোধ এমনকি ‘অসহযোগ’-এর মতো কঠিন কর্মসূচি ঘোষণার কথাও চিন্তাভাবনায় রয়েছে। ঢাকা মহানগরী (উত্তর ও দক্ষিণ) বিএনপিসহ আশপাশ জেলাগুলোর সর্বস্তরের নেতা-কর্মীকে সর্বাত্মক প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আগে কঠোর কোনো কর্মসূচিতে যাবে না বিএনপি ও মিত্ররা।দলের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার কর্মসূচি সফল করতে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সব ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজও প্রায় শেষ। ১৮ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জনসভা থেকে ‘এক দফা দাবি’ মেনে নিতে সরকারকে আলটিমেটাম বেঁধে দেওয়ার কথা রয়েছে। নির্ধারিত ওই সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই শেষ ধাপের কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি।বিএনপির নেতারা মনে করছেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ মনোভাব থেকে সাধারণ মানুষের বড় অংশ বিরোধী দলের আন্দোলনকে সমর্থন করছে। এর সঙ্গে নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি এবং পশ্চিমা দেশগুলোর পদক্ষেপ বিএনপির জন্য সহায়ক হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে এবার ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো একতরফা নির্বাচন করা আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে বিএনপির এবার আন্দোলন পরিণতির দিকে যেতে পারে।কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘রোডমার্চ ও সমাবেশ অনেক করেছি। আর কোনো রোডমার্চ নেই। এখন থেকে সব ঢাকায় হবে। রাজধানীতেই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। দুর্গাপূজার আগে আমরা কোনো কঠোর কর্মসূচিতে না গেলেও এর মধ্যে সরকার পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে না দিলে জনগণই সেই ক্ষমতা দখল করবে।’দলটির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন, যেহেতু নভেম্বরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সময় বেশি নেই, ফলে তারা সংলাপ বা আলোচনার প্রশ্নে কোনো চিন্তা করছেন না। তাঁরা রাজপথে চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়কেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা বলেছেন, আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচন করে ফেললে ১৭ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি অস্তিত্বের সংকটে পরবে। এই পরিস্থিতির বিবেচনায় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই সরকারের অধীনে কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার অবস্থানে অটল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সে জন্য অক্টোবরের শেষেই ঢাকামুখী লংমার্চ বা অবরোধের মতো কর্মসূচি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা চলছে।বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এক দফার আন্দোলনে যাওয়ার আগেই সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো সংলাপে না বসার কথা বলেছিল।এখন সংলাপের আর কোনো সুযোগ নেই।’ এরপরও মার্কিন প্রাক্–নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল যেসব সুপারিশ করেছে, সেগুলো তারা দলের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে মির্জা ফখরুল জানান।বিএনপির নেতাদের কেউ কেউ আবার মনে করেন, সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করে সংঘাত এড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু কখনো সংলাপ হলেও তা অর্থবহ হবে না বলে তাঁদের ধারণা।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৬ অক্টোবর ২০২৩
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার তদন্ত ও বিচার পুরোটাই আওয়ামী লীগ সরকারের ‘সাজানো নাটক’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি অভিযোগ করে তিনি দাবি করেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের যাদের সাজা হয়েছে, তারা সবাই নির্দোষ। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাদের ফাঁসানো হয়েছে।গ্রেনেড হামলার ঘটনা নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে সুষ্ঠুভাবে তদন্তের দাবিও জানান তিনি। সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।এর আগে সেখানে দলটির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি নির্ধারণে যৌথ সভা হয়। মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে সভায় দলের সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব, যুগ্মমহাসচিব, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিও তুলে ধরা হয়।২১ আগস্টের ঘটনাকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যতম জঘন্য ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বারবার বলে এসেছি-একটা নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত হোক। কিন্তু নিরপেক্ষ তদন্ত করা হয়নি। ২১ আগস্টের ঘটনাকে আমরা নিন্দা করি। এটা নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যতম জঘন্য একটি ঘটনা ও নিন্দনীয়। শুধু রাজনৈতিক কারণে অযথা নেতাদের নাম দিয়ে রাজনৈতিক ফয়দা লোটা হচ্ছে। এটা কেউ সমর্থন করতে পারে না। তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, পুরো বিষয়টি একটি সাজানো নাটক। কারণ, যেখানে মিটিং (২০০৪ সালের ২১ আগস্ট) হওয়ার কথা ছিল, সেখানে মিটিং না হয়ে অন্য জায়গায় শিফট করা হয়েছিল। কিন্তু ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে অবহিত করা হয়নি।বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনবার এফআইআর হয়েছে। এফআইআরে একবারও তারেক রহমানের নাম ছিল না। এক ব্যক্তি, যিনি অবসর গ্রহণ করেছিলেন-কাহার আকন্দ, যিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন, তাকে পুনরায় চাকরি দিয়ে আইও করা হয়। সেই লোক তখন তারেক রহমানের নাম সেখানে দিলেন। তারেক রহমানের নাম পুরো তদন্তের কোথাও উচ্চারিত হয়নি।’১৪৫ দিন রিমান্ডে নেওয়ার পর মুফতি হান্নানকে দিয়ে তারেক রহমানের নাম উচ্চারণ করানো হলো। তবে পরে আবার অ্যাফিডেভিট (হলফনামা) দিয়ে তিনি তা অস্বীকারও করেছিলেন। কিন্তু তা আমলে নেওয়া হয়নি।তড়িঘড়ি করে অন্য একটি মামলায় তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে, তাকে আর আদালতে আসার সুযোগই দেওয়া হয়নি। এটাকে আমরা কী বলব? তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কোনো সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়াই তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাদের নাম এখানে জড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, আমার কাছে রেকর্ড আছে-সময় পেলে আপনাদের দেখাব।আমরা আবারও বলছি, তারেক রহমান, আবদুস সালাম পিন্টু এবং লুৎফুজ্জামান বাবর-কেউই এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাদের নাম এ মামলায় দেওয়া হয়েছে।মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার দেশে ভয়াবহ কিছু ঘটানোর পরিকল্পনা করছে। এ আশঙ্কার কথা বলা দরকার, জাতির জানা উচিত। সরকার দেশে ভয়াবহ কিছু ঘটানোর পরিকল্পনা করছে-যাতে নির্বাচনে বিরোধী দলকে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করা যায়। তারা আরেকটি নির্বাচন করতে চায়, যেমন অতীতে করেছে।রোববার ছাত্রদল নেতাদের গ্রেফতারের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, অস্ত্রসহ তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এগুলো (অস্ত্র) তাদের (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর) রেখে দেওয়া অস্ত্র। অর্থাৎ, তাদের উদ্দেশ্য হলো-এগুলো করবে, গোলযোগ সৃষ্টি করবে আর বিএনপির ওপর দোষ চাপাবে।মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এসেছে, ১ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে। মেগা প্রকল্প, রেল প্রকল্প, ফ্লাইওভার-এগুলো কার জন্য? জনগণের পকেট কেটে নিজেদের পকেট ভরার জন্য। ৮০ পারসেন্ট চুরি করে, ২০ পারসেন্টে কোনো রকমে কাজ করে।আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এখনো রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হইনি। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করি। তাদের নিয়েই আমরা আছি। আজ দেশের মানুষ নির্বাচন চায়। সেই বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এ ধরনের কথাবার্তা হচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে আমেরিকার কেউ স্বীকার করেননি।ভারতেরও কেউ স্বীকার করেননি।’ তিনি আরও বলেন, আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫২ বছরে আমরা সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছি। এ সরকার দেশের মানুষের আকাক্সক্ষা ধ্বংস করেছে। প্রশাসনসহ সবকিছু ধ্বংস করেছে। একটি কোম্পানি ১১ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। কারণ, তাদের নিজেদের লক্ষ্য সেটা।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২২ আগস্ট ২০২৩
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না বলে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। বলেন, ‘সূর্য যদি সত্য হয়, পৃথিবী যদি সত্য হয়, আমাদের দেশপ্রেম যদি সত্য হয় তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না।’ শনিবার (১২ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘দিনের অবস্থা খারাপ, দেশের অবস্থাও খারাপ। আপনারা একটা বিশ্বাস নিয়ে যেতে পারেন। এই বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে যে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচন এই সরকারের অধীনে হবে না।’তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ১৯৯৪-৯৬ সালে যে দাবি করেছিলেন, বেগম খালেদা জিয়ার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তখন সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক ছিল না। তখন যদি শেখ হাসিনার মাথায় তত্ত্বাবধায়কের ভূত না চাপতো তাহলে এখন আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করতাম না। সে সময় শেখ হাসিনা, জামায়াতে ইসলাম, জাতীয় পার্টি ও বাম দলগুলো মিলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করেছিল। তিনি (হাসিনা) বলেছিলেন, আমি আজীবন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বিশ্বাসী। আজ তিনি যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখতে চাচ্ছেন না, তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য বিএনপির বিরুদ্ধে যে আন্দোলন করেছিলেন তার জন্য জাতির কাছে তার ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ তত্ত্বাবধায়ক প্রশ্নে। আওয়ামী লীগ কি বলল, কি ভাবলো, কি করলো এই নিয়ে দেশবাসীর কোনো চিন্তা করে না।’তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়াকে অন্যায়ভাবে বন্দী করে রেখেছে। বিচারের নামে তার ওপর প্রহসন করা হয়েছে। তারেক রহমানকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিদেশে থাকতে বাধ্য করছে। তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান একটি সুনামধন্য পরিবারের সন্তান তিনি কোনো রাজনৈতির সঙ্গে জড়িত নয়। কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত না। তার নামেও মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তবে এসব করে লাভ হবে না। কারণ বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল জাতীয়তাবাদী দল।’ এ সময় নেতা কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার এবং বিএনপি যে কর্মসূচি দেবে তাতে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানন তিনি।দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ফরহাদুজ্জামান ফরহাদ, বিএনপির সহ তত্ত্ব বিষয়ক সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, কৃষকদলের সাবেক নেতা এস কে সাদি, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১২ আগস্ট ২০২৩
সরকার পতনের একদফা দাবিতে দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে ফের মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। এজন্য আরও সুসংগঠিত হয়ে আন্দোলন সফল করতে কেন্দ্র থেকে তৃনমূল-সব পর্যায়ে বার্তা দেওয়া হয়েছে। কর্মসূচি প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নে এবার সমন্বয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।নেতাকর্মী ও শরিকদের অন্ধকারে না রেখে সবার মত নিয়ে চূড়ান্ত করা হচ্ছে নতুন কর্মসূচি। আপাতত ঢাকায় টানা আন্দোলনের পরিবর্তে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের সমাবেশ, পদযাত্রাসহ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিতে চায়। সময় ও সুযোগবুঝে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমেই দাবি আদায়ের পরিকল্পনা দলটির।সম্প্রতি ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচি পালনে কী কী দুর্বলতা ছিল, তাও চিহ্নিত করেছে বিএনপি। সে অনুযায়ী আগামী দিনের কর্মসূচি সফলে করণীয় নিয়ে সিনিয়র নেতাদের পরামর্শ নিচ্ছেন দলটির হাইকমান্ড। নতুন কর্মসূচি প্রণয়নে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা দল ও জোট নেতাদের মতামত নেওয়া হচ্ছে। সবার মতামতের ভিত্তিতে একদফা দাবিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কর্মসূচি দেওয়া হবে। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকার আবারও একটি একতরফা নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে। কিন্তু এবার সেই সুযোগ পাবে না। গণ-আন্দোলনে সরকারকে বিদায় নিতেই হবে। কারণ ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষায় দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। সরকারের পদত্যাগে একদফা দাবিতে শিগগিরই ঘোষণা করা হবে নতুন কর্মসূচি। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমেই নিশ্চিত করা হবে এ সরকারের পতন।’শুক্রবার নয়াপল্টনের সমাবেশে সরকার হটানো আন্দোলনে মরণপণ যুদ্ধের সর্বাÍক প্রস্তুতি নেওয়ার ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকারকে আরেক ধাক্কা দিতে হবে। সামনে এর বিকল্প কোনো পথ নেই। আমাদের ফিরে যাওয়ার কোনো পথ নেই। জাতির অস্তিত্বের জন্য সরকার পতন আন্দোলনে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। জনগণের পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে-সেটাই হচ্ছে জনগণের একমাত্র চাওয়া।’সূত্র জানায়, দুদিন ধরে গুলশান কার্যালয়ে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। এসব বৈঠকে সমমনা দলের একাধিক নেতার আশঙ্কা-আন্দোলন দমাতে হামলা-মামলা ও দমন-পীড়নের মাত্রা আরও বাড়তে পারে। তখন পরিস্থিতি বিবেচনায় হঠাৎ করে কর্মসূচি পরিবর্তন করতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে পরিকল্পনায় একাধিক কর্মসূচি রাখা উচিত। যাতে পরিস্থিতি অনুযায়ী কর্মসূচিতে পরিবর্তন আনা যায়।সমমনা দলগুলোর একাধিক শীর্ষ নেতা জানান, বিএনপির দীর্ঘদিনের জোট শরিক ছিল জামায়াতে ইসলামী। যুগপৎ আন্দোলনে তাদেরও যুক্ত করার প্রয়োজনীতার কথা উঠেছে বিভিন্ন ফোরামের বৈঠকে। জামায়াতকে সঙ্গে নিতে বিএনপিতে পক্ষে-বিপক্ষে দুটি গ্র“প থাকলেও আন্দোলন ও ভোটের মাঠে তাদের গুরুত্ব অনুধাবনের কথা বিবেচনায় নেওয়ার প্রসঙ্গও ওঠে।সম্প্রতি বিএনপির দুজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে জামায়াতের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে কথাও হয়েছে। যে কারণেই অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা এবং দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে সাজার সমালোচনা করে জামায়াতে ইসলামী বিবৃতি দিয়েছে। জামায়াত এখন পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করলেও সামনে একপর্যায়ে যুগপৎ আন্দোলনেও থাকবে।বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, ঢাকার প্রবেশপথে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি তাদের সরকার পদত্যাগের চ‚ড়ান্ত কর্মসূচি ছিল না। ঢাকায় মহাসমাবেশ ও প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি জানান দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এর পাশাপাশি সরকারের ভ‚মিকাও প্রকাশ্যে আনা সম্ভব হয়েছে। তারা মুখে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললেও বাস্তবে তাদের পরিকল্পনা ভিন্ন। বিরোধী দলকে মাঠ ছাড়া করে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে আবার যেনতেন একটি নির্বাচন করাই সরকারের মূল লক্ষ্য-সেটাই উšে§াচিত হয়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতিতে সরকার বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তোয়াক্কা করছে না বলেও প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছে।তারা আরও জানান, অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দলের কিছু দুর্বলতাও চিহ্নিত করা গেছে। কেন্দ্রীয় নেতারা অনেকে দলীয় হাইকমান্ডকে কথা দিয়েছিল ওই কর্মসূচিতে থাকবেন। সে অনুযায়ী অনেককে প্রবেশপথের কর্মসূচিতে দায়িত্বও দেওয়া হয়। কিন্তু দেখা যায় বেশিরভাগ দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাই কর্মসূচিতে অংশই নেননি। এমনকি আশপাশের জেলার শীর্ষ নেতাদের সর্বোচ্চসংখ্যক নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে থাকার কথা থাকলেও সেভাবে যাননি।গাজীপুর জেলা ও মহানগরের উদাহরণ দিয়ে নেতারা জানান, উত্তরার বিএনএস ভবনের সামনে বৃহত্তর উত্তরাসহ পাশের গাজীপুর মহানগর ও জেলার নেতাকর্মীদেরই বেশি থাকার কথা ছিল। কিন্তু উত্তরার নেতাকর্মীদের দেখা গেলেও ওই দুই সাংগঠনিক জেলার একবারেই কমসংখ্যক নেতাকর্মীকে দেখা গেছে। আগের দিন মহাসমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ঢাকায় থাকলেও অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে সমন্বয় না থাকায় তাদের অর্ধেকও নামানো যায়নি।সূত্রমতে, অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে নেতাদের কার কী ভ‚মিকা ছিল তা ইতোমধ্যে দলের হাইকমান্ড বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়েছেন। সমস্যা চিহ্নিতও করা হয়েছে। তাই আগামী দিনের আন্দোলন কর্মসূচি সফলে সমন্বয়কে বেশি গুরুত্ব দিতে চায়। সেভাবেই কেন্দ্র থেকে তৃণমূল নেতাদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। চ‚ড়ান্ত আন্দোলনে সবাইকে মাঠে নামার জন্য যা যা করণীয় তা ঠিক করা হচ্ছে। সব প্রস্তুতি নিয়েই এবার মাঠে নামা হচ্ছে।জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যুগান্তরকে বলেন, সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবি আদায়ে দেশের জনগণ ফুঁসে উঠেছে। এ সরকারকে আর এক মুহূর্তও দেখতে চায় না জনগণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে হামলা চালিয়ে তা দমন করা যাবে না। রাজনীতি হচ্ছে কৌশলের খেলা। সেই খেলায় বিএনপি আপাতত এগিয়ে রয়েছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একদফা আন্দোলনে আমরাই জয়ী হব।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৫ আগস্ট ২০২৩
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কর্তৃপক্ষের বেআইনি আদেশে বা চাপে পড়ে যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এত দিন অন্যায়, অবৈধ ও বেআইনি কাজ করেছেন, তাঁরা এখন থেকে যদি আর এ ধরনের অন্যায়, অবৈধ ও বেআইনি কাজ না করেন, তাহলে তাঁদের আগের ভূমিকা “সহানুভূতি” ও “ইতিবাচক” দৃষ্টিতে বিবেচনা করা হবে।’মঙ্গলবার রাতে বিএনপির মহাসচিব এমন আশ্বাস দিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো একটি বিবৃতি দিয়েছেন।‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী শাসনামলে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতি, এমনকি জেল-জরিমানার মতো পরিস্থিতির শিকার হতে হবে’ বলে বিএনপির বিরুদ্ধে এ ধরনের একটি অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ব্যাপারেই প্রশাসনের কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল এই বিবৃতি দেন।বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনের অতি নগণ্যসংখ্যক দুর্নীতিপরায়ণ ও দলবাজ কর্মকর্তা অপপ্রচার চালাচ্ছেন যে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী শাসনামলে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতি, এমনকি জেল-জরিমানার মতো পরিস্থিতির শিকার হতে হবে। এতে বোঝা যায় যে অনির্বাচিত ও অবৈধ আওয়ামী সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যেসব ষড়যন্ত্র করছে, এমন অপপ্রচার সেই ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ।মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁর একাধিক বক্তব্যে এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। দলের পক্ষ থেকে আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই যে জনগণের সমর্থনে যদি বিএনপি দেশ পরিচালনার সুযোগ পায়, তাহলে প্রজাতন্ত্রের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরির সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দলীয় বিবেচনায় কিংবা আক্রোশমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না বা কাউকেই তা করতে দেওয়া হবে না। উপরন্তু বিগত ১৫ বছর যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত, বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান, দীর্ঘদিন ওএসডি রাখা এবং পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়েছে, তাঁদের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৬ জুলাই ২০২৩
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নিজেদের অস্তিত্ব পুনরুদ্ধারের মিশন হিসেবে নিয়েছে বিএনপি। বিগত দুটি নির্বাচন এক তরফা হওয়ার পর তৃণমুল নেতাকর্মীদের ধরে রাখতে এই নির্বাচনকেই টার্গেট করা হয়েছে। দলটির নেতারা বলছেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন আয়োজনে সরকার অনড় থাকলেও দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে তাদের নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধ্য করা হবে। তাদের ধারাবাহিক আন্দোলন সেদিকেই যাচ্ছে।বিএনপির জেষ্ঠ্য নেতারা বলছেন,আওয়ামী লীগের বিগত দেড় দশকের দুর্নীতি ও শোষণ-নির্যাতনে সারা দেশের মানুষ অতিষ্ঠ। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের দ্রব্যমূল্যের সিমাহীন উর্ধগতি মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচীতে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরছে। ফলে নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু হলেই বিএনপির মসনদ নিশ্চিত।দলীয় সূত্র বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সাম্প্রতিক কর্মসূচী নিয়ে এমনিতেই সরকারের মধ্যে অশ্বস্তি রয়েছে। সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইতোমধ্যে তারা যে ফর্মুলা দিয়েছে সেটি মূলত বিএনপিরই দাবি। এতোদিন বিএনপি এ বিষয়টি বলে আসলেও তাতে বিন্দুমাত্র কর্নপাত করেনি সরকার। তবে এবারের কূটনৈতিক চাপ তাদের জন্য উপেক্ষা করা সহজ হবে না।যদিও গতকাল দলীয় সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তারা সংবিধানের মধ্যে থেকেই নির্বাচন করবেন। এ ক্ষেত্রে বন্ধু রাষ্ট্রগুলো কে কি বললো সেটি আমলে নেওয়ার সুযোগ নেই। নির্বাচন অংশগ্রহনমূলকই হবে তবে সেটি অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে।তবে ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরও সকরার বহির্বিশ্বের চাপ সামলে পূর্ণ মেয়াদ সম্পন্ন করেছে। তবে এবারের নির্বাচন তার থেকে ব্যতিক্রম হবে। কেননা বিগত নির্বাচনে ভারত যেভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে ভূমিকা রেখেছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শক্ত অবস্থানে থাকায় সেটি সম্ভব হবে না। উপরন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারনে পশ্চিমাদের চাপ আরো বাড়বে বলে মনে করছেন তারা। এদিকে এবারের নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনেই হবে- এমন বদ্ধমূল ধারণা পোষণ করেন বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তৃণমূলের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে আলাপকালে তারা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক চাপ এবং গণ আন্দোলন উপেক্ষা করে এবছর আর আওয়ামী লীগের পক্ষে একতরফা নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে বিএনপিই সরকার গঠন করবে।এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী অ্যানী ডেইলি মেসেঞ্জারকে বলেন, সরকার মুখে যতই বলুক এবার আর তাদের শেষ রক্ষা হবে না। বিএনপির আন্দোলন এখন এদেশের গণমানুষের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এদেশে আর পাতানো নির্বাচন হবে না। জনগণের চাপে নির্দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে এবং বিএনিপই সরকার গঠন করবে।এদিকে বিএনপির ঢাকা সমাবেশের পর আজ শনিবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তারুণ্যের সমাবেশ। দলটির পক্ষ থেকে এই সমাবেশকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারন হিসেবে দলটির নেতারা বলছেন, দেশের ৪ কোটি ৭০ লাখ তরুন জন্মের পর কোনো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। বিগত দুটি নির্বাচন নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে কাছে টানতেই তারা বিভাগীয় শহরগুলোতে তারুণ্যের সমাবেশে করেছে। এ বিষয়ে সমাবেশের আয়োজক জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজকে নতুন ইতিহাস রচিত হবে। অধিকার বঞ্চিত তরুনার এ সমাবেশকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। তারা সরকার ও পুলিশ বাহিনীর চক্রান্তের বিপরীতে এই সমাবেশ সফল করে সরকারের পতনকে তরান্বিত করবে। বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, চলতি মাসের মধ্যে এ ধরনের সমাবেশ শেষ করে আগামী মাসেই সরকার পতনের নতুন কর্মসূচী নিয়ে মাঠে নামবেন তারা। গণআন্দোলন গড়ে তুলে যে কোনো মূল্যে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন বিএনপির একমাত্র লক্ষ্য। কারন হিসেবে তারা বলছেন, বিগত দেড়দশক ধরে বিএনপি ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। দলের সিংহভাগ সিনিয়র নেতার এবারের নির্বাচনই হতে পারে শেষ নির্বাচন। তাই যে কোনো মূল্যে তারা পরিবর্তন চান। এজন্য কূটনৈতিক চাপকে তারা সহায়ক শক্তি হিসেবে দেখছেন। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও একই সুরে কথা বলছেন। সরকার বিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সরকার পতন আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এবার যে আন্দোলন হবে সেটাই চূড়ান্ত আন্দোলন। তিনি বলেন, এবারের চূড়ান্ত আন্দোলনে দেশের সব মানুষ অংশ নেবে এবং তাদের অধিকার আদায় করেই ঘরে ফিরবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২১ জুলাই ২০২৩
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দফা এক, দাবি এক। শেখ হাসিনার পদত্যাগ। অবিলম্বে পদত্যাগ করো। সংসদ বিলুপ্ত করো। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করো। দেশ চলবে নতুন পার্লামেন্টের নেতৃত্বে। নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে সেই পার্লামেন্ট গঠিত হবে। নির্বাচন একটাই হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে।’সোমবার বিকেলে বগুড়া শহরের সূত্রাপুর সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে আয়োজিত ‘তারুণ্যের সমাবেশ’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।চার কোটির বেশি নতুন ভোটারের ভোটাধিকার ফিরে দেওয়া, নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ নানা দাবিতে তরুণদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে এ তারুণ্যের সমাবেশ আয়োজন করা হয়।দেশের গণতন্ত্র লুট হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, পাকিস্তানি হানাদারদের মতো আওয়ামী লীগ সরকার জোর করে, বন্দুকের ভয় দেখিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে আছে। যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নষ্ট করেছে, তারা আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার দাবি করে।গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফেরানোর আন্দোলনে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশ এখন কঠিন সময় পার করছে। এতটা কঠিন সময় আর কখনো আসেনি। সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। নতুন ভোটারদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৯ জুন ২০২৩
সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা পুরোনো মামলাগুলোতে তড়িঘড়ি রায় দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক পুরোনো মামলাগুলো আবার সচল হচ্ছে। তড়িঘড়ি সেসব মামলার রায় দিতেও চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার। তাদের (সরকার) মূল উদ্দেশ্য, বিএনপিকে মাঠে নামতে না দেওয়া, মাঠছাড়া করা। আগের মতো একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার লক্ষ্যে এ কাজ করছে সরকার।’বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজজামান দুদু, উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন প্রমুখ।মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) চট্টগামে তারুণ্যের সমাবেশে আসা ও যাওয়ার সময় যুবদলের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। কী একটা অবস্থা..আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে আবার আমাদের নামেই মামলা দিচ্ছে।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৫ জুন ২০২৩
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলকে বাংলাদেশের বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তারা জোসেপ বোরেলকে বলেছেন— বাংলাদেশে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে অবদান রাখতে অনুরোধ করছি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অবসান ঘটাতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ (বিএনপি) অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ত করে চলমান সংকটের টেকসই ও গণতান্ত্রিক সমাধান খুঁজে বের করতে আহ্বান জানাচ্ছি। এ দিকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাচ্ছেন এমন গুঞ্জনও রাজনীতিতে চাউর হয়েছে। আগামী নির্বাচন নিয়ে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে, বেগম জিয়ার মুক্তির আলোচনাটি তারই অংশ বলে কেউ কেউ মনে করছেন। যদিও এ বিষয়ে বিএনপির নেতৃস্থানীয় কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। গতকাল বিকেলে দলের এক নেতা আলাপকালে বলেন, ‘যেকোনো কিছুই হতে পারে’।বেগম খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের এক বছর আগে কারাবন্দী হন। প্রায় ২ বছর কারাভোগের পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তযুক্ত সাময়িক মুক্তি পান তিনি। মুক্তির পর ৬ মাস অন্তর অন্তর কারাগারের বদলে তার বাসায় থাকার মেয়াদ বাড়ছে। শারীরিক নানা জটিলতা থাকলেও বেগম জিয়া এখন অপেক্ষাকৃত সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে।জানতে চাইলে ইইউ ঢাকা অফিসের একজন মুখপাত্র বলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয়জন সদস্য ব্যক্তিগতভাবে তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। অন্যদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম যুগান্তরের প্রশ্নের জবাবে বলেন, যার কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে, তিনি আমাদের এ ব্যাপারে কিছু জানাননি। ফলে বিষয়টি নিয়ে কীভাবে মন্তব্য করব?১২ জুন এই পত্র প্রেরণকারী ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ছয় সদস্য হলেন— স্লোভাক প্রজাতন্ত্রেও ইভান স্টেফানেক, চেক প্রজাতন্ত্রের মাইকেলা সোজড্রোভা, বুলগেরিয়ার আন্দ্রে কোভাতচেভ, ডেনমার্কের কারেন মেলচিওর, স্পেনের জাভিয়ের নার্ট এবং ফিনল্যান্ডের হেইডি হাউটালা।চিঠিতে তারা বলেন, আমরা সেখানে আসন্ন ১২তম সাধারণ নির্বাচনের ওপর ফোকাস করার গুরুত্বের ওপর জোর দিতে চাই, যা ২০২৩ সালের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের শুরুতে হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।আমাদের মনে রাখতে হবে যে, জনগণের তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার এখনো বাকি। কারণ দেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো ব্যবস্থা নেই। এটা একটা সমস্যা যেহেতু কারচুপি, কারসাজি এবং ভোটারদের অনুপস্থিতি ১০ ও ১১তম সংসদ নির্বাচনকে বিঘ্নিত করেছে।যদিও দশম সাধারণ নির্বাচন প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণমূলক ছিল না এবং ১১তম সংসদ নির্বাচন (মধ্যরাতের নির্বাচন নামে পরিচিত) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নির্বাচন বর্জন করেছে।ফলস্বরূপ সরকারের বাংলাদেশের জনগণের কাছ থেকে কোনো বা সামান্য ম্যান্ডেট ছিল না এবং তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনুমোদন অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।সুতরাং ইইউকে শুধু বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মানবাধিকার বিষয়ে অবিরাম সংলাপে বসে থাকলেই হবে না।বাস্তব ফলে কাজ করতে হবে। সম্ভাব্য ব্যবস্থা যেমন মানবাধিকারের জন্য দায়ী এবং জড়িতদের ইইএ জোনে প্রবেশের সীমাবদ্ধতা অথবা জিএসপি+ প্রণোদনার শর্তের নিয়মিত স্মরণ করিয়ে দেওয়া যেতে পারে।চিঠিতে তারা বাংলাদেশে মানবাধিকারের লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, এই চিঠির মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করতে চাই এবং আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে সেখানে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাই।চিঠিতে তারা বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদের সরকার যারা ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায়, তারা নাগরিকদের জন্য গণতান্ত্রিক স্থান হ্রাস করেছে এবং সংবিধান দ্বারা নিশ্চিত করা তাদের মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। নিজেদের ক্ষমতা সুসংহত করার জন্য সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার আশ্রয় নিচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর। মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হয়েছে, বিশেষ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পর থেকে।আরও বলা হয়, হেফাজতে নির্যাতন এবং অন্যান্য দুর্ব্যবহারের অভিযোগগুলো প্রায়শই সংযুক্ত ছিল বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিষয়ে। অপব্যবহার শুধু সরকারের রাজনৈতিক বিরোধীদের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘু খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও একই রকম ছিল।গত এক দশকে বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড এবং জোরপূর্বক গুমের উচ্চ হার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক ইউএন কমিটি অ্যাগেইনস্ট টর্চারসহ (সিএটি) জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উদ্বেগ অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ সফরকালে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার (ওএইচসিএইচআর) অনুমোদনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বলপূর্বক গুম থেকে সব ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য।উপরোক্ত বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে, আমরা ইইউ নেতৃত্বের পুনরাবৃত্তি করতে চাই বিশ্বজুড়ে কূটনীতি, আইনের শাসন এবং মানবাধিকারের বিষয়ে। এবং এর ফলে আমরা বিশ্বাস করি, ইইউ বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জোরালো কারণ রয়েছে। কারণ দেশটি আমাদের দীর্ঘ বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতার অংশীদার।উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। এর পর থেকেই খালেদা জিয়া নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়।এর পর খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন আবেদন করা হলে হাইকোর্ট গত ১২ মার্চ তাকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন।পর দিনই আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে তা স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক। ওই দিন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর জামিন আদেশ স্থগিত না করে আবেদন দুটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।১৪ মার্চ আপিল বিভাগ চার মাসের জামিন দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ ১৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেন। ওই সময়ের মধ্যে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) করার নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।ওই দিন বিকালে খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের ওপর আপিল বিভাগের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে তার আইনজীবী চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করলে তা শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৩ জুন ২০২৩
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়। আজ বিদেশিরাও তাই মনে করছেন। বিদেশিরাও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি তুলেছেন।’শনিবার (২৭ মে) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অধীনস্থ আদালত এবং সরকারের অবজ্ঞা, গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, লোডশেডিং, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং ১০ দফা দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।সভায় খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশে আজ প্রত্যাখ্যান হয়েছেন। আজ সারা পৃথিবীতে সবাই জেনেছে শেখ হাসিনার অধীনে একটিও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। আওয়ামী লীগ ভালো করে জানে জনগণ দিনের বেলায় ভোট দিতে পারলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।’এ বিএনপি নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে, ‘আগামীতে যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বাধা দেবে, তাদের ভিসা দেওয়া হবে না। আর বাধাদানকারী হলো আওয়ামী লীগ।’তিনি বলেন, এ সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে, গায়ের জোরে নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিছে, আমাদের প্রতিটি কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনী বাধা দিচ্ছে।’‘মানুষের ভোটের অধিকার আওয়ামী লীগ হরণ করছে, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ অর্থনীতি আর মেরামত করা সম্ভব নয়। আজ গরিব মানুষ না খেয়ে আছে, মধ্যবিত্ত গরিব হয়ে গেছে’ যোগ করেন তিনি।তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনরত কোনো দল এ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দেবে না।’এ সিনিয়র নেতা বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে হলে গণঅভ্যুত্থানের কোনো বিকল্প নেই। আমরা আশাবাদী, জনগণ প্রস্তুত, অচিরেই গণঅভ্যুত্থান শুরু হবে।’এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজ লাখ লাখ যুবক রাস্তায় নেমে এসেছে। যুবকদের পদভারে শেখ হাসিনা সরকার বানের জলে ভেসে যাবে। আমার এক পরিচিত সরকারি চাকরিজীবী লোককে অস্ট্রেলিয়া ভিসা দিচ্ছে না, পরে জানতে পারলাম সেই লোক সরকারের অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত।’তিনি বলেন, ‘আজ সারা পৃথিবীর মানুষ আপনাদের ভিসা দিচ্ছে না, পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশ আপনাদের মতো চোর-বাটপারদের ভিসা দেবে না। গত ১৪ বছরে আপনাদের সব অপকর্মের বিচার হবে।’যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির ইঙ্গিত করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনারা (সরকার) মাইনকার চিপায় পড়ে গেছেন, আপনাদের আর বাঁচার সুযোগ নেই। ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে ধারণক্ষমতা চার হাজার ২০০, কেরানীগঞ্জে ১৬ হাজারের মতো, সারাদেশে দুই লাখ। অপরদিকে শুধু আমারই কর্মী আছেন কয়েক লাখ।’সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘এ সরকার সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। দেশের আকাশে আজ অস্বাভাবিক পরিস্থিতি, ঝড় আসছে, এ সরকার উড়ে যাবে। শেখ হাসিনাকে জেলখানায় যেতেই হবেই, কোনো রক্ষা নেই। শেখ হাসিনার সূর্য ডুবে গেছে।’ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সভায় ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, বিএনপি নেতা মীর সরাফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, মহিলা দলের সভানেত্রী মির্জা আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।এদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে ওঠে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুপুর আড়াইটায় কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা দেরিতে শুরু হয়।কর্মসূচির কারণে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত একটি রাস্তা বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া নয়াপল্টন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েনসহ সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৭ মে ২০২৩
আসন্ন সবগুলো সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও নীল নকশার নির্বাচন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থাকে তারা (সরকার) বেমালুম ধ্বংস করে দিয়েছে। আজ নির্বাচনের অবস্থা কেমন? এই যে মেয়র ইলেকশন হচ্ছে, বেশির ভাগ সিটি কর্পোরেশনে বিরোধী দল কোনো প্রার্থী দিচ্ছে না।রোববার (২১ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার প্রতিষ্ঠাতা শফিউল আলম প্রধানের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাগপার একাংশ।বিএনপি মহাসচিব বলেন, সিলেটে একজন অত্যন্ত জনপ্রিয়, দুই বার মেয়র হয়েছেন আরিফ এবং সিলেটের মানুষ তাকে আবারও মেয়র হিসেবে চায়। সেই আরিফ শনিবার জনসভা করে বলেছেন, এ নির্বাচন কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না, নির্বাচনই হবে না। তারা ব্লু প্রিন্ট করে ফেলেছে। এ নির্বাচনে যাওয়ার অর্থই হয় না, এটা অর্থহীন হবে। আপনারা দেখেছেন সিলেটের মানুষ চোখের পানি ফেলেছে, কেঁদেছে যে, তাদের প্রিয় নেতা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন, আমি মনে করি যে, এ নির্বাচন অর্থহীন হবে এবং এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না।মির্জা ফখরুল বলেন, সব জায়গায় একই অবস্থা। আজ প্রতিটি নির্বাচনকে একই অবস্থার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠানটাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে। এটাই হচ্ছে এ ধরনের কর্তৃত্ববাদী যারা, এ ধরনের ফ্যাসিবাদী যারা তাদের একটা হাতিয়ার। নির্বাচন একটা টুল, দেখাবে নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন তারা কথা বলবে, নির্বাচন কমিশনের কমিশনাররা কথা বলবেন। নির্বাচন একটা দেখানোর চেষ্টা করবে, কিন্তু তারা পুরো নির্বাচনকে তাদের মতো করে নিয়ে যাবে।তিনি বলেন, অত্যন্ত পরিষ্কার, স্পষ্ট, দৃঢ় উচ্চারণ যে, এ সরকার থাকলে কোনো নির্বাচন হবে না। শেখ হাসিনা সরকার থাকলে কোনো নির্বাচন হবে না। একটা নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে।বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন নিয়ে এমন একটা অবস্থা হয়েছে, তাদের যে জোট আছে, ১৪ দলের এক শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির আমাদের অত্যন্ত সম্মানিত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব রাশেদ খান মেনন, তিনি কিছুদিন আগে বলেছেন, পরিকল্পিত নির্বাচন চাই না। ম্যাসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার যে, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিত নির্বাচন করে, সেই নির্বাচন তিনি চান না। আরেকজন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যে, এখানে মন্ত্রীরাই সিন্ডিকেট তৈরি করে, তারাই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে। এসব আমার কথা নয়, সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন।রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।মির্জা ফখরুল বলেন, পত্রিকায় আজ এসেছে যে, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক তার রিপোর্টে বলছে যে, বাংলাদেশ ইজ চ্যাম্পিয়ান অব ডিফল্ট লোনস, এই যে খেলাপি ঋণ, এটাতে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ান হয়ে গেছে। এক শ্রীলঙ্কা ছিল, শ্রীলঙ্কা থেকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। খেলাপি ঋণ কেন হবে না? যারা ঋণ নেয়, শোধ করে না। তারা তো তাদের অ্যাডভাইজার মন্ত্রী, আমি নাম বলব না। হাজার হাজার কোটি টাকা তারা ঋণ নিয়ে রিসিডিউল করছে বছরের পর বছর ধরে। আর আমাদের ছোটখাটো ব্যবসায়ীরা তারা যদি একটা-দুইটা ডিফল্ট হয় তো তার বিরুদ্ধে মামলা হয়ে যাচ্ছে, তাকে কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে।তিনি বলেন, এই সরকারের অপকর্ম বলে শেষ করা যাবে না। এনাফ ইজ এনাফ। এই সরকার যদি একটা মুহূর্ত আর দেশের পরিচালনায় থাকে, দেশ আরও খারাপের দিকে যাবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২১ মে ২০২৩
বাংলাদেশের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হতে যাচ্ছে এই মাসের শেষের দিকে কারণ প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ও সমমনা দলগুলো সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনে নতুন কর্মসূচি নিয়ে ২০ মে থেকে ফের রাজপথে নামছে। জেলা সমাবেশের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে প্রথম ধাপের কর্মসূচি। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিকে রাজপথে মোকাবেলা করার জন্য ঘোষণা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশে যারা আন্দোলনে জিতবে তারাই পরবর্তীতে নির্বাচনেও জিতবে। ৬৪ জেলাতেই সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। মঙ্গলবার স্থায়ী কমিটি ও বুধবার সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এ কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়। চার পর্বে প্রতি শনিবার এ কর্মসূচি পালন করা হবে। পরশু ঢাকায় এক সমাবেশ থেকে এর ঘোষণা আসবে। দলটির নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মসূচির খসড়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ঈদুল আজহার পর চূড়ান্ত ধাপে ঢাকা অভিমুখে কর্মসূচির পক্ষে মত দেন নেতারা। সেক্ষেত্রে ঢাকা ঘেরাও, ঢাকামুখী রোডমার্চ, ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি দেওয়া যেতে পারে বলে জানান তারা।সমমনা দলসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে নতুন কর্মসূচি হিসাবে ঢাকা থেকে বিভাগ অভিমুখে রোডমার্চের প্রস্তাব দিলেও তাতে আগ্রহ দেখায়নি দলটির নীতিনির্ধারকরা। এ কর্মসূচি নির্বিঘ্নে করা যাবে কিনা-তা নিয়ে সংশয় থাকায় আপাতত না করার পক্ষে মত দেন তারা।এর পরিবর্তে বড় জেলায় সমাবেশ করার পক্ষে সবাই পরামর্শ দেন। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়েই সরকারের ওপর প্রবল চাপ তৈরির পক্ষে নীতিনির্ধারকরা। তাই আপাতত হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচিতেও যেতে চায় না দলটি।এদিকে সরকারের পতন ও রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের ঘোষিত দফা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে না পারায় বিলম্ব হবে যৌথ রূপরেখার ঘোষণা। এ নিয়ে সমঝোতায় গণতন্ত্র মঞ্চসহ সমমনা দলগুলোর সঙ্গে ফের আলোচনায় বসতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনে ‘অলআউট’ মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। আন্দোলনের রোডম্যাপ চূড়ান্ত করতে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করে দলটি। কর্মসূচিসহ সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে তাদের মতামত নেওয়া হয়।একই লক্ষ্যে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদেরও মতামত নেয় হাইকমান্ড। কর্মসূচির পাশাপাশি যৌথ রূপরেখা চূড়ান্তেও গণতন্ত্র মঞ্চের শরিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। এসব বৈঠকের একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১১ মে ২০২৩
সরকারবিরোধী দলগুলোকে সাথে নিয়ে ধীরে ধীরে চূড়ান্ত আন্দোলনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বিএনপি। দলটি ঢাকা অভিমুখে চূড়ান্ত এবং শেষ কর্মসূচি পালনের বিষয়ে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে আলোচনা শুরু করেছে। তবে তার আগে এ মাসের শেষে কিংবা জুনের প্রথমার্ধে এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে রোডমার্চের মতো জনসম্পৃক্ততামূলক কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে। আগামী সপ্তাহে দলটি রোডমার্চ কিংবা এ ধরনের একাধিক কর্মসূচির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানা গেছে।বিএনপি নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানিয়েছে, নতুন কর্মসূচির পথ ধরে বিএনপি চূড়ান্ত আন্দোলনে যেতে চায়। এই জন্য দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও বিএনপি সমর্থক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মতামত নিচ্ছেন।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামীকাল ৪ মে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকদের সাথে বৈঠক করবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এরই মধ্যে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সাথে বৈঠক করে তাদের মতামত নিয়েছেন দলের লিয়াজোঁ কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এসব মতামত নিয়ে স্থায়ী কমিটির পরবর্তী সভায় আলোচনা করে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে।কর্মসূচি নিয়ে গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় আলোচনা হয়েছে। সেখানে নেতারা দ্রুত আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।বৈঠকে নেতাদের কয়েকজন বলেন, গত কয়েক মাসে বিএনপি প্রায় সব ধরনের কর্মসূচি পালন করেছে। তাই এবার অধিকতর আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য কর্মসূচির পথরেখা তৈরি করতে হবে। এমন কর্মসূচি দিতে হবে যাতে আন্দোলনে গতি আসে। স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে নেতাদের অনেকে রোডমার্চের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা উত্থাপন করেন।বিএনপি নেতারা জানান, এসএসসি পরীক্ষার কারণে কর্মসূচি ঘোষণার বিষয়টি কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছে। এসএসসি পরীক্ষার মধ্যে কোনো বড় ধরনের কর্মসূচিতে যেতে চায় না দলটি। পরীক্ষা শেষ হওয়া মাত্রই চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে কর্মসূচি শুরু হতে পারে।বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা জানিয়েছেন, সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সে লক্ষ্যে ঈদুল আজহার আগেই আন্দোলনের শক্ত ভিত্তি তৈরি করতে চায় দলটি। আন্দোলনকে অযথা টেনে দীর্ঘমেয়াদি করতে চান না নীতিনির্ধারকেরা।জানা গেছে, সোমবারের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কর্মসূচি কেন্দ্রিক আলোচনা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর চলমান তিন দেশ সফর নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে নেতারা প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে কোনো অর্জন নেই বলে মনে করছেন। এ সফরকে তারা পিকনিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।গতকাল দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল-২০২৩ নিয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এটি নানা কারণে বিতর্কিত, অগণতান্ত্রিক, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের স্বার্থবিরোধী, একতরফা, নিবর্তনমূলক এবং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির স্পষ্ট বরখেলাপ। এই আইনটি প্রণয়নে কোনো পর্যায়ই অংশীজনের মতামত নেয়া হয়নি। বিএনপি মনে করে, প্রস্তাবিত বিলটি শুধু শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ ও অধিকারকেই ক্ষুণ্ণ করবে না, এটি সামগ্রিকভাবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং জনগণের সংবিধানসম্মত প্রতিবাদের অধিকার পরিপন্থী। বিএনপি প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল-২০২৩ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে।যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ ঘোষণা চূড়ান্ত : বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ধারাবাহিক আলোচনা করে যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ ঘোষণা চূড়ান্ত হয়েছে। এতে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ১০ দফা অটুট রেখে অন্যান্য দলের দাবিগুলো সংযুক্ত করা হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে দলগুলো কী করবে তার একটি যৌথ রূপরেখাও তুলে ধরা হবে। বিএনপি ইতোমধ্যে ২৭ দফার রূপরেখা ঘোষণা করেছে। এ দফার সাথে অন্যান্য দলের প্রস্তাবগুলো সংযুক্ত করা হচ্ছে।সমমনা দলগুলোর লিয়াজোঁ কমিটির নেতারা জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে এক মঞ্চ থেকে যৌথ ঘোষণা দেয়া হবে। কবে এই ঘোষণা আসবে, তা আগামী দু’একদিনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে।যৌথ ঘোষণার বিভিন্ন দফা নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সাথে বিএনপির কিছুটা মতপার্থক্য ছিল। গতকাল মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই দল এ বিষয়ে একমত হয়েছে।বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সব দল মিলে যৌথ ঘোষণা দেয়া হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। খুব দ্রুত এ ঘোষণা দেয়া হবে।গণতন্ত্র মঞ্চের ও রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, আমরা অল্পদিনের মধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ, বিএনপিসহ অন্যান্য দল নিয়ে আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে- সেটার রূপরেখা যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে তুলে ধরব। এ বিষয়ে আমাদের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে।সূত্র - নয়া দিগন্ত
Harun Ur Rashid । ০৩ মে ২০২৩
সরকারের দুর্নীতির কারণে জনগণের জীবন দুঃসহ হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।তিনি বলেন, অবৈধ অনির্বাচিত দখলদার সরকারের অধীনে বাংলাদেশ এখন প্রায় ধ্বংস রাষ্ট্রের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে পতিত হচ্ছে। তাদের দুর্নীতির কারণে আজকে জনগণের জীবন দুঃসহ হয়ে পড়েছে।বুধবার (৩ মে) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।দ্রব্যমূল্যের দাম অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছছে দাবি করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ব্যাংকগুলো পুরোপুরিভাবে খালি করে দেওয়াসহ দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে দিয়ে অর্থব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাত, শিক্ষাখাত সবকিছুতেই একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমাদের ন্যূনতম যে অধিকার- ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার; তা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে অধিকারগুলো অর্জন করেছিলাম, সেই অধিকারগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। তাদের একটি মাত্র উদ্দেশ্য, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আবারও প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যেটা তারা করতে চেয়েছিল ১৯৭৫ সালে।বিএনপি মহাসচিব বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে আমাদের প্রধান দাবি হচ্ছে এই সরকারের পদত্যাগ। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে সেই দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। সেই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে যারা আমাদের সহযোগিতা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে আমরা আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি। ইতোমধ্যে অনেকগুলো দলের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। আজকে কর্নেল অলি আহমেদ আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছেন। আজকের আলোচনা আমাদের শেষ নয়। আবার তার দলের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করবো।লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. অলি আহমদের বলেন, এই আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, এই আন্দোলন মন্ত্রী হওয়ার জন্য নয়, এই আন্দোলন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে মুক্ত করার আন্দোলন।রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মকাণ্ড স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করতে পারছে না দাবি করে অলি আহমদ বলেন, সাংবাদিকরাও লিখতে পারে না, কারণ আইন করে তাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য দেশকে স্বাধীনতা করা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধ করি নাই। মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিল প্রত্যেকটি মানুষ স্বাধীনভাবে বসবাস করবে এবং তারা ভোট দিয়ে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনা করবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৩ মে ২০২৩