নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৯ নভেম্বর ২০২৩
‘চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে দুই দল’ দৈনিক যুগান্তরের শিরোনাম। পত্রিকাটি বলছে, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনীতিতে চলছে নানা সমীকরণ। কৌশলে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ। পুরোদমে শুরু করেছে নির্বাচনের প্রস্তুতি। পাশাপাশি আন্দোলন মোকাবিলায় করণীয় বিষয়ে নেতাকর্মীদের দেওয়া হচ্ছে নানা নির্দেশনাও।
আর সরকার পতনের একদফার চূড়ান্ত আন্দোলনে রয়েছে বিএনপি। যে কোনো মূল্যে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ঠেকাতে চায়। এজন্য দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে মাঠে রয়েছে দলটি।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের কৌশল ও প্রস্তুতির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায়। আজ সন্ধ্যায় গণভবনে অনুষ্ঠেয় এ সভায় ১০টি সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা রয়েছে।
একদফার চূড়ান্ত আন্দোলনকে আরও বেগবান করে কৌশলে সাফল্য পেতে চায় বিএনপি। এজন্য কর্মসূচি সফলে এবার নেতৃত্বে রাখা হয়েছে তৃণমূল (মাঠ পর্যায়ে) নেতাদের। ইতোমধ্যে তাদের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের কোনো নেতা গ্রেফতার হলেই পরবর্তী নেতাকে দেওয়া হচ্ছে দায়িত্ব।
প্রতিদিন অন্তত অর্ধশতাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে নানা দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন হাইকমান্ড। নিষ্ক্রিয় নেতাদেরও সক্রিয় করা হচ্ছে। চলমান অবরোধ কর্মসূচিতে পর্যায়ক্রমে একেকটি সাংগঠনিক জেলাকে নামানো হচ্ছে মাঠে।
‘নির্বাচনের আগে ভাঙনের চাপ, সতর্ক অবস্থানে বিএনপি’। দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হচ্ছে, অনেক দিন ধরেই বিএনপিতে ভাঙনের গুঞ্জন চলছে। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে মাসছে, ততই গুঞ্জন বাড়ছে।
চাপও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা। নির্বাচনে বিএনপিকে নয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলটির নেতাদের একটা অংশকে বের করে এনে ভোটে দাঁড় করানোর পরিকল্পনা করছে বলে তাদের অভিযোগ।
তাদের মতে, বিএনপি নির্বাচনে না এলে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে এই তৎপরতা চালাচ্ছে। প্রলোভন, টোপ আর চাপ দিয়ে দলের কেন্দ্রীয় অনেক নেতাকেই বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বিগত দিনে রাগ-ক্ষোভ-অভিমানে দল থেকে দূরে সরে যাওয়া নেতারা। বিগত দিনের নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদেরও টার্গেট করা হয়েছে এই ভাঙন প্রক্রিয়ায়।
অবশ্য নতুন দলে যোগ দেওয়ার গুঞ্জনের শীর্ষে থাকা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদও গতকাল মুখ খুলেছেন।
হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, বিএনপির রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন শিগগির। আবার তৃণমূল বিএনপিতেও গতকাল বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের মাঠ পর্যায়ের কয়েকজন নেতাকর্মী যোগ দিয়েছেন।
বিএনপির সাবেক নেতাদের নেতৃত্বে গঠিত বিএনএম নেতারাও বলছেন, সামনে আরও চমক আছে।
'পূর্ণাঙ্গ নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে আ.লীগ’ প্রথম আলোর শিরোনাম। বিএনপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ভোটে থাকছে না ধরে নিয়ে পুরোদমে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। রাজপথে 'সতর্ক পাহারা’ ও ‘শান্তি সমাবেশ’ করলেও ভেতরে-ভেতরে প্রার্থী বাছাই ও নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কাজ চলছে।
সাবেক আমলাদের নিয়ে দুটি দল প্রচারকৌশল প্রণয়ন এবং সরকারের মাঠ প্রশাসনকে ভোটে কীভাবে নিজেদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করা যায়, এর কৌশল ঠিক করতে কাজ করছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক বসছে গণভবনে। ওই বৈঠক থেকে আনুষ্ঠানিক নির্বাচন যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। কারণ, বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের ‘জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি' গঠনের বিষয়টি রয়েছে বলে জানা গেছে।
এটি নির্বাচনকালীন সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করে থাকে। এ ছাড়া নির্বাচন প্রস্তুতিতে কিছু উপকমিটি গঠনের বিষয়ও পরিকল্পনায় রয়েছে। প্রতিবারই ভোটের আগে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয় নির্বাহী কমিটির বৈঠকে।
কালের কণ্ঠের শিরোনাম ‘সংকট থেকে আরো সংকটে অর্থনীতি’। খবরে বলা হচ্ছে, দেশে চলমান অবরোধ-হরতালকে কেন্দ্র করে সহিংস রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ মানুষ। নষ্ট হচ্ছে দেশের সম্পদ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি। সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় আরো বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম।
এমন পরিস্থিতিতে আগে থেকেই সংকটে থাকা অর্থনীতি আরো সংকটে পড়ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আর্থিক খাতগুলো ছাড়িয়ে শিক্ষাসহ সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিভিন্নভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, ২০২০ সালে শুরু হওয়া করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। এতে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি সংকটের মুখে পড়ে।
'নির্বাচন হবে ৩ জানুয়ারি' কালবেলা পত্রিকার শিরোনাম এটি। তারা বলছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের ৩ জানুয়ারি, বুধবার অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচন।
তার আগে আগামী মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ঘোষণা করা হতে পারে তপশিল। সেই লক্ষ্যে ওইদিন সন্ধ্যায় টেলিভিশন ও বেতারে জাতির উদ্দেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের ভাষণ প্রচারের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
রেওয়াজ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনের প্রস্তুতি তুলে ধরবে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি সার্বিক বিষয়ে রাষ্ট্রপতির পরামর্শও চাওয়া হবে। রাষ্ট্রপ্রধানের দিক থেকে নতুন কোনো নির্দেশনা না থাকলে নিজেদের ঠিক করা সূচি অনুযায়ী অগ্রসর হবে ইসি। বঙ্গভবনে বৈঠকের পর কমিশন সভা করে আনুষ্ঠানিকভাবে তপশিল অনুমোদন করা হবে। আপাতত আগামী মঙ্গলবার তপশিল ঘোষণার চিন্তা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা দু-এক দিন পেছাতে পারে বলে জানা গেছে।
বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচনের ব্যাপারে অনড় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছে সরকারবিরোধী বিএনপি ও তাদের মিত্ররা। দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল ও জোটের বিপরীতমুখী এমন অবস্থানের মধ্যেই নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। এখন শুধু তপশিল ঘোষণা এবং সে অনুযায়ী সব কাজ সম্পন্ন করার অপেক্ষা।