নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৮ আগস্ট ২০২২
আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দেশবাসী শঙ্কিতমন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জনগণের বিরুদ্ধে জুলুমের আরেকটি নগ্ন বহিঃপ্রকাশ রোববার শাহবাগে বাম ছাত্র সংগঠনের ডাকা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের অমানবিক হামলা এবং অসংখ্য ছাত্রকে আহত করা। মূলত, গণআন্দোলনের ভয়ে অবৈধ সরকার কর্তৃক এখন জুলুমের বৈচিত্র্যময় বিন্যাস দেখা যাচ্ছে।
সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি। ফখরুল বলেন, ভোলায় গুলি চালিয়ে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতার প্রাণ নেওয়ার পর জনদৃষ্টিকে বিভ্রান্ত করতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের লাগামহীন ও অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি ও লুটপাটের প্রতিবাদে গতকাল (রোববার) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে ‘প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহের’ ব্যানারে ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশ বর্বরোচিত হামলা চালায়। এ পৈশাচিক হামলায় অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আওয়ামী সরকারের গণবিরোধী সিদ্ধান্তে জ্বালানি তেলের দাম প্রায় শতকরা ৫০ ভাগ বৃদ্ধিতে জনজীবনে এক দুর্বিষহ নৈরাজ্য নেমে এসেছে- দাবি করে বিএনপির এ নেতা বলেন, কৃষি ও শিল্পের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধিসহ নজিরবিহীনভাবে মূল্যস্ফীতি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়াতে শুরু করেছে।
ফখরুল বলেন, যখন বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, তখন বাংলাদেশে এর দাম বাড়ানো কর্তৃত্ববাদী নব্য বাকশালী সরকারের দম্ভের বিকৃত প্রকাশ। জ্বালানি তেলের দাম কমানোর যৌক্তিক দাবি নিয়ে জনগণ যখন রাস্তায় নেমে আসতে শুরু করেছে, তখন তা দমন করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রাইভেট লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সরকার দেশকে ‘ডেঞ্জার জোনে’ পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এ সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নিজেদের পেটোয়া ছাত্রলীগ-যুবলীগ দিয়ে গোটা দেশকে ডেঞ্জার জোনে পরিণত করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের গণভিত্তি ধসে যাওয়ায় তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে জনগণের ওপর হামলা চালিয়ে প্রতিনিয়ত রক্ত ঝরাচ্ছে। নিজেদের লুটপাট, হরিলুট ও দুর্নীতিসহ সব অপকর্ম ঢাকার জন্যই গণতন্ত্রকে সমাধিস্থ করে বাংলাদেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে আগামী নির্বাচন একতরফা করার জন্য জনগণের ওপর পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন চালাবে, এ পুলিশি হামলায় তারই নমুনা ফুটে উঠেছে। আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, দুঃশাসনের পরিকাঠামো নির্মাণ করে কেউ বেশিদিন মসনদে বসে থাকতে পারেনি।
ফখরুল বলেন, দেশের জনগণ কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। আমি বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর ওপর পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি, আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।