নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৭ ডিসেম্বর ২০২২
বাংলাদেশের অনেক 'বুদ্ধিজীবী' সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে নেতা মেনে তাদের সঙ্গে জড়ো হয়ে সরকার উৎখাতের চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'আমাদের অনেক জ্ঞানীগুণী বিএনপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তত্ত্ব কথা শুনায়, গণতন্ত্রের সবক দেয়, গণতন্ত্র উদ্ধার করতে চায়। আবার সেই আমাদের বুদ্ধিজীবী, এরা বুদ্ধিজীবী নিজেদের অনেকে বলে। আমি বলি বুদ্ধিজীবী, বুদ্ধি প্রতিবন্ধীজীবী। তারা আসলে বুদ্ধিজীবী না, বুদ্ধি প্রতিবন্ধীজীবী। তারা সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে নেতা মেনে তাদের সঙ্গে জড়ো হয় সরকার উৎখাতের জন্য।'
তিনি আরও বলেন, 'হ্যাঁ, খালেদা জিয়াকে আমরা উৎখাত করেছি, এরশাদকে উৎখাত করেছি, জিয়াকেও আমরা উৎখাত করতে পারতাম। কিন্তু আগেই মরে গেছে। ওখানে একটি দুঃখ যে ওর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আগেই অক্কা পেলো। নিজের লোকদের হাতেই মারা গেল।'
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, 'এই সমস্ত দুর্বৃত্তায়ন যারা করেছে, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা কেন? আওয়ামী লীগের অপরাধটা কী?'
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করেছে। আমি ৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি, ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল, স্বাক্ষরতার হার ছিল মাত্র ৪৩ থেকে ৪৫ ভাগ। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেশন জট, অস্ত্রের ঝনঝনানি, অস্ত্র আর গোলাবারুদের গন্ধ। দেশের অর্থনীতি সম্পূর্ণ রসাতলে, রিজার্ভ মাত্র ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। ২০০৯ এ এসে রিজার্ভ পেলাম মাত্র ৫ বিলিয়ন ডলার। ৯৬ সালে খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে বাংলাদেশকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি।'
তিনি বলেন, '২০০১ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বারই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়েছিল। ২০০১ সালে আমাদের ৫ বছর যখন সম্পন্ন হয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছি। এ ছাড়া আর কোনোদিন কি বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়েছে? হয়নি।'
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ৪ জাতীয় নেতা, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও নির্যাতিতদের স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্য শুরু করেন।
তিনি বলেন, 'বিজয়ের মাসে ছাত্রলীগের সম্মেলন হচ্ছে। ছাত্রলীগের সব নেতা-কর্মীকে বিজয়ের মাসের অভিনন্দন জানাচ্ছি। কারণ, এ দেশের প্রতিটি সংগ্রামেই ছাত্রলীগের অবদান রয়েছে।'
'প্রতিটি আন্দোলনে শহীদের তালিকা যদি দেখি, সেখানে ছাত্রলীগের শহীদের তালিকাই বড়। ৭৫ এর পর জিয়াউর রহমান যখন অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করে, তার প্রতিবাদকারী হাজারো সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনীর অফিসারদেরকে জিয়াউর রহমান যেমন হত্যা করেছে, ঠিক একইভাবে ছাত্রলীগের নেতা সেই বাবুসহ অনেককে গুম করে নিয়ে গেছে। তাদের পরিবার লাশও পায়নি। এভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছে', বলেন তিনি।