নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৫ জানুয়ারি ২০২৩
কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ :
নওগাঁর মহাদেবপুরে ইটভাটায় প্রকাশ্যে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। সবরকম নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনের পর দিন কাঠ পোড়ানো হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ন্যুনতমও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে তারা নির্দিধায় এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
মহামান্য হাইকোর্ট সম্প্রতি দেশের সব ইটভাটা বন্ধ রাখা নির্দেশ দিলেও সে নির্দেশ এ জেলায় মানা হয়নি। এমাসের জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় অবৈধ ইটভাটা, অবৈধ পুকুর খনন ও ফসলী জমির টপ সয়েল কাটা মাটিখেকোদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলার সব উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হলেও তা মানা হচ্ছেনা।
সরেজমিনে উপজেলার চাঁন্দাশ ইউনিয়নের বাগডোব এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের অদূরে বাগডোব-ছাতড়া সড়কের দক্ষিণ পাশ্বের পাকা সড়ক সংলগ্ন একটি ইটভাটায় জমা করে রাখা হয়েছে মণকে মণ খড়ি। কয়েকজন শ্রমিক মাথায় করে খড়িগুলো বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ভাটার উপরে। উপরে জমা রাখা হয়েছে আরও খড়ি। শ্রমিকেরা সেসব খড়ি দিচ্ছেন ভাটায় আগুনে। প্রকাশ্যে দিনের বেলায় পাকা সড়কের পাশেই চলছে এসব। এই ইটভাটার নাম এসএমএস ব্রিকস। ভাটা এলাকাতেই ছিলেন এর ম্যানেজার বেলাল হোসেন। তিনি জানালেন এই ইটভাটার মালিক মান্দা উপজেলার ফেরিঘাট এলাকার মামুনুর রশিদ।
মওসুমের শুরু থেকেই এই ইটভাটায় চলছে খড়ি পোড়ানো। কাঠ পোড়ানো নিষিদ্ধ জেনেও সকল মহলকে ম্যানেজ করেই এই ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে বলেও তিনি জানান। এখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে চাঁন্দাশ এলাকায় রয়েছে তাদের কাঁচা ইট তৈরির বেড। সেখান থেকে এনে এখানে পোড়ানো হয়। ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায় কয়েক হাজার মণ কাঠ জমা করে রাখা হয়েছে। বিষয়টি জানতে ভাটা মালিকের মোবাইলফোনে বার বার রিং দিলেও তিনি তা রিসিফ করেননি।
এই ভাটার পাশেই রয়েছে আর একটি বিশাল ইটভাটা। এর মালিক ইউসুফ আলী। ভাটার পাশের ফসলী জমির উর্বর মাটি টপ সয়েল ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে এনে পাহাড়সমান উঁচু করে রাখা হয়েছে এখানে। গতবছর ভ্রাম্যমাণ আদালতে এই ভাটা মালিকের দুবার জরিমানা করা হয়। কিন্তু এই ভাটার অবৈধ কারবার বন্ধ হয়নি। কিংবা এই অবৈধ ভাটা বন্ধে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
জানতে চাইলে উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি খাজুর ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন জানান, এই দুই ইটভাটা তাদের সমিতির সদস্য নয়। সমিতি ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো কখনোই সমর্থন করেনা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসান জানান, এই উপজেলার সবকটি ইটভাটাই অবৈধ। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নওগাঁ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মলিন মিয়া জানান, মহাদেবপুরের কোন ইটভাটারই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। ইটের ভাটায় কাঠ পোড়ালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।