তামাক থেকে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি প্রায় ২৭ শতাংশ : হোসেন আলী খন্দকার

নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৮ নভেম্বর ২০২৩

তামাক থেকে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি প্রায় ২৭ শতাংশ : হোসেন আলী খন্দকার

তামাক থেকে সরকারের যে রাজস্ব আয় আসে তার চেয়ে তামাক ব্যবহারজনিত কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা বাবদ ব্যয় ২৭ শতাংশ বেশী বলে জানিয়েছেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রন সেল (এনটিসিসি) সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার

তামাকের কারণে বার্ষিক ক্ষতি প্রায় আট হাজার কোটি টাকা । তামাক ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি বিষয়ে সাধারণ মানুষকে অবহিত করতে হবে। তামাক থেকে বার্ষিক রাজস্ব আয় প্রায় ২২ হাজার ৮১০ কোটি এবং চিকিৎসা ব্যয় প্রায় ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা ।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে নারী মৈত্রী আয়োজিত ’জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও আমাদের করণীয়‘ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

হোসেন আলী খোন্দকার বলেন, মানুষের ভ্রান্ত ধারণা দূর করার পাশাপাশি প্রয়োজন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা। তামাকের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত থেকে ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) প্রোগ্রামস অফিসার মো. আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, তামাক একটি প্রাণঘাতী দ্রব্য। তামাকের পক্ষে বলার মতো একটি শব্দও নেই। তামাক পরিবেশ, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। টোব্যাকো এটলাস ২০১৮- এর তথ্য মতে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর বাংলাদেশে এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেন। তার মানে প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ প্রাণ হারান। জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় ও জীবন রক্ষায় দ্রুততম সময়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে হবে এখনই।

আর একটি প্রাণও যাতে না হারাতে হয় তামাকের কারণে সে প্রেক্ষাপটে সোহরাব হাসান বলেন, প্রতিদিন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন এই ভয়ঙ্কর তামাকের আগ্রাসনে। তামাকের এই সর্বগ্রাসী আগ্রাসন ও তামাক মহামারী আমাদের জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। আমাদের তামাকের ভয়াবহতা সম্পর্কে আরও সোচ্চার হতে হবে ।পাশাপাশি তামাক কোম্পানি গুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে হবে।

নারী স্বাস্থ্যের কথায় জোর দিয়ে দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক বলেন, ধূমপান শুধু ব্যবহারকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে না, উপরন্তু যারা তাদের আসে পাশে থাকে তারাও এর ক্ষতির প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে পারে না। বিশেষভাবে শিশু, নারী ও নারীর গর্ভের সন্তান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সকল পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও গণপরিবহণে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে নারী মৈত্রী নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি বলেন, বর্তমানে তরুণরা ই-সিগারেট এর প্রতি বেশি আসক্ত হয়ে পরছে। তাদের এই আসক্তি থেকে বের করে আনতে ই-সিগারেট বাজারজাত বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরী। শুধু তাই নয় বন্ধ কর‍তে হবে সিগারেট এর খুচরা শলাকা বিক্রি। পাশাপাশি তামাকজাত পণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর আকার ৫০ শতাংশ থেকে ৯০ শতাং‌শে বৃদ্ধি করা এবং বিক্রয় স্থানে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শন বন্ধ করতে হবে।