নিজস্ব প্রতিবেদক । ১২ ডিসেম্বর ২০২৩
ব্যারিস্টার তমিজুল হকের পুত্র আদম তামিজী হক ১৯৭৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্কুলজীবনে ইংল্যান্ডের বোর্ডিং স্কুলে কাটিয়েছেন। ১৬ বছর বয়সে তিনি বোর্ডিং স্কুল ছেড়ে লন্ডনের একটি টিউটোরিয়াল কলেজে চলে যান। তানজানিয়ার জাঞ্জিবারে অল্প কিছুদিন থাকার পরে, তিনি উত্তর ইংল্যান্ডের হাডার্সফিল্ডে চলে যান এবং হাডার্সফিল্ডের হিলটন হোটেলে কাজ করার আগে ক্যাটারিংয়ের একটি কোর্স করেন। আদম তমিজী হক যুক্তরাজ্যের মিডলসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
সুদূর ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করার সময়ও তার হৃদয় বাংলাদেশেই ছিল। তার হৃদয় সর্বদা দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাঁদে। স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশে এসে সৎ ও সাহসের সঙ্গে দেশ ও দেশবাসীর সেবা করা। তিনি যেকোনো দুর্যোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন একজন শিক্ষানুরাগী, যার জন্যই তিনি বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাটের উন্নয়নে কাজ করেছেন। তিনি তার নিজস্ব অর্থায়নে গাজিপুরে ‘শেখ রাসেল মানবিক স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেছেন।
শৈশবকাল থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন, এবং বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনা মূলক বক্তৃতা তাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করেছে। ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে প্রচন্ড মানসিক চাপে যখন তিনি ফেসবুক লাইভে এসে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেছিলেন, তখনও তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা তুলে ধরেছেন। মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নেতা ও রাজনৈতিক আদর্শ।
বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর এই আদর্শের সৈনিক এবং হক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদম তমিজি হককে চিকিৎসার জন্য রাজধানীর একটি রিহ্যাব সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দল তাকে গুলশানের বাসা থেকে আটক করে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেয় এবং সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলশানের একটি রিহ্যাব সেন্টারে রাখা হয়েছে। সূত্র মতে জানা গেছে, প্রায় দুই ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডিবি কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্ত নেন। তারা বলছেন, আদম তমিজি হক প্রচন্ড মানসিক চাপে রয়েছেন এবং সেই জন্যই তিনি মূলত বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অসংলগ্ন কথা বার্তা বলেছেন।
সূত্র বলছে, এক বা একাধিক দেশবিরোধী চক্র আদম তমিজি হককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলতে অনুপ্রাণিত করেছে। তারা বলছে, যখন আদম তমিজি হক তাঁর ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হয় তখনই মূলত এই চক্রগুলো তাকে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলে।
তার পরবর্তিতে, গত সেপ্টেম্বরে বিদেশ থেকে ফেসবুক লাইভে এসে নিজের পাসপোর্ট পুড়িয়ে নতুন করে আলোচনায় আসেন আদম তমিজি হক। পরে তাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। গত ১৩ নভেম্বর দেশে ফেরেন বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বৈত এই নাগরিক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে আদম তমিজির বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। গত ১৬ নভেম্বর রাতে তার বাসায় অভিযান চালায় র্যাব।