টানা এক সপ্তাহ ধরে বিমান হামলার পর এখন ফিলিস্তিনের বিভিন্ন জায়গায় স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীরের দুটি শরণার্থী শিবিরে এসব অভিযান চালানো হয়েছে।আল–জাজিরা আরবির পক্ষ থেকে এক এক্স বার্তায় (টুইটার) বলা হয়েছে, আজ শনিবার জেরুজালেমের পাশে কালান্দিয়া শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে প্রাথমিকভাবে এ অভিযানে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।এর আগে এদিনই ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের জেনিন ও জেরিচোতে ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের খবর পাওয়া যায়। এসব অভিযানে দুজন আহত হয়েছেন।গতকাল শুক্রবার ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনের উত্তর গাজা (গাজা সিটি) খালি করতে বলা হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বেসামরিক বাসিন্দাদের গাজার দক্ষিণাঞ্চলে চলে যেতে সময় বেঁধে দেয় ইসরায়েল। এর পর থেকে উত্তর গাজা ছেড়ে হাজার দশেক মানুষ পালিয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।যদিও গাজা খালি করার এ আদেশ প্রত্যাহার করে নিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সংস্থাটি বলছে, এটা অবাস্তব আদেশ।এর মধ্যে গাজা থেকে পালানোর সময় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। হামাস জানিয়েছে, এতে অন্তত ৭০ জনের প্রাণ গেছে। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায়। জবাবে ওই দিনই পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর পর থেকে গাজায় টানা বিমান হামলা চালানো হচ্ছে।হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩০০। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৯০০ মানুষ। আহত হয়েছেন ৬ হাজার ৩৮৮ জন।জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৩ লাখ ৩৮ হাজার ফিলিস্তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৪ অক্টোবর ২০২৩
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমানের মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট পরিচয় দেওয়া শাহিনুর রহমান শাহিন।ঘরে এক স্ত্রী ও সন্তান থাকা স্বত্তেও হাসপাতালে চাকরি করা নার্স ও ডিপ্লোমা শেষ করে ইন্টার্ন নার্সদের উপর কুনজরের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও নার্স বদলী বিষয়ে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ঘুষ লেনদেন করেন এমন বিষয় তুলে ধরে অর্থ লেনদেন করেন এই শাহিন।সম্প্রতি দেশের সরকারি একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসাবে ২ বছর যাবত কর্মরত রয়েছেন সানজিদা আক্তার (ছদ্মনাম) । ফেসবুক পরিচয়ে শাহিন ও সানজিদার মাধ্যমে পরিচয় হওয়ার পর লম্পট শাহিন তার ইনবক্সে অনবরত খুদে বার্তা পাঠাতে থাকে এবং তিনি একজন মেডিক্যাল টেকনোলিষ্ট হওয়ার নিজেকে গর্বের সাথে উপস্থাপন করেন।এক পর্যায়ে সানজিদা (ছদ্মনাম) সরকারি হাসপাতাল থেকে বদলী হওয়ার ইচ্ছার কথা তার সাথে শেয়ার করেন এবং তার কথামত তাকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো পাঠিয়ে দেয়। এভাবে তাদের মধ্যে কথোপকথনে সে বলেন নার্সিং অধিদপ্তরের বড় বাবুরা টাকা খেয়ে বদলী করেন তার পরিচিত ব্যক্তিরা সেখানে কর্মরত আছেন।বদলী বিষয়ক কথোপকথনের এক পর্যায়ে লম্পট শাহিন ঘরে এক স্ত্রী ও ২ কন্যা সন্তান থাকা স্বত্তেও সানজিদা কে হঠাৎ বিয়ে করার প্রস্তাব দেন এবং নিজের পরিবারের কথা গোপন রাখেন।ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, উনি আমাকে বদলী বিষয়ে প্রথমে কথা বলেন তারপর মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে অনবরত এসএমএস পাঠাতে থাকে এবং কুপ্রস্তাব দিয়ে আমার বিকাশ নাম্বারে টাকা পাঠান।পরবর্তীতে আমি তাকে টাকা ফেরত দিয়ে দেই তারপর তাকে ব্লোক করি। কিন্তু সে আমাকে তখনও আমার ফোন নাম্বারে খুদে বার্তা পাঠাতে থাকেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে লম্পট শাহিন বলেন আমি তাকে বদলীর বিষয়ে সাহায্য করতে চেয়েছিলাম। ইতিমধ্যে তার কিছু অশ্লীল আলাপ এই প্রতিবেদকের কাছে এসে পৌছেছে।সানজিদার পাঠানো খুদে বার্তা থেকে দেখা যায় শাহিন তাকে মার্কেটে যাওয়ার জন্য এবং থ্রি পিচ কেনার পরামর্শ দেন। এসব বিষয়ে বিব্রত হয়ে পড়ে সানজিদা।নিজের মান সম্মানের কথা চিন্তা করে তিনি বিষয়টি কাউকে জানাতে না চাইলেও এখন তিনি শাহিনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৪ অক্টোবর ২০২৩
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাস তিনেক আগে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য ২৬১টি নতুন গাড়ি কেনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতিটি গাড়ির দাম পড়বে প্রায় দেড় কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ব্যয় হবে ৩৮১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।নির্বাচনের সময় সাধারণত ডিসিরা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনওরা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সংশ্লিষ্ট আসনে নির্বাচনের সব দায়িত্ব ও ক্ষমতা মূলত তাঁদের হাতে থাকে। এই কর্মকর্তাদের জন্য কেনা হচ্ছে স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল (এসইউভি), যা জিপ নামে পরিচিত।ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে গত বুধবার গাড়িগুলো সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) কেনার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। অর্থাৎ দরপত্র ছাড়া গাড়িগুলো কেনা হবে। বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সভাপতিত্ব করেন। এমন সময়ে গাড়িগুলো কেনার সিদ্ধান্ত হলো যখন সরকার টাকার সংকটে রয়েছে। মার্কিন ডলারের সংকট চলছে। সরকার বিদ্যুৎ ও সারে ভর্তুকির টাকা যথাসময়ে ছাড় করতে পারছে না। ডলার–সংকটে বিদেশ থেকে আসা বিদ্যুতের দাম বকেয়া থাকছে। বিদেশি কোম্পানির গ্যাসের দামও যথাসময়ে দিতে পারছে না সরকার।অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাধারণত সাংবাদিকদের অবহিত (ব্রিফ) করা হয়। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম ‘অনিবার্য কারণবশত’ অবহিত করা হবে না বলে আগেই জানিয়ে দেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, যে কর্মকর্তা অবহিত করেন, তাঁর অন্য কাজ থাকায় সেটা করা হয়নি। তবে সূত্র বলছে, গাড়ি কেনা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে বলে অবহিত করার অনুষ্ঠান বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।সাধারণত সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান। তিনি বৈঠকটিতে উপস্থিত ছিলেন। গতকাল রাতে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গাড়ি কেনার প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে।’ এর বাইরে কিছু বলতে চাননি তিনি।অবশ্য গতকাল রাতে মুঠোফোনে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, গাড়িগুলো আগেই কেনার দরকার ছিল। আর নির্বাচনের সময় আসলেই গাড়ির দরকার এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যই তা দরকার। সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে এগুলো কেনা হবে।কৃচ্ছ্রসাধনের জন্য নতুন গাড়ি না কেনার নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের যে অর্থ বিভাগ, তারাই এখন নতুন গাড়ি কেনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এর ব্যাখ্যা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গাড়ি কেনার দরকার না থাকলে অর্থ বিভাগ মত দিত না। সংকট আছে এটা যেমন সত্য, গাড়ি কেনার দরকার, এটাও সত্য।’আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্যই গাড়িগুলো কেনার দরকার বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগকে জানিয়েছিল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলেছে, জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শেষ করা, ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) পরিচালনা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ মাঠ পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন পরিবহনসেবা নিশ্চিতে নতুন গাড়িগুলো দরকার। বর্তমানে যেসব গাড়ির আয়ুষ্কাল ১৩ বছর বা তারও বেশি হয়েছে, সেগুলোর পরিবর্তেই নতুন গাড়ি দেওয়া হবে।আগামী নির্বাচনের আগে গত মাসে সরকার উপসচিব থেকে যুগ্ম সচিব পদে ২২১ জনকে পদোন্নতি দিয়েছে। সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া চলছে, যা নির্বাচনের আগেই হবে বলে জানা গেছে। প্রশাসনে পদ না থাকলেও এসব পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে, যা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অন্যদিকে সরকার বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় পছন্দের কর্মকর্তাদের ডিসি ও ইউএনও হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রশাসন সাজিয়েছে বলে অভিযোগ করছে মাঠের বিরোধী দলগুলো।যোগাযোগ করা হলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে বলা কথা নয়, গাড়ি কেনার দরকার হলে সরকার কিনবে। কিন্তু এখন যেহেতু সংকটের সময় চলছে, যেকোনো কিছু কেনাকাটার ক্ষেত্রেই সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতি অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়।’মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এসব গাড়ি কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয় গত ১২ জুন। সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর প্রথমে চাহিদার কথা জানায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে। পরের মাস জুলাইয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চিঠি পাঠায় অর্থ বিভাগে।তৎকালীন অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ইতিবাচক মত দেওয়ার পর বিষয়টি এগোয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এরপর তা অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নীতিগত অনুমোদনের জন্য পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। পরের ধাপে গাড়ি কেনার প্রস্তাব যাবে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে।জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে আর তিন মাসের মতো বাকি। এ সময়ে বাকি প্রক্রিয়া শেষ করে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজকে ক্রয়াদেশ দিতে হবে। এরপর প্রগতি গাড়ি দেবে।এ সময়ের মধ্যে গাড়ি সরবরাহ করা সম্ভব কি না জানতে চাইলে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) আবদুল হালিম বলেন, তা সম্ভব। তবে সময় যেহেতু কম, সরকারের উচিত হবে দ্রুততম সময়ে ক্রয় আদেশ দেওয়া।ডিসি ও ইউএনওদের জন্য যেসব গাড়ি কেনা হবে, সেগুলোর মডেল হলো ‘মিতসুবিশি পাজেরো স্পোর্ট কিউ এক্স’। ডিসিদের জন্য কেনা হবে ৬১টি ও ইউএনওদের জন্য ২০০টি।অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ডিসিদের ব্যবহারের পাশাপাশি ডিসি কার্যালয়ের জন্যও গাড়ি চেয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বলেছিল, ডিসি ও ডিসি কার্যালয়ের জন্য ৯৬টি ও ইউএনওদের জন্য ৩৬৫টি অর্থাৎ মোট গাড়ি লাগবে ৪৬১টি। এতে ব্যয় হবে ৬১২ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগ পুরো প্রস্তাবে রাজি না হয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে পথ বাতলে দেয় এবং নতুন করে আবেদন করতে বলে।অথচ কৃচ্ছ্রসাধনের কথা বলে নতুন গাড়ি কেনায় বিধিনিষেধ জারি করেছিল অর্থ বিভাগই। গত ২ জুলাই সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের লক্ষ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সব ধরনের যানবাহন ক্রয় (মোটরযান, জলযান, আকাশযান) বন্ধ থাকবে বলে নির্দেশনা জারি করা হয়। ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর নতুন কোনো গাড়ি কেনেনি।একই সঙ্গে পরিচালন বাজেটের আওতায় মোটরযান, জলযান, আকাশযান খাতে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়। এ–ও বলা হয়, ‘১০ বছরের বেশি পুরোনো মোটরযান প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে ব্যয় করার সুযোগ রয়েছে।’ সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছে সরকার।শুধু গাড়ি কেনা নয়, সরকার গাড়ি ক্রয়ের ব্যয়সীমাও গত ১ আগস্ট বাড়িয়েছে। এখন ৯৪ লাখ টাকার বদলে সর্বোচ্চ ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা দামের গাড়ি কেনা যাবে।ডিসি ও ইউএনওদের জন্য গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে সরকার নীতিগত অনুমোদন দিলেও ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের জন্য নতুন গাড়ি কেনার প্রস্তাব পড়ে আছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। ১১ সেপ্টেম্বর নতুন গাড়ি কেনার জন্য ২০ কোটি টাকা চেয়ে অর্থ বিভাগকে চিঠি দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।প্রশ্ন তোলা অসংগত হবে না যে ডলার-সংকট, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, কম রাজস্ব সংগ্রহের এ পরিস্থিতিতে নতুন গাড়ি কেনা অপরিহার্য ছিল কি না।জাহিদ হোসেন, অর্থনীতিবিদঅর্থনীতিবিদেরা বলছেন, সরকার প্রয়োজনে সমাপ্ত প্রকল্পের গাড়িগুলো উদ্ধার করে আপাতত ডিসি ও ইউএনওদের দিতে পারত। পরে সংকট কেটে গেলে তাঁদের নতুন গাড়ি কিনে দেওয়া যেত। প্রকল্পের গাড়ি সরকারের পরিবহন পুলে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বারবার চিঠি দিয়েও গাড়ির হিসাব পায়নি। সর্বশেষ চিঠি দেওয়া হয়েছে সেপ্টেম্বরে।নতুন গাড়ি কিনতে সরকারের সরাসরি বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হবে না। কিন্তু প্রগতি গাড়ির সব যন্ত্রাংশ আমদানি করে শুধু সংযোজন করবে। ফলে তাদের গাড়ি আমদানি করতে দেশের ডলারই ব্যয় হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকে মার্কিন ডলারের প্রকৃত মজুত (আইএমএফকে যে হিসাব দেওয়া হয়) এখন ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে নেমে গেছে। শর্ত অনুযায়ী ডলারের মজুত না থাকলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের কিস্তি ছাড় না–ও করতে পারে।বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘২৬১টি গাড়ি কিনতে সামষ্টিক অর্থনীতিতে চাপ ফেলার মতো অত বেশি টাকা লাগবে না। তারপরও বলব, এই ৩৮২ কোটি টাকাও তো টাকা। বিন্দু বিন্দু করেই তো সিন্ধু হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের আগে দেখার দরকার নতুন গাড়ি কেনার যৌক্তিকতাটা কী এবং এর মাধ্যমে কী বার্তা যাচ্ছে? এ প্রশ্ন তোলা অসংগত হবে না যে ডলার–সংকট, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, কম রাজস্ব সংগ্রহের এ পরিস্থিতিতে নতুন গাড়ি কেনা অপরিহার্য ছিল কি না। গাড়ি বেশি দরকার হলে আপাতত ভাড়া নেওয়া যেত। আর্থিক অবস্থার উন্নতি হলে পরে কেনার চিন্তা করা যেত।’সুত্র- প্রথম আলো
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১২ অক্টোবর ২০২৩
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরাইল। সেখানে খাবার, পানি এমনকি বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এরইমধ্যে স্থল হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। ইঙ্গিত দিয়েছে গাজার অভ্যন্তরে ইসরায়েলি সেনা মোতায়েনের। তবে স্থল হামলার বিষয়ে আগেই সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে হামাস।বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে কড়া বার্তা দেন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য গাজি হামাদ। খবর আলজাজিরার।তিনি বলেন, আমরা ভয় পাই না। আমরা একটি শক্তিশালী জাতি, ইসরাইলের হুমকি আমরা ভয় পাই না। আমাদের অনেক যোদ্ধা এবং বহু লোক আছেন যারা আমাদের সমর্থন করতে চায়।ইসরাইলকে সতর্ক করে হামাদ বলেন, এমনকি জর্ডান, লেবানন সীমান্তের মানুষেরা এখানে এসে আমাদের জন্য যুদ্ধ করতে চায়। গাজা একটি বাগান নয় যে, এখানে সহজে ইসরাইল জয় পাবে। এখানে যুদ্ধ করতে তাদের অনেক মূল্য দিতে হবে।তিনি আরও বলেন, ইসরাইলে অপারেশ শুরু করতে আমরা মাত্র এক হাজার ২০০ যোদ্ধা পাঠিয়েছি, যারা ইসরাইলের ভাবমূর্তি, নিরাপত্তা, গোয়েন্দা এবং ইসরাইলের ভাবমূর্তি ধ্বংস করতে সফল হয়েছে।শনিবার (৭ অক্টোবর) ইসরাইলে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। এর জবাবে গাজায় বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। এখন পর্যন্ত হামাসের অভিযানে ১২০০ জনেরও বেশি ইসরাইলি নিহত হয়েছে। অপরদিকে গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েক ৩০০ নারী ও ২৬০ শিশু রয়েছে। ইসরাইলের নির্বিচার বিমান হামলায় ধ্বসংস্তূপে পরিণত হয়েছে হামাস-শাসিত অবরুদ্ধ গাজা।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১২ অক্টোবর ২০২৩
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বহুল প্রত্যাশিত বায়োপিক ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ আগামীকাল শুক্রবার সারা দেশে মুক্তি পাবে। এর আগে আজ বৃহস্পতিবার চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ার শো হয়েছে। এ সময় চলচ্চিত্রটি দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগারগাঁওয়ের জাতীয় চলচ্চিত্রকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে প্রিমিয়ার শো দেখেন। এ সময় চলচ্চিত্রটির অভিনেতা, অভিনেত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কলাকুশলীরা উপস্থিত ছিলেন। এ আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ইতিহাসের অনেক অজানা ঘটনা ও নতুন অধ্যায় জানতে পারবে জাতি।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আগামীকাল (শুক্রবার) থেকে দেশের সব সিনেমা হলে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হবে। আমি এর মুক্তির ঘোষণা দিচ্ছি।’ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং অন্যান্য সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন প্রখ্যাত ভারতীয় নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল।চলচ্চিত্রটি ২৭ অক্টোবর ভারতজুড়ে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। চলচ্চিত্রটির প্রযোজক বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) এবং ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এনএফডিসি) লিমিটেড এর নির্বাহী প্রযোজক।চলতি বছরের ৩১ জুলাই দুই দেশের সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পায় চলচ্চিত্রটি। এই চলচ্চিত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ এবং শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রে অভিনয় করেছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করেছেন নুসরাত ফারিয়া।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১২ অক্টোবর ২০২৩
চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলে নজিরবিহীন আক্রমণ শুরু করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গাজা উপত্যকা থেকে চালানো হামাসের এই হামলা ছিল ইসরায়েলের কাছে রীতিমতো বিস্ময়কর।হামলার পরপরই নানা দিক থেকে অভিযোগ উঠতে শুরু করে, হামাসের এই হামলায় সহায়তা করেছে ইরান। তবে আসলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের হামলা দেখে ইরান নিজেই হতবাক হয়ে গেছে।যুক্তরাষ্ট্রের সংগ্রহ করা গোয়েন্দা তথ্যে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে বুধবার (১১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলা দেখে ইরানের প্রধান প্রধান নেতারা বিস্মিত হয়ে গেছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংগ্রহ করা গোয়েন্দা তথ্যে প্রকাশ পেয়েছে। আর মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বুধবার এই তথ্য সামনে এনেছে প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।যদিও এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে কোনও জবাব দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। অবশ্য হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান গত মঙ্গলবার বলেন, হামাসের এই হামলার সাথে ইরানের যোগসূত্রের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখনও নিশ্চিত নয়।তিনি বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই প্রশ্নটি নিয়ে প্রতিদিন কথা বলছি। আমরা আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করছি যে, আমাদের কাছে এই বিষয়ে আরও কোনও তথ্য আছে কিনা’।এছাড়া ইসরায়েলে হামাসের ভয়াবহ হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ নিজেও অস্বীকার করেছে ইরান।প্রসঙ্গত, মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত শনিবার ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।এরপর থেকে টানা ছয়দিনের এই সংঘাতে নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১২০০ ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে বহু সেনাসদস্য, নারী ও শিশু রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও হাজারও ইসরায়েলি। এছাড়া আরও বহু মানুষকে বন্দি করেছে হামাস।এছাড়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, গত শনিবার থেকে ইসরায়েলে ১৫৫ সেনাসহ ১২০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে।পরে গত শনিবার থেকে ইসরায়েলের অবিরাম বিমান হামলা গাজার পুরো আশপাশের এলাকাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে এবং কমপক্ষে ১২০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও হাজার হাজার আহত হয়েছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১২ অক্টোবর ২০২৩
ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটার পর থেকে তীব্র যানজট শুরু হয়। এতে দুর্ভোগে পড়ে নগরবাসী। যানজটের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।পুলিশ সূত্র জানায়, সকালে শেরেবাংলা নগর এলাকায় ভিভিআইপি মুভমেন্ট ছিল। এ কারণে মিরপুর রোডের কল্যাণপুর, শ্যামলী, আসাদগেট, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার এলাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে।পরে সকাল ১০টার দিকে এসব এলাকায় যানজট কিছুটা কমে আসে। তবে বেলা ১১টার পর থেকে মিরপুর রোড, মহাখালী, শাহবাগে যানজট বেড়ে যায়।জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অস্মিতা বিশ্বাস সকাল ১০ টার দিকে পুরান ঢাকা থেকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের উদ্দেশে রওনা হন। আড়াই ঘণ্টা পর তিনি সাড়ে ১২ টার দিকে গন্তব্যে পৌঁছান। অন্যান্য দিন তাঁর এই পথে এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময় লাগে। এর মধ্যে তিনি শাহবাগেই ৫০ মিনিট আটকে ছিলেন বলে জানান.রমনা এলাকায় যানজটের কারণ হিসেবে পুলিশ জানায়, মগবাজার এলাকায় রাস্তায় নির্মাণসামগ্রী পড়েছিল। এতে যানজট বাড়ে। সেখানে একটি গার্ডার পড়ে যাওয়ার কারণেও যানজট হয় বলে জানায় পুলিশ। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বিকেলে আওয়ামী লীগের সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা–কর্মীরা সমাবেশস্থলে যাচ্ছেন। এ কারণেও যানজট হয়। বেসরকারি একটি ব্যাংকে চাকরি করেন সোহেল রানা। সকাল ৯টার দিকে তিনি জানান, গাবতলী থেকে শ্যামলী আসতে তাঁর এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। রাস্তায় যানজট না থাকলে এতটুকু পথ আসতে তাঁর ১৫ মিনিট সময় লাগে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের দায়িত্বে থাকা মোস্তাক আহমেদ বলেন, ভিভিআইপি মুভমেন্ট ও মগবাজার রাস্তায় একটি গার্ডার পড়ে থাকায় যানজট বেড়েছে। সকাল ১০টার দিকে রাস্তা থেকে গার্ডারটি সরিয়ে ফেলার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১২ অক্টোবর ২০২৩
বাংলাদেশ ক্রিকেটের মুকুটহীন সম্রাট সাকিব আল হাসান। সাকিব আল হাসান আর বিতর্ক যেন একসুতোয় গাঁথা। ক্যারিয়ারে নানা সময়ে নানা কারণে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। কখনও সতীর্থদের সঙ্গে বাজে আচরণ করে, কখনওবা দর্শক-মিডিয়া কিংবা বোর্ডের নিয়ম ভঙ্গ করে। মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে সাকিবের এমন আচরণে বরাবরই সমালোচানা হয়েছে। সাকিব নিজেকে শুধরে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন, কিন্তু বাস্তবে সেটি দেখা যায়নি। ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পর কয়েক ঘন্টা যেতে না যেতেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে সাকিব আল হাসান। গা থেকে ব্রিটিশ বধের গন্ধ পুরোপুরি যায়নি। এক খুনের আসামির সোনার দোকান উদ্বোধন করতে দুবাইতে পৌঁছে গেলেন সাকিব।ক্রিকেট বিশ্বে অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কাছে তিনি কার্যত `জাতীয় সম্পদ`। কারণ তাঁর পারফরম্যান্সের উপর ভর করেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বহুবার প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচ জিততে পেরেছে। আশা করা যায় যে আপনাদের আর বুঝতে বাকি নেই যে এখানে কোন ক্রিকেটারের কথা বলা হচ্ছে। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। তিনি বাংলাদেশের সবথেকে জনপ্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। তবে শুধুমাত্র জাতীয় ক্রিকেট দলই নয়, বর্তমানে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট দলের এই অধিনায়ক বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগেও একাধিক চমকপ্রদ পারফরম্যান্স করছেন। BPL হোক কিংবা IPL সাকিব ম্যাজিকে মুগ্ধ গোটা ক্রিকেট বিশ্ব।এর আগেও অনেকবার ভুল খবরে শিরোনাম হয়েছেন সাকিব। তারই কয়েকটি তুলে ধরা হলো-দর্শকের সঙ্গে বাজে আচরণ২০১০ সালে প্রথমবার বিতর্কিত কাণ্ড করেন সাকিব। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে ব্যাটিং করছিলেন সাকিব। কিন্তু সাইড স্ক্রিনের পাশে এক দর্শকের নড়াচড়ায় রেগে যান। হঠাৎই ক্রিজ ছেড়ে বাউন্ডারি লাইনে ছুটে গিয়ে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহারের পাশাপাশি ব্যাট উঁচিয়ে দর্শককে হুমকি দেন। যদিও দর্শকেরও ভুল ছিল, তারপরও বাজে আচরণ থেকে নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারেননি সাকিব।বিশ্বকাপে দর্শকদের উদ্দেশ্যে বাজে ইঙ্গিত২০১১ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ৫৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এরপর সাকিবকে ইঙ্গিত করে গ্যালারি থেকে দুয়ো আসতে থাকে। সাকিব সেটিকে ভালোভাবে নিতে পারেননি। দর্শকদের উদ্দেশ্যে মধ্যমা আঙুল দেখিয়ে বাজে ইঙ্গিত করেছিলেন সাকিব।দর্শকের কলার চেপে ধরা২০১৩ সালে অটোগ্রাফ চাওয়া এক দর্শকের কলার চেপে ধরে ফের বিতর্কে জড়ান সাকিব। ২৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস টি-টোয়েন্টি ম্যাচ চলাকালে এক দর্শক সাকিবের কাছে অটোগ্রাফ চান। কিন্তু অটোগ্রাফ দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। এতে কটুক্তি করলে ক্ষুব্ধ হয়ে গ্যালারিতে গিয়ে ওই দর্শকের কলার চেপে ধরে বসেন সাকিব।তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ছক্কা মারতে গিয়ে লংঅনে ক্যাচ দিয়েছিলেন সাকিব। এই আউট নিয়ে টিভি ধারাভাষ্যকাররা আলোচনা করার সময় প্যাভিলিয়নে বসে থাকা সাকিব টিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েন। ক্যামেরা দেখে অশালীন ভঙ্গিতে বাজে ইঙ্গিত করেন সাকিব। আর তাতেই তিন ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হন তিনি।দর্শক পিটিয়ে আলোচনায়২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে চলাকালে স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে এক দর্শককে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন সাকিব। ওই ঘটনায় সাকিবকে নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়। কেন তিনি ড্রেসিংরুম ছেড়ে বেরিয়ে এলেন, বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনার ঝড় ওঠে।এক ম্যাচ নিষিদ্ধ২০১৫ সালের বিপিএলে সিলেট সুপার স্টার্সের বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ার তানভীর আহমেদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন রংপুর রাইডার্সের সাকিব। তার আচরণে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন আম্পায়ার। এজন্য এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয় তাকে।ফের আম্পায়ারের সঙ্গে বিবাদবিপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ারে আম্পায়ারের সঙ্গে বিবাদে জড়ান ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়ক সাকিব। ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পেরে মাঠেই তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন এই অলরাউন্ডার। যদিও শেষ পর্যন্ত ওই ব্যবহারের জন্য শাস্তি পেতে হয়নি সাকিবকে।দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলতে না চাওয়া২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগে ৬ মাসের ছুটি চেয়ে বসেন সাকিব। বিসিবিকে তিনি জানান, মানসিক অবসাদ কাটাতে মাঠের বাইরে থাকতে চান। কিন্তু কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ছুটি দিতে রাজি ছিলেন না। পরে বোর্ডের মধ্যস্থতায় তিন মাসের ছুটি পান সাকিব।অনাপত্তিপত্র না নিয়ে ক্যারিবীয় যাত্রাবিসিবির অনাপত্তিপত্র না নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলতে গিয়েছিলেন সাকিব। তাকে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়ার পর রাগের মাথায় টেস্ট ও ওয়ানডে দল থেকে অবসর নেওয়ার হুমকি দিয়ে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ৬ মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।বিশ্বকাপের দলীয় ফটোসেশনে অনুপস্থিত২০১৯ বিশ্বকাপের আগে দলীয় ফটোসেশনে সাকিব ছিলেন অনুপস্থিত। ফটোসেশনের দিন মিরপুরের মাঠে উপস্থিত থাকলেও ফটোসেশনের ঘণ্টাখানেক আগে সাকিব সেখান থেকে বেরিয়ে যান। আবারও শুরু হয় বিতর্ক। পরে জানা যায়, সাকিব ফটোসেশনের কথা জানতেন না।তথ্য গোপন করে এক বছর নিষিদ্ধজুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর সেটি গোপন করায় দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সাকিব, যার এক বছর ছিল স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। ফলে আইসিসির কাছে দোষ স্বীকার করে নেওয়া সাকিবকে এক বছর ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে হয়।শ্রীলঙ্কা সফরে না যাওয়াসন্তানসম্ভাবা স্ত্রীর পাশে থাকতে নিউজিল্যান্ড সফরে ছুটি নিয়েছিলেন, পরে আবার আইপিএল খেলতে ছুটি চান সাকিব। শেষ পর্যন্ত লঙ্কানদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ বাদ দিয়ে আইপিএল খেলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।জৈব সুরক্ষা বলয় ভঙ্গগত ৪ জুন মোহামেডানের অনুশীলন না থাকলেও ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুশীলন করেছিলেন সাকিব। এই অনুশীলনেই জৈব সুরক্ষা ভেঙেছেন তিনি। সুরক্ষা বলয়ে না থাকা একজন নেট বোলারকে নিয়ে অনুশীলন করেছেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, সাকিবের অনুশীলনের সময় সেখানে সাদা শার্ট পরা একজনকে দেখা যায়। জানা যায়, নেট বোলার ছিলেন মাস্কো সাকিব ক্রিকেট একাডেমির। আর তার সঙ্গেই সাদা শার্ট পরা ব্যক্তিটি এসেছিলেন। এমন ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা চান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।২০২১ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে জৈব সুরক্ষাবলয় ভঙ্গ করে আবার ক্ষমাও চান সাকিব। সবশেষ শুক্রবার আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ারদের সঙ্গে কয়েক দফা বাজে আচরণের পর মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব নিষিদ্ধ হয়েছেন তিন ম্যাচ। জরিমানা গুনতে হবে পাঁচ লাখ টাকা।৪ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কারসাজির তদন্তে সাকিব আল হাসানের নাম।শেয়ারবাজার কারসাজির বিষয়ে সরকারি তদন্তে নাম আসায় আবার আলোচনায় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, কারসাজির সময় সাকিব আল হাসান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বেশ কয়েকবার `বিপুল সংখ্যক শেয়ার` লেনদেন করেন। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)২০২১ সালের ৫ মে থেকে ২০২২ এর ১০ মার্চ পর্যন্ত ৪টি তদন্ত চালায়। বিএসইসির তদন্তে গত ২ বছরে কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারের দাম হেরফের করার জন্য মোনার্ক হোল্ডিংসের শীর্ষ কর্মকর্তাদের দায়ী করা হয়েছে। মোনার্ক হোল্ডিংস ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর ব্রোকারেজ হাউস হিসেবে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাকিব আল হাসান।খুনের আসামির সোনার দোকান উদ্বোধন করতে দুবাইইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পর কয়েক ঘন্টা যেতে না যেতেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে সাকিব আল হাসান। গা থেকে ব্রিটিশ বধের গন্ধ পুরোপুরি যায়নি। এক খুনের আসামির সোনার দোকান উদ্বোধন করতে দুবাইতে পৌঁছে গেলেন সাকিব। এমনটাই জানাচ্ছে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম। বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার সাকিব এমনিতেই বহু পণ্যের বিজ্ঞাপন করেন। শোরুম-দোকান উদ্বোধনেও তাকে দেখা যায়। কিন্তু ‘আরাভ জুয়েলার্স’ উদ্বোধন নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কারণ এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটির মালিক আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম ওরফে সোহাগ মোল্লা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি! ২০১৮ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি ফ্ল্যাটে খুন হন পরিদর্শক মামুন। ভক্ত-সমর্থকরাও এখন জেনে গেছেন, সাকিব ক্রিকেটের চেয়ে টাকার পেছনে কতটা বেশি ছোটেন। ক্রিকেটকে তিনি ব্যবহার করেন শুধু টাকা কামানোর হাতিয়ার হিসেবে। যখনই প্রয়োজন কিছু পারফর্ম করেন আর বিজ্ঞাপনের বাজারে নিজের মূল্য বাড়িয়ে নেন।সাকিবের অফিসিয়াল ফেসবুজ পেজে ঢুকলেই দেখা যাবে, ক্রিকেটের চেয়ে সেখানে বিজ্ঞাপন কতটা স্থানজুড়ে রয়েছে। স্বর্ণ আমদানি, ব্রোকারেজ হাউজ, বিদ্যুৎ, ই-কমার্স এবং ব্যাংক ব্যবসা থেকে শুরু করে হেন কোনো ব্যবসা নেই, যেখানে সাকিব নাম লেখাননি। ক্রিকেটার সাকিবের চেয়ে তাকে ব্যবসায়ী সাকিব বলাই কি এখন বেশি যুক্তিযুক্ত না? দল ঘোষণার আগে সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের দ্বন্দ্ব। পুরোপুরি ফিট না হওয়ায় বিশ্বকাপে শর্ত সাপেক্ষ খেলতে চান তামিম। কিন্তু আনফিট খেলোয়াড়কে দলে রাখার পক্ষে নন অধিনায়ক সাকিব। সেই 'দ্বন্দ্ব' মেটাতে বিসিবিতে যায় মাশরাফি।বিসিবি সূত্রের খবর, তামিমের এমন শর্তে রাজি নয় অধিনায়ক সাকিব। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের বাসায় হওয়া এক সভায় অধিনায়ক সাকিব এবং কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বোর্ড সভাপতিকে জানিয়েছেন, বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে তারা কোনো 'আনফিট' বা 'অর্ধেক ফিট' ক্রিকেটারকে দলে চান না।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত ২০ সেপ্টেম্বর আইসিসিবি কনভেনশন Hall 4 , বসুন্ধরাতে বিডি জবস ফ্রেশার ক্যারিয়ার ক্যারিয়ার ফেয়ার অনুষ্ঠিত হয় ।PeopleNTech and Higher Study USA পক্ষ থেকে আমি এবং আমাদের টিম অংশগ্রহণ করেছিলাম । এই পরিপ্রেক্ষিতে আমি আমার কিছু অভিজ্ঞতা এখানে শেয়ার করব । আসলে মূল প্রতিপাদ্য বিষয়টা কি ছিল সেটা একটু জানতে চেষ্টা করি । যেহেতু এটা একটা ক্যারিয়ার ফেয়ার, এই ক্যারিয়ার ফেয়ারে সকল অংশগ্রহণকারীদের দৃষ্টি ছিল বিভিন্ন ধরনের জব অপরচুনিটির ওপর। ছবিগুলো দেখে আসলে খুবই সাধারণভাবে বোঝা যাচ্ছে যত না জব ওপেনিং ছিল , তার চেয়ে আগ্রহ প্রার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল অনেক বেশি । এই যে উপচে পড়া ভিড় , আসলে উপচে পড়া ভিড় এই প্রোগ্রামটিকে ঠিক কতটুকু সফল করেছে ?যদি আয়োজক এর দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করি, এটা খুবই সফল একটি প্রোগ্রাম হয়েছে এখানে অনেকগুলো কোম্পানি তাদের জব সার্কুলার নিয়ে হাজির হয়েছিল। এখন আসি অংশগ্রহণকারী কোম্পানির দৃষ্টিকোণ থেকে। আসলেই কি কোম্পানিগুলো যে জব সার্কুলার গুলো নিয়ে হাজির হয়েছিল, তারা কি এই ফেয়ার থেকে তাদের যোগ্য ক্যান্ডিডেট সিলেক্ট করতে সক্ষম হবে ? May be or May be not 🤨যদি অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলো তাদের পছন্দ অনুযায়ী ক্যান্ডিডেট সিলেক্ট করতে না পারে তাহলে Next step কি? অংশগ্রহণকারী কোম্পানির গুলো যদি তাদের ক্যান্ডিডেট এই মেলা থেকে select করতে না পারে , তাহলে কিন্তু তারা তাদের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী অন্য সোর্স থেকে ক্যানডিডেট ঠিকই খুজে নিবে । তাহলে এত এত অংশগ্রহণকারী যারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অংশগ্রহণ করল, তাহলে তারা কি যোগ্য না ? অবশ্যই তারা যোগ্য।প্রত্যেকটা মানুষই আসলে কিছু না কিছু এমন বৈশিষ্ট্য তার ভেতরে লুকায়িত থাকে, যা অনেকে উন্মোচিত করতে পারে আবার অনেকে পারে না । যদি একটু পজিটিভলি চিন্তা করি , অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকে কিছু না কিছু শিখে এই পর্যন্তই এসেছে এবং এই প্রোগ্রাম থেকে কিছু না কিছু এখান থেকে শিখে , তাদের অভিজ্ঞতার ঝুড়ি নিয়ে বাসায় গিয়েছে । একদম প্রথম কথা যদি বলি, এখানে আসার পর অ্যাটলিস্ট প্রত্যেকটা ক্যান্ডিডেট এটা বুঝতে পেরেছে যে , আসলে চাকরির বাজার কতটা কঠিন এবং তাদের প্রতিযোগী র সংখ্যা কেমন? এখন আসি next learning এ । এখানে আসার পর বিভিন্ন কোম্পানি বক্তিবর্গ যারা ছিলেন, তাদের সাথে সরাসরি কথা বলার একটা সুযোগ হয়েছে এবং এখান থেকে তারা নিজেকে যাচাই করার একটা সুযোগ পেয়েছে।সবাই বলে জব নেই জব নেই 😩 আসলে কি ব্যাপারটা তাই ? নাকি Skilled Person নেই । এখন আসি স্কিল্ড হওয়ার জন্য কি করা প্রয়োজন ?নিজেকে আপনি বিভিন্ন ভাবে স্কিল্ড ভাবে গড়ে তুলতে পারেন । আমার একটি অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। করোনা মহামারি চারিদিকে, রিক্রুটমেন্ট অনেক কম। ঠিক তখনই Enroute International এর সাথে ২০২১ সালে শুরু হয় আমার পথচলা । যদিও খুবই অল্প সময়ের জন্য কিন্ত OREC (Observe , Record, Classify and Evaluation ) model সহ নানা বিষয় এসেসমেন্ট এর আমি শিখতে পারি । এছাড়াও কিছু ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজও আমি করেছি এই করোনার মধ্যে। যেহেতু আমার 2nd মাস্টার্স এর Assignment গুলো আমি নিজেই করতাম তাই এসাইনমেন্ট এর উপর আমার আসলে অনেক দিন থেকে দুর্বলতা ছিল ঠিক তখনই কিছু এরকম অ্যাসাইনমেন্টের কাজ পেয়েছিলাম এবং কাজগুলো সফলভাবে শেষ করতে পেরেছিলাম।যতটুকু অভিজ্ঞতা ততটুকু থেকে বলছি যে, আমরা দেখি কোম্পানি স্কিল্ড person খুজে পায় না । এটার কারণটা কি ? আমার কাছে মনে হয়েছে , যে ধরনের স্কিল্ড person কোম্পানি খুজে ,ঠিক ওই ধরনের স্কিল্ড লোকের একটা অভাব মার্কেটের রয়ে গিয়েছে।এখন আসি অ্যাপ্লিকেশন দেখার পর যারা এপ্লাই করেছে তারা আসলেই কি পোস্টটা ইন্টারেস্টেড ফিল করে এপ্লাই করেছে ? নাকি তোতা পাখির মত জাস্ট গৎ বাধা apply করতে হবে তাই এপ্লাই করেছে ? এদিক থেকে আমার যা অভিজ্ঞতা হয়েছে মোস্ট অফ দা টাইম যারা অ্যাপ্লাই করে, অ্যাপ্লাই করার পরে ফোনটা রিসিভ করে না । আর যদিও বা করে তার অভিবেক্তি, আমরা তাকে হাতে পায়ে ধরে ডেকে আনছি , ঐ পজিসনে এ কাজ করার জন্য।আরেকটা বিষয়, অনেকেই ইন্টারভিউ অ্যাটেন্ড করে না । ইন্টারভিউ এটেন্ড না করলে কাইন্ডলি জানিয়ে দেবেন, এটা একটা মিনিমাম কার্টেসি । তাহলে ব্যাপারটা কি দাঁড়ায় , একটা পজিশনে যখন আপনি অ্যাপ্লাই করছেন তখন কিন্তু আপনাকে শর্টলিস্ট করা হয় । এবং এই purpose এ HR এবং Management এর একটা ভাল সময় যায়। আপনাকে যখন কল করা হবে এটা একটা কোম্পানির এক্সপেক্টেশন থাকে আপনি ইন্টারভিউ টা অ্যাটেন্ড করবেন । যদি আপনি এটেন্ড করতে না পারেন তাহলে আপনি এপ্লাই বা করেছেন কেন ? আরেকটা ক্যাটাগরি কিছু ক্যান্ডিডেট যখন ইন্টারভিউ ফেস করে ,ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে কোন আইডিয়া না নিয়ে ইন্টারভিউ অ্যাটেন্ড করে । এই লেখাটি যারা পড়ছেন, আমার একটা রিকোয়েস্ট থাকবে যে আপনি যখন কোথাও এপ্লাই করছেন এটলিস্ট ইন্টারভিউ কল অ্যাটেন্ড করার আগে ওই কোম্পানি অথবা যে জব সার্কুলার দেয়া হয়েছে সেই জব সার্কুলার পরে যাবেন। তাহলে কোম্পানি সম্পর্কে আপনার কিছু ইনফরমেশনও জানা হবে এবং আপনার সম্পর্কে কোম্পানির একটি পজিটিভ ইম্প্রেশন ক্রিয়েট হবে । ইনফরমেশন বলতে পারবেন এবং আপনাকে রিক্রুট করতে সুবিধা হবে । সুতরাং আপনি যদি একজন চাকরিপ্রার্থী হন তাহলে এই বিষয়গুলো একটু খেয়াল রাখবেন। এখন আবার চলে আসি Bdjobs career fair এ । অনেক আগ্রহী প্রার্থীদের দেখে মনে হয়েছে আসলে জব একটা সোনার হরিণ । সবাই জব চাচ্ছে আসলে তারা কি স্কিল্ড কিনা , এটা নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই । আমার কাছে মনে হয়েছে যে যারা এসেছে তাদের স্কিল্ড হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । আপনি যদি প্রপার স্কিল্ড হন, ইনশাল্লাহ আপনার একটি জব অথবা আপনার একটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে । পাশাপাশি আপনি উদ্যোক্তা হতে পারেন । বিভিন্ন ক্ষেত্রে আপনি উদ্যোক্তা হওয়ার পরিকল্পনা করতে পারেন , ফ্রিল্যান্সিংও করতে পারেন । সামনের দিনগুলো সবার সুন্দরভাবে অতিবাহিত হোক, শুভকামনা রইল।লিখেছেন - মাছুমা ভুঞা ফারহা শিক্ষা বিষয়ক পরামর্শদাতা। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি। যুক্তরাষ্ট্র।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির চ্যান্সেলর ও চেয়ারম্যান ও পিপলএনটেক ইনস্টিটিউট অফ আইটির প্রধান নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিপ বলেছেন, মূলত ইন্ডাস্ট্রিতে যা দরকার সেটা আমরা ক্লাসরুমে নিয়ে এসেছি যার ফলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছে এবং আমেরিকার বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি থেকে আমাদের ইউনিভার্সিটিতে এসে ভর্তি হচ্ছে। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল পাঁচ টায় রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অডিটোরিয়ামে সারাদেশ থেকে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীদের ইন্ডাস্ট্রি স্কিল ফর গ্লোবাল ক্যারিয়ার এন্ড ওরিয়েন্টেশন অফ পলিটেকনিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্টের এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, 'আমাদের আইটি প্রতিষ্ঠান পিপলএনটেকে প্রায় ৬৭ টি কোর্স রয়েছে, প্রতিটি কোর্সেই ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হবে কিন্তু পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের জন্য এসব কোর্সগুলোতে খরচ হবে সাত থেকে আট হাজার টাকা কারণ এটা আমরা শুধুমাত্র পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের জন্য ছাড় দিয়েছি যাতে করে তারা দক্ষ হয়ে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে পারে এবং পরবর্তীতে দেশের সেবা করতে পারে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ বলেন, আগামী তিন মাস তোমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যদি তোমরা আগামী তিন মাস কঠোর পরিশ্রম করো এবং পিপলএনটেক থেকে এই কোর্সগুলো সম্পূর্ণ করতে পারো তাহলে তোমরা অবশ্যই সফল হতে পারবে। তিনি বলেন, আমরা একইভাবে প্রায় দশ হাজার বাংলাদেশিকে আমেরিকার মেইনস্ট্রিমে চাকরি দিতে পেরেছি। যারা সাধারণত প্রতিবছর ৫০ হাজার ডলার আয় করতে পারত, তারা এখন পিপলএনটেক থেকে ট্রেনিং করে আমেরিকার মেইন স্ট্রিমে চাকরি করছে এবং তারা এখন প্রতিবছর ১৫০ হাজার ডলার আয় করছে।এ সময় চ্যান্সেলর হানিপ যুক্তরাষ্ট্রে তার বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কেও পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের জানান।তিনি জানান ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সাইন্স এন্ড টেকনোলজি প্রতিটি ফ্যাকাল্টি মেম্বারের প্রায় চার থেকে ত্রিশ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।এটা আমাদের জন্য অনেক বড় সফলতা এবং আমাদের ভার্সিটি থেকে বের হয়ে তারা আমেরিকার মেইনস্ট্রিমে জব করছে।তিনি বলেন, সাধারণত ইউনিভার্সিটি গুলোতে একাডেমিক বিষয়ে পড়াশোনা করানো হয়, কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে গেলে ইন্ডাস্ট্রি জ্ঞান দরকার হয়, দক্ষতার দরকার হয়, অভিজ্ঞতার দরকার হয়, সেটা যেহেতু ইউনিভার্সিটিগুলোতে শেখানো হয় না সেজন্য পরবর্তীতে আমাদের চাকরী পেতে সমস্যা হয়।আগত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, "চেষ্টা করলে তুমি যেখানে যেতে চাও সেখানেই যেতে পারবে। তিনি বলেন এই বিশ্বায়নের যুগে পৃথিবীর যে কোন জায়গা থেকে তুমি যেকোনো দেশে কাজ করতে পারবে সেজন্য তোমাকে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।'অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর সদস্য ও টেকনোগ্রামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম আহমেদুল ইসলাম বাবু, পিপলএনটেক পরিচালক সাথী বেগম ও পিপলএনটেকের এডভাইজার আবুল হোসেন মিয়া, পিপলএনটেকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাশরুল হোসাইন খান লিওন, চীফ অপারেটিং অফিসার আব্দুল হামিদসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার মূল চাবিকাঠি হবে ডিজিটাল সংযোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট জাতি গঠনই বাংলাদেশের পরবর্তী লক্ষ্য।স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণে সাইবার সিকিউরিটি ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করবে পিপলএনটেক বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে সাইবার সিকিউরিটি ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সাইবার সিকিউরিটি ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মূল ক্যাম্পাস হবে ঢাকার কেরানীগঞ্জে, এমনটি ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির সিএফও ফারহানা হানিপ।সাইবার সিকিউরিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ভার্চ্যুয়াল বাস্তবতা, উদ্দীপিত বাস্তবতা, রোবোটিকস ও বিগ ডেটার মতো ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে দেশের স্বনামধন্য আইটি প্রতিষ্ঠান পিপলএনটেক ইন্সটিটিউট অফ আইটি। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের তিনটি দেশে দেড় যুগ যাবত কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।২০০৫ সালে যাত্রা শুরু করে পিপলএনটেক ইন্সটিটিউট অফ আইটি। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষণ-শিখন এবং জব প্লেসমেন্ট পদ্ধতি ইতোমধ্যেই একটি সফল মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।ঢাকার কেরানীগঞ্জে বেড়ে উঠা ফারহানা হানিফ বর্তমানে অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায়। সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে ফারহানা হানিপ পরিবারের প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্রেয়ার ইউনিভার্সিটি থেকে ডাবল ব্যাচেলর ইনফরমেশন টেকনোলজি এন্ড সাইবার সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে বর্তমানে এমবিএ, মাস্টার্স ইন লিডারশীপ ম্যানেজমেন্টে পড়ছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোৎকৃষ্ট আইটি কোম্পানিতে দীর্ঘ ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে পিপলএনটেক যুক্তরাষ্ট্র, ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশ অফিসের স্বত্বাধিকারী ও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়ে সার্বক্ষণিক নজর রাখছেন তিনি।এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক সেক্টর ও গভমেন্ট সেক্টর নিয়ে কাজের পাশাপাশি ওয়াশিংটন ডিসিতে উইমেন ইমপ্যাক্ট ইন পাবলিক পলিসি (ডব্লিউআইপিপি) সংগঠনের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি বাংলাদেশ ভিজিট করেন পিপলএনটেক প্রেসিডেন্ট ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির সিএফও ফারহানা হানিফ।গত ১৬ আগষ্ট বাংলাদেশে আরটিভির ইয়ং স্টার প্রোগামে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রে শিলার ও তার স্ত্রী মার্সিয়া শিলারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন পিপলএনটেক প্রেসিডেন্ট ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির সিএফও । উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, আরটিভির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোরশেদ আলম।এসময় ফারহানা হানিপ বলেন, 'পিপলএনটেক থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে প্রায় আট হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী আইটিতে জব করছে। যার অধিকাংশ'ই হচ্ছেন নারী। এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্প, বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জুরী কমিশন ও হাইটেকপার্কের সাথে পিপলএনটেক ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির কার্যক্রমসহ বিভিন্ন প্রকল্প বিষয়ক আলোচনা করা হয়। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র,বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার অন্যতম একটি সেরা আইটি ট্রেনিং সেন্টারে পরিনত হয়েছে পিপলএনটেক।পিপলএনটেক ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির কার্যক্রম শুনে এসময় উচ্ছ্বসিত হোন বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মুখপাত্র।ভবিষ্যতে পিপলএনটেক ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি নিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন মুখপাত্র ব্রে শিলার। বাংলাদেশ সহ তিনটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে পিপলএনটেক ইন্সটিটিউট অফ আইটি। বাংলাদেশের শিক্ষা জীবন সমাপ্তি করা বেকার যুবক ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে আইটি শিক্ষায় শিক্ষিত করে স্মার্ট বাংলাদেশের কর্ণধার হতে নিরলস ভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে পিপলএনটেক।বর্তমানে ফারহানা হানিপের স্বপ্ন ঢাকা জেলা ১ ও ২ এলাকার বেকার যুবকদের আইটি শিক্ষায় শিক্ষিত করে স্বাবলম্বী করে তোলা। তিনি বলেন, আমি চাই আমার সবচেয়ে পছন্দের ঢাকা ১ ও ২ এলাকার যুবকদের যেন বিশ্বের অন্য কোন দেশে গিয়ে অড জব করতে না হয়, তাদের স্কিল ডেভলপমেন্ট করার জন্য পিপলএনটেক সর্বদা তাদের পাশে থাকবে এবং আইটি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলে আমরাই চাকুরির ব্যবস্থা করে দিবো।ঢাকা জেলা জিঞ্জিরা এলাকার যুবকদের পড়াশোনার মান এবং তাদের আইটি শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।পিপলএনটেক ইনস্টিটিউট অফ আইটির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম বাংলাদেশি মালিকানায় ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি প্রতিষ্ঠা করেন পিপলএনটেকের নির্বাহী প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিপ। ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্বে রয়েছেন ফারহানা হানিপ।ফারহানা হানিপ বলেন, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশীদেরকে উন্নতির চরম শিখরে পৌছানোর জন্য পিপলএনটেক এর পাশাপাশি ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজিও বর্তমানে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন চার বছরের ডিগ্রি নিয়ে যাতে করে বসে থাকতে না হয় তার জন্য ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজি এবং পিপলএনটেক ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির কর্মকর্তাবৃন্দ কাজ করে যাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে পিপলএনটেক ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির ছাত্রছাত্রীদের জন্য ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজির বিভিন্ন্ কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করবেন বলেও তিনি জানান'।সম্প্রতি পিপলএনটেক ইন্সটিটিউট অফ আইটি পরিদর্শনে আসেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুন।এসময় পিপলএনটেক ইন্সটিটিউট অফ আইটির কার্যক্রম দেখে উচ্ছ্বসিত হোন তিনি। এছাড়াও ফারহানা হানিপের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জিঞ্জিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সাকুর হোসেন সাকু।সাক্ষাতকালে সাকু বলেন, পিপলএনটেক ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির কার্যক্রম দেখে আমি মুগ্ধ।এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক সেমিনার করার প্রস্তাব দেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ও পিপলএনটেক প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপের সাথে সাক্ষাৎ করলেন যুক্তরাষ্ট্রে গমনেচ্ছু শিক্ষার্থীরা।শনিবার ১৯ আগষ্ট বেলা ১১ টায় পিপলএনটেক বাংলাদেশ ক্যাম্পাসে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজিতে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য ভর্তির যোগ্যতা, ভর্তির জন্য সুযোগ - সুবিধা , টিউশন ফি, থাকা ও খাওয়া খরচ, ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করা হয়।শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ফারহানা হানিপ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষার জন্য আমরা বিশেষ করে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ দিয়েছি আপনাদের এই সুযোগ গ্রহন করা উচিত।শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন যাবেন এমন প্রশ্নের জবাবে ফারহানা হানিপ বলেন, 'পিপলএনটেক ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি এই দুইটি প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা ব্যবস্থাকে কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা হিসাবে গড়ে তুলতে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে।বাংলাদেশীদের জীবনমান উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে দীর্ঘ দেড় যুগ আগে আমারা এপার্টমেন্টের বেইসমেন্টে আইটি চাকুরী পাওয়ার জন্য যে শিক্ষা পদ্ধতি চালু করেছিলাম তা এখন বাংলাদেশ কমিউনিটির গন্ডি পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কমিউনিটির কাছে পৌছে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে অড জব থেকে বের করে আইট শিক্ষায় শিক্ষিত করে আইটিতে চাকুরীর ব্যবস্থা করার যে স্বপ্ন ছিল, তার সফল বাস্তবায়ন হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন । তিনি বলেন প্রায় আট হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থীর আইটি জবের ব্যবস্থা করে পিপলএনটেক বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রর অন্যতম একটি সেরা আইটি ট্রেনিং সেন্টারে পরিনত হয়েছে'।তিনি আরো বলেন,' যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশীদেরকে উন্নতির চরম শিখরে পৌছানোর জন্য পিপলএনটেক এর পাশাপাশি ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজিও বর্তমানে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন চার বছরের ডিগ্রি নিয়ে যাতে করে বসে থাকতে না হয় তার জন্য ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজি এবং পিপলএন্ডটেক ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির কর্মকর্তাবৃন্দ কাজ করে যাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে পিপলএন্ডটেক ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির ছাত্রছাত্রীদের জন্য ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজির বিভিন্ন্ কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে বলেও তিনি জানান'।অনুষ্ঠানে এসময় উপস্থিত ছিলেন পিপলএনটেক ইনস্টিটিউট অফ আইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাশরুল হোসাইন খান লিওন, চীফ অপারেটিং অফিসার আব্দুল হামিদ, ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ প্রতিনিধি মাছুমা ভুঞা ফারহা।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৯ আগস্ট ২০২৩
বাংলা, বাঙালি, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথাবাংলা, বাঙালি, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা। একই অবিনাশী সত্তার ভিন্ন ভিন্ন রূপ। বাংলা, বাংলার প্রকৃতি, বাংলার মানুষ, জীবন-সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য যখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে তখনই সাড়ে সাত কোটি মানুষের আলোকবর্তিকা হয়ে, মুক্তির বাণী হাতে জন্ম নেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালির রাখাল রাজা, বাঙালির মুক্তির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার জন্মের সঙ্গেই বাংলার, বাংলার ধর্মপ্রাণ, শান্তি প্রিয়, কৃষক-শ্রমিক-দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল।তার লক্ষ্য ছিল লুণ্ঠিত মানবতার উদ্ধার, ব্রত ছিল মানব কল্যাণ আর আদর্শ ছিল সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে বজ্র কণ্ঠে প্রতিবাদ। টুঙ্গিপাড়ার ছোট্ট একটি ঘরে জন্ম নেওয়া শেখ মুজিব এককালে দেশ, কাল, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে পুরো বিশ্বের অন্যতম নেতা হয়ে অধর্ম, অশান্তি, অন্যায়, অবিচার ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে ভারতীয় উপমহাদেশের মানচিত্র এভাবে বদলে দেবেন তা হয়তো কেউই আঁচ করতে পারেননি। মুজিব চেতনায় জাগ্রত, হৃদয়ে স্পন্দিত, শোকাহত-প্রতিবাদী-মুজিব বিপ্লবী জনতা কোটি কোটি।ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েও যে বাঙালি নির্ভীক চিত্তে বাঙালির জয়গান গেয়েছেন, স্বাধীনতার স্বপ্ন, মুক্তির সংগ্রাম আর বিপ্লবের মন্ত্রে দীক্ষিত ছিলেন তিনি। তিনি জানতেন বাঙালিকে স্বাধীন করতে হলে কি ধরনের মূল্য দিতে হবে। জীবনপণ সংগ্রাম করতে হবে। কেউ তাকে দাবায়ে রাখতে পারেনি। খোকা, ‘মুজিব’ থেকে সংগ্রামের মাধ্যমেই ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন।বঙ্গবন্ধু যখন একটি উন্নত, স্বাধিকারচেতা ও স্বাধীনতাকামী বাঙালি জাতির স্বপ্ন দেখেছেন তখন বাংলা ও বাংলার মানুষ ইংরেজদের শোষণে বিপন্ন ছিল আর এর পর পাকিস্তানি রক্তপিপাসু হায়েনারা এসে ধর্মের নামে আমাদের মাতৃভাষা, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের অধিকার, আমাদের সম্মান, আমাদের স্বাধীনতার ইচ্ছা সবই কেড়ে নিতে চেয়েছিল। তখন একজন তরুণ মুজিব ছিলেন বলেই তখনো বাংলার শিরায় শ্বাস-প্রশ্বাস চলছিল, একজন দৃঢ় মুজিব ছিলেন বলেই পাকিস্তানি শোষকেরা আমাদের ভাষা, আমাদের অধিকার কেড়ে নিতে পারেনি।বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছিল অসাম্প্রদায়িকতার প্রচার ও সাম্প্রদায়িকতার অবসান। আজ যে স্বাধীনতা আমরা উপভোগ করছি, যে স্বাধিকার আমাদের মাঝে বিদ্যমান তা সেই মহান মানুষটারই অবদান। তিনিই সবার প্রথম উপলব্ধি করেছিলেন ধর্মের ভিত্তিতে দেশ চললে বাঙালি জাতির আলোক শিখা হয়ে যাবে, তিনি আঁচ করেছিলেন স্বাধীন ভূমি ব্যতীত শান্তি অসম্ভব আর তাই উদ্ভাবন করেছিলেন ছয় দফা। ছয় দফা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘সাঁকো দিলাম স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতায় উন্নীত হওয়ার জন্য।’শেখ মুজিব যে পাকিস্তানের জন্য হুমকি হয়ে উঠবেন তা পাকিস্তানি শাসকেরা বুঝতে পেরেছিলেন আর তাই আগরতলা মামলার মাধ্যমে তাকে সরিয়ে দিয়ে বাঙালি জাতির ভেতর সুপ্ত আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের পূর্বেই নিভিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা করে। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুকে একই সূত্রে গাঁথা বলে ভাবতেন। এ জন্যই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তান সরকার স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের নিকট প্রস্তাব করে ‘শেখ মুজিবকে চাও, নাকি স্বাধীনতা চাও?’ অর্থাৎ পাকিস্তান সরকারের এই হিংসাত্মক ও অচেতন প্রস্তাব থেকেই প্রমাণিত হয় যে বঙ্গবন্ধুকে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সমার্থক হিসেবে দেখেছেন।জবাবে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন ‘আমরা শেখ মুজিবকেও চাই, স্বাধীনতাও চাই।’ তাজউদ্দীন আহমদও বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অভিন্নরূপে দেখেছেন। তিনি জানতেন বঙ্গবন্ধু ছাড়া স্বাধীন বাংলাদেশ অসম্ভব। বিশ্বের অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি বাংলাদেশ মানে বঙ্গবন্ধুর দেশ বলে জানতেন, তারা বঙ্গবন্ধুর কারণেই এ দেশকে চিনেছেন। ১৯৭৩ সালে ন্যাম এর আলজিয়ার্স সম্মেলনে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রো বলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি, ব্যক্তি ও সাহসিকতায় তিনি হিমালয়ের সমতুল্য।’ এই অসাধারণ ব্যক্তিত্ত্ব নিয়েই তিনি সকল বাধাবিপত্তি অতিক্রম করেছেন, জেলখানায় বসেও স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নজাল বুনেছেন, রাইফেলের মুখেও অটল থেকেছেন। এই সাহসিকতা নিয়েই হেঁটে চলেছেন গেঁয়ো পথে, কৃষকের দুয়ারে, দিল্লি হতে লাহোরে আর সবখানেই বাঙালির মুক্তির চিরন্তন বাণী গেয়েছেন।বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ নাম দুটিকে কখনো ভিন্নরূপে কল্পনাও করা যায় না। একটিকে আরেকটি থেকে আলাদা করা যায় না। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই উর্বর ভূমি, এর ভেতর বাস করা ১৮ কোটি মানুষ এবং এর সংস্কৃতিকে যদি একটি দেহরূপে কল্পনা করা হয় তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেন সেই দেহের প্রাণ। এই দেহ তৈরি আর শৈশবে লালিত হয়েছে তারই হাত ধরে এবং এখন বিকশিত হচ্ছে তারই অংশ, তার আদর্শের বাস্তব রূপ শেখ হাসিনার হাত ধরে। পিতা এনে দিয়েছেন স্বাধীনতা, রেখে গিয়েছেন আদর্শ, তারই কন্যা দিয়েছেন উন্নয়ন, চির উড্ডীন সবুজের মাঝে লাল সূর্য।তাই মুজিব মানেই বাংলাদেশ। মুজিব আদর্শই বাংলাদেশের অলিখিত সংবিধান। বাঙালির এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র, শোষণ দূর করার হাতিয়ার, আর উন্নয়নের চাবিকাঠি। এ আদর্শকে ধারণ করেই দেশরতœ শেখ হাসিনা বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন। অল্প সম্পদ স্বল্প পুঁজি, অদক্ষ জনগণ নিয়েও লড়াই করে বাঁচতে শিখিয়েছেন। শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে আলোকিত করেছেন ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলকে, তৈরি করেছেন স্বপ্নের পদ্মা সেতু, চালু করেছেন মেট্রোরেল, আকাশের বুকে উড়িয়েছেন শান্তির কপোতরূপী বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, আর দৃশ্যমান করেছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ। এগিয়ে চলেছেন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে।সেই স্বপ্নের মূলমন্ত্র হয়েও পথ দেখাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, সেই পথে সহায়ক হয়ে কাজ করবে মুজিব আদর্শে উজ্জীবিত তরুণরা, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন ও অনুপ্রেরণা জোগাবেন নারীরা। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আর সমুদ্র অর্থনীতির উপযুক্ত ব্যবহার করে ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং আঞ্চলিক শক্তি থেকে বিশ্বশক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বঙ্গবন্ধুর দেখিয়ে যাওয়া পথই হোক আমাদের পথ, তার আদর্শই হোক আমাদের আদর্শ, তার শোকই হোক আমাদের শক্তি, তার ভালোবাসাই হোক আমাদের অনুপ্রেরণা।জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। - আদম তমিজি হক, সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৬ আগস্ট ২০২৩
আর আট দশটা সাধারন মেয়ের মত বেড়ে ওঠা আমার। অস্তিত্ত্বের মাঝে একাত্তর একটা আলাদা জায়গা নিয়ে ছিল আমার চিরদিন। আমাকে ছোটবেলায় সবাই ফারহা নামে ডাকতো। ফারহা থেকে ফারহানা হানিপ, এতগুলো বছরের পথচলা আমাকে একদিনের জন্যও দেশ কিংবা দেশের মাটি থেকে আলাদা করতে পারেনি। বরং প্রতিটি মুহূর্তে আমি অনুভব করেছি মাটি, মা আর একাত্তরকে। আমার কাছে বাঙালীয়ানা শব্দটার পূর্নতা বঙ্গবন্ধুর বজ্রকন্ঠের ৭ই মার্চের ভাষনে আর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটা একটুকরো বাংলাদেশ। আমি সবসময় চাইতাম আমার সন্তান যেন ঠিক আমার মত করেই দেশ, মাটি, একাত্তর, বঙ্গবন্ধুকে আপন করে নেয় হৃদয়ের অন্ত:স্তলে।লেখালেখি আমি তেমন একটা করিনা। সারাদিন কাজের ব্যস্ততায় আর সংসার সামলে ঠিক হয়েও ওঠেনা। কিন্তু মার্চ মাস এলেই কেমন জানি লাগতে থাকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা হয়েছিল এই মার্চ মাসেই। দেশাত্মবোধক গানগুলো শুনে আজও আমার রোমকূপ দাঁড়িয়ে যায়। ‘৭১ এ আমার জন্ম হয় নি, কিন্তু বাবা-মার কাছে অনেক শুনেছি সেই উত্তাল দিনগুলোর কথা। অনেকের মতই জীবন সংগ্রামে আজ বসতি গড়েছি বিদেশের মাটিতে, কিন্তু শিকড়টা ঠিকই পড়ে আছে আমার মাতৃভূমি, বাংলাদেশে।তাই দেশকে নিয়ে কিছু লেখার সুযোগ পেয়ে লোভ সামলাতে পারলাম না। আমার তিন মেয়ে। নাফিসা, প্রিয়েতা আর ইলাফ। ছোট মেয়েটা তখন খুবই ছোট। গত বছর গ্রীষ্মের ছুটিতে মেয়েদের নিয়ে গিয়েছিলাম বাংলাদেশে বেড়াতে। উদ্দেশ্য ছিল পরিবারের সাথে ঈদ করা আর বিদেশে যে জিনিসটা খুব মিস করি; মেয়েদের সাথে বাংলাদেশের ইতিহাস আর সংস্কৃতির সংযোগ তৈরি করে দেয়া। মাত্র কয়েক সপ্তাহর ছুটি। কিন্তু শত ব্যস্ততার মধ্যেও এবার চেয়েছিলাম মেয়েদেরকে কিছু হলেও ঢাকা শহর ঘুরিয়ে দেখাব। লিস্ট করলাম কোথায় কোথায় যাওয়া যায়; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতি জাদুঘর, লালবাগের কেল্লা, আহসান মঞ্জিল ইত্যাদি ইত্যাদি।ঢাকায় পৌঁছানোর পরই নানা কাজের ব্যাস্ততায় দেখতে দেখতে সময়টা শেষ হয়ে এলো! কিন্তু এবার না হলেই নয়... দিনটি ছিল আগস্ট মাসের ১৫ তারিখ। জাতীয় শোক দিবস আবার সরকারি ছুটির দিনও। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডে সপরিবারে প্রাণ হারান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান। ভাবছিলাম আজকের দিনটায় কি করা যায়। দেখতে দেখতে চলে যাবার সময় হয়ে গেলো, আর কিছুদিন পরেই আমেরিকায় ফিরতে হবে। ভাবলাম সময় নষ্ট না করে আজকের এই বিশেষ দিনটিকে স্মরণ করে রাখার জন্য সবচেয়ে ভাল হবে যদি ওদেরকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতি জাদুঘরটা ঘুরে আসা যায়। ওরাও জানলো মাতৃভূমি জন্মের ইতিহাস। কয়েকজন বন্ধুদেরকে ফোন দিলাম কিন্তু কাওকেই পেলাম না, সবাই পরিবার নিয়ে কোথাও না কোথাও ছুটি কাটাতে গিয়েছে। অতঃপর আমাদের যাত্রা ধানমণ্ডি ৩২ নং এর ঐতিহাসিক বাড়ি। ড্রাইভার বেশ অবাক হয়ে বলল, আপা আজ তো সব বন্ধ- শপিং মল, দোকানপাট সব বন্ধ। আমি বললাম ধানমণ্ডি ৩২এ চল। গাড়িতে আমি, দুই মেয়ে আর আমার ভাগ্নে লিংকন। ঘুরতে বের হয়ে প্রথমে বাচ্চাদের আগ্রহ যমুনা ফিউচার পার্ক বা হাতিরঝিল ফ্লাইওভারে থাকলেও পরের ঘটনা ছিল একেবারে ভিন্নরকম!কথা বলতে বলতে কখন যে গাড়ি পৌঁছে গেলো টেরই পাইনি। যদিও ধানমণ্ডি এলাকায় বেশ ট্রাফিক এ পড়তে হয়েছিল। কয়েক বছরে আশেপাশের পরিবেশ অনেক বদলে গেছে। ধানমন্ডির লেক সার্কাসে৩২ নম্বর রোডেই সেই স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি। এখানেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি তাঁর জীবনের শেষদিন পর্যন্ত সপরিবারে ছিলেন। এই বাড়ি থেকেই পাকিস্তানী সৈন্যরা তাকে অসংখ্যবার গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনি এখান থেকেই দেশ পরিচালনার কাজ করতেন। বাড়ির প্রতিটি জায়গায় বঙ্গবন্ধুর সেই সময়ের সব চিহ্নগুলোকে সেভাবেই রেখে দেয়া হয়েছে।১৯৯৪ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁদের ধানমণ্ডি ৩২ এর এই বাড়িটি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে ট্রাস্ট তাঁর স্মৃতি ধরে রাখার জন্য সেটাকে জাদুঘরে রূপান্তর করে আর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয় ১৯৯৭ সালে। গেটে ঢুকতেই সিকিউরিটি চেকিং। ব্যাগ, মোবাইল, ক্যামেরা সব রেখে ঢুকতে হয়। মেয়েরা ছোট, তাই ক্যামেরা সাথে নেয়ার জন্য খুব বায়না ধরল, কিন্তু ওদেরকে না বললাম। বাসার নিচতলায় বঙ্গবন্ধুর অফিস রুম। গুলির আঘাতে সব ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। সব ঠিক সেভাবে সংরক্ষণ করা আছে। এছাড়া তার বিভিন্ন সময়ের স্মৃতিবিজড়িত ছবি দিয়ে জাদুঘরটি সাজানো হয়েছে। জাদুঘরটিতে গাইডের ব্যাবস্থাও আছে যিনি জাদুঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে এর ইতিহাসও বর্ণনা করলেন আমাদের কাছে। আমি বুঝতে পারলাম মেয়েরা তখন আগ্রহ পাচ্ছে। ওদের জন্য বাংলা, আর ইংরেজিতে বুঝিয়ে দিতে হচ্ছিল। কিন্তু ওদেরকে আমাদের দেশের ইতিহাস পড়ে শোনাতে আমার খুব ভাল লাগছিল। দোতলায় বঙ্গবন্ধুর বেডরুম। এতো বড় মাপের একজন মানুষ, কিন্তু তাঁর কী সাধারণ আটপৌরে জীবন। কোন বিলাসিতা নেই! বাড়ির ভেতরটা ছিল খুবই শান্ত, বিশেষ দিন হওয়াতে লোকজনের বেশ ভিড় ছিল। তবু আমি ওদেরকে পুরো বাড়ির সবগুলো ঘর ঘুরে দেখালাম। হায়নাদের গুলির আঘাতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল চারপাশের সব দেয়ালগুলো। সেই গুলিতে একতলার সিঁড়িতে লুটিয়ে পড়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। পাশেই পড়ে থাকা তাঁর ভাঙা চশমা ও পছন্দের তামাকের পাইপটি আজও একিভাবে রাখা আছে। রিসেপশান, বেডরুমের সামনে, সিঁড়িতে, বাথরুমে সব জায়গায় নারকীয় পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে সপরিবারে হত্যা করে খুনিরা। বাচ্চারা প্রতিটি জিনিস খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছিল, শুনছিল আর কাগজে নোট করছিল। একটা সময়ে হঠাত খেয়াল করলাম, বড় মেয়েটা খুব ইমোশনাল হয়ে পড়েছে। আমি বুঝতে পারলাম, কিন্তু কিছু বললাম না। সবশেষে গেলাম শেখ রাসেলের রুম এ। তার সেই ব্যবহৃত খেলনা বাই সাইকেল সব ওভাবেই পড়ে আছে। তখন নাফিসা আর চোখের পানি আটকে রাখতে পারল না। আমাকে জরিয়ে ধরে হাঁটছে, ছবি আর জিনিসের কাপশান পড়ছে আর তার চোখ দিয়ে পানি পড়েই যাচ্ছে। ঘুরতে ঘুরতে আমরা চলে গেলাম বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলের রুমের পাশের ছাঁদে। কেন জানি না, এমন এক মুহূর্তে বাইরে ঝির ঝির করে বৃষ্টি পড়ছিল। মনের অবস্থা আর পুরো পরিবেশের সাথে একদম মানিয়ে গিয়েছিল বৃষ্টিটা। অচেনা বাতাস আর একটা দীর্ঘশ্বাস। লিওন তখন আমাকে বলল, ফুপ্পি, আমার স্কুল এখানেই। আমরা এখানে আসে পাশে অনেক আসি। কিন্তু এই জাদুঘরে আগে আসা হয়নি। সত্যি, এখানে এসে আমাদের দেশ নিয়ে অনেক কিছু জানলাম। থ্যাঙ্ক ইউ।বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি। আমার সন্তানদের জানাতে চাই ওদের মাতৃভূমি সম্পর্কে, কিভাবে জন্ম হল, কিভাবে স্বাধীন হল, কাদের অবদানের জন্য আমরা আজ বাংলায় কথা বলতে পাড়ি, আমার দেশের ইতিহাস অবশ্যই জানা উচিত। মার্চ মাস আমাদের স্বাধীনতার মাস। ৯ মাস সংগ্রাম, আন্দোলন এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরিচালিত সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগে আমরা যে স্বাধীন দেশ পেয়েছি, মাতৃভূমি এবং মাতৃভাষার জন্য এই আত্মত্যাগের উদাহরণ ইতিহাসে বিরল। আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনকরে বলতে চাই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন আমদের দেশ নিয়ে ভাবে, দেশের ইতিহাস জানে, দেশের জন্য কাজ করে। তাহলেই তারা খুশি হবেন। গ্রীষ্মের ঐ ছুটিতে মেয়েদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে যাওয়া ছিল আমাদের জন্য সত্যিই সেরা সিদ্ধান্ত ও অভিজ্ঞতা। - লেখক : ফারহানা হানিপ, ওয়াশিংটন প্রবাসী।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৫ আগস্ট ২০২৩
১৫ আগস্ট আমাদের জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি জাতির শোকের দিন। ইতিহাসের কলঙ্কিত কালো দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে সংঘটিত হয়েছিল এ কলঙ্কিত অধ্যায়। ৪৬ বছর আগে এ দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল ক্ষমতালোভী নরপিশাচ কুচক্রী মহল। বাঙালির মুক্তির মহানায়ক স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষে যখন ক্ষত-বিক্ষত অবস্থা থেকে দেশটির পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন তখনই ঘটানো হয় ইতিহাসের নির্মম এ ঘটনা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের কালরাতে ঘাতকের হাতে নিহত হন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুননেছা, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল, জামালের স্ত্রী রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ নাসের, এসবি অফিসার সিদ্দিকুর রহমান, কর্ণেল জামিল, সেনা সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হক, প্রায় একই সময়ে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মণির বাসায় হামলা চালিয়ে শেখ ফজলুল হক মণি, তাঁর অন্ত:সত্তা স্ত্রী আরজু মণি, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াতের বাসায় হামলা করে সেরনিয়াবাত ও তার কন্যা বেবী, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় বেন্টু খান। জাতি আজ গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে সকল শহীদকে।বঙ্গবন্ধুকে দৈহিকভাবে হত্যা করা হলেও তার মৃত্যু নেই। তিনি চিরঞ্জীব। কেননা একটি জাতিরাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা এবং স্থপতি তিনিই। যতদিন এ রাষ্ট্র থাকবে, ততদিন অমর তিনি। সমগ্র জাতিকে তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রেরণায় প্রস্তুত করেছিলেন ঔপনিবেশিক শাসক-শোষক পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে। তাই চিরঞ্জীব তিনি এ জাতির চেতনায়। বঙ্গবন্ধু কেবল একজন ব্যক্তি নন, এক মহান আদর্শের নাম। যে আদর্শে উজ্জীবিত হয়েছিল গোটা দেশ। বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র আর ধর্মনিরপেক্ষ দর্শনে দেশের সংবিধানও প্রণয়ন করেছিলেন স্বাধীনতার স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। শোষক আর শোষিতে বিভক্ত সেদিনের বিশ্ববাস্তবতায় বঙ্গবন্ধু ছিলেন শোষিতের পক্ষে।“পাকিস্তানি শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার যে ডাক দিয়েছিলেন তা অবিস্মরণীয়। সেদিন তাঁর বজ্রকণ্ঠে উচ্চারিত ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ এই অমর আহ্বানেই স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নিপীড়িত কোটি বাঙালি। সেই মন্ত্রপূত ঘোষণায় বাঙালি হয়ে উঠেছিল লড়াকু এক বীরের জাতি।আবার ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যার পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরেও বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠেই জাতি শুনেছিল মহান স্বাধীনতার অমর ঘোষণা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ওই রাতে বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস তাকে বন্দি থাকতে হয় পাকিস্তানের কারাগারে। তার আহ্বানেই চলে মুক্তিযুদ্ধ। বন্দিদশায় মৃত্যুর খবর মাথায় ঝুললেও স্বাধীনতার প্রশ্নে আপস করেননি অকুতোভয় এ মহান নেতা। মুক্তিযুদ্ধ শেষে বাঙালির প্রাণপ্রিয় নেতাকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। বীরের বেশে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধু।দেশে ফিরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখার পাশাপাশি দেশের মানুষকে উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত করেন বঙ্গবন্ধু। দেশগড়ার এই সংগ্রামে চলার পথে তার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, তার দেশের মানুষ কখনও তার ত্যাগ ও অবদানকে ভুলে যাবে না। অকৃতজ্ঞ হবে না। নবগঠিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান বঙ্গবন্ধু তাই সরকারি বাসভবনের পরিবর্তে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের সাধারণ বাড়িটিতেই বাস করতেন।মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে তারা একের পর এক চক্রান্তের ফাঁদ পেতেছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর বিপথগামী উচ্চাভিলাষী কয়েকজন সদস্যকে ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যবহার করেছে ওই চক্রান্তেরই বাস্তব রূপ দিতে। এরাই স্বাধীনতার সূতিকাগার বলে পরিচিত ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটিতে হামলা চালায় গভীর রাতে। হত্যা করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারকে। বিশ্ব ও মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সেদিন তারা কেবল বঙ্গবন্ধুকেই নয়, তার সঙ্গে বাঙালির হাজার বছরের প্রত্যাশার অর্জন স্বাধীনতার আদর্শগুলোকেও হত্যা করতে চেয়েছিল। মুছে ফেলতে অপপ্রয়াস চালিয়েছিল বাঙালির বীরত্বগাথার ইতিহাসও। বঙ্গবন্ধুর নৃশংসতম হত্যাকান্ড বাঙালি জাতির জন্য করুণ বিয়োগগাথা হলেও ভয়ঙ্কর ওই হত্যাকাণ্ডে খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত না করে বরং দীর্ঘ সময় ধরে তাদের আড়াল করার অপচেষ্টা হয়েছে। এমনকি খুনিরা পুরস্কৃতও হয়েছে নানাভাবে। হত্যার বিচার ঠেকাতে কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ জারি করেছিল বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাক সরকার।সেই কালো রাতে যা ঘটেছিলবঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত সহকারী (রেসিডেন্ট পি এ) জনাব আ ফ ম মোহিতুল ইসলাম এর এজাহারে বর্ননানুসারে)১৯৭৫ সালে তিনি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ৬৭৭ নম্বর বাড়িতে কর্মরত ছিলেন। ১৪ আগষ্ট (১৯৭৫) রাত আটটা থেকে ১৫ আগষ্ট সকাল আটটা পর্যন্ত তিনি ডিউটিতে ছিলেন ওই বাড়িতে। ১৪ আগষ্ট রাত বারোটার পর ১৫ আগষ্ট রাত একটায় তিনি তাঁর নির্ধারিত বিছানায় শুতে যান।মামলার এজাহারে জনাব মোহিতুল উল্লেখ করে বলেন, ‘তারপর কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম তা খেয়াল নেই। হঠাৎ টেলিফোন মিস্ত্রি আমাকে উঠিয়ে (জাগিয়ে তুলে) বলেন, প্রেসিডেন্ট সাহেব আপনাকে ডাকছেন। তখন সময় ভোর সাড়ে চারটা কী পাঁচটা। চারদিকে আকাশ ফর্সা হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু ফোনে আমাকে বললেন, সেরনিয়াতের বাসায় দুষ্কৃতকারী আক্রমণ করেছে। আমি জলদি পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করলাম। অনেক চেষ্টার পরও পুলিশ কন্ট্রোল রুমে লাইন পাচ্ছিলাম না। তারপর গণভবন এক্সচেঞ্জে লাইন লাগানোর চেষ্টা করলাম। এরপর বঙ্গবন্ধু ওপর থেকে নিচে নেমে এসে আমার কাছে জানতে চান পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে কেন কেউ ফোন ধরছে না। এসময় আমি ফোন ধরে হ্যালো হ্যালো বলে চিৎকার করছিলাম। তখন বঙ্গবন্ধু আমার হাত থেকে রিসিভার নিয়ে বললেন আমি প্রেসিডেন্ট বলছি। এসময় দক্ষিণ দিকের জানালা দিয়ে একঝাঁক গুলি এসে ওই কক্ষের দেয়ালে লাগল। তখন অন্য ফোনে চিফ সিকিউরিটি মহিউদ্দিন কথা বলার চেষ্টা করছিলেন। গুলির তান্ডবে কাঁচের আঘাতে আমার ডান হাত দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। এসময় জানালা দিয়ে অনর্গল গুলি আসা শুরু হলে বঙ্গবন্ধু শুয়ে পড়েন। আমিও শুয়ে পড়ি।কিছুক্ষণ পর সাময়িকভাবে গুলিবর্ষণ বন্ধ হলে বঙ্গবন্ধু উঠে দাঁড়ালেন। আমিও উঠে দাঁড়ালাম। ওপর থেকে কাজের ছেলে সেলিম ওরফে আবদুল বঙ্গবন্ধুর পাঞ্জাবী ও চশমা নিয়ে এলো। পাঞ্জাবী ও চশমা পরে বঙ্গবন্ধু বারান্দায় এসে দাঁড়ালেন। তিনি (বঙ্গবন্ধু) বললেন আর্মি সেন্ট্রি, পুলিশ সেন্ট্রি এত গুলি চলছে তোমরা কি কর? এসময় শেখ কামাল বলল আর্মি ও পুলিশ ভাই আপনারা আমার সঙ্গে আসুন। কালো পোশাক পরা একদল লোক এসে শেখ কামালের সামনে দাঁড়ালো। আমি (মোহিতুল) ও ডিএসপি নূরুল ইসলাম খান শেখ কামালের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। নরুল ইসলাম পেছন দিক থেকে টান দিয়ে আমাকে তার অফিস কক্ষে নিয়ে গেল। আমি ওখান থেকে উঁকি দিয়ে বাইরে দেখতে চেষ্টা করলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে আমি গুলির শব্দ শুনলাম। এসময় শেখ কামাল গুলি খেয়ে আমার পায়ের কাছে এসে পড়লেন। কামাল ভাই চিৎকার করে বললেন, আমি শেখ মুজিবের ছেলে শেখ কামাল, ভাই ওদেরকে বলেন।’মোহিতুল ইসলামের এজাহারের বর্ণনায় বলেন, ‘আক্রমণকারীদের মধ্যে কালো পোশাকধারী ও খাকি পোশাকধারী ছিল। এসময় আবার আমরা গুলির শব্দ শোনার পর দেখি ডিএসপি নূরুল ইসলাম খানের পায়ে গুলি লেগেছে। তখন আমি বুঝতে পারলাম আক্রমণকারীরা আর্মির লোক। হত্যাকান্ডের জন্যই তারা এসেছে। নূরুল ইসলাম যখন আমাদেরকে রুম থেকে বের করে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছিলেন তখন মেজর বজলুল হুদা এসে আমার চুল টেনে ধরলো। বজলুল হুদা আমাদেরকে নিচে নিয়ে গিয়ে লাইনে দাঁড় করালো। কিছুক্ষণ পর নিচে থেকে আমরা বঙ্গবন্ধুর উচ্চকণ্ঠ শুনলাম। বিকট শব্দে গুলি চলার শব্দ শুনতে পেলাম আমরা। শুনতে পেলাম মেয়েদের আত্মচিৎকার, আহাজারি। এরইমধ্যে শেখ রাসেল ও কাজের মেয়ে রুমাকে নিচে নিয়ে আসা হয়। রাসেল আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে, আমাকে মারবেনাতো। আমি বললাম না তোমাকে কিছু বলবে না। আমার ধারণা ছিল অতটুকু বাচ্চাকে তারা কিছু বলবে না। কিছুক্ষণ পর রাসেলকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রুমের মধ্যে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এরপর মেজর বজলুল হুদা বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের গেটে দাঁড়িয়ে থাকা মেজর ফারুককে বলে, অল আর ফিনিশড।’অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল ফারুক রহমানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি বলেন, খোন্দকার মোশতাকের নির্দেশে তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট তিনি বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে অভিযান পরিচালনা করেন। ওই বাসভবনে অভিযানের সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন তিনি। অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল রশিদ দায়িত্ব পালন করেছেন বঙ্গভবনে, অবসরপ্রাপ্ত মেজর ডালিম ছিলেন বেতার কেন্দ্রে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সামরিক কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বন্টন করেছেন তিনি (ফারুক) নিজেই।-আদম তমিজি হক, সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১২ আগস্ট ২০২৩