নিজস্ব প্রতিবেদক । ২২ আগস্ট ২০২২
সরকারবিরোধী আন্দোলন মোকাবেলায় নেতাকর্মীদের রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্লজ্জ ভাবে বলছে, দেশের মানুষ না কি জ্বলছে? দেশের মানুষ কোথায় জ্বলছে? আপনাদের মন জ্বলছে। কারণ আপনাদের ক্ষমতাটা দখল করা দরকার।
সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ২১ আগস্ট উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ষড়যন্ত্র হচ্ছে, যদি দেশে আন্দোলনের নামে কোন নৈরাজ্য সৃষ্টি করে তাহলে তাদেরকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
কারণ বাংলাদেশের এই জনগণ সত্যিকারের ইতিহাস জানতে পারছে। ১৯৭৫’র ১৫ আগস্টের ইতিহাস জানতে পেরেছে। ৭ই মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিলেন, সেই ৭ই মার্চের ভাষণ এখন সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের প্রাণের স্পন্দন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাজেই অনেক জ্বালা আপনাদের আছে। কারণ আপনি আপনার সাধারণ সম্পাদক হিসাবে কোন দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। সব নির্দেশনা আসে ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী যাকে দেশের আদালত যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে, অর্থলোভী লুটপাটকারী তারেক রহমানের কাছ থেকে। লন্ডন থেকে আপনাকে নির্দেশ দেয়, তাই জ্বালা আপনাদের রয়েছে।
সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে বিএনপির আগুন সন্ত্রাস, পেট্রোল বোমার মাধ্যমে মানুষকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে মারার প্রসঙ্গ টেনে জাহাঙ্গীর কবির নানক আরও বলেন, নির্বাচন ও আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যারা করেছেন আপনারা।
আপনাদের পলাতক তারেক রহমানের নির্দেশে এই দেশে ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা হয়েছে। ২০০১ থেকে ২০০৩ সালে ক্লিনহার্ট অপারেশনের নামে আমাদের শতাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিলেন আপানারা। আওয়ামী লীগকে পার্টি অফিসের সামনে দাঁড়াতে দেন নাই। আর আপনারা একদিকে কথা বলবেন আরেকদিকে বললেন কথা বলার অধিকার নাই।
আমাদেরকে ক্ষমতা থেকে টেনে হেঁচড়ে নামানোর কথা বলবেন, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কথা বলবেন। তারপরও বলবেন আপনাদের কথা বলার স্বাধীনতা নাই।
বিএনপি-জামায়াতের দিকে ইঙ্গিত করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরা একাত্তরে যারা পরাজিত হয়েছিল সেই চক্রের উত্তরাধিকার। ওরা বাংলাদেশকে মানতে পারে না। ওদের ভিতরে চরম প্রতিশোধ রয়ে গেছে।
কাজেই ওদের মনের জ্বালা পোড়ার কারণে মাঝে মধ্যে দেশের মানুষকে জ্বালাতে চায়।
দলের নেতাকর্মীদের স্বাধীনতার ইতিহাস রক্ষার ব্রত নিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমরা পরিস্কারভাবে বলতে চাই, আমাদের দলের নেতাকর্মীরা দেশের সকল কঠিন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আপনাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। এই দেশে যদি আন্দোলনের নামে কোন নৈরাজ্য সৃষ্টি করে তাহলে তাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা মাথা ছাড়া দিয়ে উঠলেই প্রতিহত করতে হবে। এজন্য আমাদের সর্বস্তরের নেতা কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দেশের ইতিহাসের সঙ্গে অবিচ্ছিত অংশ।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের জন্য আমাদের প্রস্তুত হতে হবে।
নির্বাচনে বিজয় ছাড়া কোন বিকল্প নাই। আগস্ট মাসের এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ওই পরাজিত অপশক্তিকে আগেও প্রতিহত করা হয়েছে এবারও প্রতিহত করতে হবে। আমাদের নেতাকর্মীদেরকে বলব- আপনারা সবাই সজাগ থাকুন।
যেখানে ষড়যন্ত্র হবে সেখানেই প্রতিহত করতে হবে। দেশবিরোধী এ ধরনের ষড়যন্ত্রকারীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। এই হোক আজকের দিনে আমাদের শপথ।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের সেকেন্ড হোম রাজপথ। সুতরাং আওয়ামী লীগের কর্মীদের রাজপথের ভয় দেখিয়ে লাভ নাই । আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ রাজপথে প্রস্তুত। বিএনপি জামায়াত যত বার এদেশে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করবে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ রাজপথে তার সঠিক জবাব দিবে।