ঋষি সুনাকের ‘শিকড়’ আসলে পাকিস্তানে, ভারত নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৭ অক্টোবর ২০২২

ঋষি সুনাকের ‘শিকড়’ আসলে পাকিস্তানে, ভারত নয়

যুক্তরাজ্যের ৫৭তম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন ঋষি সুনাক। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর মঙ্গলবার সুনাককে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস।

তবে গত ২০০ বছরের ইতিহাসে ব্রিটেনের সর্বকনিষ্ঠ এবং প্রথম অশেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের ‘শিকড়’ নিয়ে এ বার দ্বৈরথে ভারত ও পাকিস্তান। প্রথমে ভারতীয় বলা হলেও সুনাকের পূর্বপুরুষরা ছিলেন মূলত পাকিস্তানের বাসিন্দা। এমন দাবিই উঠে আসছে নানা দিক থেকে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার বলছে, ব্রিটেনের প্রথম অশেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের ‘শিকড়’ নিয়ে দ্বৈরথে নেমেছে ভারত ও পাকিস্তান। সোমবার কনজারভেটিভ পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ পার্লামেন্ট সদস্যের সমর্থনে ঋষি ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়ার পরই তার পরিবারের ‘ভারত-সংশ্লিষ্টতা’ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন অনেকে।

তবে সুনাকের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার দিনই অর্থাৎ মঙ্গলবার উঠে এসেছে পাল্টা দাবি। ঋষি সুনাকের পিতামহ অর্থাৎ দাদা যে আসলে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন, সে কথাও মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অনেক আগেই এই অঞ্চল ছেড়েছিলেন ঋষির দাদা রামদাস সুনাক। তিনি ছিলেন পাঞ্জাবি ক্ষত্রি সম্প্রদায়ের মানুষ এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালা শহরের বাসিন্দা।

তবে দেশভাগের বহু আগে ১৯৩৫ সালে চাকরি নিয়ে রামদাস চলে গিয়েছিলেন কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে। রামদাসের স্ত্রী সুহাগ রানী অবশ্য সেই সময় দিল্লিতে যান। পরে ১৯৩৭ সালে তিনিও কেনিয়ায় পাড়ি জমান। পরবর্তীকালে সেখান থেকে তারা দু’জনেই চলে যান ব্রিটেনে।

অবশ্য ঋষি সুনাকের বাবা যশবীরের জন্ম হয়েছিল কেনিয়াতেই। তিনি ব্রিটেনে চিকিৎসক ছিলেন। মা উষা ছিলেন ফার্মাসিস্ট। তার পরিবারও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ব্রিটেনে এসে বসবাস শুরু করেছিল। আর ঋষির জন্মও হয় ব্রিটেনে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল বলছে, ৪২ বছর বয়সী ঋষি সুনাক ব্রিটেনের সাউদাম্পটনে হিন্দু-পাঞ্জাবি বাবা-মায়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার দাদা-দাদি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গুজরানওয়ালা শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং সেখানেই তারা বেড়ে ওঠেন।

ঋষির দাদা রামদাস সুনাক ১৯৩৫ সালে নাইরোবিতে কেরানি হিসাবে কাজ করার জন্য গুজরানওয়ালা ছেড়ে চলে যান। এসময় তার স্ত্রী সুহাগ রানী সুনাক তার শাশুড়ির সাথে দিল্লিতে যান এবং সেখান থেকে ১৯৩৭ সালে কেনিয়ায় নিজের স্বামীর কাছে চলে যান। রামদাস ও সুহাগ রানীর ছয় সন্তান ছিল। যাদের মধ্যে তিন ছেলে ও তিন মেয়ে।

আর ঋষি সুনাকের বাবা যশবীর সুনাক ১৯৪৯ সালে নাইরোবিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের লিভারপুলে আসেন এবং লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিনে অধ্যয়ন শুরু করেন।

যশবীর ১৯৭৭ সালে লিসেস্টারে উষাকে বিয়ে করেন। এর তিন বছর পর ১৯৮০ সালে সাউদাম্পটনে ঋষির জন্ম হয়। ঋষির বাবা-মা অবসর গ্রহণ করার আগ পর্যন্ত ফার্মেসি ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন।