নিজস্ব প্রতিবেদক । ২২ আগস্ট ২০২২
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,‘আমি সবসময় বলার চেষ্টা করি এই সরকার বর্গীদের সরকার। ছোটবেলায় শুনতাম- খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো বর্গী এলো দেশে। আজকে এরা ঠিক বর্গীদের ভূমিকা পালন করছে। আজকে বাচ্চাদের ঘুম পাড়ানোর জন্য বলতে হবে আওয়ামী লীগ এলো দেশে।’
তিনি বলেন, ‘রাস্তায় সিনেমার পোস্টারে দেখেছি, সেখানে লেখা রয়েছে 'জন্ম থেকেই জ্বলছি'। এ সরকারের আমলে বলা যাবে না যে- জন্ম থেকেই জ্বলছি। বলতে হবে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জ্বলছি। এই জ্বালা এমন একপর্যায়ে যাচ্ছে সেটা অসহনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বিএনপি আয়োজিত দুর্নীতি জ্বালানি সঙ্কটের উৎস শীর্ষক এক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ‘আজ জ্বালানির যে সংকট, এর মূল উৎস হচ্ছে দুর্নীতি। আজ তারা (আওয়ামী লীগ) জ্বালানিকে দুর্নীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। শুধু জ্বালানি খাত নয় সমস্ত খাতকে। বাংলাদেশের কোনো খাতকে তারা বাকি রাখেনি। আপনারা দেখেছেন আওয়ামী লীগ সরকার করোনার সময় কীভাবে মানুষের জীবন নিয়ে, স্বাস্থ্য নিয়ে দুর্নীতি করেছে। গার্ডার পড়ে কীভাবে পাঁচজনের জীবন গেল। সড়ক খাতে সারাদেশ প্রতিদিন লোক মারা যাচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছিলাম। ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিল, আমাদের ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম চলে গিয়েছিল। বর্তমানে এই দেশটাকে দেখার জন্য নয়। আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম গণতন্ত্র সমাজ দেখতে চেয়েছিলাম। একটি মুক্ত উদার গণতন্ত্রের মধ্যে আমরা বাস করতে চেয়েছিলাম। আজকে এরা কি করেছে? সম্পূর্ণভাবে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। কোথাও কথা বলতে পারবেন না, কোথাও লিখতে পারবেন না, কোথাও যেতে পারবেন না। এরা প্রতিমুহূর্তে বাংলাদেশকে মিথ্যার মধ্য দিয়ে প্রচারণার মধ্য দিয়ে জনগণকে বোকা বানিয়ে যাচ্ছে।’
চা-শ্রমিকদের প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আজ শ্রমিকরা রাস্তা নেমেছে, তাদের ন্যূনতম দাবি ৩০০ টাকা মজুরির জন্য। সেখানে কিন্তু তাদের ১০-১২ হাজার টাকা আসে না। যেখানে মানুষের মাথাপিছু আয় ২৮০০ ডলার, আর এখানে তারা বেতন পাচ্ছেন ১২০ টাকা। এই যদি একটা দেশ হয়, এই যদি একটা সমাজ হয়, এ যদি অর্থনীতির হিসাব হয়, তাহলে তো স্বাধীনতার মূল্য আছে বলে আমার কাছে মনে হয় না।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস খান, সাংবাদিক নেতা কাদের গনি চৌধুরী