নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
এবার চার ধাপে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ভোট গ্রহণের প্রথম ধাপ ৪ মে, দ্বিতীয় ধাপ ১১ মে, তৃতীয় ধাপ ১৮ মে এবং চতুর্থ ধাপ ২৫ মে। এ তথ্য জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দেশের ছয় বিভাগের ৩৪৪ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
ইতোমধ্যে নির্বাচন ঘিরে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নেমেছেন প্রচারের মাঠে। গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ করে দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থকদের মধ্যে অবস্থান জানান দিচ্ছেন। প্রতিদিনের কর্মসূচি তুলেও ধরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ছয়টি বিভাগের ১০৮ উপজেলা প্রথম ধাপে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আগামী ৪ মে ঢাকা বিভাগের কেরাণীগঞ্জ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে অংশ নিতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা জোরেসোরে প্রচারণায় চালাচ্ছেন। চেয়ারম্যান পদে আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিন আহমেদ। টানা তিনবারের উপজেলা চেয়ারম্যান। বর্তমানে এ দায়িত্বেই আছেন।
এর মধ্যে টানা দুই বার পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যানের পুরষ্কার। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হিসেবে দলের নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষের মধ্যেও রয়েছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এসব তথ্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের (২০০১-২০০৬) সময় শাহিন আহমেদ দলের নেতাকর্মীদের একত্রিত করেছিলেন। দুর্দিন, দু:সময়ে যেকোন প্রয়োজনে দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। নেতা-কর্মীদের আগলে রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছেন। কর্মসূচির নাম করে বিএনপি-জামায়াত যেনো, দেশ বিরোধী কোন ধরনের নাশকতা করতে না পারে। সেটিও রুখে দিয়েছেন তিনি।
প্রথম ধাপের নির্বাচন নিয়ে কেরাণীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রীতম সংগঠন নেতারা দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে করছেন প্রচারণা। ভোটের দিন অনেক সময়। এখনি, ভোটের হাওয়া লেগেছে জনসাধারণদের। তবে, স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, কেরাণীগঞ্জের হাল ধরতে এবারো শাহিন আহমেদ এগিয়ে রয়েছেন।
জানতে চাইলে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মিরাজুর রহমান সুমন বলেন, দক্ষ-কর্মীবান্ধব ও জনবান্ধন একজন নেতা শাহিন আহমেদ। স্বচ্ছ ও জনপ্রিয় হওয়ায় টানা তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এবং দুই বার দেশসেরা চেয়ারম্যানের খেতাব অর্জন করেছেন। কেরাণীগঞ্জে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠন নেতাকর্মীদের উতসাহ দিয়ে তিনি দলের প্রতি উজ্জীবিত করেছেন।
মিরাজুর রহমান জানান, পুনরায় নির্বাচন করছেন শাহিন আহমেদ। এরমধ্যে প্রচারণায় দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মীরা বেশজোরেসোরে তার (শাহিন আহমেদ) পক্ষে মাঠে নেমেছেন। ওই থানা সেচ্ছাসেবক লীগ সূত্র জানিয়েছে, তাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করে শাহিন আহমেদের জন্য এবারও ভোট প্রার্থনা করছেন। পাশাপাশি শেখ হাসিনা সরকারের নানামুখী অর্জন ও উন্নয়ন তুলে ধরছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মিরাজুর রহমান বলেন, শাহিন আহমেদের নেতৃত্বে আমরা সুসংগঠিত। এবং ঐক্যবদ্ধ রয়েছি। আগামী ৪ মে নির্বাচনে তাকে (শাহিন) বিপুল ভোটে বিজয়ী করা হবে। এই লক্ষ্যেই আমাদের অভিভাবক নসরুল হামিদ বিপুর (প্রতিমন্ত্রী) নির্দেশে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে, বিভিন্ন সভা-সমাবেশে উপস্থিতি বাড়িয়েছেন শাহিন আহমেদ। দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে বেশ গণসংযোগ করছেন। ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা সরকারের নানামুখী অর্জন ও উন্নয়নের কথা তুলে ধরছেন। নিজের অবস্থান জানান দিয়ে অনেক রকম প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। দোয়া, সমর্থন চেয়ে করছেন ভোট প্রার্থনা।
শাহিন আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের যে অভুতপূর্ব উন্নয়ন। এই উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে কেরাণীঞ্জবাসী আবার আমাকে চাচ্ছেন। তিনি জানায়, কেরাণীগঞ্জবাসীরা তাকে ভালোবাসেন। আধুনিক স্মাট কেরাণীগঞ্জ গড়তে পুনরায় কেরাণীগঞ্জের জনপ্রতিনিধি হতে চান। এক প্রশ্নের জবাবে শাহিন আহমেদ বলেন, আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিষন-মিশন বাস্তবায়নে অংশীজন হয়ে কেরাণীগঞ্জকে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে নেওয়াই লক্ষ্য।
জানা গেছে, ঢাকা জেলার অন্তর্গত কেরাণীগঞ্জ উপজেলা। দুটি থানা ও ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে এ উপজেলা গঠিত। রয়েছে দুটি সংসদীয় আসন। মোট জনসংখ্য ৬ লাখ ৩ হাজার ১১৪ জন।
প্রথম ধাপের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে ঢাকা, ময়মনসিংহ,রাজশাহী, খুলনা, রংপুর ও বরিশাল বিভাগের ১০৮টি উপজেলায়। এরপর ভোট গ্রহণ হবে দ্বিতীয় ধাপের ১২১টি, তৃতীয় ধাপের ৭৭টি এবং চতুর্থ ধাপের ৩৮টি উপজেলায়। জানিয়েছে ইসি সূত্র।
সূত্র জানায়, দেশে ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। ২০১৯ সালের ১০ মার্চ সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শুরু হয়। পাঁচ ধাপের ওই নির্বাচন শেষ হয়েছে জুন মাসে।
আইন অনুযায়ী, প্রথম সভার দিন থেকে উপজেলা পরিষদের মেয়াদ শুরু হয়। যা, পরবর্তী পাঁচ বছর নির্বাচিত পরিষদ দায়িত্ব পালন করে। মেয়াদপূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
প্রসঙ্গত: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় ভাবে মনোনয়ন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এতে, দলের নেতাকর্মীদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দেয়ার সুযোগ তৈরী হচ্ছে। প্রার্থীদের অনেকটা স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচন করতে হচ্ছে।
কিছুদিন আগে এক সভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি দলগতভাবে অংশ না নিলেও তৃণমূলের নেতারা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় নির্বাচন করবে।
তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন অংশ নেয়া নিয়ে দলটির মধ্য দ্বিধা দ্বন্দ্ব চলছে। আমরা দলীয় প্রতীক দিয়ে নির্বাচন করছি না।’