রাশিয়ার বাইরে যাচ্ছেন পুতিন

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৭ জুন ২০২২

রাশিয়ার বাইরে যাচ্ছেন পুতিন

টানা চার মাস ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। গত ফেব্রুয়ারি মাসে শেষের দিকে মস্কোর এই আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়াতেই ছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে এবার তিনি রাশিয়ার গণ্ডি ছেড়ে বাইরে বের হচ্ছেন।

সফর করবেন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত মধ্য এশিয়ার ছোট দু’টি দেশে। আর এটিই হবে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রথম বিদেশ সফর। সোমবার (২৭ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন আক্রমণের আদেশ দেওয়ার পর প্রথমবারের মতো রাশিয়ার গণ্ডি ছাড়ছেন ভ্লাদিমির পুতিন। চলতি সপ্তাহেই তিনি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত মধ্য এশিয়ার দু’টি দেশ সফর করবেন।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন স্টেশন রসিয়া ১-এর ক্রেমলিন সংবাদদাতা পাভেল জারুবিন বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন তাজিকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান সফর করবেন এবং এরপর মস্কোতে ফিরে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সঙ্গে আলোচনা করবেন।

জারুবিন আরও জানিয়েছেন, তাজিকিস্তান সফরের সময় রাজধানী দুশানবেতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাখমনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তাজিক এই প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার একজন ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্রটির সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী শাসক।

অন্যদিকে আশগাবাতে আজারবাইজান, কাজাখস্তান, ইরান এবং তুর্কমেনিস্তানের নেতাদের-সহ কাস্পিয়ান দেশগুলোর একটি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

এর আগে রাশিয়ার বাইরে পুতিনের শেষ সফর ছিল চীনে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুতে বেইজিং সফর করেছিলেন পুতিন। সেখানে তিনি এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদানের কয়েক ঘণ্টা আগে ‘সীমাহীন’ বন্ধুত্ব চুক্তি উন্মোচন করেছিলেন।

সেসময় ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার যে দ্বন্দ্ব চলছিল, তাতে রাশিয়ার পক্ষে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয় চীন। অন্যদিকে, তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের চলমান বৈরিতায় বেইজিংয়ের পক্ষে অবস্থান স্পষ্ট করে রাশিয়া।

মূলত চলতি বছরের শীতকালীন অলিম্পিকের আসর চীনে আয়োজিত হয়। আর সেই অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজধানী বেইজিং সফরে গিয়ে হওয়া বৈঠকেই ‘স্পর্শকাতর’ দুই ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছান বৈশ্বিক পরাশক্তি এই দুই দেশের নেতা।

আর সেই সফর শেষে ফেরার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।

মস্কো অবশ্য ইউক্রেনে তাদের এই আগ্রাসনকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে আখ্যায়িত করছে। এছাড়া যুদ্ধের শুরুতে পুরো ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড আক্রান্ত হলেও রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর মূল মনোযোগ এখন দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস এলাকায়।