বগুড়ায় পুলিশের টিয়ার গ্যাসের ধোঁয়ায় ৫০ শিক্ষার্থী হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৯ জুলাই ২০২৩

বগুড়ায় পুলিশের টিয়ার গ্যাসের ধোঁয়ায় ৫০ শিক্ষার্থী হাসপাতালে

বগুড়ায় বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ব্যবহৃত টিয়ার গ্যাসের ধোঁয়ায় শহরের ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে ২৭ জনকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই বিদ্যালয়ের পাশেই পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ হয়। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকের শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। গুরুতর অসুস্থদের আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। দুপুর ৩টার দিকে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের দেখতে হাসপাতালে যান সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শফিউল আজম।

তিনি জানান, টিয়ারগ্যাসের ধোঁয়ার পাশাপাশি আতঙ্কের কারণে একসঙ্গে এতো শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

তার ভাষায়, ‘সাধারণত অনেক শিক্ষার্থী একসঙ্গে থাকলে কয়েকজন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে অন্যরাও আতঙ্কিত হয়ে দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ে। এখানেও তাই হয়েছে। ভয়ের কিছু নেই।’

সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপির পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুরে শহরের দক্ষিণের প্রবেশমুখ বনানী এবং উত্তরের প্রবেশমুখ মাটিডালি এলাকা থেকে জিরো পয়েন্ট সাতমাথা অভিমুখে পদযাত্রা বের করা হয়। মাটিডালি থেকে আসা পদযাত্রাটি জিরো পয়েন্টে না গিয়ে শহরের নওয়াববাড়ি সড়কে দলীয় কার্যালয়ের দিকে গিয়ে নির্বিঘ্নে চলে যায়। তবে বনানীর দিক থেকে আসা পদযাত্রাটি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড়ের দিকে পৌঁছার পর বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ জলেশব জলেশ্বরীতলার দিকে ঘুরে গেলেও পেছনে থাকা নেতা-কর্মীরা জিরো পয়েন্ট সাতমাথার দিকে যেতে চায়। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। বিএনপি নেতা-কর্মীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তখন পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং রাবার বুলেট ও ব্ল্যাঙ্ক ফায়ার করে। প্রায় ২০ মিনিট ধরে ওই সংঘর্ষ চলে। এ সময় সংঘর্ষস্থল ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে ওই সংঘর্ষ জলেশ্বরীতলা এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে।

ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহাদৎ হোসেন জানান, সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর স্কুল জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর টিয়ার গ্যাসের ঝাঁঝালো ধোঁয়ায় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, ‘মূলত আতঙ্ক আর টিয়ারশেলের ধোঁয়ার কারণেই শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। কারও কারও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।’

দুপুর ৩টার দিকে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসিইউয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন বাবা-মায়েরা অপেক্ষা করছেন।

মমতাজ বেগম নামে এক নারী বলেন, তার মেয়ে নাদিয়াকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে বলে স্কুল থেকে জানানো হয়েছে।