ঢাকায় বায়ু দূষণ বিপদজনক অবস্থায় স্বীকার করলেন ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ঢাকায় বায়ু দূষণ বিপদজনক অবস্থায় স্বীকার করলেন ওবায়দুল কাদের

বায়ু দূষণ বিপদজনক অবস্থায় পৌছেছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সিটি করপোরেশনের মেয়রদের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার রাজধানীর মৎস ভবন মোড়ে নিরাপদ সড়ক চাই রোড শোতে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় ফের শীর্ষে উঠে এসেছে ঢাকা। কয়েকদিন আগে সুইস বায়ুমান পর্যবেক্ষক সংস্থা আইকিউএয়ারের শহরভিত্তিক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) সবচেয়ে বাজে দশা ছিল ঢাকার বাতাসের, স্কোর ছিল ২৭১, যার মানে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁকিপূর্ণ’।

এর কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজকে আমাদের লজ্জার ব্যপার, বাংলাদেশ আজকে উন্নয়ন অর্জনে বিশ্বের বিষ্ময় সেই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বায়ু দূষণ ওয়াস্ট কনডিশানে বায়ু দুষণ খুবই বাজে অবস্থা, বিপদ জনক অবস্থা, এটা অত্যান্ত লজ্জার বিষয় এবং এটা অবশ্যই মানুষ সৃষ্ট।

“আজকে উন্নয়ন কর্মকান্ড করতে গিয়ে রাস্তায় ধুলা, ঠিকমত পানি না দেয়া, রাস্তায় প্রতিদিনই পানি দেয়া দরকার। এই দায়িত্বটা সিটি করপোরেশনের, কোথাও কোথাও করেন। আমি তাদেরকে অনুরোধ করবো দুজনই উদ্যমী মেয়র, তারা যেন এই কাজটি করে। কারণ আমাদের বায়ু দূষণ একেবারেই বিপদজনক অবস্থায় আছে। এই বিপদ জনক অবস্থা থেকে বায়ু দূষণ বিভিন্ন রোগের কারণ হিসেবে আসছে। এই জন্য সারা রাজধানীতে পানি ছিটানো দরকার।”

এ সময় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়ের কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আশপাশের ইটের ভাটাগুলো প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আমাদের এখন মাটি থেকে ইট তৈরি করার জ্বালানো পোড়ানো আমাদের পরিবেশকে দুষিত করছে। আমাদের পরিবেশ মন্ত্রনালয় শুধু সার্টিফিকেট দিলে চলবে না। দরকার হলে টিম ওয়ার্ক করতে হবে। আজকে দূষণ এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিন। ঢাকায় আজকে প্রায় দুই কোটি মানুষের বাস, এই ছোট শহরটা আমাদের পরিবেশ ঠিক রাখতে হবে।

“ছোট একটা দেশ সিঙ্গাপুর, সুন্দর করে সাঁজিয়ে রেখেছে, যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে ধুমপান করতে পারবেন না, আমাদের এখানে গাড়ির হর্ণ বাঁজিয়ে যাচ্ছে। যেখানে সেখানে সিগারেট টানছে। আজকাল স্কুলের ছেলে মেয়েরা প্রকাশ্যে সিগারেট টানছে। কোন ভেদাভেদ নেই্। যেখানে সেখানে খুশি হর্ন বাজাচ্ছে, হাসপাতালের সামনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে হর্ন বাজাচ্ছে, এগুলো বন্ধ করতে হবে।”

সড়কে শৃঙ্খলা আনতে বিশ্বব্যাংকের প্রজেক্টের কথা তুলে ধরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “পরিবহনে শৃঙ্খলা আনা এটা এখন আমাদের টপ প্রায়রটি। বিশ্ব ব্যাংক একটা প্রকল্প আমাদের এখানে করছে। এখন পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ে যাবে, প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প।

“এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারলে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগের শৃঙ্খলা আমরা অনেক দুর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। তবে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে মানুষের জনসচেতনতা, জনগনের সচেতনতা। শৃঙ্খলা না এলে উন্নয়ন খুব একটা কাজে আসবে না।”

মেট্রো রেলের পিরারে পোষ্টার লাগালে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজকে মেট্রোরেল এ আমি লক্ষ্য করলাম, মেট্রোরেলের পিলার পোষ্টারে ভরে গেছে। এই বিষয়টা বার বার হচ্ছে। মানুষ যদি সচেতন না হয়, আজকে মেট্রোরেলের এত সুন্দর পিলার, সেই মেট্রোরেলের পিলার গুলো পোষ্টারে পোষ্টারে ভরে গেছে।

“আমি এই খারাপ অভ্যাস থেকে বিরত থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় আমাদের শাস্তিমূরক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই পোষ্টারগুলো তারাই উঠিয়ে ফেলুক, তা না হলে যারা পোষ্টার লাগিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো। মানুষ সচেতন না হলে কোন উন্নয়নই পূর্ণতা লাভ করবে না।”

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমাদের প্রোগাম প্রতিদিনই, আগামী নির্বাচন পর‌্যন্ত, আমাদের প্রতিদিনই কর্মসূচি। আমাদের বিভাগ, জেলা-উপজেলা, মহানগর -থানা, ইউনিয়নে প্রয়োজনে ওয়ার্ডে থাকবে। আমাদের কর্মসূচি আমরা নির্বাচন পর‌্যন্ত সারা বাংলাদেশে থাকবে। এখানে কারও সাথে পাল্টা পাল্টি নয়, এটা আমাদের কর্মসূচিরই অংশ। আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করছি।

“১৩/১৪সালে আমরা দেখেছি আগুন সন্ত্রাস, রাস্তার পাশের গাছ কাটা, রেল স্টেশন পুড়িয়ে ফেলা, ভুমি অফিস পুড়িয়ে ফেলা, বিদ্যুৎ স্টেশনে পুড়িয়ে ফেলা এসব আমরা দেখেছি। আমরা ক্ষমতায় জনগণের জানমাল রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য। আমরা সারা বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন পর‌্যন্ত সতর্ক পাহারায় থাকবো।”