নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৩ নভেম্বর ২০২৩
নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম, ‘নির্বাচনে সঙ্গী খুঁজতে এখনো ব্যস্ত আওয়ামী লীগ’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিএনপিবিহীন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেশি বেশি দলকে ভোটের মাঠে নামানোর কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে তাতে এখনো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি।
সংবিধান মেনে ও যথাসময়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে অনড় আওয়ামী লীগ। তবে এই নির্বাচনী যাত্রায় আওয়ামী লীগের সঙ্গী ও প্রতিদ্বন্দ্বী কারা হবে, এ বিষয়ে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছে না ক্ষমতাসীন দলটি।
অথচ বিএনপিবিহীন ভোটে বেশিসংখ্যক দলকে ভোটে আনা এবং তা তফসিল ঘোষণার আগেই চূড়ান্ত করার লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগের।
বিএনপি থেকে নেতাদের অনেকে বেরিয়ে এসে নতুন দল গড়বেন, অন্য দলে যোগ দেবেন বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন—আওয়ামী লীগের এমন প্রত্যাশাও অনেকটা আলোচনার মধ্যেই এখনো সীমাবদ্ধ রয়েছে।
বিএনপি ও এর মিত্ররা আগামী নির্বাচন বর্জন করতে পারে—এমনটা আওয়ামী লীগের ভাবনায় অনেক আগে থেকেই ছিল। দলটির সূত্রগুলো বলছে, এ জন্য বিকল্প হিসেবে ভোটে অংশগ্রহণ বাড়াতে ১৪–দলীয় জোট ও মিত্রদের বাইরে অনেক ইসলামি দলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে আওয়ামী লীগ।
বিএনপির নেতাদের দল থেকে বের করে এনে ভোটে রাখার বিষয়েও তৎপরতা চলছে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব নিয়ে কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম, ‘নির্বাচনে ভারতের অবস্থান নিয়ে সতর্ক বিএনপি’।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভারতের অবস্থান বদল হবে না, এমন ধারণা বিএনপির আগেই ছিল।
তবে দলটি মনে করছে, গত দুই নির্বাচনের মতো এবার ঢাকায় ভারতের উপস্থিতি ততটা জোরালো ও প্রকাশ্য নয়।
শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বিএনপি নেতারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁদের বিশ্লেষণ হচ্ছে, ভারত বর্তমান সরকারের সঙ্গে থাকলেও এবার আগের মতো সরাসরি মাঠ পর্যায়ে সংযুক্ত নয়।
তবে ভূ-রাজনৈতিক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অবস্থান শিগগির পরিবর্তন হবে না বলে তারা মনে করেন।
গত শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সে দেশের মানুষই তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
নেতাদের কারো করো মত হলো, ভারতের বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপির একটি কৌশলী প্রতিক্রিয়া আসা উচিত। কারো কারো মত, বিষয়টি কূটনীতিক পর্যায়ে আলোচনায় নেওয়া যেতে পারে।
তবে চীনের বিষয়ে বক্তব্য দেওয়াটা যতটা সহজ, ভারতের বিষয়ে ততটা নয় বলে মত দেন একাধিক নেতা।
জনপ্রশাসন নিয়ে যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম, ‘পদোন্নতির উৎসব ভোটের আগে’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগেই সরকার প্রশাসন, পুলিশ, শিক্ষাসহ অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়েছে।
জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ভোটের আগে গত কয়েক মাসে এই তিন ক্যাডারের বিভিন্ন পদে এক হাজার ৬০৮ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
বেশ ‘উদারভাবেই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও মেধাবী কিছু কর্মকর্তা বঞ্চিত হওয়ায় প্রায় পুরো বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
প্রশাসন বিশ্লেষকদের ব্যাখ্যা হচ্ছে, জাতীয় নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন প্রশাসন পুলিশ এবং শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এতে নতুন পদ প্রাপ্ত সবাই সন্তুষ্ট।
সন্তুষ্ট মানুষ খুশি মনে আগ্রহী হয়ে অনেক কিছুই করে থাকে। যা সাধারণত ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে যায় না।
তবে সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের দাবি, ‘পদ শূন্য থাকলে এবং পদোন্নাতি পাওয়ার যোগ্য কর্মকর্তা থাকলে তা দিতে কোনো সমস্যা নেই। ’
তবে কিছুটা অসন্তোষ আছে মাঠপর্যায়ের নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে। বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসনের নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতিবঞ্চিত।
এদিকে শ্রমিক বিক্ষোভে আহত চিকিৎসাধীন এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম, ‘Was shooting at them the only option?' অর্থাৎ ‘তাদের উপর গুলি চালানোই কি একমাত্র উপায় ছিল?’
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, গত আটই নভেম্বর বেতন বৃদ্ধি নিয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের এক তৈরি পোশাক শ্রমিক গুলিতে আহত হয়েছিলেন।
রবিবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ভুক্তভোগীর নাম জালাল উদ্দিন বলে খবর প্রকাশ হয়েছে।
এ নিয়ে সাম্প্রতিক তৈরি পোশাক শিল্পে চলমান অসন্তোষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার জনে।
জালাল উদ্দিনের স্ত্রী নার্গিস পারভিন পুলিশের এই গুলি ছোড়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তিনি বলেন, ‘কেন তারা [পুলিশ] গুলি করেছিল? তারা কি অন্য কোনো উপায়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে পারতো না?
“তারা যে বন্দুক ব্যবহার করেছে এর আঘাতে আমার স্বামীর পেট ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়!" ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে স্তব্ধ ও বিভ্রান্ত হয়ে বসে থাকা নার্গিস ক্রন্দনরত অবস্থায় এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রসঙ্গে সমকালের প্রধান শিরোনাম, ‘আটকে রাখার ‘গোপন স্থানের’ তালিকা চায় জাতিসংঘ’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে সোমবার বাংলাদেশের মানবাধিকার রেকর্ড পর্যালোচনা করা হবে।
বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী আটক অনেক ব্যক্তিকে গোপন স্থানে রেখে নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা অস্বীকার করেছে।
রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের এমন অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের মতো ঘটনা নিয়ে আগেই উদ্বেগ জানিয়েছিল জাতিসংঘ।
তুলে নিয়ে যেসব স্থানে ভুক্তভোগীদের ‘গোপনে আটকে রাখা হয়’, এখন সেগুলোর তালিকা প্রকাশ করতে সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
সেই সঙ্গে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ স্বাধীন সংস্থা দিয়ে নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্ত করার পাশাপাশি দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে সুপারিশ করা হয়েছে।
সেইসাথে ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দিতে একটি কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে, যাতে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।
আইনে এমন ধারা যুক্ত করতে বলা হয়েছে, যাতে গুম রোধ করা যায়। সেই সঙ্গে নিরাপত্তা খাতের সংস্কার চেয়েছে জাতিসংঘ।