নিজস্ব প্রতিবেদক । ১০ জুলাই ২০২৩
একটি নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য নতুন আন্দোলনের যে যাত্রা, সেটি ১২ জুলাই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যে যুগপৎ আন্দোলন চলছে, সে আন্দোলনের সব রাজনৈতিক দল-জোটগুলো-আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী ১২ তারিখে আমরা প্রত্যেকে আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে গণতন্ত্রের জন্য, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আন্দোলনের নতুন যে যাত্রা, সে যাত্রার ঘোষণা আমরা ইনশা আল্লাহ দেব।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দোয়া মাহফিলে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন। এ সময় তিনি উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘সবাইকে অনুরোধ করব, দোয়া করবেন যেন শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচিগুলো পালন করতে পারি, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষকে মুক্ত করতে পারি।’
বাধ্য হয়েই আন্দোলনে নেমেছেন এমন কথা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। এই আন্দোলন তো আমরা ইচ্ছা করে করছি না, বাধ্য হয়ে করছি। আমরা নির্বাচন করেই পরিবর্তনটা চাই। কিন্তু নির্বাচন তো আপনি করতে দিচ্ছেন না। নির্বাচন আপনি নিজে নিজে করছেন আপনার মতো করে। সেই ব্যবস্থা তো চলতে পারে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেই কারণে আমরা বারবার বলছি, এই দেশটাকে বাঁচানোর জন্য এখন আপনাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে, পদত্যাগ করে একটা নির্বচন দিন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই দেশের সংকট দূর হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি, এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করে।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও রফিকুল ইসলাম মিয়ার সুস্থতা কামনায় এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, ‘বর্তমান অবৈধ ও নিপীড়নকারী সরকার অত্যন্ত সচেতনভাবে গোটা জাতি-রাষ্ট্রকেই অসুস্থ করে ফেলেছে। তিনি বলেন, এই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা খালেদা জিয়াকে এই সরকার আটক করে রেখেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করে রেখেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যেসব নেতা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ৪০, ৫০, ৮০, ১০০টি মামলা আছে। দুজন-তিনজন নেতার বিরুদ্ধে ৩০০টি পর্যন্ত মামলা আছে। তিনি বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমকে প্রশ্ন করতে চাই, আপনারা আমাকে দেখাতে পারবেন যে একটি গণতান্ত্রিক দেশে, একটি গণতান্ত্রিক দলের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৪০ লাখ মিথ্যা মামলা আছে। দলের প্রধান থেকে শুরু করে এমন একজন নেতা নেই, যাঁর বিরুদ্ধে মামলা নেই।’
সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার কারাগার থেকে বাসায় থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘উনি (প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে) বলেন আমি করুণা করেছি। তাঁর দয়ায় নাকি...আমরা তো দয়া চাইনি, আমরা তো জাস্টিস চেয়েছি। আমরা ন্যায়বিচার চেয়েছি, প্রাপ্য চেয়েছি। এখানে আমরা কোনো রাজত্বে বাস করি না। রাজা-রানির রাজত্বে বাস করি না।’
বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের পর খালেদা জিয়াসহ অসুস্থ নেতাদের আরোগ্য কামনা করে নেতা-কর্মীরা মিলাদ ও দোয়ায় অংশ নেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, জয়নাল আবেদীন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, কামরুজ্জামান রতন, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।