বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটূক্তি/ ‘জাহাঙ্গীরের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি গনভবনে’

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২২ ডিসেম্বর ২০২২

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটূক্তি/ ‘জাহাঙ্গীরের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি গনভবনে’

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটূক্তিকারী গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বহিষ্কৃত মেয়র এবং গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার নিয়ে ভিন্ন মতামত দিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের একাধিক নেতা।

তারা বলছেন, গত শনিবার সন্ধায় গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যেখানে বহিষ্কৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়ে একক কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, শনিবারের ঐ বৈঠক মূলত- স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যারা নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেছিল এবং আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মীরা বিদ্রোহীদের সমর্থন করেছিল তাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জাহাঙ্গীর আলমের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বাংলা ওয়্যার-কে বলেন,‘আমাদের জাতীয় কমিটির ঐ বৈঠকে কোন ব্যক্তির বিষয়ে একক কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। যারা বিভিন্ন সময়ে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে এবং দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী হিসাবে নির্বাচন করেছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের সভানেত্রী তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন’।

আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, "দলের বাইরে গিয়ে যারা নির্বাচন করেছে, যারা বিদ্রোহীদের সমর্থন করেছে তাদের বিষয়ে জাতীয় কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে।

"নেত্রী (শেখ হাসিনা) বলেছেন, ‘যারা বিদ্রোহী নির্বাচন করেছে, তারা ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়ে দরখাস্ত করেছে বা করবে তাদের ক্ষমা করে দেওয়া হবে।"

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, “ গনভবনের ঐ বৈঠকে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেছিল এবং দল যাদেরকে বহিস্কার করেছিল তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে কিন্তু তারা তাদের পূর্বের পদ ফিরে পাবে না”।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) বেসরকারি একটি টেলিভিশনের একান্ত সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অনেকের মত জাহাঙ্গীর তো অ্যাপ্লাই (আবেদন) করেছে। তারটা মওকুফ করেছে। যারাই আবেদন করেছে তাদেরকেই ক্ষমা করেছে। এরকম প্রায় একশর মতো ছিল। অনেকে কলহে-বিবাদে জড়িয়েছে, শৃঙ্খলাবিরোধী বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছে। এগুলো ক্ষমা করা হয়েছে।‘

এদিকে, জাহাঙ্গীর আলমকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে—এমন খবর এখন গাজীপুরবাসীর মুখে মুখে বিশেষ করে জাহাঙ্গীর সমর্থকদের মধ্যে বাঁধভাঙ্গা উল্লাস করতে দেখা গেছে। অপরপক্ষে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলও হয়েছে গাজীপুরে।

প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাহাঙ্গীর আলমের একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে। অডিওতে মেয়র জাহাঙ্গীরকে মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে শোনা যায়। এতে বঙ্গবন্ধুকেও খাটো করা হয়েছে।

স্থানীয়দের বিক্ষোভের পর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ গত ৩ অক্টোবর শোকজ নোটিশ পাঠায় গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদককে।