নিজস্ব প্রতিবেদক । ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত ২০ সেপ্টেম্বর আইসিসিবি কনভেনশন Hall 4 , বসুন্ধরাতে বিডি জবস ফ্রেশার ক্যারিয়ার ক্যারিয়ার ফেয়ার অনুষ্ঠিত হয় ।
PeopleNTech and Higher Study USA পক্ষ থেকে আমি এবং আমাদের টিম অংশগ্রহণ করেছিলাম । এই পরিপ্রেক্ষিতে আমি আমার কিছু অভিজ্ঞতা এখানে শেয়ার করব । আসলে মূল প্রতিপাদ্য বিষয়টা কি ছিল সেটা একটু জানতে চেষ্টা করি । যেহেতু এটা একটা ক্যারিয়ার ফেয়ার, এই ক্যারিয়ার ফেয়ারে সকল অংশগ্রহণকারীদের দৃষ্টি ছিল বিভিন্ন ধরনের জব অপরচুনিটির ওপর। ছবিগুলো দেখে আসলে খুবই সাধারণভাবে বোঝা যাচ্ছে যত না জব ওপেনিং ছিল , তার চেয়ে আগ্রহ প্রার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল অনেক বেশি । এই যে উপচে পড়া ভিড় , আসলে উপচে পড়া ভিড় এই প্রোগ্রামটিকে ঠিক কতটুকু সফল করেছে ?
যদি আয়োজক এর দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করি, এটা খুবই সফল একটি প্রোগ্রাম হয়েছে এখানে অনেকগুলো কোম্পানি তাদের জব সার্কুলার নিয়ে হাজির হয়েছিল। এখন আসি অংশগ্রহণকারী কোম্পানির দৃষ্টিকোণ থেকে। আসলেই কি কোম্পানিগুলো যে জব সার্কুলার গুলো নিয়ে হাজির হয়েছিল, তারা কি এই ফেয়ার থেকে তাদের যোগ্য ক্যান্ডিডেট সিলেক্ট করতে সক্ষম হবে ?
May be or May be not 🤨
যদি অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলো তাদের পছন্দ অনুযায়ী ক্যান্ডিডেট সিলেক্ট করতে না পারে তাহলে Next step কি? অংশগ্রহণকারী কোম্পানির গুলো যদি তাদের ক্যান্ডিডেট এই মেলা থেকে select করতে না পারে , তাহলে কিন্তু তারা তাদের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী অন্য সোর্স থেকে ক্যানডিডেট ঠিকই খুজে নিবে । তাহলে এত এত অংশগ্রহণকারী যারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অংশগ্রহণ করল, তাহলে তারা কি যোগ্য না ? অবশ্যই তারা যোগ্য।
প্রত্যেকটা মানুষই আসলে কিছু না কিছু এমন বৈশিষ্ট্য তার ভেতরে লুকায়িত থাকে, যা অনেকে উন্মোচিত করতে পারে আবার অনেকে পারে না ।
যদি একটু পজিটিভলি চিন্তা করি , অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকে কিছু না কিছু শিখে এই পর্যন্তই এসেছে এবং এই প্রোগ্রাম থেকে কিছু না কিছু এখান থেকে শিখে , তাদের অভিজ্ঞতার ঝুড়ি নিয়ে বাসায় গিয়েছে । একদম প্রথম কথা যদি বলি, এখানে আসার পর অ্যাটলিস্ট প্রত্যেকটা ক্যান্ডিডেট এটা বুঝতে পেরেছে যে , আসলে চাকরির বাজার কতটা কঠিন এবং তাদের প্রতিযোগী র সংখ্যা কেমন? এখন আসি next learning এ । এখানে আসার পর বিভিন্ন কোম্পানি বক্তিবর্গ যারা ছিলেন, তাদের সাথে সরাসরি কথা বলার একটা সুযোগ হয়েছে এবং এখান থেকে তারা নিজেকে যাচাই করার একটা সুযোগ পেয়েছে।
সবাই বলে জব নেই জব নেই 😩 আসলে কি ব্যাপারটা তাই ? নাকি Skilled Person নেই ।
এখন আসি স্কিল্ড হওয়ার জন্য কি করা প্রয়োজন ?
নিজেকে আপনি বিভিন্ন ভাবে স্কিল্ড ভাবে গড়ে তুলতে পারেন । আমার একটি অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। করোনা মহামারি চারিদিকে, রিক্রুটমেন্ট অনেক কম। ঠিক তখনই Enroute International এর সাথে ২০২১ সালে শুরু হয় আমার পথচলা । যদিও খুবই অল্প সময়ের জন্য কিন্ত OREC (Observe , Record, Classify and Evaluation ) model সহ নানা বিষয় এসেসমেন্ট এর আমি শিখতে পারি । এছাড়াও কিছু ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজও আমি করেছি এই করোনার মধ্যে। যেহেতু আমার 2nd মাস্টার্স এর Assignment গুলো আমি নিজেই করতাম তাই এসাইনমেন্ট এর উপর আমার আসলে অনেক দিন থেকে দুর্বলতা ছিল ঠিক তখনই কিছু এরকম অ্যাসাইনমেন্টের কাজ পেয়েছিলাম এবং কাজগুলো সফলভাবে শেষ করতে পেরেছিলাম।
যতটুকু অভিজ্ঞতা ততটুকু থেকে বলছি যে, আমরা দেখি কোম্পানি স্কিল্ড person খুজে পায় না । এটার কারণটা কি ? আমার কাছে মনে হয়েছে , যে ধরনের স্কিল্ড person কোম্পানি খুজে ,ঠিক ওই ধরনের স্কিল্ড লোকের একটা অভাব মার্কেটের রয়ে গিয়েছে।
এখন আসি অ্যাপ্লিকেশন দেখার পর যারা এপ্লাই করেছে তারা আসলেই কি পোস্টটা ইন্টারেস্টেড ফিল করে এপ্লাই করেছে ? নাকি তোতা পাখির মত জাস্ট গৎ বাধা apply করতে হবে তাই এপ্লাই করেছে ? এদিক থেকে আমার যা অভিজ্ঞতা হয়েছে মোস্ট অফ দা টাইম যারা অ্যাপ্লাই করে, অ্যাপ্লাই করার পরে ফোনটা রিসিভ করে না । আর যদিও বা করে তার অভিবেক্তি, আমরা তাকে হাতে পায়ে ধরে ডেকে আনছি , ঐ পজিসনে এ কাজ করার জন্য।
আরেকটা বিষয়, অনেকেই ইন্টারভিউ অ্যাটেন্ড করে না । ইন্টারভিউ এটেন্ড না করলে কাইন্ডলি জানিয়ে দেবেন, এটা একটা মিনিমাম কার্টেসি । তাহলে ব্যাপারটা কি দাঁড়ায় , একটা পজিশনে যখন আপনি অ্যাপ্লাই করছেন তখন কিন্তু আপনাকে শর্টলিস্ট করা হয় । এবং এই purpose এ HR এবং Management এর একটা ভাল সময় যায়। আপনাকে যখন কল করা হবে এটা একটা কোম্পানির এক্সপেক্টেশন থাকে আপনি ইন্টারভিউ টা অ্যাটেন্ড করবেন । যদি আপনি এটেন্ড করতে না পারেন তাহলে আপনি এপ্লাই বা করেছেন কেন ? আরেকটা ক্যাটাগরি কিছু ক্যান্ডিডেট যখন ইন্টারভিউ ফেস করে ,ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে কোন আইডিয়া না নিয়ে ইন্টারভিউ অ্যাটেন্ড করে । এই লেখাটি যারা পড়ছেন, আমার একটা রিকোয়েস্ট থাকবে যে আপনি যখন কোথাও এপ্লাই করছেন এটলিস্ট ইন্টারভিউ কল অ্যাটেন্ড করার আগে ওই কোম্পানি অথবা যে জব সার্কুলার দেয়া হয়েছে সেই জব সার্কুলার পরে যাবেন। তাহলে কোম্পানি সম্পর্কে আপনার কিছু ইনফরমেশনও জানা হবে এবং আপনার সম্পর্কে কোম্পানির একটি পজিটিভ ইম্প্রেশন ক্রিয়েট হবে । ইনফরমেশন বলতে পারবেন এবং আপনাকে রিক্রুট করতে সুবিধা হবে । সুতরাং আপনি যদি একজন চাকরিপ্রার্থী হন তাহলে এই বিষয়গুলো একটু খেয়াল রাখবেন।
এখন আবার চলে আসি Bdjobs career fair
এ । অনেক আগ্রহী প্রার্থীদের দেখে মনে হয়েছে আসলে জব একটা সোনার হরিণ । সবাই জব চাচ্ছে আসলে তারা কি স্কিল্ড কিনা , এটা নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই । আমার কাছে মনে হয়েছে যে যারা এসেছে তাদের স্কিল্ড হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । আপনি যদি প্রপার স্কিল্ড হন, ইনশাল্লাহ আপনার একটি জব অথবা আপনার একটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে । পাশাপাশি আপনি উদ্যোক্তা হতে পারেন । বিভিন্ন ক্ষেত্রে আপনি উদ্যোক্তা হওয়ার পরিকল্পনা করতে পারেন , ফ্রিল্যান্সিংও করতে পারেন ।
সামনের দিনগুলো সবার সুন্দরভাবে অতিবাহিত হোক, শুভকামনা রইল।
লিখেছেন - মাছুমা ভুঞা ফারহা
শিক্ষা বিষয়ক পরামর্শদাতা। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি। যুক্তরাষ্ট্র।