নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৯ ডিসেম্বর ২০২২
গুরুদাসপুর(নাটোর)প্রতিনিধি :
সবুজ পাতার ফাঁকে মাথা উঁচু করে ডাকছে হলুদ পাপড়ি, সবুজের বুকে কাঁচা হলুদের আলপনা আঁকা। মাঠে মাঠে হলুদ ফুলে মৌ মৌ গন্ধ। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিস্তীর্ণ সরিষা মাঠ। সেই মৌমাছি থেকে মধু আহরণে ব্যস্ত মৌয়ালরা। দূর থেকে অতিথিদের হাত বাড়িয়ে ডাকছে হলুদ ফুলের সেই মাঠ। ফুলের সঙ্গে ছবি তুলছে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষ। আর সেই সরিষার ফুলে ফুলে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। সব মিলিয়ে যেন এক অপরূপ রূপে সেজেছে নাটোরে গুরুদাসপুর অধ্যুষিত চলনবিলের অবারিত সরিষার মাঠ। গত বছরে উপজেলায় সরিষা চাষ হয়েছিলো ৭৯০ হেক্টর জমিতে। এবছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৯৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হচ্ছে।
সরেজমিনে চলনবিলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাণিজ্যিকভাবে মৌ-চাষিদের মধু আহরণের এমনই দৃশ্য দেখা মিলে। সারিবদ্ধভাবে বাক্সগুলো সরিষা ক্ষেতের পাশে একটি ফাঁকা জায়গায় রাখা হয়েছে। প্রত্যেকটি বাক্স সরিষা জমিতে এক সপ্তাহ রাখা হয়। এরপর বাক্স খুলে মধু সংগ্রহ করা হয়। এ পদ্ধতিতে একেকটি বাক্স থেকে সপ্তাহে ৬-৮ কেজি হারে মধু পাওয়া যায়।
বর্তমানে চলনবিলে এ পদ্ধতি অবলম্বন করে বিভিন্ন এলাকার প্রায় পাঁচ শতাধিক মৌ-চাষি বাণিজ্যিকভাবে মধু আহরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মধু আহরণে চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা এসব মৌ-চাষিরা সরিষা ক্ষেতের পাশে বাক্স রেখে অস্থায়ীভাবে ঘর উঠিয়ে অবস্থান করছেন।
উপজেলার বামনবাড়িয়া গ্রামের কৃষক নাজমুল হক জানান, এ বছর ৩ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন তিনি। সরিষা গাছে প্রচুর ফুল এসেছে। তিনি আশা করছেন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলন হবে এবং দামও ভালো পাওয়া যাবে।
উপজেলার উদবাড়িয়া গ্রামের কৃষক হাজী মো. জবতল্লাহ বলেন, এ বছরে আমি ১ একর জমিতে সরিষার চাষ করেছি। কৃষি অফিসের পারামর্শ নিয়েছি। জমিতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হয়নি। গত বছর ফলন ভালো হয়নি। আবহাওয়া অনুকূলে আছে। তার মতে এবার ফলন খুব ভালো হবে।
মধু চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, মৌ মাছি চাষের কারণে সরিষার ফলন আরো ভালো হয়। কারণ মৌ মাছিরা সরিষার ফুলে ফুলে বিভিন্নভাবে পরাগায়ন করে থাকে।
কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, বর্তমান বাজারে ভোজ্য তেলের চাহিদা বাড়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। গত বছরের তুলনায় এবার ১৯০ হেক্টর বেশি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে।#৮-১১-২০২২
শরিফুল ইসলাম
০১৭১৩৭০৯৮৩৮