সমন্বয়ে ফল চাষে ভাগ্য খুলেছে মাসুদ রানার

নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৩ নভেম্বর ২০২২

সমন্বয়ে ফল চাষে ভাগ্য খুলেছে মাসুদ রানার

গুরুদাসপুর(নাটোর) প্রতিনিধি: ম্যালচিং পদ্ধতিতে মিশ্র ফল বাগান করে অভাবনীয় সফলতা লাভ করেছেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের কুসুমহাট্টি গ্রামের প্রভাষক মাসুদ রানা। প্রথম দিকে শুরু বারো মাসী থাই গোন্ডেন পেয়ারা ও দুই ধরনের কুল চারা দিয়ে। অতঃপর হরেক রকমের ফল ও সবজি চাষে সাফল্য আসায় ফিরেছে ভাগ্য। কৃষিতে নতুন দ্বার উন্মোচন করা দৃষ্টিনন্দন বিশাল ফল বাগান দেখতে ভিড় করছেন ফল প্রেমিকরা।

উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে জানা যায়, উপজেলায় মোট ২১০ হেক্টর জমিতে রয়েছে ফল বাগান । এর মধ্যে ১৯০ হেক্টর জমিতে রয়েছে একক ফলের বাগান। বাকি ২০ হেক্টর জমিতে মিশ্র ফলবাগান। আধুনিক প্রযুক্তিতে অল্প খরচে স্বল্প জমিতে হরেক রকমের ফল চাষে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। ক্রমেই বাড়ছে মিশ্র ফল বাগান।

সরেজমিনে গতকাল বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা যায়,উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের কুসুমহাট্টি গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে মাসুদ রানা। পেশায় একজন শিক্ষক। তার ১৫ বিঘা জমির উপর ম্যালচিং প্রদ্ধতিতে করেছেন মিশ্র ফল বাগান। তার বাগানে রয়েছে বারোমাসি থাই গোন্ডেন পেয়ারা গাছ ৫হাজার,বলসুন্দরী ও কাশমেরী কুল গাছ ২হাজার,রিড লেডি পেঁপে গাছ ১৫০টি,মালটা গাছ ১৫০টি,বিভিন্ন ধরনের আম গাছ ২০০টি, ছফেদা ফল ১৫টি,১হাজারটি কাঁচা মরিচ ,হলুদ গাছ আর ১বিঘা জমিতে রয়েছে ফিলিপাইন জাতের ব্লাক সুগারকেইন। ফল গাছে মাঝে মাঝে দেখা যায় সবজি গাছ।

বাগান মালিক মাসুদ রানা বলেন, শৈশব কালের ইচ্ছা পূরণে ২০২০সালে কৃষি অফিসের পরামর্শে নিজ ৫বিঘা জমি উপর ১০০০টি থাই গোন্ডেন-৮ জাতের পেয়ারা ও ১১০০টি বলসুন্দরী ও কাশমেরী কুল চারা শুরু করেন এই ফল বাগান। এতে খরচ হয় ২ লক্ষ ৫০হাজার টাকা। এক বছরের মাথায় বাগানে ফল ধরতে শুরু করে। সেই বছরেরই আসে সাফল্য। ফল বিক্রিতে লাভ হয় ৬ লক্ষ টাকা। পরে ১০বছরের জন্য বিঘাপ্রতি ১৫ হাজার বিনিময়ে লিজ নেন আরও ১০ বিঘা জমি। বাগান পরিচর্যা ও যত্ন নেওয়ার কাজে নিয়োজিত রয়েছে ১০জন শ্রমিক।

১৫বিঘার এই মিশ্র বাগান করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫লক্ষ টাকা। কিছু কিছু ফল গাছে ফল ধরেছে। পরিপক্ক ফল বিক্রি শুরু হয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকায় ভাল দামে বিক্রি হচ্ছে ফল। তিনি আশা করছেন প্রতিদিনের শ্রমিকসহ আনুসাঙ্গিক ধরে প্রতিবছর খরচ হবে ১৫লক্ষ টাকা। আর ফল বিক্রি হবে ৪০লক্ষ টাকা। তিনি আরও জানান,পরিবারে মা ছাড়া অন্য সদস্যদের মত্ত ছিল না। পরবর্তীতে বাগান ও আয় দেখে আমার সাহসের প্রশংসা করেছেন তারা।

ফজলু হোসেন ও সুমন রহমান বলেন , এক বাগানে হরেক রকমের ফল গাছ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে কৃষি অফিস ও মাসুদ রানার পরামর্শে দুই বিঘার উপর এই ধরনের বাগান করেছি। সাফল্য আসলে বড় আকারে করার চিন্তা ভাবনা রয়েছে।

কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন,মাসুদ রানার মিশ্র বাগানে কৃষি বিভাগ হতে মালচিং প্রযুক্তি সরবরাহ করেছি। এতে তার বাগানে খরচ কমেছে এবং বেড়েছে ফলন। আগ্রহী অনেক কৃষক যোগাযোগ করছেন। তাদের কৃষিবিভাগ থেকে পরামর্শ ও প্রযুক্তি দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে।#৩-১১-২০২২

শ/ইসলাম