জ্বলন্ত সিগারেট হতে বঙ্গবাজারে আগুনের সুত্রপাত : ডিএসসিসি তদন্ত প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক । ১০ এপ্রিল ২০২৩

জ্বলন্ত সিগারেট হতে বঙ্গবাজারে আগুনের সুত্রপাত : ডিএসসিসি তদন্ত প্রতিবেদন

রাজধানীর বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে আগুনের সম্ভাব্য কারণ হিসেবে জ্বলন্ত সিগারেট বা মশার কয়েল হতে পারে বলে মনে করছে এ ঘটনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) তদন্ত কমিটি।

কমিটি জানায়, কমপ্লেক্সের আদর্শ ও মহানগর মার্কেটের মধ্যের কোনো জায়গায় আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ হিসেবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের বিষয়টিকে তারা উড়িয়ে দিয়েছেন।

গত ৪ এপ্রিল ভয়াবহ ঐ বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে আগুনে প্রায় ৩ হাজার দোকান ও মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দোকান মালিক নেতাদের দাবি।

আগুনের ঘটনা তদন্তে ডিএসসিসি ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করে। মার্কেটের নিরাপত্তারক্ষী, ব্যবসায়ী, দোকান মালিক-কর্মচারী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করেছে কমিটি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির একাধিক সদস্য গণমাধ্যমেকে জানান, মহানগর মার্কেট সংলগ্ন আদর্শ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় একটি এমব্রয়ডারি কারখানায় প্রথম আগুন লাগে। কারখানার কাছাকাছি কোনো বিদ্যুৎ বিতরণ বাক্স ছিল না বলে জানান তারা।

আগুন লাগার সময় কয়েকটি স্থান ছাড়া পুরো মার্কেটের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল উল্লেখ করে কমিটির সদস্যরা আরো জানান, রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত ২ মার্কেটের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল।

নিরাপত্তারক্ষীদের বক্তব্যের বরাত দিয়ে তদন্তকারীরা জানান, সে সময় শুধু প্রহরীদের থাকার জায়গা, মসজিদ ও কমপ্লেক্সের অফিসে বিদ্যুৎ ছিল। এছাড়া ওয়াই-ফাই রাউটার চালু ছিল।

তদন্তকারীরা জানান, আদর্শ মার্কেটের তৃতীয় তলায় নিরাপত্তাকর্মীদের থাকার কক্ষ ছিল। কক্ষের নিচে ছিল এমব্রয়ডারি কারখানা ও একটি গুদাম।

সেহরির সময় তৃতীয় তলা থেকে সিগারেটের বাট দ্বিতীয় তলায় পড়তে পারে এবং এতে এমব্রয়ডারি কারখানা বা গুদামে আগুন লাগতে পারে বলে তারা মনে করছেন। এছাড়া নিরাপত্তাকর্মীদের থাকার স্থানে জ্বলন্ত মশার কয়েল থেকেও আগুন লাগতে পারে।

কমিটির প্রধান ডিএসসিসি জোন-১ এর নির্বাহী কর্মকর্তা মেরিনা নাজনীন গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা প্রায় সব কাজ শেষ করেছি। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা এখনো পাইনি। আজ সোমবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

আগুন লাগার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আমাদের পর্যবেক্ষণ জানাব।

ডিএসসিসির কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত কমিটিতে কোনো ফায়ার এক্সপার্ট নেই। কমিটিকে আগুনের কারণ অনুসন্ধান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে বলা হয়েছে।

৩ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিসও তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।