যৌন হয়রানি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে : ডেপুটি স্পিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৪ ডিসেম্বর ২০২২

যৌন হয়রানি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে : ডেপুটি স্পিকার

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক বলেছেন, যৌন হয়রানি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যৌন হয়রানি বাড়ছে।

আজ মঙ্গলবার প্রস্তাবিত ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২২’–এর খসড়ার ওপর আলোচনার সময় এসব কথা বলেন ডেপুটি স্পিকার।

জাতীয় সংসদ ভবনের পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাবে খসড়ার ওপর মতামত জানতে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে যৌথভাবে পার্লামেন্টেরিয়ান ককাস অন চাইল্ড রাইটস এবং সরকারি–বেসরকারি ১৯৮টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্ল্যাটফর্ম জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম।

বক্তারা খসড়া আইনে যৌন নির্যাতনের সংজ্ঞা, সাজা, কমিটির নাম ও এখতিয়ার এবং আইনটি কার্যকরভাবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে কী ধরনের প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হবে তা নিয়ে মতামত তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন, নারী ও মেয়েশিশুদের পাশাপাশি ছেলেশিশু ও তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিরাও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। দুর্যোগের সময় যৌন হয়রানির ঘটনা বেশি ঘটে। আইন চূড়ান্ত করার আগে এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে। এ অপরাধে সাজা কতটুকু হতে পারে সেটিও আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারণ করার সুপারিশ উঠে আসে সভায়। যৌন হয়রানি প্রতিরোধে অভিভাবক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির ওপর জোর দেওয়া হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক বলেন, যৌন হয়রানি প্রতিকারের প্রেক্ষাপট থেকে আইন প্রণয়নের আলোচনা এসেছে। আইনটি এমন হতে হবে যেন তা অপরাধীদের জন্য হুমকি হয়। আইনটি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করতে আইন প্রয়োগকারী ব্যক্তিদেরও সংবেদনশীল হতে হবে।

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা বলেন, আইনটি নিয়ে আলোচনা যেন শুধু ঢাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে। পাহাড়ের মানুষেরা সহজে আইনের আশ্রয় নিতে চান না। তাঁদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

সংরক্ষিত মহিলা আসনের অপর সংসদ সদস্য আদিবা আঞ্জুম বলেন, যৌন হয়রানির প্রতিকারের আইনটি যেন কাউকে না ফাঁসাতে ব্যবহার করা হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে নতুন নতুন ধরনের অপরাধ বাড়ছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও লেবার আপিলেট ট্রাইব্যুনালের সদস্য (জ্যেষ্ঠ জেলা জজ) তানজিনা ইসমাইল বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আইনটি প্রণয়ন করা দরকার।

ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি বিভাগের পরিচালক নবনীতা চৌধুরী বলেন, মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যার ঘটনা থেকে বোঝা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিকারে কমিটি গঠন করা কতটা জরুরি। কোন ধরনের কমিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য কার্যকর হবে তার ওপর আরও আলোকপাত করতে হবে।

বেসরকারি সংস্থা ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের (টিএমএসএস) নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা বেগম যৌন হয়রানি প্রতিরোধের ওপর বেশি জোর দেন।