নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৪ মে ২০২৪
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতের মিথ্যাচার প্রতিরোধে আমাদের কিছু ব্যর্থতা আছে বলে আমি মনে করি, বিশেষ করে এখানে যারা আওয়ামী লীগের আছেন, তারা যথাযথভাবে এসব অপপ্রচারের জবাব দিতে পারেননি। বিএনপির বক্তব্য/তথ্য যে মিথ্যা তার জবাব জোরালোভাবে দিতে পারেননি। কিংবা ঐসব ন্যারেটিভের বিরুদ্ধে কাউন্টার ন্যারেটিভ অর্থাৎ বিশ্বাসযোগ্যতার সাথে সত্য কথাটা তুলে ধরতে পারেননি। আমি মনে করি এখানে যারা আওয়ামী লীগের আছেন, যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে বসবাস করেন, তারা দলকে দেশকে কন্ট্রিবিউট করতে পারেন। আর এটা শেখ হাসিনার জন্য বা আওয়ামী লীগের জন্য নয়। বাংলাদেশের স্বার্থেই আমি মনে করি এ দায়িত্বটি সকলের পালন করা উচিত।
শুক্রবার নিউইয়র্কে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদের মিয়ার বাসায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ বিরোধী লাগাতার অপপ্রচার প্রতিরোধে প্রবাসীদের করণীয় প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, গত সপ্তাহে ক্যালিফোর্নিয়ায় আন্তর্জাতিক বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে এসেছিলেন প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ার, চিকিৎসক, কর্পোরেশনের বড় কর্তারা। তাদেরকে জানিয়েছি যে, বাংলাদেশ ছেড়ে এলেও সেখানে আত্মীয়-স্বজনতো রয়েছেন। পরবর্তী প্রজন্মের প্রতিতো দায়িত্ববোধ আছে। সে বোধ থেকেই তাদের উচিত মার্কিন প্রশাসন-রাজনীতিক, নীতি-নির্ধারকদের কাছে বাংলাদেশের সঠিক চিত্র তুলে ধরা। প্রপাগান্ডা মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। এমন আহ্বান রেখেছি তাদের কাছে।
কিছদিন আগে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন প্রসঙ্গে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, তা ভুলভাবে করা হয়েছে। আমি মনে করি তা ন্যায্যতার সাথে হয়নি। বাংলাদেশের বাস্তবতাকে বিবেচনায় নেয়া হয়নি। বিএনপি তো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু করেছে এবং দায়ীদেরকে ইমডেমনিটিও দিয়েছিল। যেভাবে জাতির জনকের হত্যাকারিদের দেয়া হয়েছিল। এরচেয়ে বর্বর ন্যাক্কারজনক ঘটনাতো বাংলাদেশের ইতিহাসে নেই।
আওয়ামী লীগের এই নেতা আরো বলেন, বিএনপি যেসব তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে মূলধারার মিডিয়ায় নিউজ করিয়েছে সেগুলোকে আমরা চ্যালেঞ্জ করেছি যে, তার কোনটাই সত্য নয়। বাংলাদেশের কারাগারে বিএনপির এতলোক আছে এবং এতজন মারা গেছে, তার কোনটিই সত্য নয়। ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নিয়ে আমি আইজি প্রিজনের সাথে কথা বলে জেনেছি, প্রতিমাসে বাংলাদেশের কারাগারে গড়পরতা ৪০ থেকে ৪৫ জন মারা যায় বিভিন্ন রোগে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখনও একই রকম ছিল। এটা স্বাভাবিক। এখন জেলে কাউকে হত্যা করা হয়েছে-এমন কোন ঘটনা নেই এবং জেলে যারা মারা গেছে অনেকেরই রাজনীতির সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। অনেকে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে ছিলেন। বিএনপির আমলেই তারা কারাগারে গিয়েছিলেন। তারা (বিএনপি) ভুলভাবে এমন ভুল তথ্য বিদেশীদের কাছে উপস্থাপন করে তাদের পক্ষে করুনা আদায়ের জন্য, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা এমন বানোয়াট তথ্য তাদেরকে (বিদেশীদেরকে) দেয়। বাংলাদেশের কারাগারসমূহের ধারণ ক্ষমতা ৮০ হাজারের বেশী নয়। অথচ বিএনপি তার বিদেশী প্রভুদের বলেছে যে, কারাগারে নাকি তাদের লাখ লাখ লোক রয়েছে। এ ধরনের মিথ্যা তথ্য, বিএনপির নেতারাতো দণ্ডপ্রাপ্ত এবং পলাতক-সাজাপ্রাপ্ত হাওয়া ভবনের মালিক তারেক জিয়ার নির্দেশেই এসব অপপ্রচার চালায়। বিএনপির অনেক নেতার সাথেই আমাদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে যোগাযোগ আছে এবং তারাও সেটি জানে। কিন্তু তারা তাদের নেতাকে তুষ্ট করার জন্য এ ধরনের মিথ্যাচার চালিয়েই যাচ্ছে।
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াতের কোনো সমর্থন নেই। তারা নির্বাচনে আসেনি। ভোটও দেয়নি। এ অবস্থায় তারা বেছে নিয়েছে এই মিথ্যাচার, প্রপাগান্ডা। তারা যে সময়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল, সে সময় তারা যে লুটপাট করেছে, সেই অর্থ বাইরে এনে লবিষ্ট ফার্ম ভাড়া করেছে। পশ্চিমা মিডিয়াগুলোতে এ ধরনের প্রপাগান্ডা অত্যন্ত সাকসেসফুল্লি তারা করতে পেরেছে। এসব কারণে গত নির্বাচনটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এবং দেখা গেছে যে, সেই নির্বাচন-বিরোধী ষড়যন্ত্র পরাজিত হয়েছে এবং বাংলাদেশের জনগণ পুনরায় গণতন্ত্রের পক্ষে, নির্বাচনের পক্ষে, নির্বাচিত সরকার ব্যবস্থার পক্ষে সমর্থন দিয়েছে।