বিএনপির ১০ ডিসেম্বর মহাসমাবেশ, ১লা ডিসেম্বর থেকেই রাজপথ দখলে রাখবে আওয়ামী লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২০ অক্টোবর ২০২২

বিএনপির ১০ ডিসেম্বর মহাসমাবেশ, ১লা ডিসেম্বর থেকেই রাজপথ দখলে রাখবে আওয়ামী লীগ

প্রধান বিরোধীদল বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে বিপুল মানুষের উপস্থিতি এবং তাদের নেতাদের সরকার পতনের হুমকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ইতিমধ্যে ভাবনায় ফেলেছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে কী হবে তা নিয়ে এরই মধ্যে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনাও শুরু হয়েছে।

বিএনপি যাতে ঢাকার সমাবেশে বেশী লোক জমায়েত না করতে পারে সেই পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগ। দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ডেকেছে আগামী ২৮ অক্টোবর। এই সভাতে ১০ ডিসেম্বর নিয়ে আলোচনা হবে বলে আভাস দিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
বিএনপি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিপুল মানুষ এনে সরকারকে যেন চাপে ফেলতে না পারে সে জন্য ক্ষমতাসীন দলটি আগামী ১লা ডিসেম্বর থেকেই রাজপথে থাকবে বলে একাধিক সূত্র বাংলা ওয়্যারকে নিশ্চিত করেছে।

বিএনপি যাতে ঢাকার বাইরে থেকে তাদের দলের নেতাকর্মী ঢাকার সমাবেশে না আনতে পারে সে জন্য ঢাকার সাথে বিভিন্ন জেলার বাস চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে। খুলনা থেকে ১৮টি রুটে দুই শতাধিক বাস চলাচল করে। ২১ ও ২২ অক্টোবর এই সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বিএনপি একের পর এক সমাবেশ কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে। জমায়েতও চোখে পড়ার মতো। বিএনপির এসব কর্মসূচি, সমমনা দলগুলোর সঙ্গে ঘন ঘন বৈঠক, বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ; এসবের পেছনের কারণ বোঝার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ।

ক্ষমতাসীন দলের আরেকটি সূত্র বলছে, এই মুহূর্তে বিএনপিকে খুব একটা চাপে ফেলবে না আওয়ামী লীগ কারণ বিদেশি শক্তিগুলো বিভিন্নভাবে এই সরকারের কর্মকান্ডের ওপর নজর রাখছে। ইতিমধ্যে বর্তমান সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বিএনপির পরবর্তী সমাবেশ খুলনায়, আগামী শনিবার। এরপর পর্যায়ক্রমে বাকি বিভাগীয় সদরে হবে। সর্বশেষ ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে দলটি। এদিকে ৬ নভেম্বর থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। ১০ ডিসেম্বর পরীক্ষা না থাকলেও তার আগে–পরে আছে। এ কারণে বিএনপিকে মহাসমাবেশ করতে দেওয়া হবে কি না, সেটা নিয়েও আলোচনা আছে। শেষ পর্যন্ত করতে দিলেও উপস্থিতি কমানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে বলে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, ঢাকার বাইরের জেলাগুলো থেকে যাতে মানুষ কম আসতে পারে, সে জন্য যানবাহন চলাচলে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা জেলার পাঁচটি উপজেলা এবং নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলায় বিএনপির কর্মী-সমর্থক আছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আন্দোলন করে বর্তমান সরকারের পতন ঘটানোর কোনো শক্তি কারও নেই। তবে বিএনপি আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করতে পারে—এই আশঙ্কা তাদের আছে। এ জন্য আওয়ামী লীগ ও সরকার সতর্ক থাকবে।