রাজনৈতিক সমঝোতার প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৯ জুলাই ২০২৩

রাজনৈতিক সমঝোতার প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে শনিবার রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয় এড়িয়ে যান।

শনিবার বিকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে জরুরী বৈঠক শুরুতে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

এ সময় এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আওয়ামী লীগের এক প্রতিনিধি দল আহত বিএনপি নেতাদের ফলমুল, জুস নিয়ে দেখতে যান, তাহলে কি রাজনৈতিক সমঝোতার কোন সম্ভাবনা আছে কিনা?

প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় রাজনৈতিক শিষ্টাচার দেখিয়েছে, আজ দেখিয়েছে। কিন্তু তিনি রাজনৈতিক সমঝোতা হবে কি এই বিষয় টা এড়িয়ে যান ওবায়দুল কাদের।

বিদেশি প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, "সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রধান বাধা আজকে সেই বিএনপি, এটা আজকের সহিংসতাই প্রমান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, "বিএনপি বলে তাদের উপর হামলা হয়েছে, তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা শহরে ঢুকার পথ, সেই রাস্তা বন্ধ করে দেবে এটা কি তারেক রহমানের বাপ দাদার সম্পত্তি? এটা কি তার বাপ দাদার সম্পত্তি? লন্ডন থেকে নির্দেশ দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিবে এটা কোন রাজনীতি।
"যেসকল বিদেশি বন্ধুরা আমাদের পরামর্শ দেন, তাদের বলছি, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আমরা ওয়াদাবদ্ধ।কিন্তু সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রধান বাধা আজকে সেই বিএনপি। যাদের কথা বিদেশি বন্ধুদের বলেছিলাম। বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথম বাধা বিএনপি এটা আজকে প্রমান হলো। "
বিএনপির এক দফা অগ্নি সন্ত্রাস দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, "আমরা যা আশঙ্কা করেছিলাম সেটাই এখন সত্তি হলো, আমরা বার বার বলেছি তাদের আন্দোলনের এক দফা অগ্নিসন্ত্রাস। তারা এটাই চেয়েছিলো, এটাই শুরু করতো গতকাল। আমাদের গতকাল শক্ত অবস্থানের কারণে তারা কিছু করতে পারে নি।

"দেখুন তারা সমাবেশ থেকে ঢাকা সিটির প্রবেশ পথবন্ধ করার ঘোষণা করেছে। এই রাজধানীর সব প্রবেশ পথ বন্ধ করে দিবে তারা এবং অবস্থান নিবে তারা এটাই তাদের সিদ্ধান্ত। এর আগে তাদের নেতাকর্মীদের অতিরিক্ত জামাকাপড় নিয়ে ঢাকা আসতে বলেছেন এবং সঙ্গে চাদর নিয়েও আসতে বলেছেন। গণভবন থেকে শেখ হাসিনাকে না হটিয়ে তারা এ অবস্থান থেকে সড়বে না, এটাই তাদের কথা।"

ভিডিওতে বক্তব্য দিয়ে তারেক রহমান আদালত অবমাননা করছে দাবি করে কাদের বলেন, "তারেক রহমান লন্ডনে বসে সারাক্ষণ ভিডিওতে এই নির্দেশ সেই নির্দেশ দিচ্ছে। আমি বুঝি না, প্রতিনিয়ত আদালতের নির্দেশ লঙ্গন করে যাচ্ছে। আদালতের আদেশ ছিলো কোন ভাবে কোন ক্রমেই কোন ভাসন কোন স্টেটমেন্ট প্রচার করা যাবে না। এর পরেও কেন বারে বারে এটা করা হচ্ছে। আদালত অবমাননা প্রতিনিয়ত হেচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টকে হাইকোর্টকে লক্ষ করে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছে এই তারেক।

"আদালত বলেছে দিতে পারবে না, প্রতিনিয় গালাগাল করছে, কারকে তো বলতে বলতে এমনও বলেছে, একটা লাশ পড়লে দশটা লাশ পড়বে। লাশ ছাড়া সে কথা বলে না। আন্দোলন করো টাকার অভাব হবে না, কি ব্যবসা করে লন্ডনে, এতটাকা আসে কোথা থেকে। তার তো কোন অভাব নেই। তার বাবার মত, তার বাবা বলেছে মানি ইজ নো প্রবলেম, সে বলছে টাকার সমস্যা নেই।"
বিএনপির হামলার বর্ননা দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, "আজকে তারা কি করেছে, আজকে তারা ঢাকার প্রবেশ মুখ গুলো কিভাবে তারা অগ্নি সন্ত্রাশ তারা শুরু করে দিয়েছে, আজকে মাতুয়াইলের দিকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে চারটি বাসে আগুন দিয়েছে। রাস্তার পাশে থাকা অনেক গাড়িতে হামলা করেছে, সদরঘাটে ভিক্টর পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে এছাড়া তুরাগ পরিবহনের একটি বাস। মোট রাজধানীতে সাতটি বাস ভাংচুর অগ্নি সংযোগ করে। বিভিন্ন এলাকায় লাঠিশোটা নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়।
"তারা ককটেল ও হাতবোমা নিক্ষেপ করেছে। রাজধানীর ধোলাই খালে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে একজন এসআইকে বেদড়ক পেটাতে দেখা যায়। নারায়নগঞ্জে অবস্থান চলাকালে সিদ্দিরগঞ্জ থানার ওসি আহত হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের মহিবুর রহমান নয়নের উপর বিএনপি জামাত ক্যাডার বাহিনী হামলা করে এবং তার হাতের কজ্বি কেটে নেয়, সে এখন হাসপাতালে ভর্তি আছে।"

তিনি বলেন, "পুলিশের উপর তারা হামলা চালিয়েছে, কিছু কিছু জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা হয় এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।

"বিএনপির অগ্নি সন্ত্রাস আবার শুরু হয়েছে। ২০১৩/১৪ সালের নির্মম নি:সংশতার পুনরাবৃত্তি শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, শেখ হাসিনার সৈনিক, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবিত কর্মী বাহিনী চুপ করে বসে থাকতে পারে না। আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করবো।"
জনগণের জানমাল রক্ষায় পবিত্র দায়িত্ব পালনে নির্বাচন পর্যন্ত সতর্ক পাহারায় থাকার নির্দেশ দিয়ে কাদের বলেন, "এই সিটিতে এক কিলোমিটারের মধ্যে কয়েকটা সভা সমাবেশ হয়েছে কোন সমস্যা হয় নি। তার কারণ আমরা সঙ্গাত চাই না। সঙ্গাতে বিরুদ্ধে জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় আমরা পবিত্র দায়িত্ব পালনে সতর্ক অবস্থানে ছিলাম আছি, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত আমরা থাকবো।"
"অগ্নি সন্ত্রাস আমরা রোখবো, অগ্নি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা লড়বো, এটা আজকে আমাদের শপথ।"

জরুরি সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, কর্ণেল (অব) মোহাম্মদ ফারুক খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাশ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা, উপ প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।
এছাড়া জরুরি সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামশ পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকী, সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শিলা, যুব মহিলা লীগের সভাপতি আলেয়া সরোয়ার ডেইজি, সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসীফ ইনান উপস্থিত ছিলেন।