বগুড়ায় মহাসড়কে লাগামহীনভাবে চলছে নিষিদ্ধ যানবাহন, নীরব হাইওয়ে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৮ নভেম্বর ২০২২

বগুড়ায় মহাসড়কে লাগামহীনভাবে চলছে নিষিদ্ধ যানবাহন, নীরব হাইওয়ে পুলিশ

রাজিবুল ইসলাম রক্তিম (বগুড়া প্রতিনিধি): কোন ভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না বগুড়া-ঢাকা এবং বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের অবৈধ লাগামহীনভাবে চলা নিষিদ্ধ সিএনজি চালিত অটোরিকশা। মহাসড়কে সিএনজি অটোরিক্সা, ভটভটি, ব্যাটারি চালিত অটো-রিক্সাসহ কমগতির যান চলাচল বন্ধে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের জারি করা নিষেধাজ্ঞার পরও বন্ধ হচ্ছে না এসব যান চলাচল। মহাসড়কে দুর্ঘটনার পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির জন্য ড্রাইভারের অনুপস্থিতে হেলপার দিয়ে বেপয়ারা গাড়ি চালানো এবং ধীরগতি সম্পন্ন সিএনজি অটোরিক্সা, ভটভটি, ব্যাটারি চালিত অটো-রিক্সা, নসিমন, করিমন সবচেয়ে বেশি দায়ী। দাবড়ে বেড়ানো সিএনজিচালিত অটোরিকশা হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করেই মহাসড়কে এসব সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করছে বলে জানা গেছে।

বগুড়া-ঢাকা এবং বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের বনানী স্ট্যান্ড ও মাটিডালি স্ট্যান্ড এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞাকে রীতিমত বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতিদিন লাগামহীনভাবে দূরপাল্লার দ্রুতগতি যানবাহনের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে এসব অবৈধ সিএনজি অটোরিক্সা, ভটভটি, ব্যাটারি চালিত অটো-রিক্সা, নসিমন, করিমন। বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের সিএনজি চালক রহিম উদ্দিন বলেন, এই মহাসড়কটিতে তিনি অবাধেই সিএনজি চালাচ্ছেন। কোথাও কোন পুলিশ কিংবা স্থানীয় প্রশাসনের কেউ তাকে বাধা দেয় না। মহাসড়কের চলাচলের জন্য প্রতিটি অটোরিকশা থেকে প্রতি মাসে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা করে হাইওয়ে পুলিশকে দিতে হয়। টাকা না দিলে অটোরিকশা ধরে মামলা দিয়ে দেয়া হয়। তাই বাধ্য হয়েই পুলিশকে টাকা দিয়ে মহাসড়কে অটোরিকশা চালাতে হচ্ছে। এইদিকে ভটভটি চালক আমিরুল বলেন, আমরা প্রতিদিন কোন না কোন হাট থেকে পন্য বোঝাই করে সময় বাঁচানোর জন্য মহাসড়কে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করি এতে করে আমাদের পণ্যবাহী ভটভটি যথা সময়ে পৌঁছাতে পারি। ভটভটি চলার কারণে মহাসড়কে যানবাহন মালিক সমিতি ও পুলিশের ঝামেলা থাকলেও তেমন সমস্যায় পড়তে হয় না। প্রতিদিন বিভিন্ন স্ট্যান্ডে ১০ টাকা থেকে ১০০ টাকা হারে মাসোহারা দিয়ে মহাসড়ক গুলোতে চলাচল করি। তাছাড়াও পুলিশ ধরলেই প্রতিদিন ১০ টাকা করে আদায় করে। সে কারণে তাদের চলাচলে বেগ পেতে হয় না হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শেরপুর সরকারী কলেজের একজন প্রভাষক বলেন, 'আমি তিন বছর হলো সিএনজিতে করে বগুড়া থেকে শেরপুর যাতায়াত করি। এই দীর্ঘ তিন বছরে কোনদিন কোথাও সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচলে বাধা বাঁধা দিতে দেখিনি হাইওয়ে পুলিশকে। আমি যতদূর জানি এই মহাসড়কে সিএনজিসহ ধীরগতির যান চলাচল নিষিদ্ধ। তিনিও আরও জানান, সিএনজি, অটোরিক্সা এবং ভটভটির কারণে এই মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম একটি কারণ। সময় বাঁচানোর জন্য সিএনজি চালিত অটোরিকশায় নিরুপায় হয়ে চলাচল করছি। তবে আমিও মনে প্রানে চাই এই মহাসড়কে দুর্ঘটনা রোধে স্থায়ীভাবে এসব যান চলাচল বন্ধ হওয়া দরকার।

এই বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুর ইসলাম এরসাথে কথা হলে তিনি জানান, 'মহাসড়কে ধীরগতি সম্পন্ন সিএনজি অটোরিক্সা, ভটভটি, ব্যাটারি চালিত অটো-রিক্সা, নসিমন, করিমন চলাচল বন্ধে আমরা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের পাশাপাশি সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, সামাজিকভাবে সচেতন হতে হবে। তবে মাশোয়ারা বিষয় নিয়ে কথা হলে তিনি জানান, এরকম কোন ঘটনা আমার হাইওয়ে থানা এলাকায় ঘটেনি ভবিষ্যতে ঘটবে না। তবে সঠিক তথ্য প্রমাণ পেলে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।