যাত্রার ১০ দিন আগের আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের নেওয়া সিদ্ধান্তের ফলে আজ শনিবার থেকে ১০ দিন আগের অগ্রিম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু হলো।গত ২২ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। সেদিন তিনি জানান, ১ এপ্রিল থেকে যাত্রার ১০ দিন আগের আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। তবে সময় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত সমন্বয়ের লক্ষ্যে ১ এপ্রিলে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। এরপর ২ এপ্রিল থেকে নতুন নিয়মে ১০ দিনের অগ্রিম টিকিট ব্যবস্থা কার্যকরী হবে।শনিবার (১ এপ্রিল) থেকে কাউন্টার ও অনলাইনের মাধ্যমে যুগপৎভাবে সকাল ৮ টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। যতক্ষণ টিকিট থাকবে ততক্ষণ অনলাইন বা কাউন্টার থেকে টিকিট কাটা যাবে। অনলাইন বা কাউন্টারে পৃথক কোনো কোটা নেই।এদিকে, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের অগ্রিম টিকিট আগামী ৭ এপ্রিল থেকে দেওয়ার কথা রয়েছে। এবারের ঈদুল ফিতরের অগ্রিম ও ফেরত যাত্রার টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সুবিধা পেতে যাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল রেলপথ মন্ত্রণালয়।আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরে আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট ১৭ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত শুধু অনলাইন বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে কাটা যাবে। টিকিট কাটতে রেলওয়ে টিকেটিং ওয়েব পোর্টাল, ‘Rail Sheba’ অ্যাপ বা যে কোনো মোবাইল থেকে এসএমএস করার মাধ্যমে NID/ পাসপোর্ট/ জন্মনিবন্ধন যাচাই পূর্বক রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০১ এপ্রিল ২০২৩
                                    প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান, প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস এবং একজন সহযোগী ক্যামেরাম্যানসহ অজ্ঞাতনামা আরও অন্যদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।বুধবার রাতে রমনা থানায় এ মামলা হয়।রাত ২টার দিকে রমনা থানা পুলিশ মামলা হওয়ার বিষয়টি জানায়।মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী থেকে জানা যায়, রাত ১১টা ১০ মিনিটে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।আইনজীবী আব্দুল মালেক মশিউর মালেক (৬১) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন।মালেক মামলায় প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ আনেন।মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছেন।ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ৩১ ও ৩৫ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩১ মার্চ ২০২৩
                                    সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে তাঁর বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘কেউ যদি সংক্ষুব্ধ হয়ে বিচার চায়, সংক্ষুব্ধ হয়ে থানায় মামলা রুজু করে সেই অনুযায়ী পুলিশ কিন্তু ব্যবস্থা নিতেই পারে। আমি যতটুকু জানি, একটা মামলা রুজু হয়েছে।’শামসুজ্জামানকে তাঁর বাসা থেকে আজ বুধবার ভোর চারটার দিকে সিআইডির পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে। সিআইডির পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিরা সাধারণ পোশাকে ছিলেন। সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বাসা সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে আমবাগান এলাকায়। তবে স্থানীয় পুলিশ ও সিআইডির ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।আজ সচিবালয়ে বেলা দুইটার দিকে সাংবাদিকেরা শামসুজ্জামানকে তুলে নেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আইন কিন্তু নিজস্ব গতিতে চলে। আইন অনুযায়ী, সমস্ত কিছু চলে, রাষ্ট্র বলেন সবকিছু চলে। কেউ যদি সংক্ষুব্ধ হয়ে বিচার চায়, সংক্ষুব্ধ হয়ে থানায় মামলা রুজু করে সেই অনুযায়ী পুলিশ কিন্তু ব্যবস্থা নিতেই পারে। আমি যতটুকু জানি, একটা মামলা রুজু হয়েছে।’কারা মামলাটি করেছে এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমার কাছে সব রিপোর্টগুলো আসে নি। আপনারা প্রশ্ন করছেন, আমিও বিভিন্নভাবে জেনেছি। এটাকে কেন্দ্র করেই কিছু একটা হয়েছে। আমি এখনো পরিষ্কার নই। আমি পরিষ্কার হয়ে আপনাদের ঘটনাটা জানাব।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩০ মার্চ ২০২৩
                                    সাভারের বাসা থেকে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিরুদ্ধে।আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজু মন্ডল বুধবার জানান, ঢাকা থেকে যাওয়া সিআইডির একটি দল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কাছে আমবাগান এলাকার ভাড়া বাসা থেকে শামসুজ্জামানকে আটক করেছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডির ঢাকা মেট্রো ও ঢাকা বিভাগীয় উপ-মহাপরিদর্শক ইমাম হোসেন বলেন, 'আমাদের কোনো দল ওই এলাকায় অভিযান চালায়নি, কাউকে তুলেও নেয়নি। অন্য কোনো দল অভিযান চালিয়েছে কি না, সে সম্পর্কেও আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।'দুই প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ভোর ৪টার দিকে তিনটি গাড়িতে করে মোট ১৬ জন শামসুজ্জামানের বাড়ির সামনে যায়। তাদের মধ্যে সাত-আটজন বাড়িতে প্রবেশ করে। একজন শামসুজ্জামানের বসার ঘরে তল্লাশি চালিয়ে তার ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, দুটি মোবাইল ফোন ও একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক নিয়ে যায়। সেখানে ১০-১৫ মিনিট থাকার পর তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় নিয়ে যাওয়া হয়।ঘটনার সময় শামসুজ্জামানের বাসায় ছিলেন স্থানীয় সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'তারা দ্বিতীয়বার বাড়ি এসে জব্দকৃত মালামালের তালিকা তৈরি করেন। শামসুজ্জামানকে জামাকাপড় নিতে বলা হয়। এ সময় কক্ষে দাঁড়িয়ে তার ছবি তোলা হয়। ৫-৭ মিনিটের মধ্যে তারা আবার বের হয়ে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন ওই বাড়িতে তল্লাশির সময় দুবারই উপস্থিত ছিলেন।'শামসুজ্জামানকে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার সময় আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক রাজু মন্ডল উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। বিষয়টি জানতে রাজু মন্ডল ও আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম কামরুজ্জামানের ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা কল ধরেননি। ঢাকা জেলার (সাভার সার্কেল) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিদুল ইসলাম বলেন, 'সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে তুলে নেওয়ার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।'শামসুজ্জামান ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল করিমের ছোট ভাই।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩০ মার্চ ২০২৩
                                    উপজেলা পরিষদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ সংক্রান্ত উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে উপজেলা চেয়ারম্যানদের ওপর ইউএনওদের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব থাকল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। এখন থেকে উপজেলা পরিষদে ইউএনওরা সাচিবিক সহায়তা দেবেন।বুধবার (২৯ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী।আইনের ৩৩ (১) ধারায় বলা হয়েছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন এবং তিনি পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন। (২) পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিপালন এবং বিধি মাধ্যমে নির্ধারিত অন্যান্য কার্যাবলী পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সম্পাদন করবেন।আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম বলেন, উপজেলা পরিষদে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকা সত্ত্বেও একজন নির্বাহী কর্মকর্তাকে বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটা সাংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ কারণে ৩৩ ধারা বাতিল করেছেন আদালত।এর আগে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ সংক্রান্ত উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা কেন বাতিল করা হবে না, এই মর্মে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও দুমকী উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ ও অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মনোহরদী উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান, গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রিনা পারভীন, কালিয়াকৈর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম আহম্মেদ ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা আক্তার ২০২০ সালে ৭ ডিসেম্বর এ রিট করেন।এদিকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পরিষদ আইন ১৯৯৮ এর ধারা ১৩ (ক) ১৩ (খ) ও ১৩ (গ) কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ রুল জারি করেন। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।২০২১ সালের ১৫ জুন উপজেলা চেয়ারম্যানদের ক্ষমতা খর্ব করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের ক্ষমতা দেওয়ার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আজিজসহ তিনজন উপজেলা চেয়ারম্যান এ রিট দায়ের করেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩০ মার্চ ২০২৩
                                    দেশে বর্তমানে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৩০ হাজার। যা আগের তুলনায় কমেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। বুধবার (২৯ মার্চ) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত ‘শ্রমশক্তি জরিপ ২০২২’-এ চিত্র উঠে এসেছে। আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ভবনে এ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভার আয়োজন করে বিবিএস।বর্তমানে দেশে বেকার জনগোষ্ঠীর হার কমে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে, যা আগে ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে বেকার পুরুষের সংখ্যা ১৬ লাখ ৯০ হাজার আর বেকার নারীর সংখ্যা ৯ লাখ ৪০ হাজার। এ বিশাল বেকার জনগোষ্ঠী সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করার সুযোগও পান না। বেকারত্বের এ হিসেব আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) দেওয়া মানদণ্ড অনুযায়ী। আইএলও মনে করে, সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ না করলে ওই ব্যক্তিকে বেকার হিসেবে ধরা হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩০ মার্চ ২০২৩
                                    প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা রমজান মাসে জনজীবনের পবিত্রতা ও শান্তিকে উপেক্ষা করে আন্দোলনের জন্য বিএনপির আহ্বানের সমালোচনা করে দেশবাসীকে উন্নয়নের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের আন্দোলনের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।তিনি আরো বলেন, ‘তারা বিএনপি) এই রমজান মাসেও আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে।’ তিনি তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘অন্তত এই রমজান মাসে তো জনগণকে আন্দোলন থেকে নিস্তার দেন।’ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আজ ৫৩তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।তিনি দেশবাসীকে মনে করিয়ে দেন যে, রমজান মাসে বেতন বৃদ্ধির আন্দোলনে খালেদা জিয়া ১৭ শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিলেন।শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘যারা রমজান মাসে মানুষকে গুলি করে হত্যা করে, তারা রমজান মাসের প্রতি সম্মান দেখাবে কি করে? তাইতো তারা এই মাসে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। পবিত্র রমজান মাস ও মানুষের দুর্ভোগের প্রতি তাদের কোন অনুভূতিই নেই।’তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কোন ইফতার পার্টি না করে- রমজান মাসে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘবের জন্য তাদের মধ্যে এই অর্থ ও খাবার বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন দেখে বিশ্ব সম্প্রদায় বাংলাদেশের প্রতি সম্মান দেখাতে বাধ্য হলেও বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও উন্নয়ন না দেখা বিএনপি নেতৃবৃন্দ ও কয়েকজন তথাকথিত বুদ্ধিজীবীর কড়া সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, ‘বিশ্ব সম্প্রদায় বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বর্ণনা করতে বাধ্য হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তার সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং অব্যাহত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কারণে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত ১৪ বছরে বাংলাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান এমপি, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীর বিক্রম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক, রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, এমপি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. পারভীন জামান কল্পনা ও অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম এমপি, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে হুমায়ুন কবির ও এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।আলোচনা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ডক্টর আবদুস সোবহান গোলাপ, এমপি ও সহ-সভাপতি সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৮ মার্চ ২০২৩
                                    মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।আজ রোববার ভোর ৫টা ৫৬ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধানমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয় এবং সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল অভিবাদন জানায়।জাতীয় সংসদের স্পিকার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, ৩ বাহিনীর প্রধান ও ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরা এ সময় স্মৃতিসৌধে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের শ্রদ্ধা জানানোর পর সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৭ মার্চ ২০২৩
                                    ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের সংদীয় মনোনয়ন বোর্ড সভায় স্বাগত বক্তব্যে এই স্বীকৃতি দাবি করেন তিনি।প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে মনোনয়ন বোর্ডের এ সভা হচ্ছে। সেখানে সভাপতিত্ব করছেন শেখ হাসিনা।১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মাটিতে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল। প্রায় ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিলেন পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গণহত্যা চালায় বাংলাদেশে। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর জাতীয় সংসদে সিদ্ধান্ত নিয়ে ২০১৮ সাল থেকে জাতীয়ভাবে দেশে ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত হচ্ছে।স্বাধীনের পর থেকে গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের বিষয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, গণহত্যা জাদুঘরসহ নানা সংগঠনের প্রচেষ্টায় গত কয়েক দশকে গণহত্যার স্বীকৃতির দাবি জোরালো হয়। বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ মানুষও গণহত্যায় শহিদদের স্মরণে দেশে নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে।ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম গণহত্যা হলেও জাতিসংঘে বা আন্তর্জাতিক প্রাতিষ্ঠানিক কোনো দলিলে এর স্বীকৃতি এখনো নেই। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরে আর তার ধারাবাহিকতা অনুসরণ করা হয়নি। শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় স্বাগত বক্তব্যে সরকারপ্রধান গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চান।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৫ মার্চ ২০২৩
                                    আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস। বাঙালি জাতির জীবনে ১৯৭১ সালের এইদিন শেষে এক বিভীষিকাময় ভয়াল রাত নেমে এসেছিল।এদিন মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চ লাইটের নীলনকশা অনুযায়ী বাঙালি জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালীদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ রাত ১০টা ৩০মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশে প্রতীকী 'ব্ল্যাক আউট' পালন করা হবে।আজ সকাল সাড়ে ৯টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে গণহত্যা দিবসের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সারাদেশে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গীতিনাট্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশনের মিনিপোলগুলোতে গণহত্যার ওপর দুর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করা হবে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এদিন বাদ জোহর দেশের সব মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা মুছে দেওয়ার চেষ্টায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গণহত্যা শুরু করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তারপর ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এসেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যে সশস্ত্র অভিযান পরিচালনা করে, তারই নাম অপারেশন সার্চলাইট।এই অভিযানের নির্দেশনামা তৈরি করে পাকিস্তানের ২ সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। নির্দেশনামার কোনো লিখিত নথি রাখা হয়নি। গণহত্যার সেই পুরো নির্দেশ মুখে মুখে ফরমেশন কমান্ডার বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হয়। অনেক পরে, ২০১২ সালে, মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা 'এ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওন কান্ট্রি' নামে আত্মজীবনী প্রকাশ করেন। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রকাশিত সে আত্মজীবনীতে প্রথমবারের মতো অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়।অপারেশন সার্চলাইট কীভাবে পরিকল্পিত হয়, ১৯৭১ সালের সেই স্মৃতিচারণ করে রাজা লিখেছেন, '১৭ মার্চ, সকাল প্রায় ১০টা বাজে। টিক্কা খান আমাকে ও মেজর জেনারেল ফরমানকে কমান্ড হাউসে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে খবর পাঠান। খবর পেয়ে আমরা দুজন টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করি। গিয়ে দেখি, সেখানে জেনারেল আবদুল হামিদ খানও রয়েছেন। টিক্কা খান আমাদের বলেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শেখ মুজিবের সমঝোতা আলোচনা ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট চান আমরা যেন সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি গ্রহণ করি এবং সে অনুযায়ী একটা পরিকল্পনা তৈরি করি। এ ছাড়া আর কোনো মৌখিক বা লিখিত নির্দেশনা আমরা পাইনি। আমাদের বলা হয়, পরদিন ১৮ মার্চ বিকেলে আমরা দুজন যেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ওই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করি।'পরদিন সকালেই খাদিম হোসেন রাজা তার কার্যালয়ে রাও ফরমান আলীকে নিয়ে বসেন। তারাই গণহত্যার এ অভিযানের নাম দেন অপারেশন সার্চলাইট।মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন ২৫ মার্চ রাত সম্পর্কে লিখেছেন, 'সেই রাতে ৭০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়, গ্রেফতার করা হল আরও ৩ হাজার লোক। ঢাকায় ঘটনার শুরু মাত্র হয়েছিল। সমস্ত পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে সৈন্যরা বাড়িয়ে চললো মৃতের সংখ্যা। জ্বালাতে শুরু করলো ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট। লুট আর ধ্বংস যেন তাদের নেশায় পরিণত হল। রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক-শেয়ালের খাবারে পরিণত হল। সমস্ত বাংলাদেশ হয়ে উঠলো শকুন তাড়িত শ্মশান ভূমি।'পাইকারি এই গণহত্যার স্বীকৃতি খোদ পাকিস্তান সরকার প্রকাশিত দলিলেও রয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্কট সম্পর্কে যে শ্বেতপত্র পাকিস্তান সরকার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রকাশ করেছিল, তাতে বলা হয়: '১৯৭১ সালের পয়লা মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত ১ লাখেরও বেশি মানুষের জীবননাশ হয়েছিল।'১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের কাছে পাকিস্তানি জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের প্রক্রিয়া চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা কুখ্যাত 'অপারেশন সার্চ লাইট' নাম দিয়ে নিরীহ বাঙালি বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা। এদিন দুপুরের পর থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে থাকে। সকাল থেকেই সেনা কর্মকর্তাদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। হেলিকপ্টারযোগে তারা দেশের বিভিন্ন সেনানিবাস পরিদর্শন করে বিকেলের মধ্যে ঢাকা সেনানিবাসে ফিরে আসে।ঢাকার ইপিআর সদর দফতর পিলখানাতে অবস্থানরত ২২তম বালুচ রেজিমেন্টকে পিলখানার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিতে দেখা যায়। মধ্যরাতে পিলখানা, রাজারবাগ, নীলক্ষেত আক্রমণ করে পাকিস্তানি সেনারা। হানাদার বাহিনী ট্যাঙ্ক ও মর্টারের মাধ্যমে নীলক্ষেতসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দখল নেয়। সেনাবাহিনীর মেশিনগানের গুলিতে, ট্যাঙ্ক-মর্টারের গোলায় ও আগুনের লেলিহান শিখায় নগরীর রাত হয়ে উঠে বিভীষিকাময়।লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজীর জনসংযোগ অফিসারের দায়িত্বে থাকা সিদ্দিক সালিকের 'উইটনেস টু সারেন্ডার' গ্রন্থেও এ সংক্রান্ত একটি বিবরণ পাওয়া যায়। সিদ্দিক সালিক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জেনারেল নিয়াজীর পাশেই ছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অনুগত পাকিস্তানি হিসাবে পাক সামরিক জান্তার চক্রান্ত তিনি খুব কাছে থেকেই দেখেছেন। ২৫ মার্চ, অপারেশন সার্চ লাইট শুরুর মুহূর্ত নিয়ে তিনি লিখেন 'নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সামরিক কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। এমন আঘাত হানার নির্ধারিত মুহূর্ত (এইচ-আওয়ার) পর্যন্ত স্থির থাকার চিহ্ন বিলুপ্ত হয়ে গেল। নরকের দরজা উন্মুক্ত হয়ে গেল।'পাকিস্তানি হায়েনাদের কাছ থেকে রক্ষা পায়নি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও। ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ও জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৯ জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। ঢাবির জগন্নাথ হলে চলে নৃশংসতম হত্যার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি। এখানে হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত।প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অপারেশন সার্চ লাইট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সব পদক্ষেপ চূড়ান্ত করে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করে করাচি চলে যান। সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেফতারের আগে ২৬ মার্চ (২৫ মার্চ মধ্যরাতে) বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোন মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।বঙ্গবন্ধুর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র লড়াই শেষে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৫ মার্চ ২০২৩
                                    ছুটির দিন হলেও দূষিত শহরের তালিকা থেকে সরতে পারছে না ঢাকা। গতকাল থেকে মাত্র একধাপ উন্নতি হয়েছে। বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় আজ শনিবার সকাল ১১টায় ঢাকার অবস্থান সপ্তম। গতকাল শুক্রবার এ অবস্থান ছিল ষষ্ঠ। গত রোববার বৃষ্টির পর থেকে ঢাকার বায়ুর দূষণ কমতে থাকে। বৃষ্টি কমে যাওয়ার পর দিন দিন অবস্থার অবনতি হয়েছে।আজ শনিবার সকাল ১১টায় ঢাকায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১৪০। এ বায়ু মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর। একই সময়ে বিশ্বে বায়ুদূষণের শীর্ষে অবস্থান করে থাইল্যান্ডের চিয়াংমাইয়ের স্কোর ১৯৬, দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ঘানার আক্কারা শহর, স্কোর ১৫৮; তৃতীয় অবস্থানে থাকা চীনের শেনয়াং শহরের স্কোর ১৭৫, নেপালের কাঠমান্ডু ১৫৪ স্কোর নিয়ে চতুর্থ, পাকিস্তানের করাচি ১৫৩ স্কোর নিয়ে পঞ্চম, ভিয়েতনামের হ্যানয় ১৪৭ স্কোর নিয়ে ষষ্ঠ অবস্থানে আছে।ঢাকায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক দিন দুর্যোগপূর্ণ বায়ুর মধ্যে কাটিয়েছে নগরবাসী। জানুয়ারিতে মোট ৯ দিন রাজধানীর বায়ুর মান দুর্যোগপূর্ণ ছিল, যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি—বছরের চার মাস ঢাকার বায়ু বেশি দূষিত থাকে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে বায়ুর মান থাকে সবচেয়ে বেশি খারাপ।সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার দূষিত বাতাসের শহরের তালিকা প্রকাশ করে। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বায়ু কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়।একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়। আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়।একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। আর ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। এটা সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৫ মার্চ ২০২৩
                                    রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা, যা আগে ছিল ৮০ টাকা পটল প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, টমেটো প্রতি কেজি ৪০ টাকা; অথচ কয়েক দিন আগে ছিল ৩০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা; অথচ কয়েক দিন আগেই ছিল ৬০ টাকা, , বরবটি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, সিম প্রতি কেজি ৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৩০ টাকা, লেবু প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা অথচ কয়েক দিন আগে ছিল ২০-৩০ টাকা, মুলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০ টাকা, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা, যা আগে ছিল ৩০ টাকা, আদা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, যা আগে ছিল ১০০ টাকা।এদিকে কয়েক মাস ধরে গরু ও খাসির মাংস ছোঁয়াই যাচ্ছে না, পোয়ায় (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে। এমতাবস্থায় মুরগির মাংস দিয়ে প্রোটিনের স্বাদ নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। মুরগির দাম বাড়তে বাড়তে রমজান সামনে রেখে রেকর্ড গড়েছে। দেশের ইতিহাসে এতো দামে মুরগি বিক্রির নজির নেই। শুধু তাই নয়, মাছের দামও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সবজির বাজারেও আগুন। মাংসের পর সবজি ও মাছের এ অসহীয় মূল্যে নাজেহাল নিম্ন আয়ের মানুষ।রাজধানীর মাংসবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সোনালি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৭০ টাকা, অথচ কয়েক দিন আগেও ছিল ২৭০ টাকা। ব্রয়লার ২৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা কয়েক দিন আগে ছিল ২৪০-২৫০ টাকা কেজি। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা, যা কয়েক দিন আগে ছিল ৭০০ টাকা। খাসির মাংস ১ হাজার ২৫০ টাকা, যা আগে ছিল ১ হাজার টাকা। মাছের বাজার গিয়ে দেখা গেছে, মাঝারি আকৃতির রুই মাছ প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে; অথচ কয়েক দিন আগেও ছিল ২৬০ টাকা। জাপানি মাছ প্রতি কেজি ২৩০ টাকা, যা আগে ছিল ১৯০ টাকা। মৃগেল মাছ ২৫০ টাকা, যা আগে ছিল ২১০ টাকা। কই মাছ কেজি প্রতি ৩০০ টাকা, যা আগে ছিল ২১০ টাকা। মাঝারি গলদা চিংড়ি মাছ ৬০০ টাকা, যা আগে ছিল ৫৫০ টাকা। তেলাপিয়া প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা, যা আগে ছিল ১৮০ টাকা। গরিবের মাছ বলে পরিচিত পাঙাশও বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ১৮০ টাকা।পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায় যা আগে ছিল ৪০০ টাকা। সুরমা মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা, যা আগে ছিল ২০০ টাকা। অন্যদিকে দেশি কই মাছ প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০০ টাকা। চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ টাকা, যা আগে ছিল ৬০০ টাকা। শোল মাছ প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, যা আগে ছিল ৫০০ টাকা। ট্যাংরা প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, যা আগে ছিল ৩৫০ টাকা। এদিকে শুধু মাছ ও মাংসের দাম বাড়েনি। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডিমের দামও। বর্তমানে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, যা কয়েক দিন আগেও ছিল ৪০ টাকা।এ ছাড়া পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, যা আগে ছিল ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৬০ টাকা যা আগে ছিল ৪০ টাকা এবং কাঁচাকলা প্রতি হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছ। শুধু সবজি বাজারে নয়, ফল বাজার অধিকাংশই ফলেরও দাম বেড়েছে। বিশেষ করে রমজান উপলক্ষ্যে দাবাস খেজুর ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে অথচ কয়েক দিন আগে ২৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছিল। মরিয়ম খেজুর ১২০০ টাকা, যা আগে ছিল ১ হাজার টাকা। আজোয়া খেজুর প্রতি কেজি ৯০০ টাকা, যা আগে বিক্রি হতো ৭০০ টাকা, আপেল ৩২০ টাকা, যা আগে ছিল ২০০ টাকা, কমলা ২৪০ টাকা, যা আগে ছিল ২০০ টাকা। এদিকে ঊর্ধ্বগতির বাজারে কয়েকটি সবজির দাম বৃদ্ধি পায়নি। লাউ প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা।খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর রোজার আগে প্রতিকেজি বুটের বেসন বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। ইসবগুলের ভুসি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকা, যা আগে ৯০০ টাকা ছিল। ২০০ গ্রামের ট্যাং বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা, যা আগে ১৬০ টাকা ছিল।প্রতিলিটার রুহ আফজা বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা, যা আগে ৩০০ টাকা ছিল। বাজারে যে ছোলা প্রতিকেজি ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেই একই মানের ছোলা গত বছর ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি চিনি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, যা আগে ১০০ টাকা ছিল।প্রতিকেজি খেজুরের গুড় বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা, যা আগে ২২০ টাকা ছিল। মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, যা আগে ৬০ টাকা ছিল। বেড়েছে সবজি মধ্যে বেগুনের দামও বেড়েছে। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্চে ৮০-১০০ টাকা, যা গত বছর একই সময় ৭০ টাকা ছিল।সবজির দাম কেন বাড়তি- এ বিষয়ে একই বাজারের সবজি বিক্রেতা সবুজ আলী যুগান্তরকে বলেন, শীতের মৌসুম শেষে সবজির দাম বাড়তি থাকবে এটা স্বাভাবিক। কারণ এ সময় শীতের সবজির মৌসুম শেষে সিজনাল সবজিগুলো আর হচ্ছে না। তাতে আবার রমজানে সবজির চাহিদাও একটু বেশি হয়। এ জন্য সবজির দামও কিছুটা বাড়তি হতে পারে। বৃহস্পতিবার বাজার করতে এসেছিলেন সরকারি অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। বর্তমান বাজার কেমন এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুগান্তরকে বলেন, কী আর বলব, যেটাতেই হাত দেই সেটারই দাম বেড়েছে। অল্প কিছু টাকা মাইনে পাই, সেটা দিয়ে কোনোভাবে বেঁচে থাকি। যেভাবে বাজারের দাম ঊর্ধ্বগতি এভাবে বাড়তে থাকলে পথে পথে ভিক্ষা করতে হবে মনে হয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশে কোনো জিনিসের দাম বাড়লে পরে আর তা কমে না। যতই দিন যায়, ততই বাড়তেই থাকে। রাজধানীর কাঁঠালবাজারে বাজার করতে এসেছিলেন রাকিব হোসাইন, তিনি পেশায় একজন চাকুরীজিবি। তিনি জানান, মাংস কেনা তো মুশকিল আবার মাছের বাজারও চড়া। তবে আগে তেলাপিয়া, পাঙাশ, চাষের কই এমন জাতীয় মাছ কিনে খাওয়া যেত; কিন্তু এখন আর এগুলোর কম দাম নেই। এসবের দামও অনেক বেড়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে আয়-ব্যয়ের হিসাব এখন মেলানো যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, বাজারের প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে কিন্তু আমাদের আয় বাড়েনি। এ বেতনে পরিবার চালানো খুব কঠিন। যে হারে সবকিছুর দাম বাড়ছে, সেটা দিয়ে চলা অসম্ভব। পরিবারের সদস্যদের চাহিদাও পূরণ হয় না। সন্তানদের আকুতি দেখলে নীরবেই কাঁদি। আর কিছু করার নেই।এজে/
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৪ মার্চ ২০২৩
                                    নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের উদ্ধৃত করে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছে, নির্বাচনে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে এবং বিরোধী দলীয় পোলিং এজেন্ট ও ভোটারদের ভয় দেখানোসহ গুরুতর অনিয়ম হয়েছে।'দ্য ২০২২ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিস' গতকাল সোমবার রাতে প্রকাশিত হয়েছে।ওয়াশিংটন সম্প্রতি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বারবার বাংলাদেশকে আহ্বান জানিয়ে আসছে। এ বছরের শেষের দিকে বা আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।বার্ষিক কান্ট্রি রিপোর্টগুলো ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলে মানবাধিকার ও কর্মীদের অধিকারের প্রতি সম্মানের পরিস্থিতি নথিভুক্ত করে।প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'আরও নিরাপদ, স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ বিশ্ব তৈরি করতে ব্যক্তিগত অধিকারের প্রতি সম্মানের প্রচার সহায়তা করে৷'তিনি বলেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিত সম্মান ও অংশীদারিত্বের মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে মানবাধিকার বিষয়গুলো উত্থাপন করে। আমরা এটি চালিয়ে যাব।'প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ এবং তার নির্বাচনী জোট ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৮টিতে জয় লাভ করেছে। যেখানে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং তার নির্বাচনী জোট জয়ী হয়েছে ৭টি আসনে।নির্বাচনের আগে প্রচারণার সময় হয়রানি, ভয় দেখানো, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও সহিংসতার অনেক বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন ছিল। এর ফলে অনেক বিরোধী দলীয় প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা ভোটারদের সঙ্গে দেখা করা, সমাবেশ করা বা অবাধে প্রচারণা চালানো কঠিন হয়ে উঠেছিল।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ২২টি নির্বাচনী ওয়ার্কিং গ্রুপ এনজিওর মধ্যে মাত্র ৭টিকে অনুমোদন দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এনজিও বিষয়ক ব্যুরো ও নির্বাচন কমিশন।২০২২ সালের বেশ কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে চিহ্নিত করা হয়েছে কম ভোটার উপস্থিতি, ভয় দেখানো, অনিয়ম এবং প্রচারণা ও ভোটদানের সময় সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র উল্লেখ করেছে, এসব নির্বাচনে রাজনৈতিক সহিংসতার ৪৭৯টি ঘটনা ঘটেছে এবং ৭০ জন নিহত হয়েছেন।মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনে মামলা করেছে।বিএনপি দাবি করেছে, পুলিশ ১ বছরে হাজারো বিএনপি সদস্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আন্দোলনের কারণে ফৌজদারি মামলা করেছে এবং গ্রেপ্তার করেছে। মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা দাবি করেছেন, এসব অভিযোগের বেশিরভাগই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মতো আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো বিরোধী দলের সংশ্লিষ্টদের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।প্রতিবেদনে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, শ্রম অধিকার, সমাবেশের স্বাধীনতা, অভিবাসী ও শরণার্থীদের অধিকারসহ আরও কিছু সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে।এতে বলা হয়েছে, অনলাইন ও অফলাইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর উল্লেখযোগ্য সীমাবদ্ধতা রয়েছে। হয়রানি ও প্রতিশোধের ভয়ে মিডিয়া ও ব্লগাররা সরকারের সমালোচনার ক্ষেত্রে সেলফ সেন্সর করছে।গত বছর জুড়ে করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকারের পরিচালনা বিষয়ে প্রশ্ন তোলাসহ সরকারের সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছে সরকার।আইনটি ক্রমবর্ধমানভাবে দেশের বাইরে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবহার করা হয়েছিল।গত এপ্রিলে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ অব বাংলাদেশ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮৯০টি মামলায় অন্তত ২ হাজার ২৪৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রাজনীতিবিদ এবং এরপরেই আছেন সাংবাদিক।প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে প্রতি মাসে গড়ে ৩২ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।এতে আরও বলা হয়েছে, ২০২২ সালে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ২০২১ সালের তুলনায় নাটকীয়ভাবে কমেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২২ মার্চ ২০২৩
                                    বগুড়ায় সদর উপজেলার নওদাপাড়া এলাকায় করতোয়া নদীর একাংশে মাটি ভরাট করে নদীর উপর রাস্তা তৈরি করার অভিযোগে ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস)-কে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সোমবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফিরোজা পারভীন এ জরিমানার আদেশ দেন।এসময় ইউএনও ফিরোজা পারভীন বলেন, আজকে টিএমএসএস-এর ইকোপার্কের মধ্যে করতোয়া নদীর সীমানা নির্ধারণের জন্য নির্ধারিত দিন ছিল। আমরা সীমানা চিহ্নিত করার জন্য এখানে এসেছি। গত শনিবার এই জায়গায় এসে আমি যেটা দেখে গিয়েছিলাম এখানে ময়লা আবর্জনা বা বালু দিয়ে ভরাটের যে কার্যক্রম চলছিল সেই এলাকার কার্যক্রমটা আমি বন্ধ রাখতে বলেছিলাম। কারণ এই জায়গাটা আমার কাছে মনে হয়েছে এটা করতোয়া নদীর জায়গায়। পরবর্তীতে টিএমএসএস কর্তৃপক্ষ নির্বাহী পরিচালক এসে জানালেন- এটা উনাদের নিজস্ব জায়গা। সেই প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে এটা পরিমাপ হবে। এরপর জায়গা চিহ্নিত হয়ে গেলে তিনি তার কাজ করবেন বা সেটা পরের বিষয়। এই বিষয়ে তিনি একটি অঙ্গীকারনামাও দিয়েছেন যে সীমানা নির্ধারণ সাপেক্ষে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। আমি সোমবার এসে যেটা দেখলাম এখানে আমাদের করতোয়া নদীর মূল যে স্রোতটা, সেই স্রোতের প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে একটি রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। যেটি গতদিন আমাকে বলা হয়েছিল, এই পাড়ের জনগণ যারা তাদের সুবিধার্থে তারা করেছে। কিন্তু আমি সরেজমিনে সবার কথা শুনে দেখলাম, নদী পারাপারের জন্য তারা এটা করেনি। নদীর স্রোত বন্ধ হোক এটা কেউ চায় না। কাজেই এটা ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে আমাকে। পরবর্তীতে জনগণের কাছ থেকে জানতে পেরেছি এটা টিএমএসএস কর্তৃপক্ষই বালু ভরাট করে রাস্তা করেছে। পাশাপাশি আমি শনিবার যে নির্দেশনা দিয়েছিলাম কাজ বন্ধ থাকবে, আমি এসে দেখতে পেলাম সেটিরও ব্যত্যয় হয়েছে। এখানে ময়লা আবর্জনা দিয়ে ভরাট চলছে। পাশাপাশি মাটি এবং বালু ভরাটের কার্যক্রম করা হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে টিএমএসএসকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা প্রদানে ব্যর্থ হলে টিএমএসএসের পক্ষে প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র সহকারী পরিচালক নজিবর রহমান তিন মাসের কারাভোগ করবেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২১ মার্চ ২০২৩
                                    ঢাকাসহ সারা দেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল শুক্রবার থেকেই। শনিবার ভোর থেকে মেঘলা ছিল রাজধানীর আকাশ।সকালে ছিটেফোঁটা বৃষ্টিপাত হলেও সকাল ১০টার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বেশ মুষলধারায় বৃষ্টি হয়েছে।এতে রাস্তায় বের হওয়া মানুষের ভোগান্তিতেও পড়তে হয়। তবে স্বস্তির এ বৃষ্টি কেউ কেউ অবশ্য আলাদা আমেজও পাচ্ছেন।এদিকে শনিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারিবর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ২-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর প্রভাবেই বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২০ মার্চ ২০২৩
                                    পুলিশ কর্মকর্তা হত্যার আসামি আরাভ খান। পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় তিনি পলাতক রয়েছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে রয়েছে আরও হত্যা, ধর্ষণ, অস্ত্রসহ অন্তত ৯ মামলা। তিনি আরাভ ছাড়াও রবিউল ইসলাম, আপন, সোহাগ, হৃদয় ও হৃদি নামে পরিচিত।সম্প্রতি ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের ঘোষণার পর আলোচনায় আসেন আরাভ। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়।তথ্যমতে, ২০১৮ সালে পুলিশ কর্মকর্তা মামুন হত্যা মামলায় আরাভ খানসহ আটজনের সংশ্লিষ্টতা পায় ডিবি। এদের মধ্যে আরাভ পলাতক ছিলেন। তাকে গ্রেফতারে পাঁচ দফা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। অবশেষে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আরাভ। কিন্তু পরে জানা যায়, আরাভ খানের পরিবর্তে জেলে যান চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার আইনপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে আবু ইউসুফ লিমন।ইউসুফের আইনজীবী ও ডিবি পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলে যাওয়ার কিছু দিন পর ইউসুফ আদালতকে জানান, তিনি হৃদয় ও আরাভ খান নন। তিনি টাকার বিনিময়ে এবং পরিবারের ভরণপোষণ চালানোর চুক্তিতে হৃদয় সেজে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। পরে বিষয়টি তদন্ত করতে ডিবিকে নির্দেশ দেন আদালত। সেই প্রতিবেদনে বেরিয়ে আসে এই ইউসুফ আসলে হৃদয় নন।এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইউসুফ গণমাধ্যমকে বলেন, ফেসবুক সূত্রে আরাভের সঙ্গে পরিচয়। পরে কোনো একসময় ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহের কথা জানান। তখন আরাভ জানান, দেশে আসলে সব ব্যবস্থা করে দেবে। সাকিব আল হাসানের সঙ্গেও খেলার সুযোগ করে দেবে। কিন্তু মামলার কারণে সে দেশে আসতে পারছে না।তিনি বলেন, তখন আরাভ আমাকে অনুরোধ করে তার হয়ে আদালতে গিয়ে জেলে যেতে। সে আমাকে দেড় মাসের মধ্যে জামিনে মুক্ত করবে। আমার ক্রিকেট খেলার ব্যবস্থা করে দেবে। একসময় আমি তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই। পরে পরিবারকে না জানিয়ে হৃদয় পরিচয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করি।ইউসুফ আরও বলেন, জেলে যাওয়ার পর একাধিকবার আমার জামিনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। কারাগারে এই মামলার অন্য আসামিদের সঙ্গে কথা হয়। পরে আমি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি।ইউসুফের বাবা নুরুজ্জামান বলেন, ইউসুফ তিন মাস জেলে থাকার পর বিষয়টি জানতে পেরেছি। এর পর তার জামিন পেতে আরও ছয় মাস লেগেছে। মোট ৯ মাস সে জেল খেটেছে।উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি বাসায় খুন হন বিশেষ শাখার পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খান। পর দিন তার লাশ বস্তায় ভরে গাজীপুরের উলুখোলার একটি জঙ্গলে নিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।ে
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৯ মার্চ ২০২৩
                                    একাত্তরের অগ্নিঝরা মার্চ! মার্চ মাসের শুরু থেকেই সারা দেশ অসহযোগ আন্দোলন, বিক্ষোভ-সংগ্রামে টালমাটাল। পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের বঙ্গবন্ধু কবিতায় ধরা দিয়েছে একাত্তরের উত্তাল সেই সময়-মুজিবুর রহমান।/ওই নাম যেন বিসুভিয়াসের অগ্নি-উগারী বান।/বঙ্গদেশের এ প্রান্ত হতে সকল প্রান্ত ছেয়ে,/জ্বালায় জ্বলিছে মহা-কালানল ঝঞ্ঝা-অশনি বেয়ে। বাংলাদেশ তখন চলছিল শেখ মুজিবের নির্দেশে।রাজনীতির কবি প্রতিদিন রচনা করছিলেন বাংলাদেশ নামক মহাকাব্যের নতুন নতুন স্তবক! প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বাতিল ঘোষণা করলে সারা দেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ঢাকা হয়ে ওঠে, প্রতিবাদে, ক্ষোভে উত্তাল মিছিলের শহর। একাত্তরের ১৫ মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অকস্মাৎ ঢাকায় এলেন। ইতোমধ্যে ৭ মার্চে রেসকোর্সের জনসভায় রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে সেই ঐতিহাসিক ভাষণ।স্বাধীনতার অমোঘ আহ্বান। ভাষণ নয়, যেন বাংলার মানুষের হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষার এক অনন্য কবিতা! ঢাকায় এসে ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনার নামে সাজানো নাটকের অন্তরালে করলেন গভীর গোপন ষড়যন্ত্র। ১৬-২৪ মার্চ পর্যন্ত মুজিব-ইয়াহিয়া বেশক’টি বৈঠক চলার পর আলোচনা অমীমাংসিত রেখেই কাউকে কিছু না জানিয়ে হঠাৎ ঢাকা ত্যাগ করেন ইয়াহিয়া।আর ২৫ মার্চ গভীর রাতে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর পরিকল্পিত নীলনকশা অনুযায়ী পাকিস্তান সেনাবাহিনী শুরু করে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম নৃশংস গণহত্যা। ঘুমন্ত নিরীহ বাঙালির ওপর রাতের গভীরে চালায় অতর্কিত হামলা। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পশ্চিম পাকিস্তানে।জানা যায়, গ্রেফতার হওয়ার আগে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পূর্বপ্রস্তুতি অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু ইস্ট পাকিস্তান রেজিমেন্টের (ইপিআর) ওয়্যারলেস সেটের মাধ্যমে পুরান ঢাকার বলধা গার্ডেন থেকে গোপন ট্রান্সমিটার সেটের মাধ্যমে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় স্বাধীনতার ঘোষণাবার্তা পাঠান। সেই রাতে বঙ্গবন্ধু তার সব সহকর্মী নেতাকে নিরাপদ অবস্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন; কিন্তু তিনি থেকে যান ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের নিজ বাড়িতেই। গ্রেফতার বরণ করেন।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অকুতোভয় এক মহান সংগ্রামী বীর। শত্রুর মুখোমুখি হতে কখনো পিছপা হননি। রাজনৈতিক জীবনে বহুবার গ্রেফতার হয়েছেন; কিন্তু কখনো আত্মগোপন করেননি। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও ২৫ মার্চের সেই ভয়াবহ রাতে বাড়ি ছেড়ে কোথাও যাননি।দেশ ও মানুষের প্রতি অসীম ভালোবাসা, মানবিকতা ও অসম সাহসিকতার অসামান্য ব্যক্তিত্ব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জয় করেছিলেন বাংলার ধনী-গরিব, কবি-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের হৃদয়।তাই তো তিনি আমাদের মহান নেতা। তারই নেতৃত্বে স্বাধিকারের জন্য দীর্ঘ ২৩ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি আমরা। তারই আহ্বানে ১৯৭১ সালে বাংলার মুক্তিকামী মানুষ, শান্তিপ্রিয় শান্ত ছেলেরা অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করেছে। শত্রুর কাছে থেকে ছিনিয়ে এনেছে বিজয়। এনেছে লাল-সবুজের পতাকার স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ তাই অবিচ্ছেদ্য।বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের সবারই জানা। এসব ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যত ষড়যন্ত্র, অপচেষ্টাই হোক না কেন, তাকে কখনো বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।তিনি ছিলেন আমাদের অবিসংবাদিত নেতা। তাই তো তিনি আমাদের জাতির পিতা। বাঙালির অন্তরের অন্তস্থলে রয়েছে তার অটল আসন পাতা। বাংলাদেশের সব্যসাচী লেখক কবি সৈয়দ শামসুল হক তার ‘আমার পরিচয়’ কবিতায় সে কথাই প্রকাশ করেছেন-এই ইতিহাস ভুলে যাবো আজ, আমি কি তেমন সন্তান?/যখন আমার জনকের নাম শেখ মুজিবুর রহমান;/তাঁর ইতিহাস প্রেরণায় আমি বাংলায় পথ চলি-/চোখে নীল আকাশ, বুকে বিশ্বাস, পায়ে উর্বর পলি।বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজ ১০৩তম জন্মবার্ষিকী। একই সঙ্গে বাংলাদেশ দিনটি উদযাপন করবে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবেও।আজকের এইদিনে পৃথিবীতে বঙ্গবন্ধুর আগমনীতে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও হক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আদম তমিজি হক।১৯৭৫ সালে ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু কে নির্মম হত্যার জন্য নিন্দা জানিয়ে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন আদম তমিজি হক।১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর জন্ম। কালক্রমে তার হাত ধরেই বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান পায় আজকের বাংলাদেশ।এই দিনে পিতা শেখ লুৎফর রহমান ও মা সায়েরা খাতুনের ঘরে জন্ম নেন শেখ মুজিব নামের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের পথপরিক্রমায় বঙ্গবন্ধু তার সহকর্মীদের নিয়ে ১৯৪৮ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠন করেন।১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ এর ছয়-দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান পেরিয়ে ৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।বঙ্গবন্ধুর সাহসী, দৃঢ়চেতা, আপসহীন নেতৃত্ব ও বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে অনুপ্রাণিত হয়ে জেগে ওঠে শত বছরের নির্যাতিত-নিপীড়িত পরাধীন বাঙালি জাতি। ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয় বাঙালির জাতি রাষ্ট্র বাংলাদেশ।বঙ্গবন্ধুর মাত্র ৫৪ বছরের জীবনের এক-চতুর্থাংশই কেটেছে কারাগারে; তার পুরো জীবনটাই ছিল বাঙালির জন্য নিবেদিত; সেজন্য ফাঁসির মঞ্চকেও তিনি ভয় পাননি। টুঙ্গিপাড়ার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে এ মহানায়ক উঠে এসেছেন জাতীয় অঙ্গনে, দ্যুতি ছড়িয়েছেন বিশ্বমঞ্চে।লেখক- আদম তমিজি হক
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৮ মার্চ ২০২৩
                                    বিশ্বে ২০২২ সালে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর তালিকায় বাংলাদেশের নাম পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে। তবে ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে বাংলাদেশের বায়ুর মানের উন্নতি হয়েছে। এর আগের বছর দূষিত বায়ুর তালিকায় শীর্ষস্থানে ছিল বাংলাদেশ। এবার দূষিত বায়ুর দিক থেকে শীর্ষস্থানে নাম রয়েছে মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদের।গতকাল মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘আইকিউএয়ার’ প্রকাশিত বৈশ্বিক বায়ুর মানসংক্রান্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।মূলত বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর সূক্ষ্ম বস্তুকণা পিএম-২.৫-এর পরিমাণ কতটুকু, তা পর্যালোচনা করে বায়ুর মান সূচকটি তৈরি করা হয়ে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান অনুযায়ী, বায়ুতে প্রতি ঘনমিটারে পিএম-২.৫ বা অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার উপস্থিতি সর্বোচ্চ ৫ মাইক্রোগ্রাম হতে হবে।আইকিউএয়ারের নতুন প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশে প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে পিএম–২.৫-এর মাত্রা ছিল ৬৫ দশমিক ৮ মাইক্রোগ্রাম। ২০২১ সালে এ মাত্রা ছিল ৭৬ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম। অর্থাৎ ২০২২ সালে বাংলাদেশের বায়ুর মান আগের বছরের তুলনায় ভালো হয়েছে।প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে চাদের বায়ুতে গড়ে পিএম-২.৫-এর পরিমাণ ছিল ৮৯ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম। সবচেয়ে দূষিত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইরাকের বায়ুতে পিএম-২.৫-এর পরিমাণ ছিল গড়ে ৮০ দশমিক ১ মাইক্রোগ্রাম। সূচক অনুযায়ী, ২০২২ সালে তৃতীয় দূষিত দেশ পাকিস্তান। দেশটির বাতাসে দূষণের মাত্রা ছিল ৭০ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম। তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে আছে বাহরাইন। দেশটির বায়ুতে গত বছর দূষণের মাত্রা ছিল ৬৬ দশমিক ৬ মাইক্রোগ্রাম।শহরের বিবেচনায়, ২০২২ সালে সবচেয়ে দূষিত বায়ু ছিল পাকিস্তানের লাহোর শহরে। ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে লাহোরের বাতাসের মান খারাপ হয়েছে। ২০২১ সালে লাহোরে প্রতি ঘন মিটার বায়ুতে পিএম–২.৫–এর উপস্থিতির মাত্রা ছিল ৮৬ দশমিক ৫।২০২২ সালে তা বেড়ে ৯৭ দশমিক ৪ মাইক্রোগ্রামে দাঁড়িয়েছে। দূষিত শহরের তালিকায় লাহোরের পরেই আছে চীনের হোতান শহর। সেখানকার বায়ুতে পিএম–২.৫–এর উপস্থিতি ৯৪ দশমিক ৩ মাইক্রোগ্রাম। অবশ্য, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে শহরটির বায়ুর মানের উন্নতি হয়েছে। ২০২১ সালে সেখানকার বায়ুতে পিএম–২.৫–এর উপস্থিতি ছিল ১০১ দশমিক ৫ মাইক্রোগ্রাম।দূষিত শহরের তালিকায় হোতানের পরে রয়েছে ভারতের দুই শহর। এগুলো হলো ভিওয়ারি ও দিল্লি। ভিওয়ারির বায়ুতে দূষণের মাত্রা ৯২ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম এবং দিল্লিতে দূষণের মাত্রা ৯২ দশমিক ৬ মাইক্রোগ্রাম।দূষিত দেশের তালিকায় ভারতের অবস্থান অষ্টম। তবে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় ভারতের কয়েকটি শহর রয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত ও পাকিস্তানের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষের বসবাস এমন এলাকায়, যেখানকার বায়ুতে পিএম-২.৫-এর উপস্থিতি ডব্লিউএইচওর সুপারিশকৃত মাত্রার চেয়ে অন্তত সাত গুণ বেশি।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিশ্বব্যাপী ১০ জনের মধ্যে ১ জন এমন এলাকায় বসবাস করছে, যেখানে বায়ুদূষণ স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি তৈরি করছে। একই সময়ে মার্কিন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গুয়ামের বায়ু বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় পরিষ্কার। সেখানকার বায়ুতে পিএম-২.৫-এর উপস্থিতি ১ দশমিক ৩ মাইক্রোগ্রাম। বিশ্বের রাজধানী শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পরিষ্কার বায়ু ক্যানবেরার। সেখানকার বায়ুতে পিএম-২.৫-এর উপস্থিতি ২ দশমিক ৮ মাইক্রোগ্রাম।১৩১টি দেশ, ভূখণ্ড ও অঞ্চলের ৭ হাজার ৩০০-এর বেশি এলাকার ৩০ হাজারের বেশি বায়ুর মান পর্যবেক্ষকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সূচকটি তৈরি করা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৬ মার্চ ২০২৩
                                    রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনার প্রতিবাদে প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলানোর পাশাপাশি সিনেট ভবনের পাশে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারকে ঘিরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।এই প্রতিবেদন লিখার সময় রোববার দুপুর ১টা পর্যন্ত রাবি উপাচার্যসহ জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শফিকুন্নবী সামাদীকে সেখানে ঘিরে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।শিক্ষার্থীদের দাবি, এ ঘটনায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার জবাব দিতে হবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থতার দায় প্রশাসনকে নিতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।এর আগে এদিন সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর মিছিল সারা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিভিন্ন স্লোগানে উত্তপ্ত করে তোলেন ক্যাম্পাস। পরে বিক্ষোভ মিছিলটি নিয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বাসভবনে বসে এসে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। এরপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ মাঠে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ফলপ্রসূ সমাধান না পেয়ে পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঘিরে রাখেন শিক্ষার্থীরা।এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের একাংশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিয়ে বিনোদপুর বাজারে যেতে চায়। তবে বিনোদপুরের বিভিন্ন মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ দাবির সঙ্গে একমত হতে পারেননি।এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় আগামী ১২ ও ১৩ মার্চ সব ক্লাস-পরিক্ষা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ১১ মার্চ রাতে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার।এর আগে মোহাম্মদ নামের এক বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষ শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অন্তত ২৫-৩০টি দোকানে অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় অন্তত ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়ে রামেকে ভর্তি আছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৩ মার্চ ২০২৩
                                    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল একটি দেশে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছি। এক সময়কার বাংলাদেশ দারিদ্র্যপীড়িত বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ বলে পরিচিতি পেত। তবে এখন আর সেই অবস্থা নেই। এখন বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। উন্নয়নের রোল মডেল।শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে বাংলাদেশ বিজনেস সামিট উদ্বোধনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।শেখ হাসিনা বলেন, উৎপাদন খাত ছাড়াও এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাফল্যের পেছনে রয়েছে ব্যক্তি খাতে ভোগ বৃদ্ধি, যাকে প্রাথমিকভাবে সহায়তা করেছে মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিকাশ, শক্তিশালী গ্রামীণ অর্থনীতি, প্রবাসী আয় বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ ও জ্বালানি খাতের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন। দেশের এই অভাবনীয় উন্নতির পেছনে রয়েছে প্রাথমিকভাবে বেসরকারি খাত। মূলত তাদের নেতৃত্বে রপ্তানি আয় ২০০৮ সালের ১৬ দশমিক ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২২ সালে ৬০ বিলিয়ন ডলারে উন্নিত হয়েছিল।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি খাতে যদি বেশি গুরুত্ব না দিই, তা হলে ব্যবসা-বাণিজ্য বিনিয়োগে বেশি উন্নতি করা সম্ভব না। সে জন্যই এসব খাতের বিকাশে আমি সব কিছু উন্মুক্ত করে দিয়েছি।শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি, বিচক্ষণ সামষ্টিক অর্থনীতিক ব্যবস্থাপনা, অর্থনৈতিক উদারীকরণ এবং বাণিজ্য সংহিত করণের ওপর ভিত্তি করে আজকের এই অর্থনৈতিক টেকসই ও প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল একটি দেশে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছি। একসময়কার বাংলাদেশ দারিদ্র্যপীড়িত বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ বলে পরিচিতি পেত। তবে এখন আর সেই অবস্থা নেই। এখন বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। উন্নয়নের রোল মডেল।তিনি আরও বলেন, অন্তত এটুকু দাবি করতে পারি, মাত্র ১৪ বছরের মধ্যে সবার সহযোগিতায় আমরা বাংলাদেশে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছি। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ গত ১০ বছরে গড়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি হারে জিডিপি অর্জন করেছে। এমনকি যখন কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাতে সারাবিশ্ব যখন অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে, তখনো বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা আমরা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি। কোভিডের পূর্বে ২০১৮ থেকে ২০১৯ অর্থবছর আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগে উন্নিত করতে সক্ষম হয়েছিলাম। ২০০৬ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সেটি কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। কোভিড মহামারি যদি না আসত, অর্থনৈতিক মন্দা যদি না হতো, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে যে অর্থনৈতিক মন্দা যদি না হতো, তা হলে আমরা আরও অন্তত ২-৩ ভাগ দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনতে সক্ষম হতাম।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১২ মার্চ ২০২৩
                            