সরকারের চোখ এবার বরিশালে বিএনপি’র বিভাগীয় গণসমাবেশে

নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৪ নভেম্বর ২০২২

সরকারের চোখ এবার বরিশালে বিএনপি’র বিভাগীয় গণসমাবেশে

৪ ও ৫ নভেম্বর সড়ক এবং নৌ পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে বরিশাল। বিএনপি’র বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে ওই দুইদিন বাস ও থ্রি হুইলার বন্ধের পর এবার ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে লঞ্চ বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে মালিকদের। এর ফলে বরিশাল কার্যত দুইদিন ‘অবরুদ্ধ’ থাকার আশংকা করছে স্থানীয় জনসাধারণ। তবে সকল বাধা উপেক্ষা করে বরিশালে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ গণসমাবেশ করার করার ঘোষণা দিয়েছে মহানগর বিএনপি। গণসমাবেশ বাধাগ্রস্থ করতেই বাস এবং থ্রি হুইলারের পর লঞ্চ চলাচলও বন্ধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। তবে আওয়ামী লীগ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিভাগীয় গণসমাবেশ করার লক্ষ্যে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে রাজপথে সক্রিয় বিএনপি। জেলা এবং মহানগর থেকে তৃনমূল পর্যায় পর্যন্ত উজ্জীবিত করতে কেন্দ্রিয় নেতারা জেলা ও মহানগরে, জেলার নেতারা উপজেলায় এবং উপজেলার নেতারা ইউনিয়ন পর্যন্ত গণসংযোগ-প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএনপি’র বিভাগীয় গণসমাবেশ এখন দক্ষিণের আলোচিত বিষয়। বিএনপি নেতাদের দাবি স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমাগম হবে ৫ নভেম্বরের বিভাগীয় গণসমাবেশে। সর্ববৃহৎ না হলেও গণসমাবেশে অনেক লোক হবে বলে আলোচনা আছে জনসাধারণের মাঝে।

এ অবস্থায় গত ২৬ অক্টোবর পুরনো বিভিন্ন ইস্যু সামনে এনে ৪ ও ৫ নভেম্বর দক্ষিণাঞ্চলের সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখার দালিলিক ঘোষণা দেয় বাস মালিক সমিতির দুটি সংগঠন। এর ৪ দিন পর ৩০ অক্টোবর জেলা সিএনজি, অটোরিকশা, টেক্সিকার, বেবীট্যাক্সি, মিশুক (থ্রি হুইলার) মালিক সমিতি এবং একই শ্রমিক ইউনিয়ন পুরনো বিভিন্ন দাবীতে বরিশালে ৩ চাকার সকল যান্ত্রিক যান (থি হুইলার) বন্ধের লিখিত ঘোষনা দেয়। তখন থেকেই গুঞ্জন ছিলো বন্ধ হতে পারে লঞ্চ চলাচলও।
সেই ঘোষণা এসেছে। তবে মৌখিক। গত সোমবার মহানগর শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র দাস লঞ্চ মালিক সমিতির স্থানীয় কার্যালয়ে গিয়ে অফিস সম্পাদক আমির হোসেনকে ৪ ও ৫ নভেম্বর একতলা (স্থানীয় রুট) লঞ্চ বন্ধের মৌখিক নির্দেশ দেন। পরদিন মঙ্গলবার ফের ওই কার্যালয়ে গিয়ে ৪ নভেম্বর ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে লঞ্চ না ছাড়ার নির্দেশ দেন তিনি।

শ্রমিক লীগ নেতার এমন নির্দেশ মালিকদের জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল লঞ্চ মালিক সমিতির অফিস সম্পাদক আমির হোসেন। তিনি বলেন, পরিমল দাস শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া আছে উল্লেখ করে ৪ ও ৫ নভেম্বর সকল লোকাল রুট এবং ৪ নভেম্বর ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে কোন লঞ্চ না ছাড়তে বলেন।

দূরপাল্লা রুটের লঞ্চ মালিক রেজিন উল কবির বলেন, শ্রমিকরা লঞ্চ না চালালে মালিকদের কিছু করার নেই। এটা আপনারাও বোঝেন।

লঞ্চ মালিক সমিতি বরিশালের সভাপতি রিয়াজ উল কবির বলেন, লঞ্চ বন্ধ রাখার বিষয়ে স্থানীয় মালিক সমিতির কোন সিদ্ধান্ত নেই। এ বিষয়ে কেন্দ্রিয় সভাপতির কাছে জিজ্ঞাসা করার পরামর্শ দেন তিনি।

মুঠোফোনে লঞ্চ মালিক সমিতি কেন্দ্রিয় কমিটির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেন, তাদের কিছু বলার থাকলে সমিতির কেন্দ্রিয় পর্যায়ে জানাবে। লঞ্চ বন্ধ রাখার বিষয়ে মালিক সমিতির কোন সিদ্ধান্ত নেই।

তবে ক্ষমতাসীনদের এই নির্দেশ মাথা পেতে নিচ্ছেন বলে মুঠোফোনে জানিয়েছেন একাধিক লঞ্চ মালিক। বর্তমান প্রেক্ষাপটে লঞ্চ বন্ধ না করে উপায় নেই বলেও স্বীকার করেন তারা।

মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, বিএনপি’র কর্মসূচী বাধাগ্রস্থ করতে বাস ও থ্রি হুইলারের পর লঞ্চ বন্ধ করছে ক্ষমতাসীনরা। এটা তাদের অপকৌশল। কোন বাধা বিএনপি’র জনস্রোত ঠেকাতে পারবেনা বলে তিনি হুঁশিয়ারী দিয়েছেন।