নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৫ ডিসেম্বর ২০২২
মোকছেদুল মুমীন, জাককানইবি প্রতিনিধি : যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে কালো ব্যাজ ধারণ করার মধ্যদিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়।
এরপর জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে ক্যাম্পাসে ‘চির উন্নত মম শির’ প্রাঙ্গণে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারী, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) ড. তারিকুল ইসলাম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল হালিম, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. তুহিনুর রহমান, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী জোবায়ের হোসেন,বঙ্গবন্ধু-নীল দলের সভাপতি প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধানসহ অন্যরা।
এসময় কলা অনুষদ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব হল, দোলন-চাঁপা হল, শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু নীল দল, কর্মকর্তা পরিষদ, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
পুষ্পস্তব অর্পণ শেষে প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: বুদ্ধিবৃত্তিক উত্তরাধিকার’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর।
মুক্তিযুদ্ধের বুদ্ধিজীবী শ্রেণির অবদান অপরিসীম মন্তব্য করে উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, যেকোন রাজনৈতিক সংগ্রামের পেছনে বুদ্ধিবৃত্তিক সংগ্রাম ক্রিয়াশীল থাকে।
মাঠের যে যুদ্ধ সেই বাহ্যিক লড়াইয়ের আগে একটি মনস্তাত্তি¡ক যুদ্ধ থাকে। বুদ্ধিজীবীরা এই মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে অংশ নেন। যেটি আমরা বাইরে থেকে সাধারণত দেখি না। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধেও বুদ্ধিজীবী শ্রেণি মনস্তাত্তি¡ক লড়াইয়ে অংশ নিয়েছেন। আমাদের মুক্তির লড়াইয়ের একাত্তর পর্যন্ত পৌঁছানোর সুদীর্ঘ বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাস রয়েছে।
উপাচার্য বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আগের প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে বুদ্ধিজীবীদের অবদান অপরিসীম। বঙ্গবন্ধু সবসময় বুদ্ধিজীবী শ্রেণির সঙ্গে মিশতেন। তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করতেন। এমনকি বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরও তার বঙ্গভবনের দরজা বুদ্ধিজীবীদের জন্য সবসময় খোলা ছিল।
লড়াই সংগ্রামের বুদ্ধিজীবীদের অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, পৃথিবীর যখনই কোথাও লড়াই হয়েছে, সাধারণ মানুষ জেগে উঠবার চেষ্টা করেছে তখন প্রণোদনা জুগিয়েছেন বুদ্ধিজীবীরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ,ভিয়েতনাম যুদ্ধ, সোভিয়েত বিপ্লবের দিকে তাকালে আমরা সেটি দেখতে পাই। ম্যক্সিম গোর্কি রাশিয়ান জনগণকে, হো চি মিন ভিয়েতনামের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। বুদ্ধিজীবীরা আমাদের মনোজগৎকে ঋদ্ধ করেন তাই কুশাসকরা এই শ্রেণিকে দমিয়ে রাখতে চেষ্টা করে।
যে জাতির সংস্কৃতি যত উন্নত সে জাতিকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারে না উল্লেখ করে প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, এই দিবসের সংকল্প হবে, বুদ্ধিজীবীদের চিন্তার আলোকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলা গড়া।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম। আলোচনা করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. তুহিনুর রহমান, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী জোবায়ের হোসেন,বঙ্গবন্ধু-নীল দলের সভাপতি প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট নুসরাত শারমিন তানিয়া।
স্বাগত বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দোলন-চাঁপা হলের প্রভোস্ট মাশকুরা রহমান রিদম ও থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুশফিকুর রহমান।
দিবসটি উপলক্ষ্যে সন্ধ্যা ছয়টায় ‘চির উন্নত মম শির’ প্রাঙ্গণে প্রদীপ প্রজ্জলন করা হবে।