জাতীয়


৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরি, ১৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ

৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরি, ১৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুল্ক বিভাগের গুদামের লকার থেকে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির মামলায় ১৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।মঙ্গলবার বিমানবন্দর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মোজাফফর হোসেন জানান, সোমবার মামলার এজাহার আদালতে আসে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত তা গ্রহণ করে বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক খোরশেদ আলমকে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। গত রোববার রাতে ঢাকা শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় স্বর্ণ চুরির ঘটনায় মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।মামলার এজাহার সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে উদ্ধার হওয়া ৪৮টি ডিএম বার যার ওজন ৮.০২ কেজি ও ২০২০ থেকে ২০২৩ সালে বিভিন্ন সময়ে আটক ৩৮৯টি ডিএম বার যার মোট ওজন ৪৭.৪৯ কেজি স্বর্ণ আলমারির লকার ভেঙে চুরি হয়েছে। গত শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিট থেকে পরদিন সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের মধ্যে কে বা কারা ৫৫ কেজি স্বর্ণের বার ও স্বর্ণালংকার গোডাউন থেকে স্টিলের আলমারির লকার ভেঙে চুরি করেছে; যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৪৫ কোটি টাকার বেশি। সাধারণত বিমানবন্দরে যাত্রীদের কাছ থেকে জব্দ করা স্বর্ণের বার, অলংকারসহ মূল্যবান জিনিস এ গুদামে রাখা হয়। গুদামে রক্ষিত স্বর্ণের হিসাব মেলাতে গিয়েই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩


এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যান চলাচল শুরু

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যান চলাচল শুরু

রাজধানীর যানজট নিরসনে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়। ফলে এর মাধ্যমে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার পথ মাত্র ১০ মিনিটে অতিক্রম করছে সাধারণ মানুষ। যদিও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মহানগরের কোনো যাত্রীবাহী বাসকে চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে অফিসগামী কিছু বাস এবং দুই-একটি বিআরটিসি বাসকে চলাচল করতে দেখা গেছে। সকাল থেকে অফিসগামী ব্যক্তিগত গাড়ি এবং কিছু কাভার্ডভ্যানকে চলাচল করতে দেখা গেছে। এর আগে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিমানবন্দর সংলগ্ন কাওলা অংশে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রথম যাত্রী হিসেবে টোল দিয়ে কাওলা থেকে ফার্মগেটের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। বিকেল ৪টার দিকে এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নামে প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি। রাজধানীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে নিরবচ্ছিন্ন চলাচল নিশ্চিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প ২০০৯ সালে হাতে নেওয়া হয়। ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রকল্পটি নির্মাণে চুক্তি সই হয়। কিন্তু জমি বুঝে না পাওয়া এবং নকশা জটিলতায় এর নির্মাণ কাজে কেটে গেছে অনেক সময়। অবশেষে ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ। শুরুতে এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় আট হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সর্বশেষ ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার কোটি ৭০ লাখ টাকা।এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কার্যক্রম এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। তবে রাজধানীর যানজট কমাতে প্রকল্পের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে কাওলা থেকে ফার্মগেটে পৌঁছানো যাচ্ছে মাত্র ১০ মিনিটেই। আর পুরো কাজ শেষ হলে ২০ মিনিটেই পাড়ি দেওয়া যাবে কাওলা থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত।এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল সড়কে সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। ওঠা-নামার র‍্যাম্পের জন্য সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার।ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলে যানবাহনকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করে টোল হার নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাইভেটকার, ট্যাক্সি, জিপ, মাইক্রোবাসসহ হালকা গাড়ির জন্য টোল ৮০ টাকা। মাঝারি ট্রাকের টোল ৩২০ টাকা। ছয় চাকার বেশি ট্রাকের জন্য ৪০০ টাকা। সব ধরনের বাসের টোল ১৬০ টাকা। দুর্ঘটনা রোধে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ছোট ও কম গতির যানবাহন চলাচল করবে না।সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, ২৫ বছরের চুক্তির মধ্যে সাড়ে ২১ বছর টোল আদায় করবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩


ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন বিকেলে, যেসব সুবিধা পাবেন নগরবাসী

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন বিকেলে, যেসব সুবিধা পাবেন নগরবাসী

যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে যানজট নিরসনে দেশে একের পর এক তৈরি হচ্ছে এক্সপ্রেসওয়ে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকেলে উদ্বোধন হচ্ছে রাজধানীর প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ। শনিবার বিকেল ৪টায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীতে এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেওয়া হলে নগরবাসীর দৈনিক যানজটের কষ্ট অনেকটা লাঘব হবে। যে পথ পাড়ি দিতে আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো, এখন সেই পথ পাড়ি দেওয়া যাবে ১০ থেকে ১৫ মিনিটে।শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে এক্সপ্রেসওয়েটি। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের কাজ। যা শনিবার প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।মহাসড়কের বিড়ম্বনা থেকে মুক্ত হয়ে বিরামহীনভাবে যান চলাচলের সুযোগ করে দিতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ধারণা আসে। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত শব্দ এক্সপ্রেসওয়ে। এর প্রথমটি হচ্ছে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে।সাধারণত, প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত বিশ্বমানসমৃদ্ধ মহাসড়কের নাম এক্সপ্রেসওয়ে। এতে সব ধরনের যানবাহন চলবে না, শুধু দ্রুতগতির বাহন চলবে। এসব যানবাহন কোথাও থামবে না, চলবে একটি নির্দিষ্ট গতিতে। থামলেও নির্দিষ্ট নিয়ম মানতে হবে। এছাড়া যানবাহন কর্তৃপক্ষকে পরিশোধ করতে হবে নির্দিষ্ট পরিমাণ টোল।ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মিলবে যেসব সুবিধারাজধানীতে নির্মিতব্য ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দেখলে বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেকের ধারণা পাল্টে যাবে। ইউরোপের অনেক সড়কও হার মানবে। একাধিক নিবন্ধে এমনটি দাবি করেছেন অনেক বিদেশি লেখক ও সাংবাদিক। কিন্তু এ এক্সপ্রেসওয়ে থেকে কী এমন সুবিধা মিলবে?সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যানজটে নাকাল নগরবাসীকে স্বস্তি দেবে এ এক্সপ্রেসওয়ে। তবে, এ সড়কপথ ব্যবহারে দিতে হবে নির্দিষ্ট পরিমাণ টোল।এক্সপ্রেসওয়ে থেকে যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে-• অন্য যানবাহনের তুলনায় অনেক কম এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে।• যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজীকরণ হবে।• ঢাকা শহরের যানজট অনেকাংশেই কমে যাবে।• ভ্রমণের সময় ও খরচ কমে যাবে। তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে মুক্তি পাবে মানুষ।• এক কথায়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে।ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার জানান, বর্তমানে প্রথম ফেজের কাজ প্রায় শেষ। পুরো প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ।বর্তমানে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম ফেজ হিসেবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সামনে থেকে ফার্মগেট অংশ পর্যন্ত যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এ পথের দূরত্ব ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। র‍্যাম্পসহ এ পথের মোট দৈর্ঘ্য ২২.৫ কিলোমিটার। ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে র‍্যাম্প রয়েছে ১৫টি। র‍্যাম্পগুলো হচ্ছে— বিমানবন্দরে দুটি, কুড়িলে তিনটি, বনানীতে চারটি, মহাখালীতে তিনটি, বিজয় সরণিতে দুটি এবং ফার্মগেটে একটি। ১৫টির মধ্যে ১৩টি র‍্যাম্প প্রাথমিকভাবে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩


নির্বাচন খুব সহজ কর্ম নয়: সিইসি

নির্বাচন খুব সহজ কর্ম নয়: সিইসি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন শুধুমাত্র অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ নয়—বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য করতে চায় কমিশন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আজ শনিবার সকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।কাজী হাবিবুল আউয়াল, 'আমরা যদি সুন্দরভাবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে পারি; এর সঙ্গে আরও কতগুলো বিশেষণ যুক্ত হয়েছে, সেটি হলো—অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য। এটি গ্রহণযোগ্য হতে হবে। এটি একটি বড় জিনিস। এটা পরিমাপ করার কোনো যন্ত্র আমাদের হাতে নেই। তারপরও জনগণের যে দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয় নির্বাচনের পরে; নির্বাচনের শুদ্ধতা ও সিদ্ধতা প্রশ্নে, ওটার ওপর জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়। এটাও কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।'প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'নির্বাচনটা শুধু অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ নয়—এটি বিশ্বাসযোগ্য, গ্রহণযোগ্য হতে হবে।'প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'নির্বাচন খুব সহজ কর্ম নয়। এই কারণে যে, আমাদের যে নির্বাচনী সংস্কৃতি বা রাজনৈতিক সংস্কৃতি বা গণতান্ত্রিক যে সংস্কৃতি এটি এখনো সর্বোচ্চ ধাপে গিয়ে পৌঁছেনি। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যেখানে নির্বাচন নিয়ে খুব বেশি হায়-হুতাশ করতে হয় না। বিশেষ করে ইউরোপের অনেকগুলো দেশ। সেখানে নির্বাচনটা খুবই শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে যায়। ওরা গণতন্ত্রের একটি বিশেষ অবস্থানে গিয়ে থিতু হয়েছে। আমরা এখনো এরর অ্যান্ড ট্রায়াল পদ্ধতিতে এগিয়ে যাচ্ছি।'এই এগিয়ে নেওয়ার যাত্রায় আমরা সকলেই সারথি। আমরা যদি আমাদের জ্ঞান, শিক্ষা, অভিজ্ঞতা, শক্তি এবং সততা দিয়ে নির্বাচনটাকে নির্বাচন অর্থে পরিচালনা করতে পারি। যেখানে জনগণ তাদের ভোটাধিকার সত্যিকার অর্থে স্বাধীনভাবে প্রয়োগ করতে পারবে, তাহলেই সেই নির্বাচনটা প্রকৃত অর্থে নির্বাচন। কারণ সে ক্ষেত্রে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সরকার গঠিত হয়ে থাকবে,' বলন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩


এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন কাল, ১০ মিনিটে বিমানবন্দর টু ফার্মগেট

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন কাল, ১০ মিনিটে বিমানবন্দর টু ফার্মগেট

আগামীকাল শনিবার শেরেবাংলা নগরের পুরোনো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা মাঠে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রান্ত-ফার্মগেট প্রান্ত) উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে ভিভিআইপি, ভিআইপি, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, বিভিন্ন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সরকারি-বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যাপক লোকসমাগম হবে।তাদের বহন করা যানবাহনের গমনাগমন, সুষ্ঠু পার্কিং ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক-তেজগাঁও বিভাগ বিশেষ ট্রাফিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে।এড়িয়ে চলতে হবে যেসব সড়কবৃহস্পতিবার বিকালে ডিএমপির ট্রাফিক নির্দেশনায় জানানো হয়, পুরোনো বাণিজ্যমেলা মাঠকেন্দ্রিক সুষ্ঠু ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ব্যানার ও স্টিকার ছাড়া অন্য সব যানবাহনকে বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নিম্নবর্ণিত রাস্তা ব্যতীত বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে হবে।১. শ্যামলী, শিশুমেলা ক্রসিং এবং ৬০ ফিট থেকে আগারগাঁও লাইট ক্রসিং হয়ে রোকেয়া সরণি পর্যন্ত রাস্তা।২. লাভ রোড পূর্ব মাথা, বিজয় সরণি ক্রসিং-উড়োজাহাজ ক্রসিং, ক্রিসেন্ট লেক হয়ে গণভবন ক্রসিং পর্যন্ত রাস্তা। ৩. সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের দক্ষিণ পার্শ্ব নতুন রাস্তার মুখ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশ রাস্তা মুখ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গ্যাপ হতে পরিকল্পনা কমিশন হয়ে বিআইসিসি ক্রসিং পর্যন্ত রাস্তা। ৪. আড়ং ক্রসিং, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, বঙ্গবন্ধু চত্বর ও ইন্দিরা রোড হয়ে ফার্মগেট পর্যন্ত। ৫. রোকেয়া সরণির তালতলা, আগারগাঁও লাইট ক্রসিং, বিআইসিসি ক্রসিং এবং উড়োজাহাজ ক্রসিং পর্যন্ত রাস্তা। ৬. মিরপুর রোডের শ্যামলী থেকে মানিক মিয়া পশ্চিম প্রান্ত (আড়ং ক্রসিং) রাস্তা সীমিত পরিসরে ব্যবহার করা যাবে। তবে জরুরি সেবা প্রদানকারী গাড়ি, রোগী বহনকারী গাড়ি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সার্ভিসে নিয়োজিত গাড়িসমূহের ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তির নির্দেশনার আওতাবহির্ভূত থাকবে বলে জানিয়েছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। স্টিকারযুক্ত গাড়ির ক্ষেত্রে নির্দেশনাউদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আগত গাড়িসমূহের অনুকূলে সরবরাহকৃত সব স্টিকার তাদের গাড়ির উইন্ডশিল্ডের দৃশ্যমানভাবে প্রদর্শন করার জন্য অনুরোধ করা হলো। আমন্ত্রিত অতিথিদের যানবাহনের চালকদের নিজ নিজ গাড়িতে অবস্থান করার জন্য পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি গাড়ির ড্রাইভারের মোবাইল নম্বর গাড়ির উইন্ডশিল্ডে দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ করা হলো। পদ্মা স্টিকারযুক্ত যানবাহনকে উড়োজাহাজ ক্রসিং থেকে বিআইসিসিতে নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত প্রবেশ গেট দিয়ে প্রবেশ ও নির্দেশিত স্থানে গাড়ি পার্ক করার জন্য পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। মেঘনা ও যমুনা স্টিকারযুক্ত গাড়িসমূহ উড়োজাহাজ ক্রসিং থেকে বিআইসিসি ক্রসিংয়ে নামিয়ে দিয়ে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ৫নং গেট দিয়ে প্যারেড গ্রাউন্ডে পার্কিং করবে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যানারযুক্ত গাড়ি ও জনসাধারণের ক্ষেত্রে নির্দেশনা মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ধামরাই, সাভার, মিরপুর-১ ও ২ থেকে আগত ব্যানারযুক্ত গাড়িগুলো শ্যামলী হয়ে শিশুমেলা ক্রসিংয়ে ড্রপ করে নির্দেশনা মোতাবেক আগারগাঁও রাস্তায় পার্কিং করবে এবং এতে আসা লোকজন র্যাব-২ এর সামনে দিয়ে হেঁটে ভেন্যুতে প্রবেশ করবে। গাজীপুর, নরসিংদী, ঢাকা উত্তরের ব্যানারযুক্ত গাড়িগুলোকে রেডিসন হোটেলের সামনের কালশী ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে মিরপুর-১০ দিয়ে বেগম রোকেয়া সরণি হয়ে আগারগাঁও ক্রসিংয়ে ড্রপ করে নির্দেশনা অনুযায়ী আগারগাঁও রাস্তায় পার্কিং করবে এবং অনুষ্ঠানে আসা লোকজন র্যাব-২ এর সামনে দিয়ে হেঁটে ভেন্যুতে প্রবেশ করবে। নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকা দক্ষিণ থেকে আগত ব্যানারযুক্ত গাড়িগুলোকে শাহবাগ-সোনারগাঁও ক্রসিং-লেফট টার্ন-পান্থপথ–ধানমন্ডি-৩২ হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পশ্চিম প্রান্তে (আড়ং ক্রসিং) ড্রপ করে ওই রাস্তায় এবং রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পার্কিং করবে এবং আসা লোকজন আড়ং ক্রসিং হতে মিরপুর রোড দিয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের নতুন রাস্তা দিয়ে হেঁটে ভেন্যুতে প্রবেশ করবে। কেরানীগঞ্জ, দোহার, ঢাকা দক্ষিণ থেকে ব্যানারযুক্ত গাড়িগুলোকে ধানমন্ডি-৩২ হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পশ্চিম প্রান্তে (আড়ং আসিং) ড্রপ করে ওই রাস্তায় এবং রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পার্কিং করবে এবং আগত লোকজন আড়ং ক্রসিং হতে মিরপুর রোড দিয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের নতুন রাস্তা দিয়ে হেঁটে ভেন্যুতে প্রবেশ করবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩


আইসিইউ থেকে সন্তান নিয়ে বাড়ি ফিরলেও, লাগামহীন খরচে দিশাহারা বাবা-মা

আইসিইউ থেকে সন্তান নিয়ে বাড়ি ফিরলেও, লাগামহীন খরচে দিশাহারা বাবা-মা

গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া শিশুর সংখ্যা ৯১। তবে কত শিশু বাবা-মায়ের সঙ্গে হাসিমুখে বাড়ি ফিরেছে, সে ধরনের কোনো পরিসংখ্যান নেই।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বাবা-মায়েরা স্বজন ও বন্ধুদের জন্য সন্তানের হাসিমুখের ছবি দিয়ে শিশু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা পিআইসিইউ) ও নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে বাড়ি ফেরার খবর জানাচ্ছেন। চারপাশে ডেঙ্গুতে শিশুমৃত্যুর খবরে এই হাসিমুখের ছবিগুলোয় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে আসছে। তবে চিকিৎসায় লাগামহীন খরচে পরিবারগুলো দিশাহারা হয়ে পড়েছে। সন্তানকে নিয়ে শিশুদের পিআইসিইউ বা বড়দের আইসিইউতে কাটানো দিনগুলো মা-বাবা এমনকি শিশুরাও ভুলতে পারছে না। নানা মানসিক সমস্যাও দেখা দিচ্ছে।গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া প্রকৃতি ও নিসর্গ নামের দুই যমজ সন্তানের মা জ্যোৎস্না লিপি। তাঁর স্বামী বিপ্লব হালদার ইউনাইটেড হাসপাতালের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট। ডেঙ্গুতে প্রকৃতি ভর্তি ছিল সেগুনবাগিচায় বারডেম জেনারেল হাসপাতাল-২ (মা ও শিশু)-এ।ফেসবুকের দিনলিপিতে জ্যোৎস্না লিপি এর আগে গত ১৮ জুলাই লিখেছিলেন, ‘ডেঙ্গু ভাইরাসকে হারিয়ে জয়ী হয়ে প্রকৃতি বাসায় ফিরেছে।’ সেবার ছিল ১০ দিনের যুদ্ধ। ৯ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল প্রকৃতি। তবে সেবার তার আইসিইউ লাগেনি। এক মাসের ব্যবধানে প্রকৃতির আবার ডেঙ্গু হয়। গত ২০ আগস্ট এই মা লিখেছেন, ‘আমি প্রকৃতিকে নিয়ে আইসিইউতে আছি। আবার ডেঙ্গু...’, ‘মেয়ে যখন আইসিইউতে, তখন ছেলে নিসর্গের জ্বর হলে তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়’, ‘মেয়ের রক্ত লাগবে’, ‘আইসিইউতে প্রকৃতির শারীরিক পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে...’, ‘প্রকৃতিকে আইসিইউ থেকে কেবিনে দেওয়া হয়েছে...’, ফেসবুকের এ ধরনের ছোট ছোট লেখাতে আইসিইউর বাইরে অপেক্ষমাণ স্বজনেরা বুঝে নিতেন আইসিইউর ভেতরের সংগ্রামটা কোন মাত্রায় আছে।জ্যোৎস্না লিপি মেয়ের চিকিৎসায় খরচ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আইসিইউতে খরচ কত হবে, তার হিসাব করা মুশকিল। রাত আড়াইটার সময় এমন এক ইনজেকশনের কথা বলা হলো, যার দাম যেমন বেশি, রাতের বেলা তা পাওয়া যাবে কি না, তারও নিশ্চয়তা নেই। স্যালাইন কিনে আনতে হয়েছে নারায়ণগঞ্জ থেকে। ডাব কেনা থেকে শুরু করে সবটাতেই তো লাগামহীন খরচ। হাসপাতালের আইসিইউ, কেবিন ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ তো আছেই। দুই দফায় সব খরচ যোগ করলে খরচটি গিয়ে দাঁড়াবে ২ লাখ ৭০ হাজারের কাছাকাছি।’জ্যোৎস্না লিপির মতো গণমাধ্যমকর্মী ইশরাত জাহান ঊর্মিও তাঁর মেয়ে নহলী ঊষশী খানকে নিয়ে সংগ্রামের অভিজ্ঞতার কথা ফেসবুকে লিখে রেখেছেন। অন্য বাবা-মায়েদের যদি কাজে লাগে, তাই ভেবেই এসব লেখা বলে জানিয়েছেন তিনি। গত ২৬ আগস্ট নহলী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। নহলী ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালের পিআইসিইউতে ভর্তি ছিল। চিকিৎসায় খরচ হয়েছে পৌনে দুই লাখ টাকা।ইশরাত জাহান ঊর্মি বলেন, ‘এবার ডেঙ্গু যে এত ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, শুরুতে তা তেমন গুরুত্বই দিইনি। এক চিকিৎসক মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তির জন্য তাড়া না দিলে হয়তো এত দিনে মেয়েকে হারিয়েই ফেলতাম। এবারের ডেঙ্গু তো একেবারেই সময় দিচ্ছে না।’ইশরাত জাহান ঊর্মি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আইসিইউতে বাচ্চা রাখা আর সুতার ওপর হাঁটা এক জিনিস।’ সন্তানের ডেঙ্গু হলে প্রচুর তরল খাবার খাওয়ানো, পেট ব্যথা বা বমি হলে কোনো মা-বাবা যাতে সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করতে এক মিনিট সময়ও নষ্ট না করেন, তাই বারবার অনুরোধ করেছেন। ১১ বছর বয়সী নহলী পড়ছে ওয়াইডব্লিউসিএ উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে।রাজধানীর পান্থপথে বিআরবি হাসপাতাল লিমিটেডের (আইসিইউ ও ইমার্জেন্সি) কনসালট্যান্ট আশরাফ জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, এবারের ডেঙ্গু মৌসুমে যেসব মা-বাবা সন্তানের বিষয়ে সচেতন ছিলেন, সন্তানের জ্বর আসার পর বাসায় সময় নষ্ট না করে দ্রুত হাসপাতালে এসেছেন, সেসব মা-বাবা হাসিমুখে সন্তান নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।এই চিকিৎসক জানালেন, এবারের ডেঙ্গুতে, বিশেষ করে শিশুদের বেলায় চ্যালেঞ্জটা অনেক বেশি। হাসপাতালগুলোয় শিশুদের পিআইসিইউয়ের সংখ্যা কম। শিশুর অবস্থা জটিল হলে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘুরে সময় নষ্ট না করে বড়দের আইসিইউতে রেখেই যদি বিশেষভাবে শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া যায়, তা অনেক কাজে লাগে।গুলশানে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন এস এম ওয়ায়েস করনী। তাঁর স্ত্রী নুসরাত জাহান গৃহিণী। আট বছর বয়সী ছেলে সাহিল রাফায়ানকে নিয়ে ডেঙ্গুযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন এই মা-বাবা। গত ১৮ আগস্ট ছেলে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছে। রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ৫ দিন আইসিইউসহ মোট ১০ দিন হাসপাতালে থাকতে হয়।রামপুরার বাসিন্দা এস এম ওয়ায়েস করনী জানালেন, তাঁদের ছয় বছর বয়সী আরেকটি মেয়ে আছে। একই দিনে ছেলে ও তাঁর নিজের জ্বর আসে। তবে রক্তের পরীক্ষায় ছেলের ডেঙ্গু পজিটিভ এলেও তাঁরটা নেগেটিভ আসে। ছেলের জ্বর ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট উঠে গেলে তাকে প্রথমে মিরপুরের শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কেননা আত্মীয়দের অনেকেই মিরপুরে থাকেন। তবে প্লাটিলেট, হিমোগ্লোবিন কমতে থাকলে ওই হাসপাতাল থেকেই পিআইসিইউ আছে, এমন হাসপাতালে ছেলেকে ভর্তির জন্য বলা হয়। পরে হেলথ অ্যান্ড হোপের আইসিইউতে ছেলেকে ভর্তি করা হয়। দুই হাসপাতাল মিলে ছেলের চিকিৎসায় প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়।এস এম ওয়ায়েস করনী বলেন, ‘আমি এখন যেখানে চাকরি করছি, সেখানে নতুন যোগ দিয়েছি। আমি নিজেও অসুস্থ। ছেলের জন্য নিজের দিকেও তাকাতে পারিনি। কত টাকা খরচ হবে, সে চিন্তা তো ছিলই। তারপরও তখন ভাবনা ছিল, যে করেই হোক ছেলেকে সুস্থ করে বাড়ি ফিরতে হবে।’ এই বাবা জানালেন, কিছু টাকা নিজের ছিল, আর আত্মীয়স্বজনও পাশে ছিলেন।মা ইলেন পেরেজা কস্তা আট বছর বয়সী ছেলে সাহিত্যকে নিয়ে যুদ্ধজয়ের গল্প শোনালেন। গত ২২ জুলাই স্কয়ার হাসপাতাল থেকে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ২০১৯ সালেও ছেলের ডেঙ্গু হয়েছিল। তবে সেবার বাসায় তিন দিনেই ভালো হয়ে গিয়েছিল। আর এবার ছয় দিন, তাও আইসিইউ থেকে ঘুরে আসতে হলো। গত বছর ডেঙ্গুতে ১৩ বছর বয়সী এক কাকাতো ভাই মারা যায়। এবার তো চারপাশ থেকে শুধু শিশুদের মৃত্যুর খবর, তাই শুরু থেকেই আতঙ্কটা খুব বেশি মাত্রায় ছিল এই মায়ের।ইলেন পেরেজা কস্তা বলেন, ‘ছেলের যখন নাক দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়, আমি তখন পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। শুধু বলেছি, ছেলের জীবন ছাড়া এই পৃথিবীতে আমি আর কিছু চাই না। একটাই ছেলে আমার। বাড়ি ফিরলেও রাতে এখনো ছেলে ভয় পায়, মা মা বলে জড়িয়ে ধরে।’ইলেন পেরেজা কস্তা জানালেন, তাঁর স্বামী ব্যবসা করেন। তবে করোনায় ব্যবসাটা বলতে আর কিছু নেই। এখন ছেলের ডেঙ্গুতে আবার খরচের ধাক্কা। সব মিলে ৫৯ হাজার টাকা খরচ সামলাতেও হিমশিম খেতে হয়েছে।নিম্নবিত্ত বা দরিদ্র পরিবারের অনেক শিশু, যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি, তাঁদের মা-বাবার কষ্ট আরও বেশি। প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন শিশু ও তাদের পরিবারের আর্থিক কষ্ট নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে অনেকে তাঁদের পাশেও দাঁড়িয়েছেন।আইসিইউ থেকে সন্তান নিয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরলেও খরচের ধাক্কায় পরিবারগুলো দিশাহারা হয়ে পড়েছে, এই প্রসঙ্গে বিআরবি হাসপাতাল লিমিটেডের (আইসিইউ ও ইমার্জেন্সি) কনসালট্যান্ট আশরাফ জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইসিইউতে গেলে খরচটা হুট করেই বেড়ে যায়। আর মানুষ বেড়ানো, পোশাক কেনাসহ বিভিন্ন খাতের জন্য টাকা জমালেও চিকিৎসা ব্যয়ের জন্য কোনো টাকা জমায় না। বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে। কেননা, জরুরি পরিস্থিতিতে জমি বিক্রি করতে হলেও কম টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। আর স্বাস্থ্যবিমার বিষয়টিকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে।’আশরাফ জুয়েল বলেন, বাড়ি ফেরার পর শিশুদের টানা বিশ্রামে রাখতে হবে। পুষ্টিকর ও তরলজাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। আইসিইউ থেকে বাড়ি ফেরার পরও শিশুরা একধরনের ট্রমার মধ্যে থাকে। তাদের মধ্যে বিষণ্নতা দেখা দিলে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। হাসপাতালে থাকা অবস্থাতেও মা-বাবা ও শিশুদের কাউন্সেলিং করা জরুরি।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩


বনজ কুমারের মামলা/সাংবাদিক ইলিয়াসের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ

বনজ কুমারের মামলা/সাংবাদিক ইলিয়াসের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ

বহুল আলোচিত মিতু হত্যা মামলায় মিথ্যা ও অসত্য তথ্য সরবরাহ করা এবং তা প্রচারের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে সাইবার ট্রাইব্যুনাল।বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জুলফিকার হায়াত এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে সাংবাদিক ইলিয়াসের সম্পত্তি ক্রোক সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২ অক্টোবর দিন ধার্য করেন তিনি। এর আগে, গত ২৫ জুলাই মামলার চার্জশিট গ্রহণ করে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন একই ট্রাইবুনাল। পাশাপাশি গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আজ (৩১ আগস্ট) দিন ধার্য করেন। সেদিন এ মামলার অভিযোগ থেকে নিহত মিতুর স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আকতার ও তার বাবা মো. আব্দুল ওয়াদুদ মিয়াকে অব্যাহতি দেন আদালত। অন্যদিকে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন ও বাবুল আকতারের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবুর বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করা হয়।তারও আগে, গত ৯ এপ্রিল বাবুল আকতার এবং ইলিয়াস হোসাইনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. রবিউল ইসলাম। চার্জশিটভুক্ত অন্য দুই আসামি হলেন- বাবুল আক্তারের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবু ও বাবা মো. আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া। আসামিদের মধ্যে ইলিয়াস হোসেন পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।এরপর, গত ১১ মে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশেক ইমামের আদালত।গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার। মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ আনা হয়।মামলার এজাহারে পিবিআই প্রধান অভিযোগ করে বলেন, আমার নেতৃত্বাধীন তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ে দেশের চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলা তদন্তাধীন থাকাকালে সাবেক এসপি বাবুল আকতার প্রধান আসামি হিসেবে তদন্তে প্রকাশ পায়। তদন্তকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেল হাজতে থাকা বাবুল আকতার ও বিদেশে অবস্থানরত সাংবাদিক ইলিয়াসসহ বাকি আসামিরা মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত ও পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য ষড়যন্ত্রের আশ্রয় গ্রহণ করেন।এরই ধারাবাহিকতায় বাবুল আকতার এবং অন্যান্য আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তার ফেসবুক আইডির মাধ্যমে ‘স্ত্রী খুন স্বামী জেলে, খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে একটি ডকুমেন্টারি ভিডিও ক্লিপ আপলোড করেন। যা সম্পর্কে ৪ সেপ্টেম্বরে আমি অবগত হই।তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ভিডিওতে বিভিন্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যের মাধ্যমে তদন্তাধীন মিতু হত্যা মামলার তদন্তকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করাসহ তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, ইলিয়াস হোসাইনের ভিডিওতে প্রচারিত বক্তব্যে দেশের ভাবমূর্তি এবং দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উসকানি দেওয়া হয়। এছাড়া ভিডিওতে পুলিশ এবং পুলিশের বিশেষায়িত তদন্ত সংস্থা পিবিআই ও বিশেষ করে আমার মান-সম্মান ও সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হয়েছে। যার জন্য দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে এর নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করে।পিবিআই প্রধান এজাহারে উল্লেখ করেন, ভিডিওতে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস করা হয়। এছাড়া রাষ্ট্রের হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও অস্থিরতা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিরও অপপ্রয়াস করা হয়েছে।এজাহারে ওই ভিডিও ডকুমেন্টারির বিভিন্ন তথ্য ও বক্তব্যকে মিথ্যা দাবি করে নানা প্রমাণ ও তথ্য উপস্থাপন করেন বনজ কুমার।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩১ আগস্ট ২০২৩


জাল ফেললেই হাজার হাজার ইলিশ, তবু দাম চড়া/ বাজার তদারকির কেউ নেই

জাল ফেললেই হাজার হাজার ইলিশ, তবু দাম চড়া/ বাজার তদারকির কেউ নেই

জাল ফেললেই ধরা পড়ছে হাজার হাজার ইলিশ। এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ ৬০০ টাকা বিক্রি করলেও লাভ থাকে। কক্সবাজার উপকূলে ১৪ আগস্ট থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। ১৫ দিনে জেলার বিভিন্ন মৎস্যকেন্দ্র থেকে ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টনের বেশি ইলিশ সারা দেশে সরবরাহ করা হয়েছে। প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়লেও বাজারে দাম কমছে না।এর কারণ হিসেবে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, দাদন ব্যবসায়ীদের খপ্পর থেকে ট্রলারমালিকদের মুক্ত হতে না পারা এবং ঢাকার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা বলছেন কক্সবাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী, ট্রলারমালিক, মৎস্য কর্মকর্তা ও ভোক্তারা।গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার শহরের ফিশারিঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, বাঁকখালী নদীতে ভিড়েছে ১২ থেকে ১৫টি ট্রলার। প্রতিটি ট্রলার ইলিশে ভর্তি। ব্যবসায়ীরা ট্রলারের ইলিশ ডিঙিনৌকায় ভরে বাজারে নিয়ে আসছেন। পাইকারি বাজারে ৯০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায়, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। ১ কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফিশারিঘাট থেকে চারটি ট্রাকে অন্তত ২১ মেট্রিক টন ইলিশ ঢাকায় সরবরাহ হয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।গতকাল দুপুরে শহরের বাহারছড়া ও বড়বাজার এবং বিকেলে কানাইয়ার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে ১ থেকে ২ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজির কম ওজনের ইলিশের কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। বেশির ভাগ মানুষ মানুষ ইলিশের দামদর করে ফিরে যাচ্ছেন।গতকাল দুপুরে ফিশারিঘাটে ইলিশের বাজার ঘুরে দেখতে গিয়েছিল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ (ক্যাব) কক্সবাজার জেলা সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী। অতিরিক্ত দামে ইলিশ বেচাবিক্রি করতে দেখে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘের বা খামারের মতো বঙ্গোপসাগরে ইলিশ চাষে কারও বিনিয়োগ করতে হয় না। জাল ফেললেই ধরা পড়ছে হাজার হাজার ইলিশ। এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ ৬০০ টাকা বিক্রি করলেও লাভ থাকে। তারপরও কেন ৬০০ টাকার ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তা বোধগম্য হচ্ছে না। ইলিশের বাজার তদারকিরও কেউ নেই। যেমন ইচ্ছা, তেমন দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ।সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, কয়েক বছর আগেও এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দালাল চক্র এবং মধ্যস্বত্বভোগীরা অতিরিক্ত লাভ করতে ইলিশের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন।মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, ১৪ আগস্ট থেকে কক্সবাজারে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। ২১ আগস্ট পর্যন্ত সাত দিনে ইলিশ আহরণ হয়েছিল ২ হাজার ১০০ মেট্রিক টন (প্রতিদিন গড়ে ৩০০ মেট্রিক টন)। বৈরী পরিবেশে সাগর উত্তাল থাকায় ২২ থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত ৫ দিন কয়েক হাজার ট্রলার সাগরে ইলিশ ধরতে পারেনি। তবে কয়েক শ ট্রলার এই ৫ দিনে অন্তত ৫০০ মেট্রিক টন (দৈনিক ১০০ টন করে) ইলিশ আহরণ করেছে। ২৮ আগস্ট থেকে আবার ইলিশ আহরণ শুরু হয়েছে।সাগরে বিপুল পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ার পরও অতিরিক্ত দামে বেচাবিক্রির কারণ জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান মধ্যস্বত্বভোগী ও দাদন ব্যবসায়ীদের দুষলেন। তিনি বলেন, ট্রলারের ইলিশ তিন হাত ঘুরে ভোক্তার কাছে পৌঁছায়। তাতে ৬০০ টাকার ইলিশের দাম ১ হাজার ২০০ টাকায় ঠেকছে। ট্রলারের মালিক ইলিশ ধরার জন্য আরেকজনের কাছ থেকে চড়া সুদে দাদন নেন। দাদনদারের আবার এজেন্ট থাকে। এজেন্ট ছাড়া অন্য কাউকে ইলিশ বিক্রি করা যায় না। এজেন্টরা ৬০০ টাকার ইলিশ বাজারে বিক্রি করেন ১ হাজার ২০০ টাকায়। দাদন ব্যবসায়ীদের খপ্পর থেকে ট্রলারমালিকদের মুক্ত কিংবা ট্রলার থেকে আহরিত ইলিশ সরাসরি বাজারে পৌঁছানো গেলে দাম অর্ধেক কমে যেত বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।কক্সবাজার থেকে ট্রাকে প্রতি কেজি ইলিশ ঢাকার বাজারে পৌঁছাতে পরিবহন ও প্যাকেজিং বাবদ খরচ হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রতি কেজি ইলিশের বিপরীতে ১০ থেকে ২০ টাকার বেশি লাভ করা যাচ্ছে না বলে দাবি ফিশারিঘাট মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির উপদেষ্টা ও ইলিশ ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীনের। তিনি বলেন, বৈরী পরিবেশে কয়েক দিন ইলিশ আহরণ কমে যাওয়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে।কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, ইলিশের বাজার নিয়ন্ত্রণ হয় ঢাকা থেকে। এ ক্ষেত্রে ট্রলারমালিকদের করার কিছু থাকে না। অধিকাংশ ট্রলার দাদন নিয়ে তৈরি। শর্ত অনুযায়ী আহৃত মাছ তাঁদের হাতে তুলে দিতে হয়। কয়েক হাত ঘুরে ট্রলারের ইলিশ বাজারে পৌঁছতে দাম দ্বিগুণ দাঁড়ায়। জেলায় ইলিশ ধরার ট্রলার আছে ছয় হাজার। অধিকাংশ ট্রলার এখন সাগরে অবস্থান করছে। দু-এক দিনের মধ্যে সব ট্রলার ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরলে দাম কমতে পারে।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩০ আগস্ট ২০২৩


সর্বাধিক পঠিত

ডিম সিদ্ধ করে ফ্রিজে রাখার পরামর্শ শেখ হাসিনার

ডিম সিদ্ধ করে ফ্রিজে রাখার পরামর্শ শেখ হাসিনার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের বাজারে ডিমের দাম যখন কমবে, তখন ডিম সিদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দেবেন। তাহলে বহুদিন ভালো থাকবে।মঙ্গলবার (২৯ আাগস্ট) দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিম নিয়ে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশে একটা শ্রেণি আছে যারা সিন্ডিকেট করে ব্যবসা করে। যখনই তারা আর্টিফিশিয়ালি দাম বাড়ায় আমরা তখন আমদানি করি, বিকল্প ব্যবস্থা করি যাতে তারা বাধ্য হয় দাম কমাতে।ব্রিকস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমবার শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে আমরা সদস্যপদ অর্জনের প্রত্যাশা করিনি, এবং আমরা সক্রিয়ভাবে এই ধরনের প্রচেষ্টা চালাইনি।সংবাদ সম্মেলনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ভদ্রলোকের যদি এতোই আত্মবিশ্বাস থাকে যে তিনি অপরাধ করেননি, তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না।তিনি বলেন, যারা বিবৃতি দিয়ে তার বিচার স্থগিত করতে বলেছেন তাদের বলছি, বিবৃতি না দিয়ে আইনজীবী পাঠাক।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৯ আগস্ট ২০২৩


নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় হচ্ছে : সালমান এফ রহমান

নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় হচ্ছে : সালমান এফ রহমান

নির্বাচন উপলক্ষে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আজ মঙ্গলবার ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।সমসাময়িক রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। শেখ হাসিনার সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসার যে স্বপ্ন তারা দেখছে, তা বাস্তবায়িত হবে না। তাদের জনসমর্থন যে নেই, এটা তারা জানে।প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র করা খুবই সহজ। রাজনীতি করতে চাইলে দেশে ফিরে আসুন, জেলে যান। রাজনীতি করুন। বিদেশিরা বিএনপি জামায়াতের কথায় সরকার সরিয়ে দেওয়ার মতো পাগল নয়। মার্কিন সরকার শেখ হাসিনাকে সরাতে চাইলে তাদের বিনিয়োগকারীরা এ দেশে আসত না। তারা জানে শেখ হাসিনা আবারও সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন।সালমান এফ রহমান বলেন, বাবা-মা, ভাইসহ পরিবারের সবাইকে হারিয়ে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে। তাঁর সে চেষ্টা সফল হয়েছে বলেই বিদেশিদের কাছে উন্নয়নের মডেল এখন বাংলাদেশ।সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরতে হবে উল্লেখ করে সালমান এফ রহমান বলেন, আমাদের দলের নেতাকর্মীদের কাজ হবে সাধারণ মানুষের মন জয়ে মনোনিবেশ করা। মানুষের কাছে যাওয়া। উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা। এছাড়া আলোচনা সভায় অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যে উঠে আসে জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামের নানা পর্বের ইতিহাস। সপরিবারে জাতির পিতা হত্যাকান্ডের পূর্বাপরের ঘটনাবলি আলোচনা করে পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে এনে দন্ড কার্যকর ও হত্যাকান্ডের কুশীলবদের ভূমিকা উন্মোচনের দাবি জানান তারা।১৫ আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভা।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৯ আগস্ট ২০২৩


বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের পরিস্থিতিতে সুযোগ নিবে চীন, উদ্বেগে ভারত

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের পরিস্থিতিতে সুযোগ নিবে চীন, উদ্বেগে ভারত

বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ লক্ষ্যে নির্বাচনে বাধা দিলে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকিও দিয়ে রেখেছে দেশটি। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে মার্কিন চাপে সৃষ্ট পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে চীন।আর এই বিষয়ে উদ্বেগ বেড়েছে ভারতের। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই দাবি করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। অবশ্য সূত্রবিহীন ওই রিপোর্টে নির্দিষ্ট করে দায়িত্বশীল কারও কোনও বক্তব্য নেই।প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আসন্ন সাধারণ নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ‘চরমপন্থি শক্তির’ হাতকে শক্তিশালী করতে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করতে পারে বলে ভারত ‘যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে’। বিষয়টি সম্পর্কে জানেন এমন কয়েকজন ব্যক্তি এই তথ্য জানিয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছে।হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই লোকেরা জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি আলাপ-আলোচনা চলাকালীন যুক্তরাষ্ট্রকে এই বিষয়ে ভারতীয় পক্ষ তার উদ্বেগ জানিয়েছে। নয়াদিল্লির বিশ্বাস, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে চাপ দিচ্ছে তা বাংলাদেশকে ‘চীনের আরও কাছে ঠেলে দিতে পারে’।আর তেমনটি হলে তা এই অঞ্চলের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে তারা দাবি করেছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদিও ভারতীয় পক্ষ স্পষ্ট করে বলেছে- তারাও বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়, তারপরও এই বিষয়ে খুব বেশি চাপ দেওয়া হলে তা শুধুমাত্র শেখ হাসিনা সরকারের বিরোধী চরমপন্থি ও মৌলবাদী শক্তিকে উৎসাহিত করবে বলে তারা মার্কিন নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছে।২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং র‌্যাবের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়াও চলতি বছরের মে মাসে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকিও দেয় বৈশ্বিক মোড়ল এই দেশটি।একইসঙ্গে ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভীতি প্রদর্শন, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করার অধিকার প্রয়োগ করা থেকে মানুষকে বঞ্চিত করার জন্য সহিংসতাকে কাজে লাগানো, এবং এমন কোনও পদক্ষেপ – যার উদ্দেশ্য রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা সংবাদমাধ্যমকে তাদের মত প্রচার থেকে বিরত রাখার মতো কার্মকাণ্ডেও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানানো হয়েছে।হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, গত ২৩ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বৈঠক করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ওই বৈঠকে জিনপিংয়ের করা মন্তব্যের পর মার্কিন চাপের জেরে চীনের বাংলাদেশে সৃষ্ট পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার বিষয়ে ভারতের উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।সেদিনের সেই বৈঠকে শি জিনপিং বলেন, চীন বাংলাদেশে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে এবং উভয় দেশ নিজেদের মূল স্বার্থে একে অপরকে সমর্থন করার জন্য ঢাকার সাথে কাজ করবে বেইজিং।অন্যদিকে বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার’ নীতির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যম বলছে, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতিবেশী অঞ্চলে ভারতের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত মিত্র হিসাবে বিবেচনা করে থাকে নয়াদিল্লি। ভারত-বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে দমন করার পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য প্রধান প্রধান বন্দরগুলো ব্যবহারের সুযোগ দেওয়াসহ জ্বালানি এবং বাণিজ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা বাড়িয়েছে হাসিনার সরকার।বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন আগামী বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে পারে এবং সেই নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে হাসিনার সরকারের ওপর যে চাপ দেওয়া হচ্ছে তা বিরোধী দল বিএনপিকে উৎসাহিত ও সংগঠিত করছে এবং তারা একের পর এক বিশাল সমাবেশ করছে।উপরে উদ্ধৃত একজন ব্যক্তি বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করা এবং ২০১৯ সালের নির্বাচনে মাত্র সাতটি আসনে জয় পাওয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আসন্ন নির্বাচনে কয়েক ডজন আসনে জিতবে বলে আশা করা হচ্ছে।হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, বিএনপির ঘনিষ্ঠ মিত্র জামায়াতে ইসলামীর পুনরুজ্জীবন পাওয়ার বিষয়টিও নয়াদিল্লিতে উদ্বেগের সাথে দেখা হচ্ছে। গত ১০ জুন ঢাকায় ১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিশাল সমাবেশ করে জামায়াত। এই দলটি সর্বদা ‘ভারত বিরোধী এবং পাকিস্তানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখে’ বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।সংবাদমাধ্যমটির দাবি, জামায়াতের শক্তিশালী হয়ে ওঠা ‘চরমপন্থি শক্তিকে উৎসাহিত করতে পারে’ বলে ভারত বিশ্বাস করে এবং আর সেটি বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া ভারতীয় পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আমন্ত্রণে চলতি মাসের শুরুর দিকে নয়াদিল্লি সফর করে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। সফরে তারা বিজেপির ঊর্ধ্বতন নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন এবং সেখানে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরেন তারা।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৯ আগস্ট ২০২৩


রাজধানীতে থেমে থেমে বৃষ্টি, ৪ বিভাগে ভারী বর্ষণ হতে পারে - আবহাওয়া অধিদপ্তর

রাজধানীতে থেমে থেমে বৃষ্টি, ৪ বিভাগে ভারী বর্ষণ হতে পারে - আবহাওয়া অধিদপ্তর

সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া, রাজধানী ঢাকায় থেমে থেমে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।সেই সঙ্গে দেশের ১৯টি জেলার ওপর দিয়ে দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পরে। হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি।আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজশাহী, রংপুর, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেটের নদীবন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে আরও জানিয়েছে, সব বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় আজ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে, তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঢাকায় এর আগে যেমন টানা বৃষ্টি হয়েছে, তেমন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এখন যে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে তাতে আগামী ২৭ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনই থেমে থেমে বৃষ্টি হবে।''এরপর বৃষ্টির প্রবণতা কমে আসবে। তবে গরম তীব্র আকার নেওয়ার সম্ভাবনা নেই। এখন তাপমাত্রা যেমন আছে অনেকটা তেমনই থাকবে,' বলেন তিনি।আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৪ আগস্ট ২০২৩


নিয়মিত অফিস করেন না অর্থমন্ত্রী, দেখা দেন না গভর্নর, অর্থসচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান

নিয়মিত অফিস করেন না অর্থমন্ত্রী, দেখা দেন না গভর্নর, অর্থসচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান

অর্থনীতির সংকট কাটছে না। ডলারের দর এখনো অনেক বেশি। সরকারের হিসাবেই মূল্যস্ফীতি কমেছে অতি সামান্য, বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের পতনও ঠেকানো যাচ্ছে না।অথচ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট আগের তুলনায় অনেকটা কমেছে। অনেক দেশ মূল্যস্ফীতি কমাতে সফল হচ্ছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব, নীতির সমন্বয়হীনতা, মনিটরিংয়ের অভাব, আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয় না থাকা, অতিমাত্রায় আমলাতান্ত্রিক নির্ভরতা এবং জবাবদিহির অভাবের কারণেই বাংলাদেশ সংকট থেকে বের হতে পারছে না। ফলে মূল্যস্ফীতির চাপে দিশাহারা মানুষ ও একটি দুর্বল অর্থনীতির ভিত্তি নিয়েই বাংলাদেশ নতুন আরেকটি নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে।বিশ্ব অর্থনীতির এ রকম এক সংকটের সময় সারা বিশ্বেই অর্থনীতিসংক্রান্ত নীতিনির্ধারকেরা আছেন চালকের আসনে। অথচ বাংলাদেশে অর্থনীতি বিষয়ের নীতিনির্ধারকদের দেখাই পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। অর্থমন্ত্রী নিয়মিত কার্যালয়ে আসেন না। অর্থসচিব কারও সঙ্গে কথা বলেন না। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গেও দেখা পাওয়া দুষ্কর। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান কোনো অনুষ্ঠানেই যান না। এসব নীতিনির্ধারকের সঙ্গে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তা, গবেষক বা অর্থনীতিবিদ—কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। তাঁরা কারও পরামর্শও নেন না। এতেই দেখা দিয়েছে নানা ধরনের সমন্বয়হীনতা। এর ফল ভোগ করছে দেশের সাধারণ মানুষ।২০২০ সালের মার্চ থেকে কোভিড-১৯ শুরু হলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নিয়মিত সচিবালয়ে আসা বন্ধ করে দেন। তিনি কেবল সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক করে যাচ্ছেন অনলাইনে। সেখানে কেবল সরকারি কেনাকাটার সিদ্ধান্ত হয়। যেমন গত ২৪ মে একটি কাগুজে কোম্পানি থেকে ১৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ১২ হাজার টন চিনি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করে তাঁর নেতৃত্বাধীন ক্রয় কমিটি, যে কোম্পানির চিনি সরবরাহ করার সক্ষমতা নেই।তিন সপ্তাহ পর এক দিনের জন্য ৮ আগস্ট সচিবালয়ে এসেছিলেন অর্থমন্ত্রী। চলে যাওয়ার সময় কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আজ আর হবে না।’ তবে ৯ আগস্ট আবার অর্থমন্ত্রীর মুঠোফোনে খুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠানো হলে তিনি ১১ আগস্ট ফোনে বলেন, ‘অবশ্যই ব্যবসায়ীদের কথা বলার সুযোগ আছে। এ ধরনের অভিযোগ ঠিক নয়। কথা বলতে গেলে একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসতে হয়। আর গভর্নর কেন কথা বলেন না, তা তাঁর ব্যাপার। বাংলাদেশ ব্যাংক স্বাধীনভাবে চলছে। আমাদের দিক থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে হস্তক্ষেপ করা হয় না।’তবে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সদ্য বিদায়ী সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী একসময় সক্রিয় মানুষই ছিলেন। কয়েক বছর ধরে তাঁর কী হলো, বুঝতে পারছি না। তাঁর সঙ্গে কোনো ব্যবসায়ীরই বৈঠক হওয়া এখন কঠিন। অথচ পুরো অর্থনীতিই এখন বেসরকারি খাতনির্ভর। অর্থনীতিতে এখন কত সমস্যা। অথচ অর্থমন্ত্রী অনুপস্থিত। এ কারণে অন্যরা ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ নিচ্ছেন।’আব্দুর রউফ তালুকদার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এক বছরের বেশি সময় ধরে। এর আগে ছিলেন অর্থসচিব। তাঁকেই এখন নীতিনির্ধারণে সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের একজন বলে মনে করা হয়। গভর্নর হওয়ার পর ব্যাংকগুলোর অনিয়ম রোধে কিছু পদক্ষেপ নিলেও কিছু ব্যাংকের ক্ষেত্রে আবার তিনি বেশ নমনীয়। যেমন শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর অনিয়ম রোধে তিনি নিষ্ক্রিয়। আবার ভালো অবস্থায় থাকা ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা (এমডি) বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গভর্নরের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি। আবার অনেক সিদ্ধান্ত নিয়ে তারপর আবার সরে আসারও একাধিক উদাহরণ রয়েছে।একটি ব্যাংকের একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘একবার ১০-১২ জন এমডি মিলে গভর্নরের সঙ্গে দেখা করলাম। তিনি বসার সুযোগও দেননি। দাঁড়িয়ে কথা বলতে হয়েছে। অথচ তিনি এমন কিছু ব্যাংকের এমডিকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন, যেসব ব্যাংক আর্থিক খাতে সংকট বাড়িয়েছে।’অথচ দেখা যাচ্ছে ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের (ইসিবি) গভর্নর মুদ্রানীতির সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়ন পরিস্থিতি জানাতে প্রতি ছয় সপ্তাহ পরপর সংবাদ সম্মেলন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যবস্থার (ফেড) অধীনে আছে ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি। ফেড চেয়ারম্যান জেরেমি এইচ পাওয়েল এর প্রধান। তিনি ২০২২ সালে মুদ্রানীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সব মিলিয়ে আটবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আর চলতি ২০২৩ সালে এখন পর্যন্ত করেছেন পাঁচবার। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও টেকসই কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ ফেড চেয়ারম্যানের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব ঠিক করে দেয় মার্কিন কংগ্রেস। কাজের অগ্রগতি নিয়মিতভাবে মার্কিন কংগ্রেসে উপস্থাপন করে তাঁকে জবাবদিহি করতে হয়। ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) সাবেক গভর্নর রঘুরাম জি রাজন ‘অবিরাম সাংবাদিকদের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার’ কারণে কতটা লাভবান হয়েছিলেন, তা তিনি তাঁর বইতে বিস্তারিত লিখেছেন।আর আব্দুর রউফ তালুকদার মুদ্রানীতি দেওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত দুবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন। আর বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক সেমিনারে গৃহীত বিভিন্ন নীতির ব্যাখ্যা দিয়েছেন একবার, তা–ও গত বছরের ১ ডিসেম্বর।অবশ্য দেশের ব্যবসায়ীদের বেশি অভিযোগ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে নিয়ে। বাজেটের আগে অনুষ্ঠিত প্রাক্‌–বাজেট আলোচনা সভা হচ্ছে এখন তাঁর সঙ্গে ব্যবসায়ীদের কথা বলার একমাত্র জায়গা। যদিও বিভিন্ন সমস্যা, অভিযোগসহ নানা বিষয়ে আলোচনার জন্য বেসরকারি খাতের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ও এনবিআরের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স আছে। কিন্তু এই টাস্কফোর্সের কোনো বৈঠকই হয় না। কারণ, এনবিআর চেয়ারম্যান সেখানে যান না।আবার প্রাক্‌-বাজেট সভায় সমস্যার কথা বলতে গিয়েও বিরূপ অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়েছে কোনো কোনো ব্যবসায়ীর। যেমন গত ৫ মার্চ নিজ দপ্তরে আমন্ত্রণ জানিয়েও ব্যবসায়ীদের কথা শুনতে চাননি। ব্যবসায়ীরা যখন মাঠপর্যায়ে হয়রানি আর অনিয়ম নিয়ে কথা বলা শুরু করেন, তখন এনবিআর চেয়ারম্যান তা মাঝপথে থামিয়ে দেন। একই দিন বাংলাদেশ অ্যাগ্রো ফিড ইনগ্রিডিয়েন্টস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের একজন সহসভাপতি হয়রানির অভিযোগ করলে এনবিআর চেয়ারম্যান তাঁকে ধমকান। দেশের স্বনামখ্যাত এক উদ্যোক্তাও সমস্যা নিয়ে দেখা করতে গিয়ে বিব্রত হয়েছিলেন বলে জানা যায়।গত ৫ মার্চেই ঘটে আরেক ঘটনা। ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান ই–অরেঞ্জের প্রতারণার ব্যাপারে আদালত ই–অরেঞ্জ থেকে রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বললেও এনবিআর দেয়নি। আদালত ওই দিন বলেছিলেন, ‘উনি (এনবিআর চেয়ারম্যান) কেন আদালতের আদেশ ফলো করছেন না? উনি নিজেকে কি সম্রাট ভাবেন?’এফবিসিসিআইয়ের সদ্য বিদায়ী সভাপতি জসিম উদ্দিন এ নিয়ে বলেন, ‘এনবিআরের সঙ্গে আলোচনার জায়গা ছোট হয়ে আসছে। কারণ, এনবিআর চেয়ারম্যান দেখা দেন না। বেসরকারি খাত বড় হয়ে উঠলেও এখন আলোচনা করার জায়গায় শূন্যতা তৈরি হয়েছে।’অর্থসচিব আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক। ব্যবসায়ী নেতা বা সাধারণ মানুষের সঙ্গে অর্থসচিবের যোগাযোগ সাধারণত কমই থাকে। তবে অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ অতীতের অর্থসচিবেরা রাখতেন। সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য আওয়ামী লীগের সময়েই আগে অর্থনীতিবিদদের সমন্বয়ে বিশেষ কমিটি নিয়মিত বৈঠক করত। সেখানে অর্থমন্ত্রী ও অর্থসচিব অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতেন। এ ছাড়া অর্থনীতির যেকোনো বিষয়ের ব্যাখ্যাও পাওয়া যেত অর্থসচিবদের কাছ থেকে।বর্তমানে ফাতিমা ইয়াসমিন অর্থসচিব হিসেবে এক বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্বে থাকলেও প্রকাশ্যে তাঁর কথা শোনা গেছে মাত্র একবার, তা–ও মাত্র একটি বাক্য। গত ২ জুন অনুষ্ঠিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট–উত্তর সংবাদ সম্মেলনে শেয়ারবাজার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থসচিব বলেছিলেন, ‘শেয়ারবাজার নিয়ে কী কী কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে, তা গভর্নর ভালো বলতে পারবএসব বিষয়ে তিনজন নীতিনির্ধারকের সঙ্গেই কথা বলার চেষ্টা করা হয় । বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থসচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তাঁদের একান্ত সচিবের কাছে সময় চেয়েও পাওয়া যায়নি। লিখিত প্রশ্ন করা হয়, ই–মেইলে প্রশ্ন পাঠানো হয়, মুঠোফোনে বার্তা দেওয়া হয়। কিন্তু কেউ দেখা করতেই রাজি হননি।ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান এ নিয়ে বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর কথা না হয় বাদ দিলাম। এনবিআর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর—কারও সঙ্গেই তো কথা বলা যায় না। অর্থ খাতের শীর্ষ ব্যক্তিদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও অপেশাদার মনোভাবের চূড়ান্ত রূপ দেখা যাচ্ছে এখন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বেসরকারি খাতের সঙ্গে অর্থনৈতিক নেতৃত্বের আরও সংযোগ দরকার।’অর্থনৈতিক সংকটের সময় প্রতিটি দেশের অর্থনীতি কীভাবে পরিচালিত হবে—এই নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা অতীতেও হয়েছে। ২০০৮ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে সংকট দেখা দিলে ২০০৯ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বের আর্থিক ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করা সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি বোর্ড (এফএসবি) জি-২০ দেশের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের উদ্দেশে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিল। ‘দ্য ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইসিস অ্যান্ড ইনফরমেশন গ্যাপ’ নামের সেই প্রতিবেদনে তারা বলেছিল, সঠিক উপাত্ত সংগ্রহ, সেই উপাত্তের আলোকে অর্থনীতির ঝুঁকি নিয়মিত মনিটর করা, উপাত্ত বিনিময়ের সমন্বিত ব্যবস্থা থাকা এবং অর্থনীতির সঠিক পর্যালোচনাই হচ্ছে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায়।বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকটের সময় এর প্রভাব নিয়ে কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা বেশ কিছু সমস্যা তৈরি হওয়ার কথা বলেছেন। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পরিবীক্ষণ বা মনিটরিং। অথচ এই ব্যবস্থা এখন দুর্বল এবং অকার্যকর হয়ে আছে। সরকারি অর্থ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৯–এর ১৫(৪) ধারা অনুযায়ী ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সংসদে বাজেট বাস্তবায়ন অগ্রগতি নিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে হয় অর্থমন্ত্রীকে। অথচ বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকের প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রী সংসদে জমা দিয়েছেন গত মে মাসে। এরপর আরও দুটি প্রান্তিক পার হয়েছে, দেওয়া হয়েছে নতুন অর্থবছরের বাজেট। কিন্তু প্রতিবেদন আর দাখিল করা হয়নি।অর্থনীতিতে নীতি সমন্বয়ের অভাবও এখন প্রকট। রাজস্ব নীতির সঙ্গে মুদ্রানীতির মিল নেই। বাজেটে বেসরকারি বিনিয়োগ জিডিপির ৪ শতাংশ বাড়িয়ে ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ করার অতি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার কথা আছে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আইএমএফের শর্ত মেনে মুদ্রানীতির আমূল পরিবর্তন এনে মুদ্রা সরবরাহ কমানোর কথা বলেছেন। এমনকি মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), মূল্যস্ফীতি ও রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ নিয়েও আর্থিক ও মুদ্রানীতির বড় ধরনের বৈপরীত্য আছে।বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকটের সময় এর প্রভাব নিয়ে কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা বেশ কিছু সমস্যা তৈরি হওয়ার কথা বলেছেন। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পরিবীক্ষণ বা মনিটরিং। অথচ এই ব্যবস্থা এখন দুর্বল এবং অকার্যকর হয়ে আছে।দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণেও ক্রমাগত ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে সরকার। একটার পর একটা পণ্য নিয়ে সংকট দেখা দিচ্ছে। কখনো চাল বা পেঁয়াজ, কখনো কাঁচা মরিচ, মুরগি, ভোজ্যতেল, চিনি কিংবা ডিম-সংকট লেগেই আছে। সংকট মোকাবিলার জন্য আমদানির কথা ওঠে, শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু সময়মতো কোনোটাই হয় না। এসব নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাব দেখা দিয়েছে বিভিন্ন সময়। ফলে দাম নিয়ন্ত্রণে কোনো উদ্যোগই তেমন কাজে আসেনি।আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ। এই ঋণ পেতে বহুরকম শর্ত পূরণ করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এর মধ্যে আছে রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ১৪০ কোটি ডলারের ঋণ। মূলত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট মোকাবিলার জন্য এই অর্থ নেওয়া হচ্ছে। সুতরাং শর্ত পূরণের জন্য কেবল বাংলাদেশ ব্যাংক নয়, এর সঙ্গে যুক্ত আছে অর্থ মন্ত্রণালয়, এনবিআর, জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। অথচ এসব নিয়েও কোনো আলোচনা নেই।সামগ্রিক বিষয়ে অর্থনীতিবিদ, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘অর্থনীতি এখন কঠিন সময় পার করছে। অথচ এ সময়ে আর্থিক খাতকে শৃঙ্খলায় আনতে সমন্বিত কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে দেখা যায় সরকার যা বলছে, আর যা করছে—তার মধ্যে বিরাট ফারাক। সব চলছে মান্ধাতা আমলের পদ্ধতি দিয়ে। অর্থমন্ত্রী যে নিয়মিত অফিস করেন না, তা সরকারের শীর্ষ পর্যায়ও জানে। তিনি ঠিকঠাক অফিস করলে অনেক মতবিনিময়ের সুযোগ তৈরি হতো। নীতি পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে যত বেশি আলোচনা করা যায়, তত বেশি নির্ভুল সিদ্ধান্ত আসে। সব মিলিয়ে আমি বলব, আমাদের আর্থিক খাতে ভালো কোনো শৃঙ্খলা নেই। খাতটি নিজের মতো করে চলছে। এখানে ঘাটতি রয়েছে নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল নেতার। দরকার বেশি বেশি বসা ও আলোচনা করা এবং সবার মতামত আমলে নেওয়া। কিন্তু কে পালন করবে এ সমন্বয়ের দায়িত্ব? আমি কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।’সূত্র- প্রথম আলো

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৩ আগস্ট ২০২৩


২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াল সেই গ্রেনেড হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।সোমবার (২১ আগস্ট) সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২১ আগস্টের নিহতদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী।সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর হামলায় আহতদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা স্মরণে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বেলা ১১টা ৫ মিনিট) আলোচনা সভা চলছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী’ সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় দলটির তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী। আহতদের অনেকে এখনও শরীরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২১ আগস্ট ২০২৩


রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদের তিন বছরের কারাদণ্ড

রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদের তিন বছরের কারাদণ্ড

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনরে (দুদক) দায়ের করা মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ করিমের তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২১ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায় এ রায় ঘোষণা করেন।দণ্ডের পাশাপাশি তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অর্থদণ্ডের এই টাকা আগামী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারি কোষাগারে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রায়ে বিচারক উল্লেখ করেন, আসামি সাহেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হল। একই আইনের ২৭ (১) ধারা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দিয়েছেন আদালত। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন (জাহাঙ্গীর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এদিন রায় ঘোষণার আগে সাহেদকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।এর আগে গত ১০ আগস্ট এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য বিচারক এ দিন ধার্য করেন।মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর নির্ধারিত ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদের হিসাব জমা দিতে সাহেদকে নোটিশ দেয় দুদক। এ সময়ে তিনি সম্পদের হিসাব জমা না দেওয়ায় আরও ১৫ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে বর্ধিত সময়ের মধ্যেও সম্পদ বিবরণী জমা না দেওয়ায় অনুসন্ধানে নামে দুদক। অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া যায়।এ অভিযোগে ২০২১ সালের ১ মার্চ সাহেদের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা দায়ের করা হয়। পরে ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল এ মামলায় সাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলাটিতে মোট দশজন সাক্ষীর মধ্যে দশজনই বিভিন্ন সময়ে সাক্ষ্য দেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২১ আগস্ট ২০২৩


গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত করায় ১০০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত করায় ১০০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত করা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত থাকায় মধ্য-আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়ার ১০০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।এতে বলা হয়েছে, দেশটির প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজারিও মুরিলোর শাসনামলে নিকারাগুয়ানদের মানবাধিকার সীমিত করার সাথে ওই ১০০ কর্মকর্তা জড়িত। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, নাগরিক স্বাধীনতার ওপর নির্বিচার আক্রমণের ঘটনায় ওর্তেগা-মুরিলো প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই কর্মকর্তারা সুশীল সমাজের সংস্থাগুলোকে দমন, নাগরিক পরিসর বন্ধ করার প্রচেষ্টায় অংশ নিয়েছিলেন। তারা অন্যায়ভাবে সরকারের সমালোচকদের আটক করেছেন। আটককৃতদের মধ্যে দেশটির সরকারের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত বিশপ রোলান্ডো আলভারেজও রয়েছেন।যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মতে, ওর্তেগার শাসনামলে একাধিক ক্যাথলিক রেডিও স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও রেডিও স্টেশন বন্ধ করে দেওয়ার সমালোচনা করায় গত বছর দেশটিতে আলভারেজসহ একাধিক পুরোহিতকে গ্রেপ্তার করা হয়।মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) বলছে, সরকারি কর্মকাণ্ডে বাধা, সরকারের কাজের অবমূল্যায়ন, মিথ্যা তথ্য ছড়ানো এবং অবাধ্যতার দায়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আলভারেজকে ২৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওই সময় তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। এমনকি তার নিকারাগুয়ান নাগরিকত্বও বাতিল করা হয়েছে।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বার্তায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছেন, ‘আমরা নিকারাগুয়ার সরকারের প্রতি নিঃশর্ত ও অবিলম্বে বিশপ আলভারেজ এবং অন্যায়ভাবে আটক সকল বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’নিকারাগুয়ার সরকার দেশটিতে জেসুইট-পরিচালিত বিখ্যাত একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেছে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘সন্ত্রাসের কেন্দ্র’ আখ্যা দিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে; যা দেশটির ক্যাথলিক চার্চের বিরুদ্ধে সরকারের সর্বশেষ হুমকিমূলক পদক্ষেপ বলে মনে করা হয়। নিকারাগুয়ার সরকারের এমন পদক্ষেপের কয়েকদিন পরই মার্কিন এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।দেশটিতে ২০২১ সালের নির্বাচনে টানা চতুর্থ মেয়াদে জয়ী হওয়ার আগে ড্যানিয়েল ওর্তেগা কয়েক ডজন বিরোধীদলীয় নেতাকে কারাগারে পাঠান। দেশটির বিরোধীদলীয় অনেক নেতা ও সরকারের সমালোচক ওই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে মন্তব্য করেন।চলতি বছরের শুরুর দিকে ড্যানিয়েল ওর্তেগার প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণের আগ মুহূর্তে নিকারাগুয়ার ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয় মার্কিন অর্থবিভাগ। একই সঙ্গে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সেনাবাহিনী, টেলিকম এবং খনি খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদও জব্দ করা হয়।এর আগে, ২০২১ সালে নিকারাগুয়ার রাজনীতি ও বিচার ব্যবস্থার সাথে জড়িত ১০০ জনের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। এই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন নিকারাগুয়ার সংসদ জাতীয় পরিষদের কিছু সদস্য, বিচারক এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা।গত ১৯ জুলাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার দায়ে মধ্য আমেরিকার চারটি দেশের ৩৯ জনের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের মধ্যে নিকারাগুয়ারও ১৩ জন ছিলেন। এছাড়া বাকিরা হলেন গুয়াতেমালার ১০ জন, হন্ডুরাসের ১০ জন এবং এল সালভাদরের ছয়জন।মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা চিহ্নিত বিদেশি এই ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসাপ্রাপ্তিতে ও দেশটিতে প্রবেশের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, ইতিমধ্যে তাদের নামে কোনও ভিসা থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার ও অন্য কোনও বৈধ ভিসা বা প্রবেশের নথিপত্রও বাতিল করা হবে।সূত্র: এপি, দ্য হিল।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ২০ আগস্ট ২০২৩


পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ২৩ বস্তা টাকা, চলছে গণনা

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ২৩ বস্তা টাকা, চলছে গণনা

কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ। এ মসজিদে আটটি লোহার দানবাক্স আছে। প্রতি তিন মাস পর পর খোলা হয় দানবাক্সগুলো। এবার তিন মাস ১৩ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে।শনিবার (১৯ আগস্ট) সকাল সোয়া ৮টায় আটটি দানবাক্স থেকে রেকর্ড ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। সাথে পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গয়না। এখন চলছে গণনার কাজ। গণনায় অংশ নিয়েছেন প্রায় ২০০ জনের একটি দল।কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।এর আগে ৬ মে রমজানের কারণে চার মাস পর দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ১৯টি বস্তায় রেকর্ড ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়া চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ৩ মাস ১ দিন পর দানবাক্স খোলা হয়েছিল। ২০টি বস্তায় তখন ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া যায়।মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দান দানবাক্স খোলা হয়েছে। দান দানবাক্সগুলো খুলে ২৩টি বস্তায় ভরে টাকাগুলো মসজিদের দোতলায় আনা হয়েছে গণনার জন্য। এখন চলছে টাকা গণনার কাজ।টাকা গণনার কাজে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ.টি.এম ফরহাদ চৌধুরী, সিনিয়র সহাকারী কমিশনার (ভূমি) এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নাশিতা-তুল ইসলাম, তানিয়া আক্তার, নাবিলা ফেরদৌস, মাহমুদা বেগম সাথী, ফাতেমা-তুজ-জোহরা, মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, সিবিএ নেতা আনোয়ার পারভেজসহ মাদরাসার ১১২ জন ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন।মসজিদের খতিব, এলাকাবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন সূত্রে জানা যায়, এ মসজিদে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়। এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এ মসজিদে দান করে থাকেন।জনশ্রুতি আছে, এক সময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে। মুসলিম-হিন্দু নির্বিশেষে সব ধর্মের লোকজনের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়। পাগল সাধকের দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকাবাসী।কিন্তু ওই সাধকের দেহাবসানের পর থেকে আশ্চর্যজনকভাবে এলাকা এমনকি দেশের দূর-দূরান্তের লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে। মানত কিংবা দান খয়রাত করলে মনোবাসনা পূরণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন বয়সের হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের নারী-পুরুষ মানত নিয়ে আসেন এ মসজিদে। তারা নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি এমবকি বৈদেশিক মুদ্রাও দান করেন।মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়। এছাড়া করোনাকালে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককেও অনুদান দেওয়া হয়েছিল এ দানের টাকা থেকে।পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানিয়েছে, ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। যার নামকরণ হবে পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। সেখানে ৬০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৯ আগস্ট ২০২৩


ডেঙ্গুতে আরও ৯ জনের মৃত্যু,হাসপাতালে ১৫৬৫

ডেঙ্গুতে আরও ৯ জনের মৃত্যু,হাসপাতালে ১৫৬৫

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও ১৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮০৪ জন, আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৬১ জন। একইসঙ্গে এসময়ে ডেঙ্গুতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।শুক্রবার (১৮ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।এর আগে গত মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার ডেঙ্গুতে ৯ জন করে মারা যান।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৭ হাজার ৫৭৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৬২৩ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ হাজার ৯৫০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ৯৫ হাজার ৮৭৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৪৬ হাজার ৯৩৩ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪৮ হাজার ৯৪৪ জন।আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৭ হাজার ৮৫১ জন। ঢাকায় ৪২ হাজার ৯৬৭ এবং ঢাকার বাইরে ৪৪ হাজার ৮৮৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৮ আগস্ট ২০২৩


যেভাবে সর্বজনীন পেনশনের জন্য নিবন্ধন করবেন

যেভাবে সর্বজনীন পেনশনের জন্য নিবন্ধন করবেন

দেশের মানুষের জন্য সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি (স্কিম) চালু করছে সরকার। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য দেশের নাগরিকদের পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আনা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।সর্বজনীন পেনশন স্কিমের জন্য 'ইউপেনশন' নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। আগ্রহীদের www.upension.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। 'ইউপেনশন' ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের সময় কয়েকটি ধাপ মেনে চলতে হবে।শুরুতে 'ইউপেনশন' ওয়েবসাইটে ঢুকতে হবে। এরপর 'পেনশনার রেজিস্ট্রেশন' অপশনে ক্লিক করতে হবে। তাহলে একটি প্রত্যয়ন পাতা আসবে। সেখানে লেখা থাকবে 'এই মর্মে প্রত্যয়ন করছি যে আমি সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নই, সর্বজনীন পেনশন স্কিম বহির্ভূত কোন ধরনের সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হতে পেনশন সুবিধা গ্রহণ করি না, আমি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় কোন ধরনের ভাতা গ্রহণ করি না।'তবে, প্রত্যয়ন অংশে অবশ্যই সাবধানে ক্লিক করতে হবে। কারণ সেখানে স্পষ্টভাবে লেখা আছে 'ভুল তথ্য প্রদান করলে আবেদন বাতিল হবে এবং জমাকৃত অর্থ ফেরত যোগ্য হবে না।'ওই প্রত্যয়ন পাতার নিচে 'আমি সম্মত আছি' নামে একটি অপশন রাখা হয়েছে, সেখানে ক্লিক করলেই এই ধাপ শেষ হবে।এবার আরেকটি ওয়েবপেজ আসবে, যার নাম 'রেজিস্ট্রেশন করুন'। এখানে আবেদনকারীকে প্রথমে 'প্যাকেজ/স্কিম' নির্বাচন করতে হবে। এরপর সেখানে পর্যায়ক্রমে ১০, ১৩ বা ১৭ সংখ্যার এনআইডি নম্বর, জন্মতারিখ, মোবাইল নম্বর, ই–মেইলের তথ্য দেওয়ার অপশন থাকবে। এই পেজের শেষ অংশ থাকবে 'ক্যাপচা প্রদান করুন'।সঠিকভাবে ক্যাপচা দেওয়ার পরে আবেদনকারীর মোবাইল নম্বর ও ই–মেইলে একটি ওটিপি আসবে। ওই ওটিপি ফরমে ব্যবহার করে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে।এরপর যে পেজ আসবে সেখানে ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে। আগের পেজে দেওয়া এনআইডি অনুযায়ী এই পেজে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবেদনকারীর এনআইডি নম্বর, ছবি, বাংলা ও ইংরেজি নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, বর্তমান ও স্থায়ী দেখাবে। এখানে আবেদনকারীর বার্ষিক আয়ের পরিমাণ উল্লেখ করতে হবে এবং নিজের পেশা, বিভাগ, জেলা ও উপজেলার নাম সিলেক্ট করতে হবে।এই ধাপ শেষে 'স্কিম তথ্য' নামে আরেকটি পেজ আসবে। এখানে মাসিক চাঁদার পরিমাণ ও চাঁদা পরিশোধের সময় বেছে নিতে হবে। এখানে চাঁদা পরিশোধের জন্য মাসিক, ত্রৈমাসিক ও বার্ষিক তিনটি অপশন থাকবে।এবার দিতে হবে ব্যাংক তথ্য। এই পেজে আবেদনকারীকে ব্যাংক হিসাবের নাম ও নম্বর, হিসাবের ধরন (সঞ্চয়ী অথবা চলতি), ব্যাংকের নাম ও শাখার নাম উল্লেখ করে দিতে হবে।এরপরের পেজে নমিনির তথ্য দিতে হবে। সেখানে নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্মতারিখ উল্লেখ করতে হবে। চাইলে একাধিক নমিনি যোগ করা যাবে। এই পেজে নমিনির মোবাইল নম্বর, নমিনির সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদি উল্লেখ করে দিতে হবে।এবার আসবে নিবন্ধনের শেষ ধাপ, যে পেজটির নাম 'সম্পূর্ণ ফরম'। এখানে আবেদনকারীকে ব্যক্তিগত তথ্য, স্কিম, ব্যাংক তথ্য ও নমিনি তথ্য দেখানো হবে। কোনো ভুল চোখে পড়লে এই পেজে তা সংশোধন করা যাবে। আর ভুল না থাকলে সম্মতি দিলে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৭ আগস্ট ২০২৩


নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি - শেখ হাসিনা

নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি - শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিএনপিকে সন্ত্রাসী–বোমা হামলাকারীদের দল আখ্যায়িত করেছেন। তিনি দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, দলটি (বিএনপি) আগামী নির্বাচন যেন সুষ্ঠুভাবে হতে না পারে, সে জন্য ষড়যন্ত্র করছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতিত্বকালে দেওয়া ভাষণে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বুধবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ স্মরণসভার আয়োজন করে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জাতির পিতার হত্যাকারী, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ সৃষ্টিকারী, বোমা হামলাকারী, গ্রেনেড হামলাকারী বিএনপি; তারা (বিএনপি) জানে যে নির্বাচন করে কোনো দিন ক্ষমতায় যেতে পারবে না, জনগণের ভোটও পাবে না। তাই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং ভোট যেন না হয়, সে জন্য যত রকমের চক্রান্ত করা যায়, সেই চক্রান্তে তারা লিপ্ত।’বিএনপি সেই ’৭৫ সাল থেকে এই চক্রান্ত করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তারা চক্রান্ত করেছে আর দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলছে। এ দেশের মানুষ যখন নৌকায় ভোট দিয়েছে, স্বাধীনতা পেয়েছে। আজ মানুষ পেট ভরে খেতে পারছে, বিদ্যুৎ পাচ্ছে, রাস্তাঘাট পেয়েছে, কর্মসংস্থান পাচ্ছে, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে—জাতির পিতা যা চেয়েছিলেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছিলাম। কিন্তু একটাই প্রতিজ্ঞা নিয়ে এসেছিলোম, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতাকে ব্যর্থ হতে দেব না।’’৭৫-এর শোকব্যথাকে বুকে ধারণ করে দিনরাত কাজ করে গেলেও একের পর এক আঘাত, প্রাণসংহারের চেষ্টা তাঁকে মোকাবিলা করতে হয়েছে উল্লেখ করে জাতির পিতার কন্যা বলেন, ‘আমারও সময় সীমিত, কত ভয়ানক মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। আমার নেতা-কর্মীরা জীবন দিয়ে আমাকে ফিরিয়ে এনেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার বাবা রক্ত দিয়ে গেছেন এ দেশের মানুষের জন্য। রক্ত দিয়ে গেছেন আমার মা, আমার ভাইয়েরা। প্রতিনিয়ত হৃদয়ে রক্তক্ষরণ নিয়ে আমাদের দিনরাত প্রচেষ্টা এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের জন্য কাজ করছে, সেটাই ‘অনেকের অন্তর্জ্বালা’। তিনি বলেন, বিএনপি লুটে খেতে পারছে না, ক্ষমতা নেই, জনগণকে শোষণ করতে পারছে না। জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারছে না, তাই নির্বাচনে কারচুপির ধুয়া তুলছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির মুখে নির্বাচনে কারচুপির কথা আসে কোত্থেকে। ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়া দু–দুবার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। তারপরও তাদের মুখে আবার গণতন্ত্রের কথা।বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে তৎপর গুটিকতক দেশের কতিপয় রাজনীতিবিদ ও সংস্থার অতি উৎসাহের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এদের উদ্দেশ্য গণতন্ত্র নয়, এরা একটা জিনিসই করতে চায়, সেটা বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভিত্তিটা আমরা মজবুত করেছি, জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি, বাংলাদেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হচ্ছে।’দেশের ভৌগোলিক অবস্থানের গুরুত্ব বিবেচনায় নানা চক্রান্তের বিষয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এই বিষয়ে আমাদের যেমন সজাগ থাকতে হবে, তা ছাড়া অন্যান্য দেশ, আমি তো বলব ভারত মহাসাগরের অন্যান্য দেশ, তারা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন আছে, সেটা আমি বিশ্বাস করি।’প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানের দিক দিয়ে ভারত মহাসাগর, অপরদিকে প্রশান্ত মহাসাগর; এই ভারত মহাসাগরেই কিন্তু আমাদের বঙ্গোপসাগর, এর গুরুত্ব অনেক বেশি। প্রাচীনকাল থেকে এই জায়গা দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য চলে। ভারত মহাসাগরে যতগুলো দেশ আছে, কারও সঙ্গে আমাদের কোনো দ্বন্দ্ব নেই, সম্পূর্ণ নিষ্কণ্টক একটা যোগাযোগ পথ। এই জলপথে আন্তর্জাতিকভাবে সবচেয়ে নির্বিঘ্নে পণ্য পরিবহন হয়।’ তিনি বলেন, ‘দেশবাসীকে বলব, যারা দেশপ্রেমিক তাদের সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। কেননা, বাংলাদেশের মানুষের এতটুকু ক্ষতি করে কোনো দিন ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করি না।’পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই এলাকাটা নিয়ে নানা ধরনের খেলার একটা চক্রান্ত। পার্বত্য চট্টগ্রামে ২০ বছর ধরে যেখানে সংঘাত ছিল, আমি সরকারে আসার পর সেখানে আমি শান্তি ফিরিয়ে আনি। সেখানেও আবার নানা রকম অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে।’দেশের তথাকথিত স্বার্থান্বেষী বিজ্ঞতার দাবিদার মহল সম্পর্কে কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কিছু আঁতেল আছে, জানি না এসব তারা চিন্তা করে কি না। সেগুলো না করেই তারা এদের সঙ্গে সুর মেলায়। দুটো পয়সার লোভে তারা নানাভাবে এই কাজগুলো করে বেড়ায়।’যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব থেকে অবাক লাগে, যেসব দেশে এই খুনিদের (বঙ্গবন্ধুর) আশ্রয় দিয়ে রাখা হয়েছে, তারা আমাদের কাছে এসে মানবাধিকারের কথা বলে। তারা নির্বাচনের কথা বলে, স্বচ্ছতার কথা বলে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে একেবারে উতলা হয়ে পড়েছে। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, ২০০১ সালের নির্বাচনে এ দেশে নির্বিচারে অত্যাচার চলল। কত মানুষকে খুন করেছে। হাত কেটেছে। চোখ তুলে নিয়েছে। ঘরবাড়ি জ্বালিয়েছে। তখন নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি কেন? সেই নির্বাচনে তো আমাদের হারার কথা নয়। সে নির্বাচনে তো জোর করে আমাদের হারানো হয়েছে।’প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল। তখন তাদের নির্বাচনী চেতনা কোথায় ছিল? জিয়াউর রহমান বা জেনারেল এরশাদের সময় ৪৮ ঘণ্টা ভোটের ফল বন্ধ করে রেখে ফল ঘোষণা করে সেটা নিয়ে তো এদের কোনো উদ্বেগ আমরা দেখিনি। আজকে তাদের কাছ থেকে নির্বাচনের কথা, মানবাধিকারের কথা আমাদের শুনতে হয়। তো আমাদের মানবাধিকার কোথায় ছিল যেখানে আমরা বাবা–মায়ের হত্যার বিচার চাইতে পারতাম না। হত্যার বিচার চেয়ে একটা মামলা করার অধিকার আমাদের ছিল না।’প্রধানমন্ত্রী এ সময় জিয়াউর রহমানকে জাতির পিতা হত্যায় জড়িত পুনরুল্লেখ করে ১৫ আগস্ট প্রতিহিংসামূলক ভুয়া জন্মদিন পালন করায় খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনাও করেন।স্বাধীনতাবিরোধীদের পুনর্বাসনে জিয়ার কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জামায়াতের উত্থান জিয়াউর রহমানের হাতে। কারণ, এই জামায়াত ছিল যুদ্ধাপরাধী। তাদের কোনো ভোটাধিকার ছিল না। তাদের দল করার অধিকারও ছিল না।

নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৭ আগস্ট ২০২৩