বিরোধী দল সমূহের গণদাবি উপেক্ষা করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে ওই দিনই নির্বাচন কমিশন ঘেরাও ও সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বিরোধী দলমতকে জেলে আবদ্ধ রেখে সরকার খালি মাঠে গোল দিতে চাইলে (জাতীয় সংসদ নির্বাচন) বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের সাথে পরামর্শ করে অসহযোগ আন্দোলনসহ কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা প্রস্তুতি চলছে। ইসলামী আন্দোলনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র গতকাল শুক্রবার রাতে এতথ্য জানিয়েছে।রোববার দলের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। এদিকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, একতরফা নির্বাচন দিয়ে সরকার নিজকে রক্ষা করতে পারবে না। জনমত সরকারের বিরুদ্ধে চলে গেছে। বিরোধী দলমতকে জেলে আবদ্ধ করে সরকার খালি মাঠে গোল দিতে চায়। এ জন্যই সরকার বিরোধীবিহীন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচনী বৈতরণী পার পেতে চায়। রাষ্ট্র পরিচালনায় জনমতের তোয়াক্কা না করে একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করছে সরকার। তিনি বলেন, জোর, জুলুম, হত্যা, নির্যাতন, গুম-খুনের মাধ্যমে এই সরকার দেশের জনমানুষের ভোটাধিকার কেঁড়ে নিয়েছে। প্রয়োজনে দেশের মানুষ জীবন ও রক্ত দিয়ে হলেও দেশকে রক্ষা করবে, মানুষের ভোটধিকার প্রতিষ্ঠা করবে।গতকাল শুক্রবার দুপুরে পল্টনস্থ কার্যালয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের সাথে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আলোচনাকালে এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, আলহাজ হারুন অর রশিদ, মাওলানা নেছার উদ্দিন, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন।মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, সরকার গায়ের জোরে একতরফা নির্বাচন করে আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চায়। প্রশাসন দিয়ে কী আজীবন ক্ষমতায় থাকা যাবে? কখনো নয়। কাজেই সরকারের উচিত জনমনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানো। তিনি বলেন, একতরফা নির্বাচন করার খেলা দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে না বিধায় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখানোর উদ্দেশ্যে সরকার এখন বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতাদের ভয়ভীতি ও লোভ-লালসা দেখিয়ে নির্বাচনে আনার অশুভ খেলায় মেতে উঠেছে। গত ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকেও সরকার জনগণের মন জয় করতে পারেনি। নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় থেকে বাঁচার জন্য সরকার একের পর এক নোংরামি করে অস্তিত্ব রক্ষার উপায় খুঁজছে। তিনি নির্বাচন কমিশনকে একতরফা নির্বাচনের পথ থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানান। এছাড়া, ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর উত্তর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও দেশের স্থায়ী কোন নির্বাচন কাঠামো না থাকা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জাজনক। প্রত্যেকবার নির্বাচন এলেই রক্তাক্ত রাজপথ, হামলা-মামলা, ভাংচুর, গণগ্রেফতার, হরতাল-অবরোধে জনজীবন বিপর্যস্ত।গতকাল সকালে রাজধানীর ভাটারাস্থ আস সাঈদ মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত যৌথ সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১২ নভেম্বর ২০২৩
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীর জরুন এলাকায় শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত আরেক শ্রমিক মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মো. জালাল উদ্দিন (৪০) নামের ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এদিকে, রাজধানীর মিরপুর–১০, ১৩ ও পল্লবী এলাকার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন পোশাক কারখানার কয়েক শ শ্রমিক। আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে শ্রমিকেরা মিরপুর–১৩ নম্বর সড়কের দুই পাশে অবস্থান করে বিক্ষোভ শুরু করেন।শ্রমিকেরা বলছেন, ন্যূনতম বেতন বাড়ানোর ঘোষণায় তাঁরা সন্তুষ্ট নন। এছাড়া গতকাল শনিবার কারখানায় কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন, সবার বেতন সমান হারে বাড়েনি। সরকার ৫৬ শতাংশ বেতন বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। যাঁরা অভিজ্ঞ শ্রমিক, তাঁদের বেতন বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। এ কারণে তাঁরা বিক্ষোভ করছেন।গত বুধবার সকালে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পোশাকশ্রমিকের নাম আঞ্জুয়ারা খাতুন (৩০) গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মৃতদেহটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।জালাল উদ্দিন (৪০) জরুন এলাকার ইসলাম গ্রুপের সুইং সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার বাঁশহাটি গ্রামের চান মিয়ার ছেলে। জালাল জরুন এলাকার ফজল মোল্লার ভাড়া বাসায় সপরিবার বসবাস করতেন।জালালের সহকর্মী সফিকুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার কোনাবাড়ীর জরুন এলাকায় ইসলাম গ্রুপের তিনটি কারখানার শ্রমিকেরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর শুরু করেন। পুলিশ তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে। এতে শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। ওই ঘটনায় অন্তত ১০ জন শ্রমিক আহত হন।সফিকুল ইসলাম বলেন, আহত শ্রমিকদের মধ্যে দুজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থান আঞ্জুয়ারা খাতুন (৩০) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় আহত জালাল উদ্দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বুধবার আমি ও জালাল একসঙ্গে কারখানায় কাজে যাই। কারখানায় বিক্ষোভ শুরু হওয়ায় ছুটি ঘোষণা করা হলে আমরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে পুলিশের ছোড়া গুলি জালালের ঊরু থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে লাগে। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা শুনেছি তিনি মারা গেছেন, তবে এখনো নিশ্চিত নই। থানা থেকে একজন অফিসারকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি পৌঁছালে বিস্তারিত জানা যাবে।’পুলিশ, শ্রমিক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২৩ অক্টোবর থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বেতন বাড়ানোর দাবিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে আসছিলেন। এরপর গত মঙ্গলবার মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরকার, কিন্তু এতে শ্রমিকেরা সন্তুষ্ট নন। যার কারণে বুধবার থেকে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, জরুন, বাইমাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় তাঁরা বিক্ষোভ করেন।একপর্যায়ে শ্রমিকেরা বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে কাঠ ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ সময় শ্রমিকেরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে পুলিশ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১২ নভেম্বর ২০২৩
বিএনপি–জামায়াতের ব্যাপারে সবাইকে সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সৃষ্টি করি, আর তারা (বিএনপি–জামায়াত) ধ্বংস করে। কিন্তু এই ধ্বংস যেন আর করতে না পারে। মানুষকে পুড়িয়ে মারবে, এটা সহ্য করা যায় না।’প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার নবনির্মিত রেলস্টেশনের ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে আইকনিক কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। এর মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সরাসরি রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হলো। দেশে এত উন্নয়নের পরও যারা উন্নয়ন দেখে না, তাদের বর্তমান সরকারের করে দেওয়া আধুনিক জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ১০ টাকার টিকিট কিনে চোখের চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে এটা তাদের চোখের দোষ নয়, মনের দোষ। আজকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করা, বাসে, রেলে আগুন দেওয়া হচ্ছে। আমরা রেলের জন্য যেসব নতুন লোকামোটিভ এনেছিলাম, সেগুলোও আগুন দিয়ে তারা পুড়িয়েছে। যারা এত বীভৎস কাজ করতে পারে; এই দুর্বৃত্তপরায়ণতায় যারা জড়িত তাদের চোখ নয়, আসলে মনই অন্ধকার। কাজেই এদের ব্যাপারে সকলকে সাবধান থাকতে হবে। কারণ, এরা ধ্বংস জানে সৃষ্টি করতে পারে না। আমরা সৃষ্টি করি, আর তারা ধ্বংস করে। কিন্তু এই ধ্বংস যেন আর করতে না পারে। মানুষকে পুড়িয়ে মারবে, এটা সহ্য করা যায় না।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার রেলযোগাযোগের মাধ্যমে সমগ্র দেশকে কক্সবাজারের সঙ্গে যুক্ত করার পাশাপাশি রেল পরিষেবা, গতি ও পরিবহনকে বিশ্বমানের করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। তিনি বলেন, তিনি নিজেসহ দেশবাসী এখন কক্সবাজার থেকে পঞ্চগড়, রাজশাহী, দেশের দক্ষিণাঞ্চল, সুন্দরবন পর্যন্ত রেলপথ দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। মজার সুরে তিনি আরও বলেন, ‘কেন গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়াকে ছেড়ে দেওয়া হবে (রেল সংযোগ থেকে), তার মানে সারা বাংলাদেশ কক্সবাজারের সঙ্গে যুক্ত হবে।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এই রেলপথ উদ্বোধন করে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছি। এটা এ অঞ্চলের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। আজ সেই দাবি পূরণ হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা রামু পর্যন্ত করা হয়েছে এবং ঘুমধুম পর্যন্ত করার কথা। এ জন্য আমরা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের মাধ্যমে আসতে চাই। ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে আমরা সংযুক্ত হতে চাই। সেটা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর।এ সময় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেলওয়ের কার্যক্রম এবং দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।এর আগে প্রধানমন্ত্রী রেলস্টেশনে পৌঁছালে স্থানীয় শিল্পীদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়।প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রেললাইনটা চকরিয়া থেকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর ও পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে যাতে সংযুক্ত হয়, তার ব্যবস্থাও করা হবে। তিনি বলেন, তাঁর সরকার ভারত সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মিলে সম্প্রতি খুলনা থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত ব্রডগেজ রেল চলাচলের উদ্বোধন করেছে। যে লাইনটা একসময় খালেদা জিয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। রেললাইন উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী নিজেই টিকিট কেটে কক্সবাজার থেকে রামু যাওয়ার ট্রেনে চড়েন। প্রধানমন্ত্রীর হুইসেল ও সবুজ পতাকা নেড়ে ট্রেন চলাচলের যাত্রা উদ্বোধন করেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১১ নভেম্বর ২০২৩
‘চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে দুই দল’ দৈনিক যুগান্তরের শিরোনাম। পত্রিকাটি বলছে, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনীতিতে চলছে নানা সমীকরণ। কৌশলে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ। পুরোদমে শুরু করেছে নির্বাচনের প্রস্তুতি। পাশাপাশি আন্দোলন মোকাবিলায় করণীয় বিষয়ে নেতাকর্মীদের দেওয়া হচ্ছে নানা নির্দেশনাও।আর সরকার পতনের একদফার চূড়ান্ত আন্দোলনে রয়েছে বিএনপি। যে কোনো মূল্যে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ঠেকাতে চায়। এজন্য দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে মাঠে রয়েছে দলটি।জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের কৌশল ও প্রস্তুতির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায়। আজ সন্ধ্যায় গণভবনে অনুষ্ঠেয় এ সভায় ১০টি সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা রয়েছে।একদফার চূড়ান্ত আন্দোলনকে আরও বেগবান করে কৌশলে সাফল্য পেতে চায় বিএনপি। এজন্য কর্মসূচি সফলে এবার নেতৃত্বে রাখা হয়েছে তৃণমূল (মাঠ পর্যায়ে) নেতাদের। ইতোমধ্যে তাদের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের কোনো নেতা গ্রেফতার হলেই পরবর্তী নেতাকে দেওয়া হচ্ছে দায়িত্ব।প্রতিদিন অন্তত অর্ধশতাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে নানা দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন হাইকমান্ড। নিষ্ক্রিয় নেতাদেরও সক্রিয় করা হচ্ছে। চলমান অবরোধ কর্মসূচিতে পর্যায়ক্রমে একেকটি সাংগঠনিক জেলাকে নামানো হচ্ছে মাঠে।‘নির্বাচনের আগে ভাঙনের চাপ, সতর্ক অবস্থানে বিএনপি’। দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হচ্ছে, অনেক দিন ধরেই বিএনপিতে ভাঙনের গুঞ্জন চলছে। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে মাসছে, ততই গুঞ্জন বাড়ছে।চাপও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা। নির্বাচনে বিএনপিকে নয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলটির নেতাদের একটা অংশকে বের করে এনে ভোটে দাঁড় করানোর পরিকল্পনা করছে বলে তাদের অভিযোগ।তাদের মতে, বিএনপি নির্বাচনে না এলে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে এই তৎপরতা চালাচ্ছে। প্রলোভন, টোপ আর চাপ দিয়ে দলের কেন্দ্রীয় অনেক নেতাকেই বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বিগত দিনে রাগ-ক্ষোভ-অভিমানে দল থেকে দূরে সরে যাওয়া নেতারা। বিগত দিনের নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদেরও টার্গেট করা হয়েছে এই ভাঙন প্রক্রিয়ায়।অবশ্য নতুন দলে যোগ দেওয়ার গুঞ্জনের শীর্ষে থাকা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদও গতকাল মুখ খুলেছেন।হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, বিএনপির রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন শিগগির। আবার তৃণমূল বিএনপিতেও গতকাল বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের মাঠ পর্যায়ের কয়েকজন নেতাকর্মী যোগ দিয়েছেন।বিএনপির সাবেক নেতাদের নেতৃত্বে গঠিত বিএনএম নেতারাও বলছেন, সামনে আরও চমক আছে।'পূর্ণাঙ্গ নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে আ.লীগ’ প্রথম আলোর শিরোনাম। বিএনপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ভোটে থাকছে না ধরে নিয়ে পুরোদমে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। রাজপথে 'সতর্ক পাহারা’ ও ‘শান্তি সমাবেশ’ করলেও ভেতরে-ভেতরে প্রার্থী বাছাই ও নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কাজ চলছে।সাবেক আমলাদের নিয়ে দুটি দল প্রচারকৌশল প্রণয়ন এবং সরকারের মাঠ প্রশাসনকে ভোটে কীভাবে নিজেদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করা যায়, এর কৌশল ঠিক করতে কাজ করছে।আজ বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক বসছে গণভবনে। ওই বৈঠক থেকে আনুষ্ঠানিক নির্বাচন যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। কারণ, বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের ‘জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি' গঠনের বিষয়টি রয়েছে বলে জানা গেছে।এটি নির্বাচনকালীন সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করে থাকে। এ ছাড়া নির্বাচন প্রস্তুতিতে কিছু উপকমিটি গঠনের বিষয়ও পরিকল্পনায় রয়েছে। প্রতিবারই ভোটের আগে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয় নির্বাহী কমিটির বৈঠকে।কালের কণ্ঠের শিরোনাম ‘সংকট থেকে আরো সংকটে অর্থনীতি’। খবরে বলা হচ্ছে, দেশে চলমান অবরোধ-হরতালকে কেন্দ্র করে সহিংস রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ মানুষ। নষ্ট হচ্ছে দেশের সম্পদ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি। সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় আরো বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম।এমন পরিস্থিতিতে আগে থেকেই সংকটে থাকা অর্থনীতি আরো সংকটে পড়ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আর্থিক খাতগুলো ছাড়িয়ে শিক্ষাসহ সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিভিন্নভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, ২০২০ সালে শুরু হওয়া করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। এতে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি সংকটের মুখে পড়ে।'নির্বাচন হবে ৩ জানুয়ারি' কালবেলা পত্রিকার শিরোনাম এটি। তারা বলছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের ৩ জানুয়ারি, বুধবার অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচন। তার আগে আগামী মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ঘোষণা করা হতে পারে তপশিল। সেই লক্ষ্যে ওইদিন সন্ধ্যায় টেলিভিশন ও বেতারে জাতির উদ্দেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের ভাষণ প্রচারের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।রেওয়াজ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনের প্রস্তুতি তুলে ধরবে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি সার্বিক বিষয়ে রাষ্ট্রপতির পরামর্শও চাওয়া হবে। রাষ্ট্রপ্রধানের দিক থেকে নতুন কোনো নির্দেশনা না থাকলে নিজেদের ঠিক করা সূচি অনুযায়ী অগ্রসর হবে ইসি। বঙ্গভবনে বৈঠকের পর কমিশন সভা করে আনুষ্ঠানিকভাবে তপশিল অনুমোদন করা হবে। আপাতত আগামী মঙ্গলবার তপশিল ঘোষণার চিন্তা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা দু-এক দিন পেছাতে পারে বলে জানা গেছে।বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচনের ব্যাপারে অনড় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছে সরকারবিরোধী বিএনপি ও তাদের মিত্ররা। দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল ও জোটের বিপরীতমুখী এমন অবস্থানের মধ্যেই নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। এখন শুধু তপশিল ঘোষণা এবং সে অনুযায়ী সব কাজ সম্পন্ন করার অপেক্ষা।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৯ নভেম্বর ২০২৩
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অবহিত করতে বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বঙ্গভবনে যাচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এদিন দুপুর ১২টায় সাক্ষাতের সময় দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।বুধবার (৮ নভেম্বর) ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেছেন, রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত সব ধরনের অগ্রগতির বিষয়ে অবহিত করবেন কমিশন। এছাড়া প্রস্তুতি নিয়ে রাষ্ট্রপতির পরামর্শ ও নির্দেশনা থাকলে তাও শুনবেন। তবে তফসিল ঘোষণার এখতিয়ার সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের।ইসি সচিব বলেন, আগামী বুধবারের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। সম্পূর্ণরূপে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মতো পরিবেশ রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে বদ্ধপরিকর ইসি।ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিক তপশিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের রেওয়াজ রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ইসি সদস্যরা বঙ্গভবনে যাবেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন। ১৩ অথবা ১৪ নভেম্বর এই ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।সূত্রগুলো জানিয়েছে, ভোটের উপকরণ জেলা পর্যায়ে পাঠানো সহ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসি। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) ও শনিবার (১১ নভেম্বর) ব্যালট বাক্সও মাঠ পর্যায়ে যাচ্ছে। ছাপানো হচ্ছে মনোনয়নপত্রও। এক্ষেত্রে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে এগুচ্ছে সংস্থাটি। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের কয়েকদিনের মধ্যেই বাংলাদেশ টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তফসিল ঘোষণা করতে পারেন সিইসি।সংবিধান অনুযায়ী, একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ২৯ জানুয়ারি। তার আগের নব্বই দিনের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ নির্বাচনের মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এদের মধ্যে নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন, পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন এবং হিজড়া ভোটার ৮৫২ জন।২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ৩০শে জানুয়ারি। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বিধান অনুযায়ী এর আগে ৯০ দিনের মধ্যে ভোট হতে হবে। সেই হিসাবে গত ১লা নভেম্বর নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। সে হিসাবে ২৯শে জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।ইসি সূত্র জানায়, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের পর নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নেবে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৯ নভেম্বর ২০২৩
পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক নারী নিহত হয়েছেন। বুধবার সকালে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।নিহত নারীর নাম আনজুয়ারা খাতুন (২৪)। তিনি সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার চরনাটিপাড়া এলাকার জামাল হোসেনের স্ত্রী। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহত আনজুয়ারা কোনাবাড়ীর ইসলাম গার্মেন্টসে সেলাই মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন।সংশ্লিষ্টরা জানান, গাজীপুরে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন বাড়ানোর আন্দোলন করছেন। শ্রমিকদের আন্দোলনের মধ্যে মঙ্গলবার পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা করার ঘোষণা দিয়েছে মজুরি বোর্ড। ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ী ও জরুনসহ আশপাশের কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। এ ঘটনায় এক নারী ও পুরুষসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। গুরুতর আহত দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্য থেকে একজনের মৃত্যু হয়।পুলিশ, আন্দোলনরত শ্রমিক ও এলাকাবাসী জানান, কারখানা শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, সফিপুর ও মৌচাকসহ আশপাশের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছেন। মঙ্গলবার পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি বোর্ডের সভা শেষে ঘোষণা করা হয়। মজুরি বোর্ড ঘোষিত শ্রমিকদের বেতন প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শ্রমিকরা। প্রতিদিনের মতোই বুধবার সকাল থেকে কোনাবাড়ী এলাকার স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টস লিমিটেড, রিপন নিটওয়্যার লিমিটেড, ইসলাম গার্মেন্টস ও বেস্ট অল সোয়েটারসহ আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার সামনেই বিক্ষোভ শুরু করলে কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। সকাল ৮টার দিকে কয়েকশ শ্রমিক কাশিমপুরের জরুন মোড়ের সামনে একত্রিত হয়ে হাতে ইট ও লাঠিসোটা নিয়ে মিছিল করতে থাকেন। একপর্যায়ে শ্রমিকরা বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে কাঠ ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরে উত্তেজিত শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে রওশন মার্কেট হয়ে হাতিমারার দিকে এগিয়ে যায়।গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোনাবাড়ী থানার ওসি একেএম আশরাফ উদ্দিন জানান, শ্রমিকদের শান্ত থাকতে অনুরোধ করলে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এ পর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টিয়ারশেল ছুড়লে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, বুধবার সকাল থেকেই শ্রমিকরা আন্দোলন করে। বেশিরভাগ কারখানায় কাজ চলছে এবং তারা উৎপাদন করছে। কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। আমরা তাদের ঘোষণা দিয়েছিলাম— আপনারা নিজেদের জায়গায় থাকেন, আপনাদের ফ্যাক্টরিতে ঢুকেন, কাজ পছন্দ না হলে কাজ বন্ধ রাখেন; কিন্তু অন্য কোনো কারখানায় ভাঙচুর করতে যাবেন না, অন্য কোনো কারখানার শ্রমিকদের নামাতে যাবেন না। কিন্তু তারা আমাদের নির্দেশনা না শুনে অন্য কারখানার শ্রমিকদের নামানোর চেষ্টা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে একজন নারী ও একজন পুরুষ শ্রমিক আহত হন। তাদের স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৮ নভেম্বর ২০২৩
বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি চলছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিক্ষোভ চলমান রয়েছে। এসবকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি হতে না পারে; সেজন্য রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ২২৮ প্লাটুন বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।আজ সোমবার (৬ নভেম্বর) বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, ঢাকাসহ সারা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২২৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে গতকাল রোববার (৫ নভেম্বর) বিএনপি-জামায়াতের ডাকা টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি কেন্দ্র করে ঢাকাসহ আশপাশের জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৬ নভেম্বর ২০২৩
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সহিংসতা, নাশকতা, পুলিশকে মারধর, পুলিশ সদস্য হত্যা ও চলমান অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নানা ঘটনায় ৮৯টি মামলা হয়েছে।২৮ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত আট দিনে দায়ের হওয়া এসব মামলায় বিএনপির ২ হাজার ১৭২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।রোববার (৫ নভেম্বর) দুপুরে এই তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেনতিনি জানান, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও সহিংসতার ঘটনায় ৮৯টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে পল্টন থানায় সবচেয়ে বেশি ১৪টি মামলা হয়েছে। এরপর রয়েছে রমনা মডেল থানা, সেখানে ৬টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় ৪ তারিখ পর্যন্ত ২ হাজার ১৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীতে ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এবং মির্জা ফখরুলসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে রোববার সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। তাদের যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরাও এই অবরোধ পালন করছে। পাশাপাশি জমায়াতে ইসলামীও আলাদা করে এই ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে।এর আগে গত সপ্তাহের শেষ তিন দিন (৩১ অক্টোবর-২ নভেম্বর) টানা অবরোধ পালন করে বিএনপি-জামায়াত। তার আগে ২৯ অক্টোবর হরতাল পালন করে তারা।গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বড় ধরনের সমাবেশ করে বিএনপি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগ। সেদিন দুপুরের দিকে বিএনপির সমাবেশে আসা লোকজনের সঙ্গে কাকরাইল মোড়ের কাছে আওয়ামী লীগের সমাবেশগামী লোকজনের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ সেখানে হস্তক্ষেপ করার পর এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয় এবং বেশকিছু গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। উপস্থিত সাংবাদিকদেরও ব্যাপক মারধর করা হয়। এরপর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও উপুর্যুপরি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিএনপির সমাবেশ ভণ্ডুল করে দেয়। এর ফলে সংঘর্ষ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়, পুলিশের বহু সদস্যকে পিটিয়ে আহত করা হয় এবং পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়ে কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।সমাবেশ বানচালের প্রতিবাদে পরদিন ২৯ অক্টোবর বিএনপি হরতাল পালন করে। হরতালের দিন সকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এখন কারাগারে আছেন। হরতালের পর একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা ৩ দিনের অবরোধ কর্মসূচি দেয় বিএনপি-জামায়াত। ওই কয়েকদিনে মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৫ নভেম্বর ২০২৩
রাজধানীবাসীর বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (৪ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটায় আগারগাঁও স্টেশনের উদ্বোধনস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী।সেখানে প্রথমে ট্রেনের স্বয়ংক্রিয় টিকিট (অস্থায়ী পাস কার্ড) নেন। এরপর কার্ড পাঞ্চ করে প্রধানমন্ত্রী ট্রেনের লাউঞ্জে প্রবেশ করেন। সেখানে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। ট্রেন চলাচলের সংকেত পতাকা নেড়ে ট্রেন চলার সংকেত দেন। পরে ট্রেনেই চড়ে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিলের উদ্দেশে রওনা হন।মতিঝিল স্টেশনে আরেকটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেলে আরামবাগে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় জনসভায় যোগ দেবেন তিনি।এ সময় সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, মুখ্য সচিব তোফাজ্জাল হোসেন মিয়া, শেখ হেলাল এমপি, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিনুল্লাহ নুরী, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এম এন এ সিদ্দিকসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও বিদেশি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।একদিন পর আগামীকাল রোববার (৫ নভেম্বর) থেকে মেট্রোরেলে চড়ে যাওয়া যাবে মতিঝিল স্টেশন পর্যন্ত। অর্থাৎ উদ্বোধনের পরদিনই আগারগাঁও-মতিঝিল অংশটি যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ওইদিন থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলবে স্বপ্নের এ উড়াল ট্রেন।ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এম এন এ সিদ্দিক জানিয়েছেন, শনিবার প্রধানমন্ত্রী এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) নির্মাণ কাজেরও উদ্বোধন করবেন। এ লাইন হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা হয়ে গাবতলী, মিরপুর-১০, গুলশান পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। ৪১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৮ সালে।তিনি বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কারণে শনিবার উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত নিয়মিত মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে।শুরুতে আগারগাঁও-মতিঝিল অংশে তিনটি স্টেশনে মেট্রোরেল থামবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আগারগাঁও থেকে মতিঝিল সেকশনের দৈর্ঘ্য ৮ দশমিক ৭২ কিলোমিটার। এ অংশে ফার্মগেট, সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনে ট্রেন থামবে।উত্তরা-মতিঝিল রুটে ৫ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মেট্রো চলাচল করবে। বেলা সাড়ে ১১টার পর মতিঝিল-আগারগাঁও রুটে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকলেও উত্তরা-আগারগাঁও সেকশনে যথারীতি রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে।এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের প্রথম ধাপের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যেভাবে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়েছিল, একইভাবে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল রুটে আপাতত দৈনিক চার ঘণ্টা চলবে মেট্রোরেল। এ অংশে শুরুতে তিনটি স্টেশন চালু করা হলেও পরে ধাপে ধাপে অন্য স্টেশনগুলোও খুলে দেওয়া হবে।মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধনের কথা ছিল গত ২০ অক্টোবর। পরে সেটি ৯ দিন পিছিয়ে ২৯ অক্টোবর করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর শিডিউলজনিত কারণে ২৯ অক্টোবরের পরিবর্তে ৪ নভেম্বর এ অংশের উদ্বোধনের দিন ঠিক করা হয়।২০১২ সালের জুলাই মাসে মেট্রোরেল প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের মোট দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটার। তবে নগরবাসীর সুবিধার কথা বিবেচনা করে পরবর্তীতে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার রুট বাড়ানো হয়। বর্ধিত অংশের কাজ ২০২৪ সালের জুন নাগাদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এমআরটি লাইন-৬ এর উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মোট দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ২২ কিলোমিটার (২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার)।সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, মেট্রোরেলের প্রতিটি ট্রেন ২ হাজার ৩০০ যাত্রী নিয়ে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। তবে বাঁকযুক্ত এলাকায় গতি কমে যাবে।গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের শুভ উদ্বোধন করেন। ওইদিন তিনি সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গসহ নানা শ্রেণিপেশার দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশন পর্যন্ত মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেন। এর একদিন পর ২৯ ডিসেম্বর সাধারণ যাত্রীদের পরিবহনের মধ্য দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে চালু হয় মেট্রোরেল।মেট্রোরেল উদ্বোধনের দিনই চালু হয় উত্তরা উত্তর ও আগারগাঁও স্টেশন দুটি। এরপর একে একে আরও দুটি স্টেশন চালু হয়। এর মধ্যে গত ২৫ জানুয়ারি পল্লবী স্টেশন ও গত ১৮ ফেব্রুয়ারি উত্তরা সেন্টার স্টেশন এবং ১ মার্চ পঞ্চম স্টেশন হিসেবে চালু হয় ব্যস্ততম মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৪ নভেম্বর ২০২৩
মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ এর আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ আজ উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুর আড়াইটায় বিদ্যুৎচালিত দ্রুতগতির এ মেট্রোরেল উদ্বোধন করা হবে। পরদিন (৫ নভেম্বর) থেকে এটি সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।প্রথমে তিনটি স্টেশন চালুর মাধ্যমে এই অংশের মেট্রোরেল চলাচল শুরু করবে। ইতিমধ্যে স্টেশনগুলোর কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের ধোয়ামোছার কাজ।শনিবার (৪ নভেম্বর) মতিঝিল ও সচিবালয় ও স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার থেকে শ্রমিক সবাই ব্যস্ত সময় পার করছেন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে। মেট্রোরেল প্রকল্পের আওতায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের পাশের রাস্তাটির ধোয়া-মোছা এবং ত্রুটি পরীক্ষা করে সমাধান করা হচ্ছে। কাজ প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকদের অনেকেই বিশ্রাম নিচ্ছেন রাস্তাতেই।প্রকল্পটির সঙ্গে কাজ করা ফোরম্যান ওয়াহিদ মোল্লা বলেন, মেট্রোরেলের ওপরের আর কোনো কাজ নেই। সব কিছু সম্পন্ন। প্ল্যাটফর্মও প্রস্তুত। এখন শুধু ফুটপাতের হালকা কিছু মেরামত চলছে।এদিকে মেট্রোরেল উদ্বোধন উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে মতিঝিল স্টেশনসহ আশপাশের এলাকাতে। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের মোড়, বাংলাদেশ ব্যাংকের মোড়, নটরডেম কলেজ মোড়সহ আশপাশের এলাকাগুলো সর্বসাধারণের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সারি সারি টহল দিচ্ছে র্যাবের গাড়ি।মেট্রোরেলের সচিবালয় স্টেশনের ডেপুটি ম্যানেজার (ইনচার্জ) ইস্রাফিল ইসলাম বলেন, আমাদের সব কাজ শেষ। এখন শুধু বাইরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা চলছে। আমরা কাজ শেষ করে সবকিছু এসএসএফের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি। এখন তাদের অনুমতি ছাড়া স্টেশনে ওঠারও সুযোগ নেই।এ বিষয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, প্রাথমিকভাবে আগারগাঁও-মতিঝিল অংশে চালু হতে যাওয়া তিনটি স্টেশন সম্পূর্ণ প্রস্তুত করা হয়েছে। আজ উদ্বোধনের দিন আগারগাঁও স্টেশনে প্রধানমন্ত্রী একটি ট্রেন উদ্বোধন করবেন। আর পরের ট্রেনে চড়ে মতিঝিল যাবেন।তিনি আরও বলেন, উদ্বোধনের দিন সাধারণ যাত্রীদের জন্য মেট্রোরেল চলাচল বাণিজ্যিকভাবে বন্ধ থাকবে এবং পরের দিন (৫ নভেম্বর) থেকে সাধারণ যাত্রীরা চলাচল করতে পারবেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৪ নভেম্বর ২০২৩
আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।শুক্রবার (৩ নভেম্বর) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে এই হুঁশিয়ারি দেন দলটির আমির মুফতি রেজাউল করিম।১. ১০ নভেম্বর ২০২৩-এর মধ্যে সরকারকে পদত্যাগ করে এবং জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে সব নিবন্ধিত এবং প্রতিনিধিত্বশীল আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।২. বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক কারণে কারারুদ্ধ বিএনপিসহ সব শীর্ষ নেতাদের মুক্তি দিয়ে রাষ্ট্রপতিকে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জাতীয় সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।৩. সরকার এসব দাবি মেনে না নিলে, আন্দোলনরত সব বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করে পরে কঠোর ও বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।৪. জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে এবং অবৈধ সরকারের পতনের লক্ষ্যে বিএনপিসহ বিরোধী দল সমূহের সব শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীর প্রতি সমর্থন ঘোষণা করছি।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০৩ নভেম্বর ২০২৩
২১ বছর পর ক্ষমতায় আসার পর প্রতিটি ক্ষেত্রকে বেসরকারির জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ’৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আমরা সরকারে ছিলাম। সরকারে আসার পর মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। প্রতিটি ক্ষেত্রকে বেসরকারির জন্য উন্মুক্ত করে দিই।বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টসের (বিএফইউজে) প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বিএফইউজে মহাসচিব দীপ আজাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। করোনা শুরু হওয়ার পর বাইরে যাওয়া একবারে বন্ধ ছিল। সাক্ষাৎকার বন্ধ ছিল। মনে হতো একটা বড় জেলে বন্দি। আজ আপনাদের মাঝে আসতে পেরেছি, সেজন্য শুকরিয়া।তিনি বলেন, বাঙালি জাতি যেন যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে যেন দাঁড়াতে পারে, এটাই ছিল তার (বঙ্গবন্ধু) লক্ষ্য। জাতির পিতার সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নিয়ে আমি দেশে ফিরে আসি। তিন বছর সাত মাস তিনি সময় পেয়েছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে তিনি স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করতে চেয়েছিলেন।শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের সাংবাদিক এবং কলাকৌশলীসহ মানুষের কর্মসংস্থান যাতে ব্যাপকহারে হয় তার জন্য বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করে দিই। আমাদের একটি মাত্র টেলিভিশন ছিল। যারা সরকারের থাকত তাদেরই অধীন ছিল। কে আমার গুণগান গাইল, কে আমার গুণগান গাইল না, সেটা আমি দেখি না। আমি সব কিছু মুক্ত করে দিই। ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকারে আসি তখন তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করি। তথ্য কমিশন গঠন করি, অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়ন করি।তিনি বলেন, আমাদের দেশে মানুষ যত বেশি, সংবাদপত্রও তত বেশি। অনেক উন্নত দেশ কিংবা ধনী দেশেও এত সংবাদপত্র নেই। বর্তমানে আমাদের পত্রিকার সংখ্যা ৩২৪১টি। অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল রয়েছে ৩৮৭টি। বাংলাদেশ টেলিভিশনের পাশাপাশি ৩৩টি টেলিভিশন সম্প্রচারে রয়েছে।টেলিভিশন মালিকদের উদ্দেশ করে সরকারপ্রধান কলেন, টেলিভিশনের মালিকরা কিন্তু টেলিভিশন চালাচ্ছে। এত সহজ করে দিলাম মালিকরা কেন কল্যাণ ট্রাস্টে অনুদান দেয় না, সেটাই আমার প্রশ্ন। কয়েকজন দিয়েছে কিন্তু বেশির ভাগ মালিকই দেয়নি। সেটা হিসাব করা যায়– কারা দিল, কারা দেয়নি। না দিলে বন্ধ করে দিতে পারি, সেটা করতে চাই না। বন্ধ করার ব্যবস্থা কিন্তু আছে। কে কে দিয়েছে সেই হিসাবটা আমাকে দিয়েন, কল্যাণ ট্রাস্টে ফান্ড দেবে তারপর চলবে। এখানে মালিক আছে, তাই একটু বললাম, দেখি ভয় পেয়ে কিছু দেয় নাকি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের দ্বিতীয়টা উৎক্ষেপণের ব্যবস্থা নিয়েছি।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০২ নভেম্বর ২০২৩
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, তারা বাংলাদেশে সহিংসতার ঘটনাগুলো খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে এবং বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ।গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আমেরিকা-ইউরোপ বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন। প্রথম প্রশ্ন হলো, যুক্তরাষ্ট্র কি অবগত যে ভারতের প্রভাবের কারণে, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার প্রতি ভারতের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সমর্থনের কারণে, বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অসম্ভব?দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সংবাদ সম্মেলনে কিছু উত্তেজক ও অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন, যা ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত। বিশ্বের খুব কম মানুষই শেখ হাসিনার শারীরিক ভাষা ও ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ বোঝেন। তিনি একই কাজ করেছিলেন ২০১৮ সালে, যখন তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িতে হামলা হয়েছিল। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বসে একই ঠাট্টা-বিদ্রূপ করেছেন।জবাবে মিলার বলেন, তারা স্পষ্ট করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য সরকারের কাছে যেমনটা আশা করে, বাংলাদেশ সরকারের কাছেও তেমনটা আশা করে। আর তা হচ্ছে—তারা কূটনীতিকদের সুরক্ষায় ভিয়েনা কনভেনশনের বাধ্যবাধকতা মেনে চলবে। তিনি আগেও বলেছেন, আগের দিনও বলেছেন, আর তা হলো, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সব রাজনৈতিক দল, ভোটার, সরকার, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমসহ সবার। বাংলাদেশের জনগণের চাওয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই। তা হলো, বাংলাদেশে যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়।আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধীদের সংলাপে বসার ব্যাপারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের আহ্বানের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যদি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সংলাপ করেন, তাহলে তিনি (শেখ হাসিনা) বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ করবেন। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো সংলাপে বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি ও তার প্রশাসন বিরোধীদের প্রতি খুবই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। গতকাল পুলিশের হাতে বিরোধীদলীয় দুই নেতা নিহত হয়েছেন। বিরোধীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঢাকায় দুই শীর্ষ বিরোধী নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিদিনই তারা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হতে পারে বলে কি আপনি মনে করেন?জবাবে মিলার বলেন, প্রশ্নের প্রথম অংশ নিয়ে তার কোনো মন্তব্য নেই। এর পরিবর্তে তিনি যা বলবেন, তা হলো—অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তিনি আগে যে লক্ষ্যগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন, তারা বিশ্বাস করেন, তা অর্জনের জন্য সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে তিনি (মিলার) বলেন, তারা বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা সহিংসতার ঘটনাগুলো খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন। তারা সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। এই সম্পৃক্ততা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে, শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে সবাই যাতে একত্রে কাজ করেন, সে জন্য তারা সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন, সম্পৃক্ত হচ্ছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০১ নভেম্বর ২০২৩
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ– পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। আজ বুধবার ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক সম্মেলনে এ নির্বাচন হয়।নয়াদিল্লি থেকে ফেসবুক পোস্টে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এ তথ্য জানান। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাঁর পোস্টে লিখেছেন, সায়মা ওয়াজেদ ৮-২ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আগামী পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন।সায়মা ওয়াজেদ তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে নির্বাচিত হওয়ার খবর জানান। তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত করায় আমি ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের অঞ্চলের জনস্বাস্থ্যে অবদানের জন্য আমি বিদায়ী পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিংয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী বছরের (২০২৪) ১ ফেব্রুয়ারিতে সায়মা ওয়াজেদ তাঁর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।এর আগে বাংলাদেশ সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক পদে সায়মা ওয়াজেদকে মনোনীত করেছিল। ডব্লিউএইচও দক্ষিণ–পূর্ব অঞ্চলবিষয়ক কার্যালয় ওই সংস্থার ছয়টি আঞ্চলিক অফিসের মধ্যে একটি। সায়মা ওয়াজেদ ১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ২০০২ সালে ক্লিনিক্যাল মনস্তত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আজ দুপুরে তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ আমরা একটা সুখবর পেয়েছি। খুবই সুখবর। আমরা অনেক দিন ধরেই এ নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালাচ্ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০১ নভেম্বর ২০২৩
রাজধানীর মিরপুরে আবারও সড়কে অবস্থান নিয়েছে পোশাক শ্রমিকরা। এতে মিরপুর ১০ নম্বর থেকে ১৪ নম্বর পর্যন্ত সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রিকশাও এ পথে চলতে দেওয়া হচ্ছে না। সাংবাদিকদের ছবি তুলতে এবং ভিডিও করতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত পোশাক শ্রমিকরা মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে অবস্থান নেয়। এ সময় এ এলাকায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। পরে সকাল ৯টায় মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর থেকে ১৪ নম্বরের দিকে চলে যায় তারা।এ সময় কয়েকটি গার্মেন্টসের ফটক ভাঙচুর করতে দেখা যায় শ্রমিকদের। সকাল ১০টার দিকে শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে আবার মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরের দিকে যায়।গার্মেন্ট শ্রমিক ইমতিয়াজ বলেন, শ্রমিকদের একটি বড় অংশ মিরপুর ১১ নম্বরে অবস্থান নিয়েছে। এখন তারা সেখানেই জড়ো হবেন।সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেওয়ার বিষয় তিনি বলেন, তাদের আন্দোলনের বিষয়টি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে দুটি টেলিভিশন চ্যানেল। সেকারণে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা তাদের কাজে বাধা দিচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ০১ নভেম্বর ২০২৩
খুনিদের সঙ্গে কিসের সংলাপ, সে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সময়মতোই নির্বাচন হবে। কে চোখ রাঙাল আর কে চোখ বাঁকাল, তা নিয়ে পরোয়া করেন না।ব্রাসেলসে ‘গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম’ সম্মেলনে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা জানাতে আজ মঙ্গলবার বিকেলে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রশ্নোত্তরে এ কথা বলেন তিনি।সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত শর্তহীনভাবে সংলাপের আশা প্রকাশ করেছেন। আপনি এটাকে কীভাবে দেখছেন?জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কার সঙ্গে সংলাপ? বিরোধী দলটা কে? বিরোধী দল হচ্ছে, যাদের সংসদে আসন আছে। এর বাইরেরগুলো আমেরিকায়ও বিরোধী দল হিসেবে দেখে না। ট্রাম্পকে তারা কী বলবে? তারা তো তাদের বিরোধী দল। যদিও আমরা তাদের পদ্ধতিতে না।’এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘এই যে মানুষগুলো হত্যা করা হলো, তখন তাঁকে (পিটার হাস) প্রশ্ন করা হলো না কেন? যখন একটা উপনির্বাচনে হিরো আলমকে কেউ মেরেছে, তখন তাঁরা বিচার দাবি করেছে। এখন যখন পুলিশ হত্যা করল, সাংবাদিকদের ওপর হামলা করল তখন বিচার দাবি করল না কেন?’শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেভাবে পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করেছে, এরপর খুনিদের সঙ্গে কিসের বৈঠক? কিসের আলোচনা? যারা এভাবে মানুষকে হত্যা করতে পারে, যারা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ধ্বংস করতে পারে, তাদের সঙ্গে ডায়ালগ? সে বসে ডিনার খাক, সে বসে ডায়ালগ করুক। এটা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। খুনিদের সঙ্গে ডায়ালগ তার দেশের মানুষও চাইবে না। বিএনপি–জামায়াতকে মানুষ ঘৃণা করে। তাদের দুর্নীতির জন্য কানাডা থেকে লোক এসে সাক্ষ্য দিচ্ছে।’২৮ অক্টোবরের ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘এখন তারা চুপ কেন? অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো এখন চুপ কেন? তাদের মানবিক বোধগুলো গেল কোথায়?’ দেশের বুদ্ধিজীবীরা চুপ কেন, সে প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী।আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, কোন বিদেশি শক্তি আমাদের রাজনীতিতে চোখ রাঙাচ্ছে? নির্বাচন নিয়ে নানাজন নানা মন্তব্য করছেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন হবে এবং সময়মতোই হবে। কে চোখ রাঙাল আর কে চোখ বাঁকাল, ওটা নিয়ে পরোয়া করি না।’ দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধু ঢাকার উন্নয়ন নয়, গ্রামেও অনেক উন্নয়ন হয়েছে।ওই সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবেও সংলাপ নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যারা খুন করার পরও বলে, ডায়ালগ করতে হবে। কার সঙ্গে ডায়ালগ করতে হবে? ট্রাম্প সাহেবের সঙ্গে কি বাইডেন ডায়ালগ করতেছে? যেদিন ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেন ডায়ালগ করবেন, সেদিন আমি করব।’সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ আয়োজন করে। এ কর্মসূচি উপলক্ষে সারা দেশ থেকে দলটির নেতা–কর্মীরা নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় সমবেত হন। তবে ওই দিন বিএনপির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য এবং বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের এক নেতা নিহত হন। সংঘর্ষের কারণে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। পরদিন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের গ্রপ্তার অভিযানের মুখে আত্মগোপনে গেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা। এর মধ্যেই আজ থেকে সারা দেশে বিএনপির সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।এই পরিস্থিতিতে আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৈঠক শেষ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে কোনো পক্ষের সংঘাতের জায়গা নেই। তিনি আশা করেন, বাংলাদেশে উদ্বেগ প্রশমন এবং একটি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথ খুঁজতে সব পক্ষ শর্তহীন সংলাপে বসবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩১ অক্টোবর ২০২৩
মজুরি বাড়ানোর দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের চলমান বিক্ষোভ থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক বাজার এলাকায় অবস্থিত পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা করা হয়েছে। উত্তেজিত শ্রমিকেরা ফাঁড়ির ফটক, কার্যালয়ের কাচ ও সাইনবোর্ড ভাঙচুর করেছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান বলেন, কয়েক হাজার শ্রমিক মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল থেকে মৌচাক বাজার এলাকায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় মহাসড়কে ১০-১২টি যানবাহন ভাঙচুর করেন তাঁরা। শিল্প পুলিশ ও থানা-পুলিশ তাঁদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে শত শত শ্রমিক ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে ধাওয়া দেন। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ মৌচাক বাজার এলাকায় অবস্থিত কালিয়াকৈর থানাধীন পুলিশ ফাঁড়িতে অবস্থান নেয়। এ সময় শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালান।সাত দিন ধরে শ্রমিকদের অসন্তোষের কারণে আজ থেকে গাজীপুরের অধিকাংশ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। কারখানা বন্ধ থাকলেও আজ সকালে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকেরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ আছে।শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৩ অক্টোবর থেকে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ও তেলিচালা এলাকার কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে অবরোধ শুরু করেন। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে শ্রমিক বিক্ষোভ গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীর নাওজোর, ভোগরা, চান্দনা চৌরাস্তাসহ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। আজ সকাল থেকে শ্রমিকেরা মৌচাক ও তেলিচালা এলাকায় মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ ছাড়া গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। বিএনপির ডাকা অবরোধের মধ্যে স্বল্প পরিমাণ যানবাহন চলাচল করলেও শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে সকাল সাড়ে আটটা থেকে সেগুলোর চলাচল বন্ধ আছে। বেতন বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিকেরা নানা ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন।আজ সকালে কোনাবাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার সবচেয়ে বড় কারখানা তুসুকা গ্রুপের প্রধান ফটকে বড় একটি ব্যানার ঝুলছে। এতে লেখা আছে, ‘অনিবার্য কারণে কারখানার সব কার্যক্রম আগামী ২ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে’, একই এলাকার এম এম নেটওয়ার্ক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শুধু মঙ্গলবারের জন্য। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি কারখানার সামনে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখা গেছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিক আন্দোলনের কারণে কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই খুলে দেওয়া হবে।গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকার তুসুকা গ্রুপের নিটিং সেকশনের শ্রমিক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বেতন দেওয়া হয় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এই টাকায় আমাদের সংসার চলছে না। ঘরভাড়া দেওয়ার পর যা থাকে, তা দিয়ে কোনোভাবে বেঁচে আছি। এখন আমাদের দাবি, সর্বনিম্ন বেতন ২৩ হাজার টাকা দিতে হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলতে থাকবে।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩১ অক্টোবর ২০২৩
গত ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে প্রাণঘাতী সেই সহিংসতার ঘটনায় পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করারও আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।এছাড়া সহিংসতার মধ্যে পুলিশ ও রাজনৈতিক কর্মী হত্যা এবং বাস ও হাসপাতালে আগুন দেওয়াকে অগ্রহণযোগ্য বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিং থেকে এ তথ্য জানানো হয়।এছাড়া বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সমর্থন ও এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।স্থানীয় সময় সোমবার (৩০ অক্টোবর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক ম্যাথিউ মিলারের কাছে গত ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার বিষয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিরোধীদের মহাসমাবেশে হামলা এবং সহিংসতা সম্পর্কে আমরা গত সপ্তাহান্তে আপনার বক্তব্য দেখেছি। এই সহিংসতা মূলত পুলিশ দিয়ে এবং ইন্টারনেট বন্ধ করে সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই সংঘটিত হয়। আর এরপর থেকে পুলিশ প্রধান বিরোধীদল বিএনপির মহাসচিবসহ শতাধিক বিরোধী রাজনীতিক, বিরোধী দলের নেতাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা দায়ের করেছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে এর প্রতিক্রিয়া জানাবে?জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় যে রাজনৈতিক সহিংসতা হয়েছে আমরা তার নিন্দা জানাই। একজন পুলিশ সদস্য, একজন রাজনৈতিক কর্মীকে হত্যার ঘটনা এবং হাসপাতাল ও বাসে আগুন দেওয়া অগ্রহণযোগ্য। সাংবাদিকসহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতাও অগ্রহণযোগ্য। ২৮ অক্টোবরের সমাবেশে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত এবং সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি করতে আমরা কর্তৃপক্ষকে উৎসাহিত করছি। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সবার। ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যম; সবারই এই দায়িত্ব রয়েছে।পরে ওই সাংবাদিক ঢাকায় মার্কিন কূটনীতিকদের ওপর সরকারের গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে, সরকারপন্থি গণমাধ্যম ও তাদের সমর্থকরা বিরোধী রাজনৈতিক নেতা এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেছে। এই প্রতিবেদনগুলোতে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, সরকার মার্কিন কূটনীতিকদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করছে। আপনারা কি বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন কূটনীতিকদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করার অনুমতি দিচ্ছেন?জবাবে মিলার বলেন, আমি শুধু বলব, কূটনীতিকরা বিভিন্ন ধরনের ও বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলে থাকেন। এর মধ্যে সুশীল সমাজ ও সংস্থা, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী নেতা, সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষাবিদসহ অন্যান্য অনেক ধরনের সংস্থা এবং ব্যক্তিও রয়েছেন। কূটনীতিকরা তাদের দৈনন্দিন কাজের অংশ হিসেবেই এটি করেন এবং আমরা সেটি চালিয়ে যাবো।পরে জ্যাকব মিল্টন নামে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, গত ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে পুলিশের ইউনিফর্ম পরিহিত সশস্ত্র ক্যাডাররা পেট্রোল বোমা ও গানপাউডার ব্যবহার করে নিরীহ বেসামরিক মানুষকে হত্যা করে। এসময় সরকারি সম্পত্তির পাশাপাশি জনগণের সম্পত্তিও ধ্বংস করে। সেই ক্ষমতাসীন দল বলছে, বিরোধী দলের কর্মীরা ওই হামলা করেছে। তারা গত ১৪ বছর ধরেই এটি করছে। আমি মনে করি আন্তর্জাতিকভাবে সবাই স্বীকার করেছে, এ সমস্ত হামলা— সেটাকে সন্ত্রাসী হামলা বলুন বা যেটাই বলুন, ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডার ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ কিছু মানুষ করছে। আর তাই আমেরিকার কি তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার কোনও পরিকল্পনা আছে?জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি মনে করি বাংলাদেশ সম্পর্কিত পূর্ববর্তী প্রশ্নের উত্তরে আমি যা বলেছি তা এখানেও প্রযোজ্য। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সমর্থন করার জন্য প্রয়োজন হলে আমরা পদক্ষেপ নেব এবং আমি কখনোই সেগুলো নিয়ে আগে থেকে এখানে কথা বলব না।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ৩১ অক্টোবর ২০২৩
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, কোনো সংকট সৃষ্টি হলে তা নিরসনে আমরা অত্যন্ত আন্তরিক। আমাদের প্রত্যাশা আয়োজক হিসেবে নির্বাচন আয়োজন করতে চাই। প্রত্যাশা প্রথম থেকেই ছিল, কিন্তু এখনও নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশটুকু হয়ে ওঠেনি।বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) গণমাধ্যম সম্পাদকদের সঙ্গে এক কর্মশালার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্যে এ কথা বলেন সিইসি।সিইসি বলেন, আমাদের বিষয়টা হচ্ছে, আন্তরিক যে পরিবেশ সেটা অনুকূল হয়ে উঠুক। এজন্য সবাইকে নিরন্তর আহ্বান করে যাচ্ছি, সংলাপ করেছি। যারা নির্বাচনে আসতে চান না তাদের আমার পক্ষ থেকে আধা সরকারিপত্র দিয়েছি। কিন্তু সাড়া পাইনি।তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক কৌশল তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তাদের নিজস্ব কৌশল থাকতে পারে। আমরা তার মধ্যে অনধিকার চর্চা করব না।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৬ অক্টোবর ২০২৩
আন্দোলনের নামে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে বিএনপি-জামায়াত চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতসহ আরও অনেকেই মাঠে নামতে চায়। আন্দোলন করুক, এই ব্যাপারে আমাদের কোনো কথা নাই। কিন্তু তারা যদি আবার ওই রকম অগ্নি সন্ত্রাস বা কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করে বা কোনো ধরনের দুর্বৃত্তপনায় জড়ায় আমরা কিন্তু ছাড় দেব না। এটাই বাস্তবতা।’ প্রধানমন্ত্রী আজ শনিবার নবনির্মিত ১৫ তলা বিশিষ্ট বার কাউন্সিল ভবন উদ্বোধন পরবর্তী আইনজীবী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ এর আয়োজন করে। এর আগে আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার হাইকোর্ট সংলগ্ন এলাকায় নবনির্মিত অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ১৫ তলা বিশিষ্ট বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ভবন উদ্বোধন করেন।সরকারপ্রধান সে সময় দেশব্যাপী অগ্নিসন্ত্রাসের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন এই বিএনপি আমাদের কত নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। চোখ তুলে নিয়েছে ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে তাদের হাড় গুড়গুড়ে করে হত্যা করেছে। এরপর আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্ট করল ২০১৩,১৪ ও ১৫ সালে অগ্নি সন্ত্রাস করে। তারা সে সময় ২৯ জন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে। ৩ হাজার ২২৫ জন লোককে অগ্নিদগ্ধ করেছে, ৫ শ’ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ৩৮৮টি গাড়ি, সাধারণ মানুষের প্রাইভেট কার, সিএনজি, ২৯টি রেল,৯টি লঞ্চে অগ্নিসংযোগ করেছে। চলমান প্রাইভেট গাড়ি, বাস ও ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যা করেছে।’শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে যারা জড়িত জেলায় জেলায় যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং মামলা চলমান রয়েছে সে মামলাগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। আইনজীবী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে এটা আমার অনুরোধ। কারণ, এদের যদি সাজা না দেওয়া যায়; এরা এত অন্যায় করেছে যেখানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই সব থেকে বেশি নির্যাতিত। তাহলে তাদের শাস্তি হবে না কেন?’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসব অপরাধীর মামলা কেবল চালালেই হবে না, তারা যেন যথাযথ শাস্তি পায় তার ব্যবস্থা আপনাদের করতে হবে।’ তিনি বলেন, বিচারহীনতা যেন এদেশে আর না চলে। তিনি জাতির পিতা হত্যা এবং ৩ নভেম্বরের জেলহত্যার বিচার করতে পারায় মহান আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করেন। এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত অভিযোগ করে তিনি জিয়াকে এর ‘বেনিফিশিয়ারি’ বলেও উল্লেখ করেন।শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে যেটা আগে করেছিল। সেটা যেন আর করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমার একটা অনুরোধ আপনাদের কাছে, কোথাও যেন এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না থাকে। যে যা পারেন তাই উৎপাদন করেন।’অনুষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধুর আইনি দর্শন’ শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয় এবং পরে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন।আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২১ অক্টোবর ২০২৩