এবারের অমর একুশে বইমেলায় আসছে লেখক বিদ্যুত জাহিদের লেখা পঞ্চম বই 'সোনালি অভিশাপ'। এটি একটি উপন্যাস।পহেলা ফেব্রুয়ারিতে উদ্বোধন হওয়ার পর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত বই মেলাতে এটি পাওয়া যাবে। আগ্রহীরা সরলরেখার ৩৫৬ নং স্টলে গিয়ে 'সোনালি অভিশাপ' উপন্যাসটি সংগ্রহ করতে পারবেন।লেখক বিদ্যুত জাহিদ তার এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ‘বাংলা ওয়্যার’-কে বলেন, 'উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট ইছামতি নদীর এই পাড়ের সাতক্ষীরা এবং ঐ পাড়ের উত্তর চব্বিশ পরগনার ভূঅঞ্চল ঘিড়ে আবর্তিত। বাংলা সাহিত্য হইতে বিলুপ্ত প্রায় সাধু রীতি’র আস্বাদন পাওয়া যাইবে এই বইটিতে। সাথে থাকিবে সময়ের অতলে শেষ হইয়া যাওয়া জমিদারী সমাজের আলো আঁধারের খেলা।'উপন্যাস সম্পর্কে বলতে গিয়ে লেখক জাহিদ বলেন, 'ইতিমধ্যে তার লেখা বইটি পাঠকদের মাঝে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে।এবারের একুশে বই মেলায় বইটি সর্বোচ্চ সংখ্যক বিক্রি হবে বলে আশা রাখছি।'এছাড়াও বিদ্যুত জাহিদের লেখা কাব্যগ্রন্থ হলো-এক আমি শ্রাবণ, শাল পিয়ালের বনে চন্দ্রিমা রাতে, নদীর নাম পারুল। তিনি ছোটগল্পও লিখেছেন সেটি হলো-'বুকে বৃষ্টির শব্দ' এবং বর্তমানে তিনি আরও কিছু বই লেখার কাজ করছেন যেগুলা আগামী বই মেলায় প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন এই লেখক, কবি এবং সাংবাদিক।লেখালেখির পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতার সাথেও জড়িত আছেন। বর্তমানে তিনি ‘বাংলা ওয়্যার’ পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।এজে/
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
মোকছেদুল মুমীন, জাককানইবি প্রতিনিধি : জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ মাস ধরে নেই বিশ্ববিদ্যালয় ট্রেজারার।গত বছরের ৩০ জুন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ কর্মদিবস সম্পন্ন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ট্রেজারার প্রফেসর মো. জালালউদ্দিন। ২০১৮ সালের ৩ জুলাই দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তিনি। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ পদ এটি। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে প্রো-ভিসি পদ না থাকায় ভিসির অনুপস্থিতিতে রুটিন উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে থাকেন ট্রেজারার। প্রায় সাত মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গুরুত্বপূর্ণ পদটি শূন্য হয়ে আছে।জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৬ এর ১২(৫) ধারায় বলা হয়েছে, ‘ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের সার্বিক তত্ত্বাবধান করিবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ সংক্রান্ত নীতি সম্পর্কে ভাইস-চ্যান্সেলর, সংশ্লিষ্ট কমিটি, ইনস্টিটিউট ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে পরামর্শ প্রদান করিবেন।’এই আইনের ২৮ (১) ধারা অনুযায়ী ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কমিটির সভাপতিও। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট এবং পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়াকার্স কমিটির সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন ট্রেজারার।দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই পদ শূন্য থাকার কারণে প্রশাসনিক কাজ তদারকি এবং সমন্বয়ে উপাচার্যের উপর অতিরিক্ত চাপ পরছে।অথচ এই সুদীর্ঘ সময় পরেও ট্রেজারার নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো ঘোষণা আসছে না।এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড সৌমিত্র শেখর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রেজারার নিয়োগ কিংবা নিয়োগের প্রক্রিয়ায় উপাচার্যের কোনো এখতিয়ার নেই।দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রেজারার পদ শূন্য থাকা প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভিসি, প্রো- ভিসি কিংবা ট্রেজারার নিয়োগে ইউজিসির কোনো ভূমিকা থাকে না। সরকার এসব পদে নিয়োগ প্রদান করে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৪ জানুয়ারি ২০২৩
দেশে অভিনব কৌশলে বেড়ে চলেছে নানা প্রতারণা ও ছিনতাই। প্রতারণার নিত্যনতুন পন্থা অবলম্বন করে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে একটি ভয়ংকর অপরাধী চক্র।বর্তমানে নতুন একটি পন্থা দেশের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এ পন্থায় একজন প্রতারক কিংবা ছিনতাইকারী ভুক্তভোগীকে চাইলেই কাবু করে নিজের ইশারায় নাচাতে পারেন।প্রতারক যে নির্দেশনাই দেবেন, তা-ই অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন সেই নিরীহ ভুক্তভোগী। বিষয়টি জাদুটোনার মতোই কাজ করে।রাজধানীর মাদারটেক আজিজ স্কুল মহল্লার বাসিন্দা রঞ্জু মনোয়ারা। ১৮ জানুয়ারি অনলাইনে পুরাতন ফ্রিজ বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন তিনি।কেনার কথা বলে আশিক নামের এক ক্রেতা তার বাড়িতে আসেন। ফ্রিজ দেখে মোটামুটি পছন্দ হয় তার। পরদিন তিনি তার স্ত্রী পরিচয়ে এক মহিলাকে নিয়ে আবার ওই বাড়িতে আসেন। তারা রঞ্জু মনোয়ারার ড্রয়িংরুমে বসে কথা বলছিলেন।এক সময় রঞ্জু মনোয়ারা ওই মহিলার হাতে তুলে দেন তার গলা ও হাতের অলংকার, ঘরে রাখা নগদ টাকাসহ কয়েক ভরি স্বর্ণালংকার। কিছুক্ষণ পর তারা ওই বাসা থেকে বিদায় নেন।তাদের এগিয়েও দেন রঞ্জু মনোয়ারা। তবে কিছু সময় পর পরিবারের অন্য সদস্যরা বাসায় এসে সবকিছু এলোমেলো দেখে তাকে প্রশ্ন করতেই তিনি বেহুঁশ হয়ে যান।হুঁশ ফেরার পর একে একে তার মনে পড়তে থাকে আগের ঘটে যাওয়া সব দৃশ্য। তবে ততক্ষণে সব শেষ। অনুসন্ধানে জানা যায়, এ ধরনের ঘটনা এখন রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় প্রায়ই হয়ে থাকে। আর এ অপরাধ সংঘটিত করতে ব্যবহার করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর নেশা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ বা স্কোপোলামিন।শয়তানের নিঃশ্বাস একটি হেলুসিনেটিক ড্রাগ। রাসায়নিকভাবে এটি স্কোপোলামিন নামে পরিচিত। স্কোপোলামিন একটি প্রাকৃতিক বা কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত ট্রোপেন অ্যালকালয়েড এবং অ্যান্টিকোলিনার্জিক ড্রাগ।এটি হায়োসিন, ডেভিলস ব্রেথ, শয়তানের নিঃশ্বাস, বুরুন্ডাঙ্গা, রোবট ড্রাগ, জম্বি ড্রাগ বা কলম্বিয়ান ডেভিলের নিঃশ্বাস নামেও পরিচিত। এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় রয়েছে। রোগীকে অপারেশনের আগে অজ্ঞান করতে এটা ব্যবহার করা হয়।এটি মস্তিষ্কের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। দুর্বৃত্তরা লোকজনকে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুটে নিতে এটি ব্যবহার করে। বর্তমানে এটি মাদক হিসাবে বা হেলুসিনেটিক ড্রাগ হিসাবে খুব ব্যবহৃত হচ্ছে। এর ক্ষতির মাত্রা কোকেন থেকে বহুগুণ বেশি। বাংলাদেশের নয়া আতঙ্ক হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে এ মাদক।এর প্রভাব এতটাই ভয়ংকর যে, কোনো ব্যক্তিকে সেকেন্ডেই নিজের নিয়ন্ত্রণে অনায়াসেই আনা যায়। ফলে অনেক ব্যবসায়িক এবং করপোরেট সেক্টরেও কর্তাব্যক্তিদের এটি প্রয়োগ করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে থাকে প্রতারক চক্র।অন্যের আদেশ পালন করতে বাধ্য করানোই হলো এ মাদকের মূলমন্ত্র। ভুক্তভোগীরা হেপনোটাইজ হয়ে অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যান।পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশে এর ব্যবহার বেশি পরিলক্ষিত হলেও এখন পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এর ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এর ব্যবহার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে।নানাভাবে ও নানা কৌশলে এটি প্রয়োগ করা হয়। যেমন, হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে, ঘ্রাণের মাধ্যমে, খাবারের সঙ্গে, চিরকুটের মাধ্যমে, কোমল পানীয়র সঙ্গে, বাতাসে ফুঁ দিয়ে।স্কোপোলামিন তরল ও শুকনো দুই ফরমেটেই পাওয়া যায়। এ ড্রাগটি ৬ থেকে ১২ ইঞ্চি দূরত্ব থেকে শ্বাসের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে, যার প্রতিক্রিয়া থাকে ২০ থেকে ৬০ মিনিট। খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ালে এর প্রতিক্রিয়া থাকে দু-তিন দিন।মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণে শয়তানের নিঃশ্বাসের প্রভাব : স্কোপোলামিন বা শয়তানের নিঃশ্বাস শরীরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মস্তিষ্কের প্রাথমিক স্মৃতি ব্লক হয়ে যায়।ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি আক্রমণকারীকে দেখতে পেলেও চিনতে পারেন না এবং কিছু মনে রাখতে পারেন না। এর প্রভাবে শরীরে কোনো প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে না বা বাইরের কোনো আক্রমণে শরীর কোনো প্রতিক্রিয়া দেখানোর মতো অবস্থায়ও থাকে না।এ অবস্থায় ভুক্তভোগীর আচরণ হয়ে যায় বশীভূত বা সুতায় বাঁধা পুতুলের মতো। তীব্র হেলুসিনেশন শুরু হয়। অন্যের দেওয়া আদেশকে যান্ত্রিকভাবে অনুসরণ করতে বাধ্য করে। মানে আপনি নিজে কিছু করতে পারবেন না, শুধু সামনের লোক যা বলবে তাই করবেন রোবটের মতো।গবেষণায় জানা গেছে, ভয়ংকর এ সংস্পর্শে এলে ভুক্তভোগী নিজ ইচ্ছায় কোনো প্রতিবাদ ছাড়াই সবকিছু তুলে দেয় প্রতারকের হাতে। সত্য উদঘাটনের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরাও এ মাদকটি ব্যবহার করেন। কলম্বিয়ায় উৎপন্ন হওয়া এ মাদকটি নিয়ে ১৮৮০ সালে সর্বপ্রথম জার্মান বিজ্ঞানী আলবার্ট লাদেনবার্গ গবেষণা শুরু করেন। ১৯২২ সালে এটি সর্বপ্রথম কারাবন্দিদের ওপর প্রয়োগ করা হয়।বর্তমানে এ মাদকটি মূলত প্রতারক চক্রের সদস্যরা ব্যবহার করে থাকে। কলম্বিয়ায় উৎপত্তি হলেও ইকুয়েডর ও ভেনিজুয়েলাতেও মাদকটির যথেষ্ট বিস্তার রয়েছে। এছাড়া পেরু, আর্জেন্টিনা, চিলি প্রভৃতি দেশে এটি মাদক হিসাবে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় এবং ওই দেশের অপরাধীরা বিভিন্ন বয়সি নারীদের দিয়ে নীলছবি ও অবাধ মিলনে বাধ্য করতে এটি ব্যবহার করে।বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর মেজর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, বেশকিছু ড্রাগ রয়েছে যেগুলোর প্রয়োগে মানুষের মন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।এর মধ্যে অন্যতম স্কোপালামিন বা ডেভিলস ব্রেথ। সংশ্লিষ্টদের এখনই সতর্ক হওয়া ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এছাড়া বায়ুবাহিত অজানা বিপদ থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক ব্যবহার করা দরকার।এর সুবিধা হলো দুষ্কৃতকারীরা সহজে টার্গেট করবে না। টার্গেট করলেও মাস্ক প্রটেকশন দেবে এবং সচেতন হলে ততক্ষণে বুঝে যাবে যে, ভুক্তভোগীর সঙ্গে কী হতে যাচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৪ জানুয়ারি ২০২৩
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম বলেছেন, "আওয়ামী লীগ সরকার দেশ ও জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে সফল হয়েছে । আনলাইন গণমাধ্যম সারাবাংলা ডট নেটের সঙ্গে আলাপচারিতায় ব্যক্তিগত অনুভূতির পাশাপাশি রাজনৈতিক পথচলার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন তিনি।আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবার আপনাকে উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মনোনীত করেছেন? এই অর্জনকে কীভাবে দেখছেন?জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি আমাদের অভিভাবক। ব্যক্তিগতভাবে আমি মাতৃতুল্য জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে চির কৃতজ্ঞ। কারণ অনেক যোগ্য প্রার্থীও এখানে ছিলেন। এই পদে আসীন হওয়ার জন্য শেখ হাসিনা হয়ত আমাকে যোগ্য মনে করেছেন। এই কারণে তিনি গুরুদায়িত্ব দিয়েছেন। আমি মনে করি, মাননীয় নেত্রী আমার ৩০ বছরের অভিজ্ঞতাকে মূল্যায়ন করেছেন। আমি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রচারিক কাজে, দাফতরিক কাজে গত ৩০ বছর নেত্রীর সঙ্গে কাজ করেছি। প্রচার কাজে আমার যে অভিজ্ঞতা তার পুরোটা দলের জন্য দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করব।সারা বাংলাদেশে ৭৮ সাংগঠনিক জেলা, আটটি মহানগরে দলের পক্ষ থেকে এমন প্রচার কর্মকাণ্ড চালাব যেন জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাস-নৃশংসতা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ সম্পর্কে দেশের আপামর মানুষ জানতে পারেন। জামায়াত-বিএনপির নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ পিছিয়ে গিয়েছিল, রাজনীতির সুষ্ঠু ধারা দেউলিয়া হয়েছিল। তাদের ওইসব হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সচিত্র প্রচারকার্য চালানো হবে। পাশাপাশি আমাদের টিম ভিজ্যুয়াল জগতেও সাইবার প্রচারণা চালাবে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের ধারাবাহিক বিজয় অক্ষুণ্ন রাখার লক্ষ্যে বর্তমান কমিটির সামনে কী চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে বলে মনে করেন?সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম বলেন আমাদের কাছে বিএনপি পক্ষে যে সত্য ইতিহাস আছে তা আমরা জনসম্মুখে তুলে ধরব।বিএনপি ক্ষমতায় আসার যে দুঃস্বপ্ন দেখছে, তাদের এই দুঃস্বপ্ন কোনোভাবেই সফল হবে না। ওদের (বিএনপি) বিক্ষোভ-সমাবেশ ঘেরাও কর্মসূচির কোনো প্রয়োজন ছিল বলে মনে করি না। আমার কথা হলো- ভোটে জিততে হলে জনমত তৈরি করতে হবে। ক্ষমতায় আসতে হলে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হয়। সেই আস্থা বিএনপি-জামায়াত বেশ কয়েকবার হারিয়েছে। এর বিপরীতে আওয়ামী লীগের প্রতি, আওয়ামী লীগের কাণ্ডারি শেখ হাসিনার প্রতি জনমনের আস্থা পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আওয়ামী লীগ সরকার ও শেখ হাসিনা আস্থা অর্জন করেছে। দেশের মানুষ পাশে আছে বলেই আওয়ামী লীগ জনগণের সমর্থন নিয়ে বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে পেরেছে। আগামীতে আওয়ামী লীগ অনিবার্যভাবে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবে। আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের এই আস্থা কীভাবে অর্জন হয়েছে বলে মনে করেন?সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম বলেন, কারণ আওয়ামী লীগ জনগণের দল, গণমানুষের দল। আওয়ামী লীগের ভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে সবসময় জনগণ থাকে। আওয়ামী লীগ মানেই দেশের উন্নয়ন, জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন। আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নে সফল হয়েছে। এমন কোনো খাত নেই, যেখানে উন্নয়ন হয়নি। সর্বশেষ বাংলাদেশ মেট্রো রেলের জগতে প্রবেশ করেছে। এর আগে বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নিজেদের অর্থায়নে আমরা পদ্মা সেতু উপহার দিতে পেরেছি।বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রসহ অনেক মেগা প্রজেক্ট এখন চলমান। একদিকে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অন্যদিকে মানুষের সুখ-শান্তি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছে। গত করোনার সময়ও দেখেছি আওয়ামী লীগ সরকার একমাত্র রাজনৈতিক সরকার এবং দল হিসেবে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সম্মুখসারিতে থেকে দলের নেতাকর্মীরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাস্তবায়ন করেছেন। আপামর নেতাকর্মীরা করোনা ভুক্তভোগীদের কাছে ছুটে গিয়েছেন। মানবিক সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন।অপরদিকে বিএনপি বিক্ষোভ-সমাবেশের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমার কাছে মনে হয়, এটি তারা ভোটের জন্য করছেন না। ভোটের জন্য করলে তারা গ্রামগঞ্জে যেতেন, ভোট চাইতেন। ওরা ভোট চাইছে না। ওরা চায় শেখ হাসিনার পদত্যাগ। ওরা ভোট চায় না, চায় আওয়ামী লীগ সরকারের পতন। কিন্তু ওদের পতনের ডাকে কেউ সাড়া দিচ্ছে না। যে কয়টা লোক ওদের সমাবেশে দেখা যায়, তারা বিএনপির বেনিফিশিয়ারি। তারা বিএনপির কাছ থেকে টাকা-পয়সা পেয়ে সমাবেশে আসে। তারা তাদের আদর্শে লালিতপালিত। এরা এন্টি আওয়ামী লীগ, স্বাধীনতাবিরোধী, পাকিস্তানপন্থী। তবে আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার আমরা কখনও আমাদের দেশকে পাকিস্তান হতে দেব না। পাকিস্তানের মতাদর্শ দেশে ফিরিয়ে আসতে দেব না।আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এই জায়গায় বিএনপিকে কোনো হঠকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হতে দেওয়া হবে না। বাংলার মানুষ দেবে না। আমরা বিএনপির যে কোনো অপকর্ম সন্ত্রাস, অপকৌশল রাজপথে প্রতিহত করব।স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে দলের সামনে আগামীতে কী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হতে পারে বলে মনে করেন?সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম বলেন, এখন বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। পৃথিবীর অনেক দেশ ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে মন্দায় ভুগছেন। দক্ষিণ এশিয়ায় জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে দেশ পরিচালনার কারণেই একমাত্র বাংলাদেশে আমরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করছি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রেমিট্যান্সের ইতিবাচক প্রবাহ- সবকিছু মিলে আমরা এখন অর্থনৈতিকভাবে একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় আছি। শুধুমাত্র শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী বিচক্ষণতার কারণে আজকে বাংলাদেশ নিরাপদ। বাংলাদেশের জনগণ নিরাপদ। এই কারণে মনে করি, যে চ্যালেঞ্জেই আসুক, আমরা জাতি হিসাবে যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে সেগুলো মোকাবিলা করতে পারব।বর্তমান সংকট মোকাবিলা করার জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্ব যথেষ্ট। তার নেতৃত্বে এই দেশের যে কোনো সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব। যেমন আমরা করোনা মোকাবিলা করেছি। এখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্য ঠিক আছি এবং টিকে থাকব। চ্যালেঞ্জ থাকবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই আমরা এগিয়ে যাব। সেই বিশ্বাস, সততা, পরিশ্রম, দেশপ্রেম; আওয়ামী লীগের মধ্যেই বর্তমান। আর কোনো দলের মাঝে নেই।সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সারাবাংলা ডট নেটের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট নৃপেন রায়
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২২ জানুয়ারি ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার স্টেট সিনেট অ্যাসেম্বলিতে স্থান পেলো বাংলাদেশি মালিকানাধীন একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।বুধবার (১৮ জানুয়ারি) ভার্জিনিয়ার ফেয়ারফ্যাক্স স্টেট সিনেটর জন চ্যাপম্যান পিটারসন ভার্জিনিয়ার স্টেট সিনেট অ্যাসেম্বলিতে তার উপস্থাপনায় তুলে আনেন নিজের নির্বাচনী এলাকার এই বিশ্ববিদ্যালটির কথা।বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ ও প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্কের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এতে যোগ দেন। আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএফও ফারহানা হানিপ, বিজনেস স্কুলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মার্ক রবিনসন, জেনারেল এডুকেশন অ্যান্ড সেন্টার ফর স্টুডেন্ট সাকসেসের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডাইরেক্টর ড. হুয়ান লি ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নাঈম হাসান।সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভার্জিনিয়ার ৪০ জেলার স্টেট সিনেটর। অ্যাসেম্বলি পরিচালনা করেন লেফট্যান্যান্ট গভর্নর উইনসাম আর্ল সিয়ার্স।সেনেটরের উপস্থাপনার পর লেফটেন্যান্ট গভর্নর উইনসাম আর্ল সিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান এবং যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার বিস্তার এবং ভবিষ্যতের জন্য আশা জাগানিয়া অবদান রাখার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।এক প্রতিক্রিয়ায় ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ বলেন, 'প্রতিটা কাজেরই একটা স্বীকৃতির প্রত্যাশা থাকে। স্টেট অ্যাসেম্বলিতে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির কথা উঠে আসা একটি অন্যতম স্বীকৃতি। এতে আমাদের এগিয়ে চলার পথে নতুন উদ্দীপনা কাজ করবে।'তিনি আরও বলেন, 'অ্যাসেম্বলি হলে সব স্টেট সিনেটর ও অন্য অতিথিরা যখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য করতালি দিচ্ছিলেন সে সময়টি আমাকে অবশ্যই গর্বিত করেছে। দৃশ্যটি আমার দীর্ঘদিন মনে ধরে থাকবে।'বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্ক বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির জন্য দিনটি ছিল স্মরণীয় হয়ে থাকার মতো একটি দিন।'ফারহানা হানিপ বলেন, 'এই অর্জন বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার। এতে সবাই আরও উদ্দীপ্ত হয়ে কাজ করবে। স্টেট পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি যে স্বীকৃতি পেলো নিঃসন্দেহে তা এর নতুন পথচলার উদ্দীপনা হয়ে থাকবে। একসময় ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকেও মিলবে এমন স্বীকৃতি এমনটাই প্রত্যাশা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত সবার।'প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২০২১ সালে ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ বিশ্ববিদ্যালয়টির মালিকানা নেন। এর পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টি তার শিক্ষণ ও পরিচালন পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনে। যার মধ্য দিয়ে এটি দ্রুত উন্নতির পথে এগিয়ে যায় ও শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।২০২১ সালে তি্ন শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে আবুবকর হানিপ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার যাত্রা শুরু করেন। দুই বছরের ব্যবধানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২০০ এর বেশি। যার মধ্যে পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলার কাম প্রাক্টিশনার শিক্ষক, সুসংগঠিত টিমওয়ার্ক, শ্রেণিকক্ষে কর্মস্থলের রেপ্লিকা সৃষ্টি করে দেওয়া বিশেষ শিক্ষাপদ্ধতি ও সেন্টার ফর স্টুডেন্ট সাকসেস প্রতিষ্ঠা এই সাফল্যের কারণ।বিদেশি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও গ্রিনকার্ড হোল্ডার শিক্ষার্থীরাও এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের পাঠ্যস্থল হিসেবে বেছে নিচ্ছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২১ জানুয়ারি ২০২৩
আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলকে ঢাকায় আনার উদ্যোগ সফল হতে চলেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে জুনে ঢাকায় আসছে লিওনেল মেসির বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনা।আর্জেন্টিনার ঢাকায় আসার বিষয়টা প্রায় চূড়ান্ত জানিয়ে বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আর্জেন্টিনার প্রস্তাবিত এই সফর চূড়ান্ত হয়ে এসেছে। এখন শুধু টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন নিয়ে আলোচনা চলছে। তারা আমাদের জানিয়েছে যে জুনের ফিফা উইন্ডোতে তারা আসতে চায়। টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন সমস্যা না হলে জুনে তারা আসবে বলাই যায়।’বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজের যা অবস্থা, তাতে খেলা হবে কোথায়, সেই প্রশ্ন আসে। কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই খেলা হবে। আমরা আজ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে চিঠি দিয়েছি জরুরি ভিত্তিতে সব করে দিতে। তারা রাজি হয়েছে। স্টেডিয়াম ঠিক না হলে খেলাই তো হবে না।’ঢাকায় আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ হবে কারা? আসছে এমন প্রশ্নও। কাজী সালাউদ্দিন বলেন,‘আর্জেন্টিনা তাদের কোচের সঙ্গে আলোচনা করে কয়েকটি দেশের নাম দেবে আমাদের। তারপর সেই নামগুলো নিয়ে কাজ করব আমরা। শেষে একটি দেশ ঠিক করা হবে।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৮ জানুয়ারি ২০২৩
কলকাতার নন্দিত অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী অভিনয় ছাড়ছেন। ২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিতে বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন পর্দার ‘ফেলুদা’। আর এখানেই সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিষয়টি জানিয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা।সব্যসাচী চক্রবর্তীর কথায়, ‘আমার কাছে পুরো পৃথিবী থেকে অনেক সিনেমার প্রস্তাব আসছে। সবাইকে না বলে দিয়েছি। আপাতত কোনো সিনেমাতেই নাম লেখাচ্ছি না। আমি সিনেমা থেকে বিদায় নিচ্ছি। এখন অবসরের সময়। আমি নিজের মতো করে বাকি সময় কাটাতে চাই।’গুণী এই অভিনেতা আরও যোগ করেন, ‘এখন আমি সবাইকে না বলে দিচ্ছি। আমি আর কাজ করব না। আমার সময় শেষ। আমি এখন অবসরে। আমি আলাদা হয়ে গেছি। এতদিন অন্যের জন্য কাজ করেছি। এখন শুধুই নিজের জন্য কাজ করব।’অবসরের সময়টায় কী করবেন সেটাও জানালেন সব্যসাচী, ‘এই সময়ে পছন্দের খাবার খাব, ঘুমাব, বই পড়ব, টেলিভিশন, ওটিটি দেখব, খেলা দেখব—আপাতত এই পরিকল্পনা।’উল্লেখ্য, ‘গন্ডি’র পর আবারও বাংলাদেশের ফখরুল আরিফিনের সিনেমায় কাজ করেছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী। যেটির নাম ‘জেকে ১৯৭১’। চলমান ২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিচ্ছে সিনেমাটি। সেটির অভিনেতা হিসেবে অতিথি হয়ে তার ঢাকায় আসা।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৮ জানুয়ারি ২০২৩
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে এ বছর যে বইগুলো গেছে সেগুলো পরীক্ষামূলকভাবে গেছে। মাধ্যমিকের ৩৩ হাজার প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষামূলক সংস্করণ বইগুলো দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষাবিদদের কাছ থেকে ফিডব্যাক নেওয়া হবে এবং সে অনুযায়ী বছরব্যাপী এগুলোকে পরিমার্জন-পরিশীলন করা হবে।তিনি বলেন, কাজেই এবার ৬ষ্ঠ, সপ্তম ও প্রথম শ্রেণিতে যে বইগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে উঠেছে সেগুলোতে ভুল থাকতে পারে। বিষয়বস্তুর সঙ্গে কারও দ্বিমত, অস্বস্তি কিংবা আপত্তি থাকতে পারে, সেগুলো যেন আমাদের জানানো হয়। আগামী বছরগুলোতে সেগুলোর সংস্করণ করবো।শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতার চত্বরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত একুশ শতকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্রসমাজের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৫ জানুয়ারি ২০২৩
রাজধানীর রামপুরা টিভি সেন্টারের পাশে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে মনোয়ার আদিব (৩০) নামে এক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষার শেষে মৃত ঘোষণা করেন।মনোয়ার আদিবের ফুপা আবুল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মনোয়ার একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। গতকাল রাতে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয়ে। পরে স্ত্রীকে রুম থেকে বের করে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে দেয় মনোয়ার। পরে ডাকাডাকি করলে দরজা না খোলায় স্ত্রীর ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে দরজা ভেঙে দেখে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।তিনি বলেন, তার বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানার দারিয়াল গ্রামে। স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাসাতেই থাকতেন মনোয়ার।ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনা রামপুরা থানাকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি তারা তদন্ত করছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৪ জানুয়ারি ২০২৩
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পাঁচটি ঝুঁকি দেখছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)। এ ঝুঁকিগুলো হলো- উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ঋণসংকট, উচ্চ পণ্যমূল্যের ধাক্কা, মানবসৃষ্ট পরিবেশগত ক্ষতি ও সম্পদের জন্য ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা। ডব্লিউইএফের ধারণাগত এই জরিপে মোট ৩৫টি ঝুঁকির কথা বলা হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের শীর্ষ পাঁচটি ঝুঁকি চিহ্নিত করতে বলা হলে তারা ক্রমানুসারে ওই পাাঁচটি ঝুঁকি চিহ্নিত করেন। বাংলাদেশের মোট ৭২টি কোম্পানি জরিপে অংশ নেয়। অন্যান্য দেশেও তারা এই জরিপ করেছে। তাদেরও শীর্ষ পাঁচটি ঝুঁকি চিহ্নিত করতে বলা হয়। সার্বিক জরিপ থেকে তারা সারা বিশ্বে আগামী দুই বছরের অর্থনৈতিক ঝুঁকি চিহ্নিত করেছে। জরিপের ফলাফল থেকে তারা বলছে, বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। বাংলাদেশে ডব্লিউইএফের অংশীদার হিসেবে কাজ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৪ জানুয়ারি ২০২৩
বিয়ে করলেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান জয়। শুক্রবার বাদ আসর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তার আকদ সম্পন্ন হয়।এসময় তার স্বজনদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নসহ অনেকে।জয়ের স্ত্রীর নাম কাকন ভুঁইয়া। তিনি ইডেন কলেজ থেকে অনার্স, মাস্টার্স করেছেন বলে জানা গেছে।আকদ অনুষ্ঠানে ঘিয়া রঙের পাঞ্জাবি, হালকা গোলাপি কটি পরেছিলেন জয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৪ জানুয়ারি ২০২৩
বাবা ভক্তের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওসমান গণি বেশ আলোচনায় এসেছেন । সমাবর্তনে অংশ নেয়ার অর্থ দিয়ে বাবার ঢাকা দেখার স্বপ্নপূরণ করেছেন ওসমান। এর পরই এই খবর ছড়িয়ে পড়ে গণমাধ্যমে। পরে তাকে ডেকে নিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গেল বুধবার সন্ধ্যায় (২৮ ডিসেম্বর) ঢাবি শিক্ষার্থী ওসমান গণিকে তার বাবাভক্তির জন্য নিজের বাসায় ডেকে কথা বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ।পত্রিকায় বাবার প্রতি ভালোবাসার এ সংবাদ দেখে তথ্যমন্ত্রী তার মিন্টো রোডের বাসভবনে ওসমান গণিকে আমন্ত্রণ জানান। মন্ত্রীর বাসভবনে এলে ওসমান গণিকে বুকে জড়িয়ে ধরেন ড. হাছান। এ সময় ওসমানের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়ে সার্বিক খোঁজখবর নেন এবং মন্ত্রী নিজের বাবা ও ছাত্রজীবনের স্মৃতিচারণ করেন। এসময় ওসমান গণি ও তার বাবার জন্য উপহার সামগ্রী এবং আর্থিক সহায়তা দেন ড. হাছান মাহমুদ । জানা যায়, পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ওসমান গণি তার সঞ্চয় দিয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের রেজিস্ট্রেশন না করে সে অর্থ দিয়ে তার বাবা বুলু আকন্দকে প্রথমবারের মতো ঢাকা মহানগরী ও পদ্মাসেতু দেখান। পরে সহপাঠীদের কাছ থেকে গাউন ধার করে বাবার সঙ্গে ছবি তুলে ১৯ নভেম্বর ফেসবুকে তিনি লেখেন- ‘আমাকে গড়ার মূল কারিগর আমার বাবা, আজ আমার ক্যাম্পাসে। ৫৩তম সমাবর্তন, ঢাবি।’ওসমান গণির মা রওশন আরা ও বাবা বুলু আকন্দ বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলার হাঁসরাজ গ্রামের বাসিন্দা।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩০ ডিসেম্বর ২০২২
বগুড়া শহরে বিভিন্ন জায়গায় টানা পার্টি ও ছিনতাইকারী দলের উপদ্রব চলছে দীর্ঘদিন ধরে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান তৎপরতা থাকলেও কমানো সম্ভব হচ্ছে না টানা পার্টি ও ছিনতাইকারী দলের উৎপাত। দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে তাদের অপরাধ কর্মকাণ্ড। এদের হাত থেকে নিস্তার পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ।ভুক্তভোগীরা জানান, চারমাথা বাসস্ট্যান্ড, দত্তবাড়ী সিএনজি স্ট্যান্ড, চেলোপাড়া সিএনজি স্ট্যান্ড, ফুলতলা থেকে সাতমাথা রোড, দত্তবাড়ী থেকে বারপুর রোড, সাতমাথা থেকে তিন মাথা রেলগেট রোড, নিউ মার্কেট ও রানাপ্লাজার সামনে ওৎ পেতে বসে থাকে টানা পার্টির সদস্যরা। এই জায়গা গুলো টানা পার্টি ও ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য।ভোরবেলা ও গভীর রাত হলেই শহরের বিভিন্ন জনশূন্য মোড় ও রাস্তায় অবস্থায় নিচ্ছে ছিনতাইকারী ও টানা পার্টির সদস্যরা। রাস্তায় কোনো নারী বা পুরুষ রিকশায় করে একা যাওয়ার সময় তারা টার্গেট করছে। চলতি পথে যেখানে সামনে ও পেছনে কোনো যানবাহন কম সেখানেই তারা ছোঁ মেরে নিয়ে যাচ্ছে ব্যাগ ও সঙ্গে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে সর্বস্বান্ত করে ছেড়ে দেয় এমনকি ধারালো ছুরি দিয়ে আহত করে।সোহরাব ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, আমি পেশায় একজন কাপড় ব্যবসায়ী। আমার বাসা বগুড়া শহরের মালতিনগর। পেশাগত কাজের কারণে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয় আমাকে। কিছুদিন আগে ব্যবসার কাজ শেষ করে ঢাকা থেকে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে ভোররাতে সাতমাথা নেমে পরি। সাতমাথা থেকে রিক্সা করে বাসার উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় জেলখানা মোড়ে আসার সাথে সাথে ১০/১২ জনের ছিনতাই কারী একটি দল আমার পথ রোধ করে আমার কাছে থাকা ব্যবসায়ের ৮০০০০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। ঘটনাস্থল থেকে একটু দূরে সিএনজিতে করে টল পুলিশের একটি টিম ছিল আমি চিৎকার করেও পুলিশের সহযোগিতা পায়নি।ভুক্তভোগী ৩ নং রেলগেট ব্যবসায়িক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মোকারম ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জাহিদ জানান, গত ২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জলেশ্বরীতলা থেকে ব্যক্তিগত কাজ শেষ করে রিক্সায় করে আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পথে জলেশ্বরীতলা কালীমন্দির এর কাছে আসা মাত্র আমার বিপরীত দিক থেকে আসা মোটরসাইকেলে থাকা দুই জন আরোহীর একজন আমার হাতে থাকা মোবাইল থাপা মেরে জেলখানা রোডের দিকে যাওয়ার সময় লোকজন তাদের কিছু ধাওয়া করলে তারা মোবাইল রাস্তায় ফেলে দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।তিনি আরও জানান, পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ অতি দ্রুত এইসব ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিলে আমরা সাধারণ জনগণ এদের থেকে নিস্তার পেতে পারি।সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম তুহিন জানান, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, বেকারত্ব বৃদ্ধি, পারিবারিক শাসনের অভাব, রাজনৈতিক অবক্ষয় এইসব অপরাধের মূল কারণ। সামাজিকভাবে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন সোচ্চার না হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একার পক্ষে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। অনেক ব্যক্তি ছিনতাইয়ের শিকার হলেও থানা পুলিশের দ্বারস্থ হচ্ছেন না। ফলে বিষয়টি গণমাধ্যমেও আসছে না। অনেক ঘটনাই চাপা পড়ছে। বেশিরভাগ ভুক্তভোগী মান-সম্মান ও থানা পুলিশকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ঘটনা এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) জনাব আব্দুল রশীদ জানান, ছিনতাইকারী ও টানা পার্টির বেশকিছু গ্রুপকে ইতোমধ্যে আমাদের জেলা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। টানা পার্টি নিয়ে আমাদের বিভিন্ন টিম কাজ করছে। সদর থানা ও ফাঁড়ির টহল টিমকে এ ব্যাপারে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। থানা পুলিশের কোন সদস্য যদি এই কাজে টালবাহানা করে এমন অভিযোগ পেলে এবং তা প্রমাণিত হলে সেই সদস্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩০ ডিসেম্বর ২০২২
আজি হতে অর্ধ শতবর্ষ পূর্বে পৃথিবী শ্রেষ্ঠ ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, "আর দাবায়ে রাখবার পারবা না।" জাতির পিতার কট্টর সমালোচক ও ক্ষ্যাপাটে বিরোধী আহমদ ছফা লিখেছেন, ‘বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ কাব্য চর্যাপদ নয়, বৈষ্ণব গীতিকা নয়, সোনার তরী কিংবা গীতাঞ্জলি কোনোটা নয়, বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ কাব্য গীতি হলো “আর দাবায়া রাখতে পারবা না”। সাত মার্চের ভাষণের পর পঁচিশ মার্চের কালরাতে বাঙালিকে দমন করার জন্য নৃশংস গণহত্যা শুরু করা হয়। নয়মাস ধরে চলে হত্যাযজ্ঞ। বাঙালিকে দাবিয়ে রাখা যায় নি। ওরাই দেবে গেছে। পঁচাত্তরের মধ্য আগস্টের কালরাতে বাঙালির সাহসের খনি জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হল বাঙালিকে দাবানোর জন্য। জাতির পিতার বিদুষী কন্যা শেখ হাসিনার ওপর বারবার হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করা হয়েছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট পিএমএ প্রশিক্ষিত জল্লাদের সন্তান খুনি তারেক আর্জেস গ্রেণেড দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার ওপর হামলা করলো তার পিতার অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণ করতে। উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। যা ছিল ইয়াহিয়া-টিক্কার, তাই ছিল জিয়া- তারেকের। বাঙালিকে দাবিয়ে রাখবার দুঃস্বপ্ন। কিন্তু মহান রাহমানুর রাহীম রহমতের চাদর বিছিয়ে বাঙালির স্বপ্ন ও সম্ভাবনার সুরক্ষা দিয়েছেন। আজ এক শুভ দিন। ২০০৮ সালে আজকের দিনে অনুষ্ঠিত অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও অর্থবহ নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাঙালির আপন দল আওয়ামী লীগ ভুমিধ্বস বিজয় অর্জন করেছিল। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর অগ্রযাত্রা টেকসই ও গতিময় হয়েছে। আজ আরেক শুভ দিন। আজ বাঙালি মেট্রোরেলের যুগে শুভ পদার্পণ করল। দিগ্বিজয়ী রাষ্ট্রনেতা, বাঙালির আপন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাঙালি নতুন স্বপ্ন যাত্রার মাইল ফলক অতিক্রম করল। এই মেট্রোরেলের কারিগর জাপানিজ প্রকৌশলীদের হলি আর্টিজেনে হত্যা করা হয় যেন ওরা পালিয়ে যান। বাঙালির স্বপ্ন যাত্রা যেন পতিত প্রকল্পে পরিণত হয়। কিন্তু মুজিবকন্যার দৃঢ়তা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে জাপানিজ প্রকৌশলীরা আমাদের পাশে থেকে মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজসম্পন্ন করেছেন। বাঙালির অকৃত্রিম ও সর্বকালের বন্ধু জাপানিজদের প্রতি আন্তরিক কৃতজতা জ্ঞাপন করছি। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ এবং সম্ভবত একটিমাত্র দেশ, যে দেশে জন্ম নেওয়া ও বসবাসকারী কতিপয় নাগরিক দেশকে অবজ্ঞা করে পৈশাচিক সুখ পায়। দেশের যে কোন অর্জন ভালভাবে নিতে পারে না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জ্বালায় দেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেন। পাকিস্তানের রক্তবীজ বা আদর্শবীজ ধারন করা অনেক জ্ঞানী ব্যক্তি নামে পরিচিত সম্মানিত নাগরিকদের মাঝেও নানা নেতিবাচক তথ্য উপাত্ত দিয়ে উন্নয়ন-অগ্রগতি বিরোধী গুজব ছড়িয়ে জনমনে বিভ্রান্ত ছড়ানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তাদের ছড়ানো গুজবের পালে ঠিকমত হাওয়া লাগলে রাতারাতি আমাদের অর্থনীতি বড় ধাক্কার সম্মুখীন হতে পারে জেনেও এই ধরণের জ্ঞানবাজরা সযতনে কাজটি করে থাকেন। সেন্টার ফর পোলাইট ডেভিলস- এর জ্ঞানবাজদের উৎপাদিত নানাবিধ আশঙ্কার খানিকটা বাস্তবে রূপ পেলে বাংলাদেশ বহু আগেই ইথোওপিয়া হয়ে যেত। সৌভাগ্য যে, তাদের 'ডলারের বিনিময়ে তথ্য সন্ত্রাস' কর্মকান্ডের বিপরীতে বাঙালি জাতির হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম আর দেশপ্রেমিক সঠিক নেতৃত্ব দেশকে সমুখের পানে এগিয়ে নিচ্ছে প্রতিনিয়ত। আজ উন্নয়ন-মাতার হাত ধরে আমরা এক নতুন যুগে পদার্পণ করলাম। বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান বুয়েটের দূর্ঘটনা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় জানা যায় যে, ২০২২ সালে ঢাকার সড়কে প্রতিদিন ৮০ লাখের বেশি কর্ম-ঘণ্টা নষ্ট হয়েছে। যানজটের কারণে প্রতিদিন যে কর্ম-ঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে তার আর্থিক মূল্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) বলেছে, রাজধানী ঢাকার অসহনীয় যানজটে শুধু মানুষের ভোগান্তি ও কর্মঘণ্টাই নষ্ট হচ্ছে না—এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জিডিপি এবং মাথাপিছু আয়ও। শুধু ঢাকার যানজটের কারণেই বছরে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ৯ শতাংশ। মেট্রোরেল নিঃসন্দেহে গতিময় যাতায়াত নিশ্চিত করবে। মহান আল্লাহর অসীম রহমতে উন্নয়ন মাতা শেখ হাসিনা বেঁচে থাকলে, সুস্থ থাকলে এবং তাঁর যাদুকরি হাতে দেশ পরিচালনার ভার অর্পিত থাকলে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে আরো ৫ টি উড়াল ও পাতাল রেল লাইন চালু হবে। ৩১ কিলোমিটারের এমআরটি-১ নির্মিত হবে বিমানবন্দর থেকে নতুন বাজার, বাড্ডা হয়ে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত। এই প্রকল্পে জাপান সরকার দেবে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা, বাকি ১৩ হাজার ১১১ কোটি টাকা দেবে বাংলাদেশ। ২০২৬ সালে প্রকল্প শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন বাজার এমআরটি-১ থেকে পূর্বাচলের দিকে পিতলগঞ্জ পর্যন্ত আরো ১১.৩৭ কিলোমিটারের উড়ালপথ নির্মিত হবে ২০২৮ সালের টার্গেটে। ২০ কিলোমিটারের এমআরটি-৫ (উত্তর) সাভারের হেমায়েতপুর শিল্পাঞ্চল থেকে শুরু হয়ে আমিনবাজার- মিরপুর- বনানী- গুলশান হয়ে ভাটারা পর্যন্ত নির্মিত হবে। এই প্রকল্পেও জাপান ও বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে অর্থায়ন করবে, ২০২৮ সালের মধ্যে প্রকল্প শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। গাবতলী থেকে আসাদগেট- রাসেলস্কয়ার-সোনারগাঁও- হাতিরঝিল- রামপুরা হয়ে দাশেরকান্দি পর্যন্ত ১৭.৪০ কিলোমিটার উড়াল-পাতাল মিলিয়ে এমআরটি-৫ (দক্ষিণ) নির্মিত হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে গাবতলী থেকে বসিলা- মোহাম্মদপুর- ঝিগাতলা- সায়েন্সল্যব- নীলক্ষেত- আজিমপুর- গুলিস্তান- মতিঝিল-কমলাপুর- ডেমরা হয়ে চট্টগ্রাম রোড পর্যন্ত উড়াল ও পাতাল সমন্বয়ে প্রায় ২৪ কিলোমিটারের এমআরটি -২ নির্মিত হবে। জিটুজি পিপিপি'র ভিত্তিতে লাইনটি নির্মাণের জন্য জাপান ও বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।এভাবে সমগ্র ঢাকা মহানগর ও পার্শ্ববর্তী এলাকাকে উড়াল ও পাতাল পথে মেট্রোরেল দিয়ে সংযুক্ত করা হবে। আর ৮ বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে কাজগুলো সমাপ্ত হবে। ঢাকায় যানজট কমবে, জ্বালানি তেলের বায়ুদূষণ কমবে, পরিবেশ উন্নত হবে। সর্বোপরি যানজটের কারনে যে ২.৯% জিডিপি'র প্রবৃদ্ধি লোকসান হচ্ছে সেখান থেকে দুই তৃতীয়াংশ লোকসান পুষিয়ে কেবলমাত্র একটি খাত আমাদের ২% প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি সম্ভব হবে। বর্তমান ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারের জাতীয় অর্থনীতির ২% বার্ষিক প্রবৃদ্ধি টাকার অঙ্কে কত হয় তা একবার পাঠক বিবেচনা করে দেখতে পারেন। আজকের শুভদিনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের "আর দাবায়ে রাখবার পারবা না" বজ্রকন্ঠ বারবার মনে পড়ছে। বাঙালিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনি, পারবেও না। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার নতুন স্বপ্ন সফল হোক। বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখে, আওয়ামী লীগ সেই স্বপ্ন সম্ভব করে।লেখক-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৯ ডিসেম্বর ২০২২
কিউ, এম, সাঈদ টিটো, নওগাঁ : বুধবার চালু হয়েছে স্বপ্নের মেট্রোরেল। এই মেট্রোরেলের লোগো বানিয়েছেন যিনি তিনি নওগাঁর কৃতি সন্তান আলী আহসান নিশান। নওগাঁ পৌরসভার ধামকুড়ি এলাকার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। মূল লোগো ছাড়াও মেট্রোরেলের স্টেশনে যে সাইনগুলো রয়েছে সেগুলোও তার করা। মেট্রোরেলের লোগো বানিয়ে ইতিহাসের অংশ হওয়া নিশানকে নিয়ে গর্বিত নওগাঁর মানুষ। এটি এখন নওগাঁর ট্যক অব দ্য টাউন।সৈয়দপুরে রেলের লোকোমোটিভ ওয়ার্কসপের ইঞ্জিন হল্ড কারখানার তত্ত্বধায়ক হিসেবে কাজ করতেন নিশানের বাবা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের গ্রাফিকস ডিজাইন বিভাগ থেকে সদ্য পাস করা নিশান জানান, এই লোগোর মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে পুরো বাংলাদেশকে। একটা লাল সূর্য উঠছে। নিচে বাংলার চিরচেনা সবুজের মাখামাখি। দুইয়ে মিলে বাংলাদেশ। মেট্রোর ‘এম’ অক্ষরটাও এমনভাবে বসানো, মনে হবে যেন প্লাটফর্ম। রেলটির দিকে কিছুক্ষণ তাকালেই মনে হবে, ওটা স্থীর নয়, ছুটে চলেছে। উন্নয়ন-অগ্রগতিতে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াকে ইঙ্গিত করছে ছুটে চলা রেল। বাংলাদেশের যে উন্নয়নের গতি, সেটা লোগোর দিকে তাকালে লক্ষ্য করা যাবে। সাধারণত লোগো স্থির প্রকৃতির হয়। এর রঙের ব্যবহারেও এক ধরনের ভারসাম্য থাকে। যেন চোখটা আটকে থাকে। এতে এক ধরনের গতি আছে।নিশান তার লোগো তৈরির গল্প বললেন এভাবে, ‘সদ্য বিশ^বিদ্যালয় থেকে পাস করে বেরিয়েছি। কোনো কাজ নেই। চলতি বছরের শুরুর দিকে একদিন বিভাগের এক শিক্ষকের কাছে যাই। তিনি আমাকে বললেন, মেট্রোরেলের লোগো নির্বাচনের জন্য প্রযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। তুমি প্রতিযোগিতায় অংশ নাও। স্যারের আহ্বানে আমি তিনটি লোগো বানিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে জমা দেই। অনেকেই লোগো বানিয়ে জমা দেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে পাঠানো তিনটি লোগোর মধ্যে আমার দুটো ও অন্যজনের একটি পাঠানো হয়। এরপর জাতীয়ভাবে জমা হওয়া লোগোগুলোর মধ্যে থেকেও শর্টলিস্ট হয়। সেখান থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার লোগোটি চুড়ান্ত করেন।’প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হবার পরও সেই লোগো নিয়ে কয়েকবার কাজ করতে হয়েছে নিশানকে। তিনি বলেন, ‘এখন লোগোতে থাকা ‘এম’ অক্ষরটি লিখে যে প্লাটফর্ম বোঝানো হয়েছে, প্রথমে তা ছিল না। বিশে^র ৩৫টি দেশে মেট্রোরেলের লোগোতে ‘এম’ রয়েছে। ওটাকে যুক্ত করার সময় একটু নতুনত্ব আনা হয়েছে। এছাড়া লোগো যখন বানানো শুরু করি তখন মেট্রোরেল দেখতে কেমন সেটাও জানা ছিল না। তাই প্রথম যে রেলটা ব্যবহার করেছিলাম সেটি দেখতে বুলেট ট্রেনের মতো ছিল। পরে যখন মেট্রোরেলের ইঞ্জিন দেখলাম তখন কিছুটা পরিবর্তন করে দেওয়া হলো।’নিশান বলেন, ‘পুরো কাজ শেষ করতে ছয় মাসের মতো লেগেছে। চলতি বছরের মে মাসে যখন কাজটি হলো আমি ভীষণ উত্তেজিত ছিলাম। অনেক প্রতিষ্ঠানে লোগো করেছি কিন্তু এতটা ভালো লাগা কাজ করেনি। বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ হওয়ার আনন্দ অবশ্যই অন্যরকম।’তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেরেলের সাইনের কাজ করতে গিয়ে দেশের সব স্তরের মানুষ যেন চিহ্ন গুলো দেখে বুঝতে পারেন কোন দিকে যেতে হবে, টয়লেট কোন দিকে, টিকিট কোথায় পাবেন-এসব ভাবতে হয়েছে।’নওগাঁ পৌরসভার ধামকুড়ি এলাকার বাসিন্দা বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নওগাঁ জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘স্বপ্নের মেট্রোরেলের লোগো বানিয়েছে আমাদের গ্রামের সন্তান নিশান। দোয়া করি, ইতিহাসের অংশ হওয়ার মতো নিশান যেন আরও ভালো ভালো কাজ করতে পারে।’ নওগাঁর সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি ডিএম আব্দুল বারী বলেন, ‘নিশানের মধ্যে যে শিল্পী সত্ত্বা আছে, আশা করি ভবিষ্যতে তার আরও অনেক ভালো কাজ দেখতে পারব। তার দ্বারা দেশ ও জাতি উপকৃত হবে।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৯ ডিসেম্বর ২০২২