গাইবান্ধা-৫ আসনের (ফুলছড়ি-সাঘাটা) উপনির্বাচনে ভোট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।বুধবার (১২ অক্টোবর) নির্বাচন ভবন থেকে গাইবান্ধার ভোট পরিস্থিতি সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাংবাদিকদের এ কথা জানান।নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে এরই মধ্যে ৪৩ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যসব প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন বলে জানা গেছে।সিইসি বলেন, ভোট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আমরা স্বচক্ষে গোপন কক্ষে অবৈধভাবে প্রবেশ করে ভোট দিয়ে দিতে দেখেছি। তাই ভোটকেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে।সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মূল অ্যাকশন হিসেবে আমরা কেন্দ্র বন্ধ করেছি। এখন চাকরি বিধি অনুযায়ী বা অন্য বিধি অনুযায়ী কী অ্যাকশন নেব তা পরে দেখবো। আমরা টেলিফোনে এসপি, ডিসি, রিটার্নিং অফিসারকে বলেছি যে আমরা এখান থেকে সিসি ক্যামেরায় দেখতে পেয়েছি। তাই সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছি।’কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, ‘কমিশন যদি মনে করি নির্বাচন সঠিকভাবে হচ্ছে না তাহলে কমিশন নির্বাচন বন্ধ করতে পারে। আমরা সেই আলোকে নিদ্ধান্ত নিচ্ছি এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যখন নেব, তখন জানাবো।’তিনি বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে কেন চলে গেল তা আমরা বলতে পারবো না। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে অনেকটাই। আপনারাও দেখতে পেয়েছেন যে গোপন কক্ষে কী হচ্ছে এবং সুশৃঙ্খলভাবে হচ্ছে না। কেন হচ্ছে এখন তা চটজলদি বলতে পারবো না।’সিইসি বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ঠিকমত কাজ করছে কি না, তা আমরা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। ইভিএমেরও কোনো ত্রুটি দেখতে পাচ্ছি না। ওই যে মানবিক আচরন, আরেকজন ঢুকে যাচ্ছে, দেখিয়ে দিচ্ছে। আবার অনেকেই দেখছি গেঞ্জি পরে, শাড়ি পরে যেখানে প্রতীক আছে দেখিয়ে দিচ্ছে। তারা আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছে এবং এটা সুশৃঙ্খল নির্বাচনের পরিপন্থি। এরাই ডাকাত, এরাই দুর্বৃত্ত। যারাই আইন মানছেন না তাদেরই আমরা ডাকাত-দুর্বৃত্ত বলতে পারি। কারণ আইনের প্রতি সবার শ্রদ্ধা করতে হবে। সবাই যদি আইন না মানি নির্বাচন কমিশন এখানে বসে সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারবে না।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১২ অক্টোবর ২০২২
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, পুলিশ ও প্রশাসনকে বলেছি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে।জেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে দেশের ৬১ জেলার ডিসি ও এসপিদের বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।সিইসি বলেন, ইভিএমের প্রশ্নে যে বিষয়টা এসেছে যে, ইভিএমে প্রচুর ভোটার এডুকেশনের প্রয়োজন। দূর-দূরান্তে অনেকে টেকনোলজিকে ভয় পান। টেকনোলজির সঙ্গে সাচ্ছন্দ বোধ করেন না। অনেকে পরামর্শ দিয়েছে, আমরা যদি ইভিএম ব্যবহার করি এ বিষয়ে ব্যাপক ক্যাম্পেইন প্রয়োজন হবে। আমরা অত্যন্ত আনন্দ চিত্তে তাদের বক্তব্য শুনেছি এবং গ্রহণ করেছি। আমরা বলেছি, আপনারা ভোটার এডুকেশনের লক্ষ্যে ব্যাপক প্রচারণা করুন।তবে নির্বাচন বিষয়ে যে অনাস্থা বেশি উঠে এসেছে, সেটা আমি স্পষ্ট করে বলেছি নির্বাচন প্রশ্নের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থানের কারণে বিভাজন রয়েছে। আমরা আশা করি, রাজনৈতিক নেতৃত্ব তাদের জ্ঞান-বুদ্ধি-প্রজ্ঞা দিয়ে এই রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করবে। এগুলো কখনেই নির্বাচন কমিশনের কাজ না। রাজনৈতিক অধিক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন অনুপ্রবেশ করতে পারে না। যে সমস্যাগুলো রাজনৈতিক সেগুলো আমাদের রাজনীতিবিদদের সমাধান করতে হবে। আমাদের দায়িত্ব ও কর্মপরিধি সুস্পষ্টভাবে সংবিধান, আইন ও বিধি-বিধান দিয়ে নির্ধারিত। আমরা চাই, একটি অবাদ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক। সেটা আমরা বারবার ব্যক্ত করে যাচ্ছি। আমরা আশা করি, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, বলেন হাবিবুল আউয়াল।তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বলেছি, গণ কর্মচারী হিসেবে আপনাদের সরকার এবং রাজনৈতিক দলের মধ্যে যে পার্থক্য সেটা বুঝতে হবে। আপনারা নিজেদের কখনো দলীয় কর্মী ভাববেন না বা মনে করবেন না। আপনাদের আচরণে এমন কিছু যেন প্রতিফলিত না হয় যাতে জনগণ মনে করতে পারে, আপনারা পক্ষপাতদুষ্ট। আপনারা নিরপেক্ষ নন। আপনাদের অবশ্যই নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করতে হবে।এক প্রশ্নের জবাবে তিনে বলেন, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপাররা জনগণের খুব কাছাকাছি থাকেন। আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকার এবং দল এমনভাবে মিশে থাকে একটা থেকে আরেকটা বেশ কষ্টসাধ্য। যার ফলে অনেক ক্ষেত্রে হয়তোবা প্রভাব চলে আসতে পারে। তারপরও আমরা দেখেছি, আমাদের পুলিশ কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা চেষ্টা করেন নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করতে। কোনো ক্ষেত্রে যদি ব্যত্যয় হয়ে থাকে, আমরা বলেছি আপনাদের কাজে কোনো শৈথল্য থাকবে না। নির্বাচন কমিশন কিন্তু এবার শক্ত অবস্থানে থাকবে। আপনাদের আচরণবিধি মেনে এবং আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব গণকর্মচারী হিসেবে বা সরকারি কর্মচারী হিসেবে—দলীয় কর্মী হিসেবে নয়, দায়িত্ব পালন করতে হবে।আপনারা পুলিশকে নিরপেক্ষ থেকে কাজ করতে বলেছেন, তাদের ওপর কোনো রাজনৈতিক চাপ আছে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, সেটা উনারা বলেননি, ওই ধরনের চাপ উনাদের নেই। সেটা উনারা খোলাখুলি বলেননি কিন্তু উনারাও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন যে, উনারা নিরপেক্ষ আচরণ করবেন। আমরা যেহেতু কমিশন আমরাও সেটা পর্যবেক্ষণ করতে থাকবো, বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় কাউকে যেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে হয়রানি করা না হয় সেটা বলা হয়েছে। আজকেই কিন্তু শেষ সভা না, আমাদের আরও অনেকগুলো সভা হবে। নির্বাচন এখনো ১ বছর ২ মাস বাকি আছে। আমরা একটু আগেই শুরু করেছি। উনাদের আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে। আগামী নির্বাচনে যেন জনগণের আস্থাভাজন হয়ে থাকে এবং সেটা নিরপেক্ষ হয় এবং অংশগ্রহণমূলক হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৮ অক্টোবর ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিদায় নেওয়ার জন্য প্রস্তুত, আমি চাই আওয়ামী লীগে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসুক।বৃহস্পতিবার বিকেল গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন আওয়ামী লীগের আগামী সম্মেলনে কোন চমক থাকছে কি-না?প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেদিন থেকে আওয়ামী লীগের একজন কাউন্সিলরও আমাকে নেতৃত্ব চাইবে আমি থাকবো না, সেদিন থেকেই থাকবো না। দীর্ঘদিন হয়ে গেছে। আমি বিদায় নিতে প্রস্তুত রয়েছি। অনেক বয়স হয়ে গেছে।....
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৬ অক্টোবর ২০২২
নিরাপদ প্রজননের জন্য ইলিশ ধরা, পরিবহন, বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময়ের ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হতে যাচ্ছে।আজ বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে এই নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়ে চলবে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত।বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অফিসের উপপরিচালক আানিসুর রহমান তালুকদার জানান, নিষেধাজ্ঞা সফল করতে মাইকিং করা হয়েছে, মসজিদ ও মন্দির থেকেও এই বিষয়ে প্রচার চালানোর কথা বলা হয়েছে।তিনি বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সফল করতে জেলা প্রশাসকের টাস্কফোর্স উপজেলা প্রশাসনসহ সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করবে।''আইন ভেঙে ইলিশ ধরলে জেল-জরিমানা হবে,' যোগ করেন তিনি।বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অফিসের হিসাব অনুসারে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় অভয়াশ্রমের জেলাগুলো হলো—বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, চাঁদপুর, শরীয়তপুর ও লক্ষ্মীপুর।এ ছাড়াও, ৩১ জেলার ১৫৫ উপজেলার অংশ বিশেষ এই নিষেধাজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।চাঁদপুর থেকে লক্ষীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার ১০০ কিলোমিটার, ভোলার চর পিয়াল থেকে মেঘনার শাহবাজপুর পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার, পটুয়াখালীর চর রুস্তম ও তেতুলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার, শরীয়তপুরে নরিয়া ও চাঁদপুরের মতলব উপজেলায় মেঘনার ২০ কিলোমিটার ও বরিশালের হিজলা মেহেন্দীগঞ্জের মেঘনা, কালাবদর ও গজারিয়া নদীর ৮২ কিলোমিটার এলাকা এই নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত।মৎস্য অধিদপ্তরের ইলিশ শাখার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাসুদ আরা মমি বলেন, 'জেলেদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবারই প্রথম জনপ্রতি ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। ইলিশের এলাকাগুলোয় এ চাল দিতে আমরা কাজ করছি।'তিনি জানান, চলতি বছর ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮৭ জেলেকে ২৫ কেজি করে ১৩ হাজার ৮৭২ দশমিক ১৮ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হচ্ছে।'২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় ৩৭ জেলার ১৫৫ উপজেলার ৬টি অভয়াশ্রম অন্তর্ভুক্ত আছে,' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'নিরাপদ প্রজনন শেষে ইলিশ যাতে সাগরে ফিরে যেতে পারে সে জন্যই এই নিষেধাজ্ঞা। প্রায় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা এর আওতা আছে।'ভোলা সদর উপজেলার জেলে ফখরুদ্দিন বলেন, 'এখনো কোনো সরকারি সহায়তা পাইনি।' একই অভিযোগ ওই এলাকার অন্য জেলেদেরও।ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ বলেন, 'জেলার এক লাখ ৫৭ হাজার জেলের মধ্যে ১ লাখ ৩২ হাজার জেলে ২৫ কেজি করে চাল সহায়তা পাচ্ছেন।''সব জেলে খাদ্য সহায়তার আওতায় আসেননি। সবাইকে এর আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে খাদ্য সহায়তা হিসেবে জনপ্রতি ১০০ কেজি করে চাল দেওয়ার দাবিও জানাচ্ছি।'
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৬ অক্টোবর ২০২২
দুর্গাপূজা, সাপ্তাহিক ছুটি ও ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে পাঁচদিনের ছুটির ফাঁদে দেশ। এর মধ্যে বুধবার (৫ অক্টোবর) বিজয়া দশমী। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে আজ শেষ হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। দুর্গাপূজা উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। বন্ধ রয়েছে ব্যাংক, শেয়ারবাজারসহ সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) একদিন ছুটি নিলে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। রোববার ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি। অর্থাৎ টানা পাঁচদিনের ছুটি। আর এ ছুটির ফাঁদে পড়েছে দেশ। রাজধানী ঢাকা প্রায়ই ফাঁকা, নেই যানজটও।বুধবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তান, শাহবাগ, ফার্মগেট, মিরপুর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, মহাখালী, গুলশান, বনানী, বাড্ডা ও উত্তরা ঘুরে দেখা গেছে গাড়ির তেমন চাপ নেই। টানা চারদিন স্বাভাবিক সরকারি ছুটির কারণে পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকেই ছুটিতে রয়েছেন। এতে গণপরিবহনের সংখ্যাও অনেক কম। মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ বিশ্রাম নিতে দেখা যায়। গণপরিবহন চললেও অর্ধেকের বেশি আসন সংখ্যা ফাঁকা দেখা গেছে।মহাখালী ট্রাফিক সিগন্যালে দায়িত্বরত ট্রাফিক সদস্য কামরুল আহসান জাগো নিউজকে বলেন, সকাল থেকেই গাড়ির কোনো চাপ নেই। মাঝে মধ্যে বাস এলেও তাতে তেমন যাত্রীও দেখা যাচ্ছে না। তবে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যাচ্ছে আসন পূর্ণ করে। ঈদেও এমন রাস্তা ফাঁকা দেখা যায় না।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৫ অক্টোবর ২০২২
দীর্ঘ ৬ ঘন্টা পর বিদ্যুৎ ফিরে পেয়েছে রাজধানী বাসী। দেশের কয়েকটি বিভাগে জাতীয় গ্রিডে জটিলতা দেখা দেওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিলো বলে জানায় পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। এর আগে সন্ধা ৭টায় রাজধানীর বারিধারা, মিরপুরসহ রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ আসার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানা যায়। মোহাম্মদপুর এলাকায় বিদ্যুৎ এলেও মিনিট তিনেক পরই আবারও চলে যায় বলে খবর পাওয়া গেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৪ অক্টোবর ২০২২
জাতীয় গ্রিডের একটি সঞ্চালন লাইনে বিভ্রাট দেখা দেওয়ায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনার আংশিক এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুরের দিকে দেশজুড়ে এ সমস্যা দেখা দেয়।জানতে চাইলে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) একজন কর্মকর্ভ্রা বলেন, সঞ্চালন লাইনে ঝামেলা হওয়ায় এমনটি হয়েছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে।তিনি বলেন, যমুনা নদীর ওপারে এরই মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়েছে। তবে ঢাকা অঞ্চলে সমস্যার সমাধান হতে আরও তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগবে।পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (পিজিসিবি) সঞ্চালন বিভাগের একজন প্রকৌশলী বলেন, ‘আমরাও আসলে এখনো বুঝতে পারিনি সমস্যাটা ঠিক কোথায় হয়েছে। তবে রিস্টোলেশনের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি, খুব দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৪ অক্টোবর ২০২২
সরকার ২৯টি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে 'গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো' হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং সংস্থাগুলোর তথ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশ শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও দিয়েছে।গত রোববার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুসারে, এই পরিকাঠামোগুলো এমন সব তথ্য (ডাটা অথবা ইলেকট্রনিক তথ্য) নিয়ন্ত্রণ, বিশ্লেষণ, বিতরণ ও সংরক্ষণ করে, যা ক্ষতিগ্রস্ত হলে অথবা গুরুতরভাবে প্রভাবিত হলে জননিরাপত্তা, আর্থিক নিরাপত্তা, জনস্বাস্থ্য, জাতীয় নিরাপত্তা ও অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে। নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, কেন্দ্রীয় ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, জাতীয় পরিচয় ও অভিবাসন বিভাগের মতো সংস্থার তথ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশের অপরাধের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।ডিজিটাল নিরাপত্তা সংস্থার মহাপরিচালককে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকানোর এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনে নিয়মিত নিরীক্ষা প্রক্রিয়া চালু করা হবে এবং সরকারের কাছে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।এসব পরিকাঠামোকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার নেওয়ার এখতিয়ারও দেওয়া হয়েছে মহাপরিচালককে।২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে, 'মহাপরিচালকের নিকট যদি যুক্তিসঙ্গতভাবে বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, তাহার অধিক্ষেত্রভুক্ত কোনো বিষয়ে কোনো ব্যক্তির কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোর জন্য হুমকিস্বরূপ বা ক্ষতিকর, তাহা হইলে তিনি স্বতঃপ্রণোদিতভাবে বা কাহারও নিকট হইতে কোনো অভিযোগপ্রাপ্ত হইয়া উহার অনুসন্ধান করিতে পারিবেন।'গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে ঘোষিত সংস্থাগুলো হলো: রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড, সেতু বিভাগ, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, জাতীয় ডেটা সেন্টার ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বিটিআরসি, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট, সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইমিগ্রেশন পুলিশ, বিটিসিএল, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, সেন্ট্রাল ডিপজিটরি, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ।জাতীয় ডেটা সেন্টারের পরিচালক (সিএ অপারেশন ও নিরাপত্তা) ও পরিচালক (ডাটা সেন্টার) তারেক এম বরকতউল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এসব পরিকাঠামোতে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আইসিটি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।'
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৪ অক্টোবর ২০২২
আরও তিন থেকে চার দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার (২ অক্টোবর) আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গতকাল সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে ৫০ মিলিমিটার। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ২ মিলিমিটার। আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, আজ ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরসমূহের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ১৫টি অঞ্চলের নদীবন্দরকে সতর্ক সংকেত দেওয়া হয়েছে।তিনি বলেন, পাবনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি ও বজ্র-বৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০২ অক্টোবর ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুদ্ধাপরাধী এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি, যারা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, তাদের দেশে ফিরিয়ে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।তিনি বলেন, এদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আমরা বারবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করছি। শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসির একটি হোটেলে আওয়ামী লীগের যুক্তরাষ্ট্র শাখা, সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কে এম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যাকারীদের আশ্রয় দেওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারের কথা বলছে।তিনি আরও বলেন, খুনিরা এমনকি চার বছরের শিশু ও নারীদেরও রেহাই দেয়নি।তিনি বলেন, সামরিক স্বৈরশাসক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশে হত্যা, গুম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দায়মুক্তির সংস্কৃতির রাজনীতি সূচনা করেছিলেন। বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য কাজ করার পাশাপাশি রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার এবং অপকর্মে লিপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ এর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চলেছে। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি এই ষড়যন্ত্রের পেছনে ছিলেন। কিন্তু, আমরা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অবশেষে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি।তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় আঞ্চলিক ও স্থানীয় যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। তিনি আবারও জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও সব ধরনের শোষণমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গীকার করেন। সূত্র : বাসস।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০১ অক্টোবর ২০২২
পুলিশের বিদায়ী মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘দেশে একধরনের নষ্ট রাজনীতির দুষ্ট চর্চা ছিল সেটা এখনো চলছে । এই চর্চায় কেউ কেউ অন্যায়ভাবে আমাকে বিপক্ষে আবিষ্কার করেছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই, আপনারা ভালো থাকবেন।’আজ বৃহস্পতিবার রাজারবাগ পুলিশ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে বেনজীর আহমেদ এসব কথা বলেন। কাল শুক্রবার আইজিপি দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৩৪ বছরের কর্মজীবন শেষে অবসরে যাচ্ছেন।অবসরে যাওয়ার আগে শেষ কর্মদিবসে নিজের কর্মজীবনে নানা অর্জনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা সবাই মিলেই বাংলাদেশ। হাতে হাত রেখে দায়িত্ব পালন করে আমরা সবাই মিলে এগিয়ে যাব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার ৩৪ বছর ৫ মাস ১৬ দিন কর্মজীবনের মধ্যে ২০১০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১২ বছর পুলিশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদে দায়িত্ব পালন করেছি। ডিএমপি কমিশনার, র্যাবের ডিজি ও সর্বশেষ আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছি।এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আপনারা সমর্থন জুগিয়েছেন, দেশবাসীও সমর্থন জুগিয়েছেন। তাই সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’ বেনজীর আহমেদ বলেন, ধারাবাহিক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনকালে মানুষের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিনি চেষ্টা করেছেন। চাকরির শেষ দিন, মানে কাল থেকে জীবনের একটি পাতা উল্টিয়ে নতুন পাতা পড়ার চেষ্টা করবেন।তিনি আরও বলেন, তার মানে কাল থেকে দেখা হবে না, কথা হবে না—এমনটি নয়। সামাজিক জীব হিসেবে সবার সঙ্গে যোগাযোগ থাকবে, যেখানেই সুযোগ পাবেন একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
র্যাবের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে দেশটির অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস।বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ-সিজিএস আয়োজিত ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ অনুষ্ঠানে র্যাব প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন।রাষ্ট্রদূত বলেন, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া কোনো শাস্তি নয়। কর্মকর্তারা যেন তাদের আচরণ পরিবর্তন করে, সেজন্যই দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে নিরাপত্তা সহযোগিতার লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যুক্ত রয়েছে। একসঙ্গে কাজ করছে। আমরা আশা করছি, র্যাবের আচরণ পরিবর্তন হবে।পিটার হাস বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। এটি খুব ভালো সংকেত।গত বছরের ডিসেম্বরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং এর সাবেক-বর্তমান ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ।অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত শ্রম অধিকার, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতি, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল এবং বাণিজ্যসহ যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন।শ্রম অধিকারের বিষয়ে হাস বলেন, রপ্তানিমুখী শিল্পের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এখনও উদ্বেগ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চায়, বাংলাদেশে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ থাকুক। এতে করে তারা নিজেদের অধিকার আদায়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে দরকষাকষি করতে পারবে।গুমের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত জানান, গুমের অভিযোগ তদন্তের জন্য যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীন প্রক্রিয়া দেখতে চায়।ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে পিটার হাস বলেন, এটি এমন একটি কৌশল, এখানে যোগ দেওয়া না দেওয়াটা কোনো বিষয় নয়। এটি কোনো ক্লাব নয়। এটি কতগুলো ভিত্তির ওপর গড়ে উঠেছে, যেমন- মুক্ত, নিরপেক্ষ, প্রাণবন্ত এবং সমৃদ্ধ নীতির ওপর। প্রত্যেক দেশেরই তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা রয়েছে। বাংলাদেশ এটিকে সমর্থন করছে না, আমি বিষয়টাকে এমনভাবে দেখছি না। তবে এতে বাংলাদেশের যোগ দেওয়া না দেওয়াটা কোনো বিষয় নয়। এটি বাংলাদেশ কিভাবে নেয়, সেটাই দেখার বিষয়।যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, গণতন্ত্র একটি সংগ্রাম। প্রতিনিয়ত এটি নিয়ে কাজ করতে হয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করছি।চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ- বিআরআই প্রসঙ্গে পিটার বলেন, বিআরআইয়ে যোগ দেওয়াটা বাংলাদেশের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশ কোন জোটে যোগ দেবে, সেটা তাদের বিষয়।বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশে একটি প্রতিযোগিতা রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা উপযুক্ত বাজার খুঁজবেন। সেক্ষেত্রে যেখানে নিরাপত্তা থাকবে, নিরাপদ পরিবেশ থাকবে; সেটাই তারা বেছে নেবেন।সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিক, কূটনীতিক, শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
দেশের দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের মধুমতি নদী বিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি তিনি।জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী জন্মদিনে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। প্রধানমন্ত্রী তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে গত ২৪ সেপ্টেম্বর অন্যান্য বিশ্বনেতাদের অংশগ্রহণে ইউএনজিএ'র সাধারণ আলোচনায় অন্যান্য বছরের মতো বাংলায় ভাষণ দেন। তার অনুপস্থিতিতেই দিনটি উৎসবমুখর পরিবেশে নানা কর্মসূচি উদযাপন করবে তার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ কাল বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে । এছাড়াও আগামীকাল ২৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয়ভাবে বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সকল মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। একইসাথে সকাল ১০টায় ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে (বাসাবো, সবুজবাগ) বৌদ্ধ সম্প্রদায়, সকাল ৯টায় খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিএবি) মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে (৩/৭/এ সেনপাড়া, পর্বতা, মিরপুর-১০) এবং সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছে। এসব কর্মসূচিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। একই দিনে ঢাকাসহ সারাদেশে সকল সহযোগী সংগঠন আলোচনা সভা, আনন্দ র্যালি, শোভাযাত্রা, দোয়া মাহফিল, বিশেষ প্রার্থনা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ দিবসটির তাৎপর্য অনুযায়ী যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে বিভিন্ন উপযোগী কর্মসূচি উদযাপন করবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী। চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে একটি রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করেছেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনেও তিনি বিশ্বনেতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতায় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের আশ্রয় দিয়ে সারা বিশ্বে হয়েছেন প্রশংসিত। বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, 'বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই করোনা মহামারির মধ্যেও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এশিয়ার প্রায় সব দেশের ওপরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্ব, সময়োচিত পদক্ষেপ, মানুষের জন্য আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা, অর্থনীতিকে বাঁচাতে প্রণোদনা ঘোষণা এবং বাস্তবায়নের কারণে দেশে অনাহারে একজন মানুষেরও মৃত্যু হয়নি, খাদ্যের জন্য কখনো কোথাও হাহাকার হয়নি।বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি, একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য সম্পন্ন করা, সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি এবং সমুদ্রে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ব্লু ইকোনমির নতুন দিগন্ত উন্মোচন, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন ও ছিটমহল বিনিময়, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে মহাকাশ জয়, সাবমেরিন যুগে বাংলাদেশের প্রবেশ, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন উড়াল সেতু, মহাসড়কগুলো ফোর লেনে উন্নীত করা, এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত, দারিদ্র্যের হার হ্রাস, মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৭৪ বছর ৪ মাসে উন্নীত, যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন, সাক্ষরতার হার ৭৫.৬০ শতাংশে উন্নীত করা, বছরের প্রথম দিনে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই পৌঁছে দেওয়া, মাদ্রাসা শিক্ষাকে মূলধারার শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করা ও স্বীকৃতি দান, মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় স্থাপন, প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে সরকারি/বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ, নারী নীতি প্রণয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ, ফাইভ-জি মোবাইল প্রযুক্তির ব্যবহার চালুসহ অসংখ্য ক্ষেত্রে কালোত্তীর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সামনে দুর্যোগের সঙ্কটপূর্ণ সময়ে সমাধানের সূত্র তুলে ধরেছেন। যুদ্ধ, অস্ত্রের প্রতিযোগিতা, ক্ষমতার প্রভাব এবং স্বার্থগত সংঘাতকে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবমুক্তির প্রধান অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি জবরদস্তিমূলক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরীপন্থা পরিহার করে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট ও বিরোধ নিষ্পত্তির মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ ও টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। শেখ হাসিনা তার ভাষণে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা, খাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের আহ্বান জানিয়েছেন। শুধু বর্তমান সঙ্কট সমাধানের বার্তাই নয় বরং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পৃথিবী প্রতিষ্ঠার দিক-নির্দেশনা থাকায় বঙ্গবন্ধুকন্যার এই ভাষণে বিশ্বসভায় বাংলাদেশের জনগণের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, 'আমরা যেমন বলি বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। তেমনই শেখ হাসিনার জন্ম না হলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের কাজ জাতি চোখে দেখতো না। শেখ হাসিনার জন্মের সফলতা ও স্বার্থকতা কর্মের মধ্য দিয়ে।'দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, 'শেখ হাসিনার জন্মদিন বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। বঙ্গবন্ধু আমাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতার রোল মডেল। শেখ হাসিনা আমাদের উন্নয়ন এবং অর্জনের রোল মডেল। তিনি নিজে যা অর্জন করেছেন, তা নজিরবিহীন। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে বিশেষ মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। তার জন্মদিন পালন না করলে আমরা জাতির কাছে অকৃতজ্ঞ থেকে যাব।'ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রবক্তা স্বপ্নদর্শী এই নেতা ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণের পর থেকে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করেন এবং ১৯৯৬ সালে প্রথম, ২০০৮ সালে দ্বিতীয় এবং ২০১৪ সালে তৃতীয় এবং ২০১৮ সালে চতুর্থ বারের মত নির্বাচনে জয়লাভ করে দলকে দেশের নেতৃত্বের আসনে বসাতে সক্ষম হন।দাদা শেখ লুৎফর রহমান ও দাদি সাহেরা খাতুনের অতি আদরের নাতনি শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর কেটেছে টুঙ্গিপাড়ায়। শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা এবং শেখ রাসেলসহ তারা পাঁচ ভাই-বোন। বর্তমানে শেখ হাসিনা ও রেহানা ছাড়া কেউই জীবিত নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে পিতা বঙ্গবন্ধু এবং মাতা ফজিলাতুন নেছাসহ সবাই ঘাতকদের নির্মম বুলেটে নিহত হন।শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। তখন পুরনো ঢাকার রজনী বোস লেনে ভাড়া বাসায় ওঠেন তারা।বঙ্গবন্ধু যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য হলে সপরিবারে ৩ নম্বর মিন্টু রোডের বাসায় তারা বসবাস শুরু করেন। শেখ হাসিনাকে ঢাকা শহরে টিকাটুলির নারী শিক্ষা মন্দিরে ভর্তি করা হয়। এখন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শেরেবাংলা গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ নামে খ্যাত। শুরু হয় তার শহর বাসের পালা।তিনি ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। ওই বছরেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।বঙ্গবন্ধুর আগ্রহে ১৯৬৮ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী ড.ওয়াজেদ মিয়ার সাথে শেখ হাসিনার বিয়ে হয়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের করাচিতে নিয়ে যাওয়ার পর গোটা পরিবারকে ঢাকায় ভিন্ন এক বাড়িতে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। অবরুদ্ধ বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই শেখ হাসিনা গৃহবন্দী অবস্থায় তার প্রথম সন্তান 'জয়'-এর মা হন। ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর কন্যা সন্তান পুতুলের জন্ম হয়।শেখ হাসিনার পরবর্তী ইতিহাস একবিংশ শতকের অভিযাত্রায় তিনি কীভাবে বাঙালি জাতির কাণ্ডারি হয়েছেন তারই ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন সেই স্বপ্ন রূপায়নের দায়িত্ব নিয়ে বাঙালি জাতির আলোর দিশারী হওয়ার ইতিহাস। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। আর ঐ বছরেরই ১৭ মে দীর্ঘ ৬ বছর প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তিনি ১৯৯০ সালের ঐতিহাসিক গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে এবং সে বছরের ২৩ জুন প্রথমবারের মতো তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড নিক্ষেপ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়। তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেও ওই হামলায় ২৪ জন নিহত এবং ৫শ' নেতা-কর্মী আহত হন।২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে বিশাল বিজয় অর্জন করে। এই বিজয়ের মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনা দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি তৃতীয়বার এবং ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬১ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া স্বজনদের দাবি অনুযায়ী করা তালিকায় এখনো ১৯ জন নিখোঁজ আছেন। দুর্ঘটনার তৃতীয় দিনে নিখোঁজদের উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের রংপুর, রাজশাহী ও কুড়িগ্রামের তিনটি ডুবুরি দল।আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার মারেয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) খোলা তথ্য কেন্দ্র থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ও তদন্ত কমিটির প্রধান দীপঙ্কর রায়। তিনি আরও বলেন, পঞ্চগড়সহ আশপাশের জেলার ফায়ার সার্ভিসের আট ইউনিট উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। এছাড়া রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী থেকে আসা তিনটি দলের ৯ ডুবুরি উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন।এদিকে জেলা প্রশাসনের জরুরি তথ্য কেন্দ্রের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৫১ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে কতজন যাত্রী ছিল, তার সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। এর আগে রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাট এলাকায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুরে মহালয়া দেখতে আউলিয়া ঘাট থেকে নৌকায় বদশ্বেরী ঘাটে যাচ্ছিলেন সনাতন ধর্মাবলম্বীর প্রায় শতাধিক মানুষ। নৌকাটি ছাড়ার শুরুতেই দুলতে থাকে। এক পর্যায়ে দুলতে দুলতে মাঝ নদীতে গিয়ে ডুবে যায়।মৃতরা হলেন- হাশেম আলী (৭০), শ্যামলী রানী (১৪), লক্ষ্মী রানী (২৫), অমল চন্দ্র (৩৫), শোভা রানী (২৭), দীপঙ্কর (৩), প্রিয়ন্ত (২.৫), রুপালি ওরফে খুকি রানী (৩৫), প্রমিলা রানী (৫৫), ধনবালা (৬০), সুনিতা রানী (৬০), ফাল্গুনী (৪৫), প্রমিলা দেবী, জ্যোতিশ চন্দ্র (৫৫), তারা রানী (২৫), সানেকা রানী (৬০), সফলতা রানী (৪০), বিলাশ চন্দ্র (৪৫), শ্যামলী রানী ওরফে শিমুলি (৩৫), উষশী (৮), তনুশ্রী (৫), শ্রেয়সী, প্রিয়ন্তী (৮), সনেকা রানী (৬০), ব্রজেন্দ্র নাথ (৫৫), ঝর্ণা রানী (৪৫), দীপ বাবু (১০), সূচিত্রা (২২), কবিতা রানী (৫০), বেজ্যে বালা (৫০), দিপশিখা রানী (১০), সুব্রত (২), জগদীশ (৩৫), যতি মিম্রয় (১৫), গেন্দা রানী, কনিকা রানী, সুমিত্রা রানী, আদুরী (৫০), পুষ্পা রানী, প্রতিমা রানী (৫০), সূর্যনাথ বর্মন (১২), হরিকেশর বর্মন (৪৫), নিখিল চন্দ্র (৬০), সুশীল চন্দ্র (৬৫), যুথি রানী (০১), রাজমোহন অধিকারী (৬৫), রুপালী রানী (৩৮), প্রদীপ রায় (৩০), পারুল রানী (৩২), প্রতিমা রানী (৩৯) ও শৈলবালা। বাকি চারজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় লাশের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। এ দুর্ঘটনায় দুই দিনে নারী ও শিশুসহ ৪৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। নিখোঁজদের মরদেহের অপেক্ষায় ঘটনার পর থেকেই করতোয়ার পাড়ে অবস্থান করছেন স্বজনরা। মরদেহ উদ্ধারের খবর জানতে পারলেই নদীর পাড় থেকে স্বজনরা ছুটে যাচ্ছেন স্থানীয় মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদে। সেখানেই রাখা হচ্ছে উদ্ধারকৃত মরদেহ।গতকাল রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাট এলাকায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।দুর্ঘটনার পর থেকে সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত মোট ৪৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ও স্থানীয়রা। ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে কতজন যাত্রী ছিল, তার সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনরা প্রশাসনের কাছে রোববার ৬৬ জনের তালিকা দিয়েছেন।সকাল থেকে আউলিয়া ঘাট এলাকায় দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন এবং ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের তিনটি ইউনিট উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে। সেখানে ভিড় করেছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। কেউ কেউ নৌকা নিয়ে নদীতে খুঁজে বেড়াচ্ছেন প্রিয়জনকে। কারও হাতে নিখোঁজ স্বজনের ছবি, তা নিয়ে নদী তীরের বাসিন্দাদের দেখাচ্ছেন আর বিলাপ করছেন। এছাড়া হাজার হাজার উৎসুক মানুষের ঢল নেমেছে নদীর পাড়ে।ষাটোর্ধ্ব কৃষ্ণ চন্দ্র রায় ভাই ও ভাতিজার খোঁজে এসেছেন আউলিয়া ঘাটে। তিনি বলেন, নদীর অপর পাড়ে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া পূজায় যোগ দিতে তার ভাই নরেশ ও ভাতিজা সিন্টু বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। নৌকাডুবির পর থেকেই এখানে আছি।নাতির খোঁজে উপজেলার পাঁচপীর এলাকা থেকে এসেছেন বৃদ্ধ সুমল চন্দ্র। তিনি বলেন, নাতির মরদেহটা পেলে অন্তত নিজেরা সৎকারের কাজটা করতে পারতাম।মাড়েয়া বটতলি এলাকার ধীরেন বাবুর দুই প্রতিবেশীসহ সাতজন নিকটাত্মীয় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। গতকাল থেকে তিনি নদীর পাড়ে অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া পূজায় যোগ দিতে ভাতিজা, ভাতিজার বউ, ভাতিজার শ্বশুর, শ্যালিকা এবং আমার ভাতিজি নৌকায় ওঠে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। এখন পর্যন্ত কারও খোঁজ পাইনি। এখন তাদের লাশের জন্য অপেক্ষা করছি।প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুরে মহালয়া দেখতে আউলিয়া ঘাট থেকে বদশ্বেরী ঘাটে যাচ্ছিল নৌকাটি। নৌকায় ১০০ জনেরও বেশি যাত্রী ছিল। যাত্রার শুরুতেই নৌকাটি দুলতে থাকে। দুলতে দুলতে নদীর মাঝে গিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান ও পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন পর্যন্ত (বিকেল সাড়ে ৫টা) ৪৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েকজন বাদে বাকি সবার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
নোয়াখালী শহরে নিজ বাসায় স্কুলছাত্রীকে গলা কেটে হত্যার রেশ না কাটতেই সদর উপজেলায় ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে ‘ব্লেড দিয়ে’ গলা কাটার চেষ্টা করেছে এক বখাটে। গতকাল রোববার দুপুরে এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় ওই ছাত্রীকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাহিদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ওই স্কুলছাত্রীর (১৩) গলায় পেছন থেকে ভোঁতা জাতীয় কোনো কিছু দিয়ে কাটার চেষ্টা করা হয়েছে বলে তাঁদের ধারণা। এতে ছাত্রীর গলায় তিন ইঞ্চি দৈর্ঘ্য এবং আধা ইঞ্চি প্রস্থ স্থানে হালকা চামড়া উঠে গেছে। ওই অংশ কিছুটা ফোলা দেখা গেছে। তবে ভেতরের দিকে কাটা যায়নি। হাসপাতালে আনার পর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে তাকে সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। আঘাতটি ততটা গুরুতর নয়।হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত স্কুলছাত্রী প্রথম আলোকে বলে, গতকাল রোববার বেলা পৌনে দুইটার দিকে বিদ্যালয় ছুটির পর বাড়ি ফিরছিল সে। এ সময় একটি অটোরিকশা এসে তার পেছনে দাঁড়ায়। অটোরিকশা থেকে নেমে মুখে মাস্ক পরা এক তরুণ পেছন থেকে তার মুখ চেপে ধরে গলায় ধারালো কিছু দিয়ে টান দেন। তখন পেছনের দিক থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশা আসছিল। তা দেখে ওই বখাটে দ্রুত তাঁকে নিয়ে আসা অটোরিকশায় উঠে পালিয়ে যান। এরপর সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়।ওই ছাত্রী যে বিদ্যালয়ে পড়ে, সেটির প্রধান শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পরপরই ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে বিষয়টি জানানো হয় এবং ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। তখন তিনি ছাত্রীর কাছ থেকে ঘটনা শুনে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জানান। পাশাপাশি তিনি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের মাধ্যমে ছাত্রীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান। রাতে গিয়ে দেখে এসেছেন ছাত্রী ভালো আছে।সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, স্কুলছাত্রীর গলায় ব্লেডের আঘাত করা হয়নি। ভোঁতাজাতীয় কিছু দিয়ে গলা কাটার চেষ্টা করা হয়েছে। খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ ছাত্রীকে দেখে এসেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করেছে। তবে এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। এরপরও ওই বখাটেকে পুলিশ শনাক্ত করার চেষ্টা করছে।এর আগে গত বৃহস্পতিবার নোয়াখালী জেলা শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার বাসায় অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে (১৪) গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ওই ছাত্রীর সাবেক গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম ওরফে রনি (২৮) গত শনিবার আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গতকাল রোববারও জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ করেছে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এসব প্রতিবাদের মধ্যেই আবার আরেক ছাত্রীর গলায় ব্লেডের আঘাত করল বখাটে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হওয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সর্বদা জনগণের ভোটেই ক্ষমতায় আসে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি বরং আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের ভোটেই ক্ষমতায় আসে।জাতিসংঘের ৭৭তম অধিবেশনে যোগদান শেষে নিউইয়র্কের জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে স্থানীয় সময় শনিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, যারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চেয়েছিলেন তারা কারা? আওয়ামী লীগ সব সময় দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছে।শেখ হাসিনা স্পষ্টভাবে নিশ্চিত করেছেন যে, জনগণ নির্বাচনে অবাধে তাদের ভোট দেবে এবং বিএনপিকে আশ্বস্ত করেছেন যে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।আমি মনে করি, তারা (বিএনপি) সত্যিই চিন্তিত যে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন হবে। কারণ, তারা ভোট কারচুপি এবং ভোটার তালিকায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার রাখার সুযোগ পাচ্ছে না। অন্যথায় উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, উল্লেখ করেন তিনি।প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, যারা জনগণের ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসেননি, নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রশ্নে এত গুরুত্ব দেওয়ার কী আছে তিনি জানেন না।তিনি বলেন, নির্বাচনে জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দেবে। ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন এমন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি, এটা তাদের দলের সিদ্ধান্ত। তারা জানে যে, সঠিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। তারা হত্যা, অভ্যুত্থান ও ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসতে অভ্যস্ত। এটাই বাস্তবতা।প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে। যদি কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারায় তাহলে কার কি করার আছে।আওয়ামী লীগ সরকার দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সঠিক পথে এনেছে, যা সামরিক শাসন ও বিএনপি-জামায়াতের আমলে লাইনচ্যুত হয়েছিল বলে দাবি করেন শেখ হাসিনা।ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএম একটি আধুনিক পদ্ধতি এবং বিশ্বের অনেক দেশেই এটি ব্যবহৃত হয়। আমরা দেখেছি যেখানে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে দ্রুত নির্বাচনের ফলাফল পাওয়া যায় এবং মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ভোট দিতে পারে। ইভিএমের বিরুদ্ধে কিছু লোক আছে এটা ঠিক।দেশে প্রবাসীদের বিনিয়োগ সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা যাতে দেশে বিনিয়োগ করতে পারেন, সেজন্য বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রবাসীদের মধ্যে যাদের এনআইডি নেই তারা পাসপোর্ট দিয়ে ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবেন। সেই ব্যবস্থা ইতোমধ্যে করা হয়েছে।আপনি ইউএনজিএ থেকে কী নিয়ে দেশে ফিরছেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বন্ধুত্ব, আমি বাংলাদেশের জন্য বন্ধুত্ব নিয়ে দেশে ফিরছি। বাংলাদেশ যে উন্নয়নের বিস্ময় সে কথাটাই সবাই বলার চেষ্টা করেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আমরা শান্তি চাই, আমি যুদ্ধ চাই না, সংঘর্ষ চাই না। আমি মনে করি, এই বার্তাটি সবার কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি। সবাই বাংলাদেশ ও আমাদের ভূমিকার প্রশংসা করেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণে বলেছেন, শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা ব্যতীত আর্থসামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। যুদ্ধ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরী পন্থা কখনও কোনো জাতির মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। পারস্পরিক আলাপ-আলোচনাই সংকট ও বিরোধ নিষ্পত্তির সর্বোত্তম উপায়।শুক্রবার বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে তিনি এ ভাষণ দেন। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এ ভাষণে বাংলাদেশের সরকার প্রধান বলেন, যুদ্ধের ভয়াবহতা, হত্যা-ক্যু-সংঘাতে মানুষের যে কষ্ট-দুঃখ-দুর্দশা হয়, ভুক্তভোগী হিসেবে আমি তা উপলব্ধি করতে পারি। তাই যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই- মানবকল্যাণ চাই। মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি চাই। আগামী প্রজন্মের জন্য শান্তিময় বিশ্ব, উন্নত-সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিত করতে চাই। আমার আকুল আবেদন, যুদ্ধ, অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন। সমুন্নত হোক মানবিক মূল্যবোধ।তিনি বলেন, আমরা ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘাতের অবসান চাই। নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে নারী, শিশুসহ গোটা মানবজাতিকেই শাস্তি দেওয়া হয়। এর প্রভাব শুধু একটি দেশেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং সব মানুষের জীবন-জীবিকা মহাসংকটে পতিত হয়। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। বিশেষ করে শিশুরাই বেশি কষ্ট ভোগ করে। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে হারিয়ে যায়। বিশ্ববিবেকের কাছে আমার আবেদন, অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ, স্যাংশন বন্ধ করুন। শিশুকে খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা দিন। শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন।শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেখতে চাই, একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব- যেখানে থাকবে বর্ধিত সহযোগিতা, সংহতি, পারস্পরিক সমৃদ্ধি এবং ঐকবদ্ধ প্রচেষ্টা। আমাদের একটি মাত্র পৃথিবী এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই গ্রহকে আরও সুন্দর করে রেখে যাওয়া আমাদের দায়িত্ব।তিনি বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত এবং জ্বালানি, খাদ্যসহ নানা ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে আমাদের মতো অর্থনীতি মারাত্মক চাপের মুখে পড়েছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছি। তিনি বলেন, একটি দায়িত্বশীল সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে, বাংলাদেশ তার জনগণের মানবাধিকার সংরক্ষণ ও উন্নয়নে অঙ্গীকারবদ্ধ। জনগণের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমরা একটি সামগ্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা অবলম্বন করেছি।জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের এ বছরের সাধারণ বিতর্কের প্রতিপাদ্য- ‘একটি সংকটপূর্ণ সন্ধিক্ষণ: আন্তঃসংযুক্ত প্রতিকূলতাসমূহের রূপান্তরমূলক সমাধান।’শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, সহিংসতা ও সংঘাত, কভিড-১৯ মহামারির মতো একাধিক জটিল এবং বহুমাত্রিক প্রতিকূলতায় পৃথিবী নামক আমাদের এই গ্রহ আজ জর্জরিত। এবারের প্রতিপাদ্যটি এ সব প্রতিকূলতা মোকাবিলায় এবং আমাদের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করে শান্তিপূর্ণ ও টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলার উপায় খুঁজে বের করার জন্য সবার ঐক্যবদ্ধ আকাঙ্ক্ষার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। আর এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের এখনই সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাসের মহামারির মারাত্মক প্রভাব বিশ্ব যখন সামলে উঠতে শুরু করেছে, তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত বিশ্বকে নতুন করে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, জ্বালানি এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে সহায়তাপ্রার্থী ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো এখন আরও প্রতিকূলতার মুখে পড়েছে। বর্তমানে আমরা এমন একটি সংকটময় সময় অতিক্রম করছি, যখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অধিক পারস্পরিক সংহতি প্রদর্শন করা আবশ্যক।তিনি বলেন, আমাদের প্রমাণ করতে হবে, সংকটের মুহূর্তে বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হলো জাতিসংঘ। তাই সর্বস্তরের জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জনের জন্য জাতিসংঘকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে সবার প্রত্যাশা পূরণে কাজ করতে হবে।এই পরিপ্রেক্ষিতে, ‘গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ’ গঠন করায় জাতিসংঘের মহাসচিবকে আমি ধন্যবাদ জানাই। এই গ্রুপের একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আমি বর্তমান পরিস্থিতির গুরুত্ব ও সংকটের গভীরতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি বৈশ্বিক সমাধান নিরূপণ করতে অন্য বিশ্বনেতাদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত পররাষ্ট্রনীতির মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ বাংলাদেশ জন্মলগ্ন থেকেই এই প্রতিপাদ্য-উদ্ভূত জোটনিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করে আসছে। ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এই মহান পরিষদে তিনি তাঁর প্রথম ভাষণে বলেছিলেন: ‘শান্তির প্রতি যে আমাদের পূর্ণ আনুগত্য, তা এই উপলব্ধি থেকে জন্মেছে যে, একমাত্র শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই আমরা আমাদের কষ্টার্জিত জাতীয় স্বাধীনতার ফল আস্বাদন করতে পারব এবং ক্ষুধা, দারিদ্র্য, রোগশোক, অশিক্ষা ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য আমাদের সব সম্পদ ও শক্তি নিয়োগ করতে সক্ষম হবো। সুতরাং আমরা স্বাগত জানাই সেই সব প্রচেষ্টাকে, যার লক্ষ্য বিশ্বে উত্তেজনা হ্রাস করা, অস্ত্র প্রতিযোগিতা সীমিত করা, এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকাসহ পৃথিবীর প্রতিটি স্থানে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতি জোরদার করা।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শান্তিপূর্ণ সমাজ এবং সামাজিক সম্প্র্রীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল পাঁচটি অর্থনীতির মধ্যে অন্যতম। জিডিপির হিসাবে আমাদের অবস্থান ৪১তম। বিগত এক দশকে আমরা দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ২০.৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। আমাদের মাথাপিছু আয় মাত্র এক দশকে তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২,৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।বাংলাদেশের সরকারপ্রধান বলেন, কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের পূর্বে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক এক পাঁচ শতাংশ। এর আগে, আমরা টানা তিন বছর ৭ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। মহামারি চলাকালেও ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ হারে প্রসারিত হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবজাতির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হলো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব। জলবায়ু নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া আর ভাঙার একটি দুষ্টচক্র আমরা অতীতে দেখেছি। আমাদের এখনই এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের সঙ্গে এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অসংখ্য পদক্ষেপ নিয়েছে।শেখ হাসিনা বলেন, অভিবাসীরা এখনও তাঁদের অভিবাসন যাত্রায় অনিশ্চিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। তাঁরা তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে আমাদের অবশ্যই বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব এবং সংহতি বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে ‘গ্লোবাল কমপ্যাক্ট অন মাইগ্রেশন’ এবং এর ‘অগ্রগতি ঘোষণা’ আমাদের এ বিষয়ে একটি চমৎকার রোডম্যাপ দিয়েছে।তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে, দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মূল কারণগুলোর সমাধান ব্যতীত টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। জাতিসংঘ শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের বর্তমান সভাপতি হিসেবে আমরা সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে বহুমাত্রিক অংশীজনের একসঙ্গে কাজ করার একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। নারী, শিশু, শান্তি ও নিরাপত্তা এজেন্ডাকে আরও শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতেও আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও সহিংস উগ্রপন্থার বিষয়ে আমরা ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতি গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে কোনোরূপ সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা জনগণের ক্ষতি হয় এমন কোনো কর্মকাণ্ড সংঘটিত হতে দেই না। এ ছাড়া সাইবার-অপরাধ এবং সাইবার সহিংসতা মোকাবিলা করার লক্ষ্যে একটি আন্তর্জাতিক বাধ্যতামূলক চুক্তি প্রণয়নে একসঙ্গে কাজ করার জন্য আমি সদস্য দেশগুলোকে আহ্বান জানাই।প্রধানমন্ত্রী বলেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে। ১৯৬৭ সালের পূর্বের সীমান্তের ভিত্তিতে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান ও রাজধানী হিসেবে পূর্ব জেরুজালেমকে নির্ধারণ করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি বাংলাদেশের দ্ব্যর্থহীন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছি।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে অবসরে যাচ্ছেন।এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ৩০ সেপ্টেম্বর বেনজীর আহমেদের বয়স ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ায় সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ অনুযায়ী চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হলো। এ অবস্থায় আগামী ১ অক্টোবর থেকে আগামী বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবসরোত্তর ছুটিতে থাকবেন (মূলত অবসর)।এদিকে, বাংলাদেশের অন্যতম দৈনিক প্রথম আলোতে তার অবসরে যাওয়ার খবরটি প্রকাশ হওয়ার পরপরই পাঠকদের মন্তব্যগুলো চোখে পড়ার মত। কেউ লিখেছেন- আগামী নির্বাচনে চুরিকরা ভোটে এমপি এবং তারপর স্বরাষ্ট্র প্রতি মন্ত্রি। আবার কেউ লিখেছেন- ‘গুম খুনের মহানায়ক এর বিদায়ে সকল নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের পক্ষ থেকে অভিসম্পাত’।২০২০ সালের এপ্রিল মাসে আইজিপি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন বেনজীর আহমেদ। তবে দায়িত্ব নেন ওই বছরের মে মাসে। এর আগে তিনি র্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্বে ছিল। তখন র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। নতুন আইজিপি হিসেবেও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বিদায়ী আইজিপি বেনজীর আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন বলে আলোচনা চলছে।র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় পড়েছিলেন বেনজীর আহমেদ। অবশ্য এ নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই সম্প্রতি তিনি জাতিসংঘের আয়োজনে পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে সফর করে এসেছেন। বেনজীর আহমেদ ছাড়াও আরও কয়েকজন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা পড়েছিলেন। সূত্র-প্রথম আলো
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২
মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা (এমপি) পদত্যাগ না করে নির্বাচনে যাওয়ার সুযোগ গ্রহণ করলে অন্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার সমান ক্ষেত্র নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। এটা লেভেল-প্লেইং ফিল্ডের অন্তরায়। যে কারণে সুষ্ঠু, অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এ সুযোগটি রহিত করে আইনি সংস্কার প্রয়োজন।বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন : গণতান্ত্রিক সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এ মত প্রকাশ করে।সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।এতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আগামী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা। সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় লেভেল-প্লেইং ফ্লিড নিশ্চিত করা। এজন্য আইনি সংস্কার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করি। তিনি বলেন, আস্থা যদি অর্জন করতে হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে কী করণীয়। তবে আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে মন্ত্রী-এমপি হিসেবে বহাল থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ফলে লেভেল-প্লেইং ফ্লিড নষ্ট হয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর এক ধরনের চাপ থাকে। সে কারণে লেভেল-প্লেইং ফ্লিড তৈরি করা সম্ভব হয় না। দ্বিতীয়ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। সে বিষয়টি কীভাবে নিরপেক্ষ করা যায় সেটা ভেবে দেখা দরকার। আরেকটি বিষয় হচ্ছে নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে, সেখানে অংশীজনের কথা বলা হয়েছে। অংশীজনের তথ্য সরবরাহসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি যেন না হয় সে বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে। কারণ আমরা আগের নির্বাচনে ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে প্রতিবন্ধকতা তৈরির উদাহরণ দেখেছি, বলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।কোটি কোটি টাকার মনোনয়ন বাণিজ্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে টিআইবি বলছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের ক্ষেত্রে এমনকি বিদেশে বসেও কোটি কোটি টাকার মনোনয়ন বাণিজ্য পরিচালনার অভিযোগ এসেছে। টাকার বিনিময়ে যদি প্রার্থী মনোনয়ন লাভ করে তাহলে সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার বিষয়টি অপ্রধান হয়ে ওঠার ঝুঁকি সৃষ্টি হয় এবং যারা প্রকৃতপক্ষে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা মূলেই বিনষ্ট হয়ে যায়। নির্বাচনকে অর্থবহ ও জনগণের প্রতিনিধিত্বশীলতার ক্ষেত্রে কার্যকর করতে নির্বাচনী মনোনয়নকে দুর্নীতিমুক্ত করে তৃণমূল পর্যায়ের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। টিআইবি মনে করে, যদি সব দলের আস্থা সৃষ্টির মাধ্যমে তাদেরকে নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য আইনগত পরিবর্তন বা সংস্কার প্রয়োজন হয় তাহলে নির্বাচন কমিশনকে সে কথা স্পষ্টভাবে সরকারকে জানিয়ে দিতে হবে। বিদ্যমান আইনি কাঠামোর বিভিন্ন ঘাটতি, যা নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করবার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা সৃষ্টিতে বাধা দেয়, সেগুলো দূর করার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা নির্বাচন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক ও নৈতিক দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। একইভাবে ইভিএম সম্পর্কে কমিশনের সিদ্ধান্ত কমিশনের প্রতি আস্থা সৃষ্টির ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে। এরইমধ্যে নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণের জন্য এবার সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অধিকাংশ পক্ষ ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে মত দিয়েছিলেন। অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইভিএম ব্যবহারের এই সিদ্ধান্ত কতটুকু সুনির্দিষ্ট অবদান রাখবে এবং সুনির্দিষ্টভাবে সেগুলো কী কী সে সম্পর্কে জানার অধিকার দেশের ভোটারদের রয়েছে।আইনি সংস্কারের প্রসঙ্গে টিআইবির প্রবন্ধে বলা হয়েছে, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ না করে নির্বাচনে যাওয়ার সুযোগ গ্রহণ করলে অন্য প্রার্থীদের সঙ্গে তাদের প্রতিযোগিতার সমান ক্ষেত্র নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২