বগুড়ায় নিখিল-সান্ত্বনার বিয়েতে দেনমোহর ১০১টি বই

নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

বগুড়ায় নিখিল-সান্ত্বনার বিয়েতে দেনমোহর ১০১টি বই

বগুড়ার ধুনটে ১০১টি বই দেনমোহর দিয়ে বিয়ে করেছেন নিখিল নওশাদ ও সান্ত্বনা খাতুন দম্পতি। এসব বই দিয়ে পারিবারিক পাঠাগার গড়ে তুলতে চান তারা।

শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার চিকাশী ইউনিয়নের বরিয়া গ্রামে ছেলের নানার বাড়িতে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়।

এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা শুরু হয়েছে, অনেকেই বিষয়টির প্রশংসা করছেন। 

বিয়ে রেজিস্ট্রি করেন গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের কাজি আবদুল হান্নান। এ সময় কনেকে ১১ হাজার টাকা মূল্যের নাক ফুল, আংটি ও ৭০টি বই তাৎক্ষণিকভাবে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩১টি বই পর্যায়ক্রমে দেওয়া করা হবে। বিয়ের অনুষ্ঠানে ছেলের বাবা, মেয়ের মা ও আত্মীয়-স্বজন উপস্থিত ছিলেন। ব্যতিক্রম বিয়ের খবরে গ্রামবাসী সেখানে ছুটে যান।

 বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ সমাজতান্ত্রিক ফ্রন্টের সাবেক নেতা নিখিল নওশাদ (৩৩) ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব গুয়াডহরী গ্রামের সাবেক আইনজীবী সহকারী সামসুল ইসলামের ছেলে। নিখিল সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে বিএসএস পাস করেছেন। একটি ওষুধ কোম্পানির সেলস বিভাগের প্রধান হিসেবে চাকরি করছেন। “বিরোধ” নামে একটি লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদক। একই কলেজে এক ক্লাস নিচে পড়তেন বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার কামালেরপাড়া গ্রামের মেয়ে সান্ত্বনা খাতুন। কবিতা লেখালেখির মাধ্যমে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

সান্ত্বনা ইংরেজিতে মাস্টার্স করেছেন। বর্তমানে বগুড়া শহরের চেলোপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছেন। প্রেমের সম্পর্ক থেকে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের দেনমোহর হিসেবে কনে দুই লাখ দুই হাজার টাকা মূল্যের ১০১টি বই দাবি করেন। উভয় পরিবার তাদের বিয়ের সিদ্ধান্তকে মেনে নেন। গত বৃহস্পতিবার শহরের বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ঘুরে ৭০টি বই কেনেন তারা।

কনের জন্য ১১ হাজার টাকা খরচে বই, একটি নাক ফুল ও একটি আংটি কেনা হয়। অবশিষ্ট টাকার মধ্যে আরও ৩১টি বই কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বর নিখিল নওশাদ বলেন, তার ভালোবাসার মানুষ বিয়ের মোহরানা হিসেবে সোনা, হিরা নয়; ১০১টি বই চেয়েছিল। যৌতুকহীন বিয়েতে বই মোহরানা দেওয়ার ঘটনা অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে।

কনে সান্ত্বনা বলেন, তিনি নওশাদের কবিতার প্রেমে মুগ্ধ হয়েছিলেন। কবিতার মধ্য দিয়ে তাদের প্রেম ও বিয়ে। বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তিনি মোহরানা হিসেবে ১০১টি বই চেয়েছিলেন। কারণ টাকার চেয়ে বইয়ের ওজন ও সম্মান অনেক বেশি। বিয়ের সময় কিছু বই পেয়েছেন। বাকি বই পরে নিজে উপস্থিত থেকে কিনবেন। দুজনই একে অপরকে পেয়ে অভিভূত। তারা এসব বই দিয়ে বাড়িতে পারিবারিক পাঠাগার গড়ে তুলবেন।