নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৪ জুন ২০২৩
জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত বাকি আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহতের মেয়ে রাব্বিলা তুল জান্নাত (১৯)। গত মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে।
ওই পোস্টে রাব্বিলা তুল জান্নাত লিখেন, ‘আমার আব্বু গোলাম রাব্বানী নাদিমকে মেরে ফেলা হয়েছে আজকে নিয়ে ৮ দিন হয়ে গেল। র্যাব কর্তৃক এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামিসহ চারজন সর্বশেষ গ্রেপ্তার হয় ছয়দিন আগে।
হাস্যকর বিষয় হলো–এখন পর্যন্ত ২ নম্বর আসামি ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত চেয়ারম্যানের ছেলে ফাহিম ফয়সাল রিফাত, ৩ নম্বর আসামি রাকিব বিল্লাহ, ৯ নম্বর আসামি শামিম খন্দকার, ইসমাইল হোসেন স্বপন মণ্ডলসহ এজাহারভুক্ত ১৭ জন আসামি কেন এখনো গ্রেপ্তার হলো না।
প্রশাসন কি ঘুমিয়ে আছেন, ঘুমিয়ে থাকলে জেগে উঠুন। এক কলম হারিয়েছে, কিন্তু হাজার কলম আমাদের পাশে আছে।’
তিনি আরও লিখেন, ‘সবার কাছে আমাদের চাওয়া একটাই, আমার বাবার খুনিরা যাতে রক্ষা না পায়। তারা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে। মামলা হয়েছে ৭ দিন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মামলা হওয়ার পর একজন আসামিকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ফলে আমাদের মনে স্বাভাবিকভাবেই নানা সন্দেহ দানা বাঁধছে।’
গত ১৪ জুন (বুধবার) রাতে জামালপুরের বকশীগঞ্জে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন অনলাইন পোর্টাল বাংলানিউজের জেলা প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী নাদিম। পরদিন বৃহস্পতিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে তিনি মারা যান।
পরে নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। এর আগে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বকশীগঞ্জ থানার–পুলিশ নয়জনকে আটক করে। এরপর আর কোনো আসামি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়নি।
তবে মামলার আগে র্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে আটক করে। তাঁদের সবাইকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং আসামিদের বিরুদ্ধে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
আদালত আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেন। এর মধ্যে প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবুর পাঁচ দিনের রিমান্ড আজ (শুক্রবার) শেষ হয়েছে।
পুলিশের হাতে আটক নয়জনের মধ্যে সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ রয়েছে। বাকি চারজনকে পুলিশের তদন্তে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন—প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবু, রেজাউল করিম, মো. মনিরুজ্জামান, মো. মিলন মিয়া, মো. গোলাম কিবরিয়া, জাকিরুল ইসলাম, শহিদুর রহমান, মো. তোফাজ্জল, আয়নাল হক, মো. কফিল উদ্দিন, মো. ফজলু মিয়া, মো. মুকবুল ও মো. ওহিদুজ্জামান।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরমান আলী বলেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের কাছ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে ওই সব প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
তবে আশা করছি, খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাকি আসামিরা গ্রেপ্তার হবেন। একই সঙ্গে মামলাটি আমরা খুব গুরুত্ব দিয়েই দেখছি এবং কাজ করছি।’
এদিকে জামালপুর জেলা পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলবেন না বলে সাফ জানিয়ে বলেন, ‘নাদিম হত্যার বিষয়ে আমি কোনো কথাই বলব না। আপনারা কার কাছ থেকে নেবেন নিয়ে লেখেন।’