দুপুরে রাজধানীর গাবতলীতে দলীয় কর্মসূচি পালনকালে আহত হয়ে হাসপাতালে যান ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান। সেখানে তাকে দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি প্রতিনিধি দল। তারা আমানউল্লাহ আমানের জন্য একটি ফলের ঝুড়ি ও সঙ্গে দুপুরের খাবার নিয়ে যান।বিকালে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে একটি গাড়িতে আমানউল্লাহ আমান ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলেন। তিনি বলেন, আহত অবস্থায় হাসপাতালে থাকার সময় ওষুধ দিয়ে আমাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। এমন সময় কে বা কারা তাকে দেখতে এসেছিল এবং ফলের ঝুড়ি দিয়ে গেছে তা আমি বুঝতে পারিনি। চলমান আন্দোলনে আমার ভূমিকার পিঠে ছুরি মারার জন্য, নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার জন্য এই নাটক সাজানো হয়েছে।আমানউল্লাহ আমান বলেন, সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এই আন্দোলনে আছি। এতে মৃত্যু হলেও পিছপা হব না। এ বিষয়ে নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৯ জুলাই ২০২৩
বিএনপি নেতা আমানুল্লাহ আমানকে দেখতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব-১ এম এম ইমরুল কায়েস রানা এ তথ্য জানান।এর আগে গাবতলীতে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি থেকে ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গেছে পুলিশ। শনিবার (২৯ জুলাই) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আমানউল্লাহকে পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাবতলী এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নিয়ে আমানউল্লাহ আমান রাস্তায় নামেন। পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে বলা হয় রাস্তা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য, কারণ ডিএমপির পক্ষ থেকে কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর পর কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়। এর কিছুক্ষণ পর মাজার রোডের নাবিল পরিবহনের সামনে এসে আমানউল্লাহ আমান রাস্তায় শুয়ে পড়েন। পরে তাকে পুলিশ ভ্যান তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।এ বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মাশুক বলেন, তিনি অসুস্থ কি না জানি না। তবে তাকে পুলিশের গাড়িতে তুলে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৯ জুলাই ২০২৩
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীর নয়াবাজারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার কথা ছিল বিএনপিসহ দলটির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের। তবে, হঠাৎ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বিএনপি ধোলাইখাল মোড়ে অবস্থান নেয়। সেখানে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।শনিবার (২৯ জুলাই) পূর্বনির্ধারিত সময় বেলা ১১টায় ধোলাইখাল মোড়ে অবস্থান নেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সেখানে নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে জড়ো হতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১১টায় পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সরে যেতে বলে পুলিশ। তবে, তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন নিয়ে অনড় অবস্থানের কথা জানায়। বিএনপির নেতাকর্মীরা সরে না যাওয়ায় একপর্যায়ে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। জবাবে ইট-পাটকেল ছোড়েন অবস্থানকারীরা। বর্তমানে ধোলাইখাল এলাকায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে, পুলিশ থেকে কিছুটা দূরে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন নেতাকর্মীরা।এ বিষয়ে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাফর হোসেন বলেন, ধোলাইখালে একটু সমস্যা হয়েছে। পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছি।এদিকে রাজধানীর নয়াবাজারে কর্মসূচি পালনের সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে পুলিশ ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তার মাথার একপাশ থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। সংঘর্ষের সময় সেখানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও উপস্থিত ছিলেন।অন্যদিকে, রাজধানীর গাবতলী এলাকা থেকে বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর গাবতলী থেকে তাকে পুলিশের জিপে করে নিয়ে যাওয়া হয়।এদিন সকাল থেকে গাবতলীতে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। ত্রিমুখী সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন আমান উল্লাহ আমান। পরে পুলিশ তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।এছাড়া রায় সাহেব বাজার এলাকা থেকে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদসহ ৮-১০ জনকে পুলিশ আটক করেছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৯ জুলাই ২০২৩
গাবতলীতে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানকে আটক করেছে পুলিশ। আজ শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আমানউল্লাহকে পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়।আজ বেলা ১১টার দিকে খালেক পরিবহনের বাস কাউন্টারের সামনে আমানউল্লাহ আমানের নেতৃত্বে বিএনপির নেতা–কর্মীরা সড়কের একপাশে অবস্থান নেন। কাছাকাছি দূরত্বেই অবস্থান নেন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরাও। বিএনপির অন্তত পাঁচজন নেতা–কর্মীকে ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে যান আমানউল্লাহ আমান। সেখানে উপস্থিত পুলিশের এডিসি নাজমুল ফিরোজ তাঁকে বলেন, ‘আপনাদের এখানে অবস্থানের অনুমতি নেই। পাঁচ মিনিট সময় দেওয়া হলো, আপনারা চলে যান।’আমানউল্লাহ বলেন, ‘আমি কোথাও যাচ্ছি না।’ এরপর পুলিশ সদস্যরা দুবার তাঁকে পুলিশের গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন। এরপর পুলিশ ধাক্কা দিয়ে আমানউল্লাহ আমানসহ বিএনপির নেতা–কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে মাজার রোডের নাবিল পরিবহনের সামনের সড়কে আমানউল্লাহ আমান শুয়ে পড়েন। পুলিশ তাঁকে সরানোর চেষ্টা করে। পরে সেখান থেকে আমানউল্লাহকে একটি পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়।ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখে আজ বেলা ১১টা থেকে ৫ ঘণ্টার ‘অবস্থান’ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। বিকেল চারটা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হবে। গাবতলী, উত্তরা, নয়াবাজার ইউসুফ মার্কেট ও শনির আখড়া এলাকায় এই অবস্থান কর্মসূচি হবে। তবে এসব জায়গায় সকাল থেকেই বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী অবস্থান নেন। তবে বেলা ১১টার পর থেকে বিএনপির নেতা–কর্মীরা মাঠে নেমেছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৯ জুলাই ২০২৩
রাজধানীর গুলিস্তানে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক জন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে তার বয়স ২৫ বলে জানা গেছে।শুক্রবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। আহতরা হলেন- মো. আরিফুল (১৮), মো. জোবায়ের (১৮), মো. রনি (৩২) ও মো. মোবাশ্বের (১৮)।বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (ঢামেক) পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি সন্ধ্যার পর গুলিস্তানে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মরদেহ হাসপাতালে এসেছে এবং চারজন আহত অবস্থায় এসেছে। এই দুই গ্রুপের রাজনৈতিক পরিচয় কী, এ মুহূর্তে আমরা বলতে পারছি না।এ বিষয়ে মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম বলেন, আমরা শুনেছি গুলিস্তানে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহত একজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা গেছেন। কোন দল এরকম সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা এখনো সুনির্দিষ্টভাবে জানতে পারিনি। তবে ধারণা করছি আওয়ামী লীগের কোনো দুই গ্রুপ হতে পারে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৮ জুলাই ২০২৩
শনিবার বিএনপির ঢাকার সব প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যদি রাস্তা বন্ধ করে, তাহলে তাদের চলার রাস্তাও বন্ধ করে দেওয়া হবে।‘বিএনপি-জামায়াতের হত্যা, ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্যের’ প্রতিবাদে শুক্রবার বিকালে রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনের শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।বিএনপির এক দফা নয়াপল্টনের কাদা পানিতে আটকে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এবার খেলা হবে দুর্নীতি-লুটপাটের বিরুদ্ধে, তারেকের বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, ভুয়া তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে। বিএনপির এক দফা নয়াপল্টনের কাদা পানিতে আটকে গেছে।’ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারেক রহমান লন্ডন থেকে ফরমায়েশ দিচ্ছে, আর এদিকে মির্জা ফখরুলরা লাফালাফি করছে। আমির খসরু বলছে গণভবন নাকি ছেড়ে দিতে হবে। জনগণ শেখ হাসিনাকে গণভবনে বসিয়েছে, যতদিন জনগণ চাইবে ততদিন তোমরা কিছুই করতে পারবে না।’তিনি বলেন, ‘গোলাপবাগের গরুর হাটে হোঁচট খেয়েছে ক্ষমতা। আর এক দফা নয়াপল্টনে আটকে গেছে, খাদে পড়ে গেছে। ক্ষমতার স্বাদ কোনোদিন পূর্ণ করতে পারবে না। তারেক রহমান ভিডিওতে নির্দেশ দেয়। ফখরুলকে বলে আন্দোলনে টাকার অভাব হবে না।’আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমেরিকার কিছু কংগ্রেসম্যানকে টাকা দিয়ে জাতিসংঘ ও মার্কিন অ্যাম্বাসেডর বানিয়ে চিঠি লেখাচ্ছে তারেক রহমান। তিনি বলেন, লবিস্ট নিয়োগ করে টাকা দিয়ে কিছু মানুষকে দিয়ে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের কাছে চিঠি লেখে। এই দুঃসাহস তারা পেল কোথায়? হাজার হাজার কোটি টাকা তারা পাচার করেছে।তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শেকড় অনেক গভীরে। দেশি-বিদেশি যারাই চোখ রাঙাচ্ছে, কোনো লাভ হবে না।আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ নেতারা।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৮ জুলাই ২০২৩
ঢাকা শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে শনিবার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এদিন বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে দলটি।শুক্রবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।ফখরুল বলেন, ‘ভোটাধিকার হরণকারী কর্তৃত্ববাদী সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ও ইসি পুনর্গঠন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ এক দফা দাবিতে শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঢাকার সব প্রবেশপথে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো।’তিনি বলেন, ‘আমরা যুগপৎ ধারায় যে আন্দোলন শুরু করেছি, সেই অনুযায়ী শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঢাকার সব গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করছি। আমাদের এই কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। আমরা আশা করব, প্রশাসন এই কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে দিয়ে তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে।’বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে আমরা একা নই, বিদেশি রাষ্ট্রগুলো বলছে- এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’গত দুই দিনে মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ‘কয়েক হাজার নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে’ অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘কিন্তু গ্রেফতার করে কি সমাবেশে আটকাতে পেরেছেন, পারেননি।’প্রশাসনকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দলীয় সরকারের আদেশ-নির্দেশে জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নেবেন না। অন্যায়, বেআইনিভাবে জনগণকে গ্রেফতার করবেন না।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৮ জুলাই ২০২৩
আবারও বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবি করলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যদি নিজেদের ভালো চান, এখনো সময় আছে। আমাদের এক দফা দাবি, সেটা মেনে নিন আর পদত্যাগ করুন। কারণ, সমগ্র বাংলাদেশ আজ জেগে উঠেছে। যদি পদত্যাগ না করেন, এ দেশের মানুষ আপনাদের পতন করেই ছাড়বে।’আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। বর্তমান সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এ মহাসমাবেশ করে বিএনপি।মহাসমাবেশ থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। আগামীকাল শনিবার রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখগুলোয় অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিএনপির মহাসমাবেশ শেষ হয়।বিএনপির মহাসচিব বলেন, সারা দেশ থেকে গণতন্ত্রকামী সাধারণ মানুষ, ছাত্র-যুবসমাজ, নারী, প্রবীণ মানুষ আজকের এ মহাসমাবেশে উপস্থিত হয়েছে। এই মহাসমাবেশ বাংলাদেশের পরিবর্তনের মাইলফলক।প্রশাসনকে হুঁশিয়ার করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে বেআইনিভাবে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না। সংবিধান অনুযায়ী, আইনের শাসন মেনে কাজ করেন। গ্রেপ্তার, হয়রানি বন্ধ করুন, কারাগারে যাঁদের আটক রেখেছেন, তাঁদের মুক্তি দিন।’ তিনি অভিযোগ করেন, সাধারণ মানুষের হয়ে যিনি আন্দোলন–সংগ্রাম করেন, সেই তারেক রহমানকে বেআইনিভাবে সাজা দিয়ে, অত্যাচার করে এ দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে অবৈধভাবে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করেছে।মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, এই বেআইনি, অসাংবিধানিক, ভোট চোর আওয়ামী লীগ সরকার জনগণকে বোকা বানিয়ে বারবার ক্ষমতায় থাকতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ এই সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে। তারা একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখতে চায়। তিনি আরও বলেন, এই গণবিরোধী, অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকার সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। সাধারণ মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেন না। এ জন্য মানুষ ভোটেও অংশগ্রহণ করেন না। জনগণের এখন নির্বাচনব্যবস্থার ওপর কোনো আস্থা নেই।বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকারের পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছি। এ আন্দোলনে শরিক ৩৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে একমত হয়েছি যে এই অবৈধ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। কারণ, তাদের অধীনে নির্বাচন হলে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারবেন না।’ তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই অবৈধ সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার কথা, দফা এক, দাবি এক—এই সরকারের পদত্যাগ।’মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাষ্ট্রযন্ত্র—সবকিছুকে দলীয়করণ করা হয়েছে। এ দেশের জনগণ আর এটা মেনে নেবেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা একা নই, আন্তর্জাতিক বিশ্বও দেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়।’মহাসমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা থেকে শুরু করে সারা দেশ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মী ও সমর্থকেরা অংশগ্রহণ করেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৮ জুলাই ২০২৩
গণমাধ্যমকর্মীদের সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘আপনাদের কারণে রাষ্ট্রদূতরা বিভিন্ন রকমের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাতব্বরি করেন। আর আপনারা সবসময় ময়লা খোঁজেন। আপনাদের অভ্যাসটা খারাপ হয়ে গেছে।’বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘দেশ এগিয়ে চলেছে’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসব শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।সম্প্রতি ঢাকা- ১৭ আসনের উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় বিবৃতি দেয় ১৩টি পশ্চিমা মিশন। ওই বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার পশ্চিমা ১৩ মিশনকে ডেকে ঢাকার অসন্তোষের কথা জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডাকে বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় হাজির হন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা। এ ছাড়া কানাডা, ডেনমার্ক ও সুইডেন দূতাবাসের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারাও আসেন। হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় বিবৃতি দেওয়া পশ্চিমা মিশনের এসব কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কূটনৈতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করে ঢাকার যেসব দূতাবাস গণমাধ্যমে যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল তাদের দূতদের আমরা ডেকেছিলাম। তাদের কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণে আমরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছি। আমরা বলেছি, এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা যা দিয়ে সারাদিনের শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনকে মূল্যায়ন করা ঠিক হবে না।’মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, প্রধানমন্ত্রী রোম সফর করে ঢাকায় ফিরেছেন। হিরো আলমকে নিয়ে বিবৃতি দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে ইতালিও ছিল। দেশটির সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে মন্ত্রীপর্যায়ে এ বিষয়ে কোনো অসন্তোষ জানানো হয়েছে কি না? উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এটা নিয়ে কিছু বলিনি। এটা ভদ্রতার জায়গা। আপনারা (গণমাধ্যমকর্মী) ময়লা, এগুলো নিয়ে আলাপ করবেন। আমরা এটা নিয়ে আলাপ করিনি। আর আপনারা সবসময় ময়লা খোঁজেন। আপনাদের (গণমাধ্যমকর্মী) অভ্যাসটা খারাপ হয়ে গেছে।’বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের কথা বলা সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে— উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘সাম হাউ, এটা একটা কালচার তৈরি হয়েছে অনেক দিনের। এটা বন্ধ করা উচিত। এখন সময় এসেছে এটা বন্ধ করার।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৭ জুলাই ২০২৩
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক ১৪ জন সংসদ সদস্যকে নিয়ে পাবনার ঈশ্বরদীতে জামায়াত নেতার বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করার খবরে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুকসহ অন্তত পাঁচজন ঊর্ধ্বতন নেতার কাছে মন্তব্য জানতে চাইলে সবাই বলেছেন, ‘নো কমেন্ট’। জামায়াত নেতার প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় গাছের চারা রোপণ করেন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক ও তাঁর সঙ্গে থাকা সংসদ সদস্যরাতবে বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছে জেলা জামায়াত। জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘আমরা সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণ করি, সেখানে রাষ্ট্রের এমপি, মন্ত্রী পর্যায়ের লোকজন আসতেই পারেন। এতে দোষের কিছু আছে বলে মনে করি না।’গতকাল বুধবার দুপুরে ঈশ্বরদী পৌরসভা জামায়াতের আমির ও আরআরপি গ্রুপের মালিক গোলাম আজমের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়। ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক সকালে ঈশ্বরদীর রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিদর্শনে যান। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন পাবনা-৪ (আটঘরিয়া-ঈশ্বরদী) আসনের সংসদ সদস্য নূরুজ্জামান বিশ্বাস, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার, খালেদা খানম, শিরীন আহমেদ, জিন্নাতুল বাকিয়া, বাসন্তী চাকমা, শামসুন নাহার, নার্গিস রহমান, মনিরা সুলতানা, নাদিরা ইয়াসমিন, রত্না আহমেদ, সালমা চৌধুরী, সেলিনা ইসলাম ও ডরথী রহমান।পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে ডেপুটি স্পিকার শামসুল হকের নেতৃত্বে সংসদ সদস্যরা জামায়াত নেতা গোলাম আজমের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ ও বিশ্রাম করেন। পরে তাঁরা আরআরপি ফিড মিলের আঙিনায় একটি চারা রোপণ করেন।এদিকে সংসদ সদস্যদের নিয়ে জামায়াত নেতার বাড়িতে ডেপুটি স্পিকারের মধ্যাহ্নভোজের খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়। আওয়ামী লীগের মতো দলের সংসদ সদস্যদের জামায়াত নেতার বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেন অনেকে। অনেকে আবার বিষয়টিকে ‘লজ্জাজনক’ বলে মন্তব্য করেন।নাট্য সংগঠন পাবনা ড্রামা সার্কেলের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর চক্রবর্তী বলেন, আওয়ামী লীগ প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল। তাদের নেতৃত্বেই তাঁরা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন করেছেন। আওয়ামী লীগের এতজন সংসদ সদস্য জামায়াত নেতার বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করতে পারেন, ভাবতেও কষ্ট লাগে। বিষয়টি লজ্জাজনক।ঈশ্বরদী নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে গড়া দল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে জামায়াতে ইসলামীর আমিরের বাড়িতে ১৪ জন এমপিকে সঙ্গে নিয়ে দাওয়াতে যোগ দিয়ে ডেপুটি স্পিকার ঠিক করেননি। এটা একটা ন্যক্কারজনক ঘটনা।’ডেপুটি স্পিকার শামসুল হকের বাড়ি পাবনার বেড়া উপজেলা সদরে। জানতে চাইলে বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ বলেন, ‘আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি তাদের কাছে বিষয়টি নীতিতে বাধে। আদর্শগতভাবেই আমরা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী কোনো সংগঠনের নেতার বাড়িতে দাওয়াত খেতে পারি না।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৭ জুলাই ২০২৩
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কর্তৃপক্ষের বেআইনি আদেশে বা চাপে পড়ে যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এত দিন অন্যায়, অবৈধ ও বেআইনি কাজ করেছেন, তাঁরা এখন থেকে যদি আর এ ধরনের অন্যায়, অবৈধ ও বেআইনি কাজ না করেন, তাহলে তাঁদের আগের ভূমিকা “সহানুভূতি” ও “ইতিবাচক” দৃষ্টিতে বিবেচনা করা হবে।’মঙ্গলবার রাতে বিএনপির মহাসচিব এমন আশ্বাস দিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো একটি বিবৃতি দিয়েছেন।‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী শাসনামলে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতি, এমনকি জেল-জরিমানার মতো পরিস্থিতির শিকার হতে হবে’ বলে বিএনপির বিরুদ্ধে এ ধরনের একটি অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ব্যাপারেই প্রশাসনের কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল এই বিবৃতি দেন।বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনের অতি নগণ্যসংখ্যক দুর্নীতিপরায়ণ ও দলবাজ কর্মকর্তা অপপ্রচার চালাচ্ছেন যে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী শাসনামলে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতি, এমনকি জেল-জরিমানার মতো পরিস্থিতির শিকার হতে হবে। এতে বোঝা যায় যে অনির্বাচিত ও অবৈধ আওয়ামী সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যেসব ষড়যন্ত্র করছে, এমন অপপ্রচার সেই ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ।মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁর একাধিক বক্তব্যে এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। দলের পক্ষ থেকে আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই যে জনগণের সমর্থনে যদি বিএনপি দেশ পরিচালনার সুযোগ পায়, তাহলে প্রজাতন্ত্রের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরির সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দলীয় বিবেচনায় কিংবা আক্রোশমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না বা কাউকেই তা করতে দেওয়া হবে না। উপরন্তু বিগত ১৫ বছর যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত, বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান, দীর্ঘদিন ওএসডি রাখা এবং পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়েছে, তাঁদের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।’
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৬ জুলাই ২০২৩
চট্টগ্রাম সদর সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. এরাদুল হক নিজামী (ভুট্টো) চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তাঁকে সভাপতি ঘোষণা করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন। একই কমিটির সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে মো. নাছির উদ্দিনকে।এরাদুল হককে সভাপতি করায় সমালোচনা শুরু হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উত্তরের বেশ কয়েকজন নেতা বলেন, নেতৃত্ব দেওয়ার মতো লোক সংগঠনে থাকার পরও কেন একজন সরকারি কর্মীকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের দায়িত্ব দিতে হলো। এটা সরকারি চাকরিবিধির যেমন পরিপন্থী, তেমনি দলের গঠনতন্ত্রের সঙ্গেও যায় না।এরাদুল হক মিরসরাই উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে সদর সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়ের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন। চতুর্থ শ্রেণির এই পদে থেকেও তিনি রাজনীতি করে গেছেন। এ ছাড়া তাঁর নানা ব্যবসা–বাণিজ্যও রয়েছে।সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালায় উল্লেখ রয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে বা অন্য কোনোভাবে এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না বা বাংলাদেশে বিদেশের কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকারেই সহায়তা করতে পারবেন না।’জানতে চাইলে এরাদুল হক বলেন, ‘আমি ছোটখাটো চাকরি করি। যাঁরা বড় কর্মকর্তা, তাঁদের রাজনীতি করতে বাধা আছে। আমরা কর্মস্থলে ইউনিয়ন (সিবিএ) করি। আর স্থানীয় রাজনীতি করছি। কেন্দ্রে রাজনীতি করতে যাচ্ছি না।’এরাদুল দাবি করেন, ‘আমি প্রতিদিন অফিস করি। কোনো ফাঁকি দিই না। গত বছর একবার চাকরি ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার স্যাররা ছাড়তে দেননি। তাঁরা বলেছেন, আমার মতো লোক দরকার আছে। ক্লাস টু থেকে আমার রাজনীতির সঙ্গে পরিচয়। আমাদের ঘরে সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে। আমার ভাতিজা জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি, ভাগনে ছাত্রলীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, ভাই শিক্ষক সমিতির নেতা।’জানতে চাইলে সদর সাবরেজিস্ট্রার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘চাকরিবিধিতে উল্লেখ আছে সরকারি কোনো কর্মচারী রাজনীতি করতে পারবেন না। এখন এরাদুল যে সরাসরি রাজনীতি করছেন, সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। আমার কাছে ব্যাখ্যা চাইলে ব্যাখ্যা দেব।’চট্টগ্রাম নগরের একটি কনভেনশন সেন্টারে গতকাল এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন। মোশাররফের অনুসারী হিসেবে এরাদুল পরিচিত। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন।সরকারি কর্মচারী সভাপতি হতে পারেন কি না, জানতে চাইলে গাজী মেজবাউল বলেন, ‘আমি এ ধরনের সমস্যায় তো আগে পড়িনি। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তিনি সরকারি চাকরি করেন কি না। তিনি চাকরিতে অব্যাহতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, আমি বিষয়টি আরও যাচাই–বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেব।’এবারই প্রথম সম্মেলনের মাধ্যমে উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৬ জুলাই ২০২৩
জামায়াতে ইসলামী আগামী ১ আগস্ট ঢাকায় সমাবেশসহ তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আজ সোমবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলন করে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমান এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিন দিনের কর্মসূচির মধ্যে দলটি ঢাকায় সমাবেশের আগে ৩০ জুলাই জেলা শহরগুলোতে মিছিল করবে।এর আগে ২৮ জুলাই সব মহানগরে মিছিলের কর্মসূচিও রেখেছে জামায়াত।সংসদ ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, জামায়াতের আমিরসহ গ্রেপ্তার নেতা–কর্মী ও আলেমদের মুক্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে জামায়াতে ইসলামী এ কর্মসূচি নিয়েছে।কর্মসূচি ঘোষণা করতে গিয়ে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমান বলেন, ‘২০১৪ ও ২০১৮ সালের স্টাইলে নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করছে সরকার। এ লক্ষ্যে সরকার প্রশাসনকে ঢেলে সাজাচ্ছে।মুজিবুর রহমান অভিযোগ করেন, জামায়াতে ইসলামীকে সভা–সমাবেশ ও মিছিল করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করার পরও সম্প্রতি সিলেট ও চট্টগ্রামে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। বরং জামায়াতের নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে।এক দশক পর জামায়াত ঢাকায় প্রকাশ্যে সমাবেশ করে গত ১০ জুন। তাদের এই সমাবেশের ব্যাপারে পুলিশ অনুমতি দিয়েছিল।সরকারের অনুমতি দেওয়া ও জামায়াতের সমাবেশ করার বিষয় নিয়ে সে সময় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা হয়।তবে পরে সিলেট ও চট্টগ্রামে সমাবেশের অনুমতি পায়নি জামায়াত। এখন দলটি ঢাকায় সমাবেশসহ তিন দিনের কর্মসূচি নিল।আজ কর্মসূচি ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, মাওলানা এ টি এম মাছুম, হামিদুর রহমান আযাদ, নূরুল ইসলাম, আবদুর রহমান প্রমুখ।সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন মতিউর রহমান আকন্দ।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৪ জুলাই ২০২৩
২৭ জুলাই বিএনপির মহাসমাবেশের দিন যুবলীগ কর্মসূচি দিয়ে সংঘাত সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৭ জুলাই কোনো সংঘাত-সংঘর্ষ হলে এর দায় ক্ষমতাসীন দল ও সরকারকে নিতে হবে হুশিয়ারি করেছেন তিনি। মির্জা ফখরুল সরকারি দলকে তাদের সমাবেশের তারিখ পরিবর্তনের আহ্বানও জানান। সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথ সভা পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের মন্ত্রী এমপিরা যে ভাষায় কথা বলেন তা কোনো ভাষা হতে পারে না। এগুলো সন্ত্রাসী ভাষা। তারা আমাদের হুমকি দিচ্ছেন। তবে জনগণ এবার রুখে দাঁড়াচ্ছে। সব শ্রেণি পেশার মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছে। যুগপৎ আন্দোলনের বাইরেও অনেক দল আছে যারা বলছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সেজন্যই আমরা ২৭ জুলাই ঢাকায় মহাসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকার পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। ঢাকায় সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ঢাকায় মহাসমাবেশের বিষয়ে আমরা ডিএমপি কমিশনারের কাছে জানিয়েছি। আশা করি মঙ্গলবারের মধ্যে ভেন্যুর বিষয়টি জানাতে পারবো এবং কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন। সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বলবো- আমাদের আন্দোলন জনগণের আন্দোলন। এখানে আপনাদেরও সম্পৃক্ত হওয়া উচিত। কারণ আমরা মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না।তিনি বলেন, দেশের মানুষ সত্যিকার অর্থেই ফ্যাসিস্ট দানবীয় আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে মুক্তি চায়। কিন্তু অবৈধ সরকার ভালোভাবে জানে তারা অবৈধ। তারা টিকে থাকার জন্য মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। তারা আমাদের সাংবিধানিক যে অধিকার কথা বলা ও লেখার হরণ করেছে।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রাহমান শিমুল বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, শামা ওবায়েদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মোস্তাক মিয়া, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরফত আলী সপু, বেনজীর আহমেদ টিটো, আবদুল খালেক, মো. মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, ওলামা দলের শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, গাজীপুর জেলার সভাপতি ফজলুল হক মিলন, ঢাকা জেলার সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরী, মানিকগঞ্জ জেলার সভাপতি আফরোজা খানম রীতাসহ ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। এরআগে নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে যৌথসভায় সভাপতিত্ব করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৪ জুলাই ২০২৩
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।নির্বাচন হবে নির্বাচনের জন্য। বাংলাদেশে কারো ফরমায়েশে নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।ওবায়দুল কাদের বলেন, 'তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে আদালতের রায়ে। এটাকে আর জীবিত করে লাভ নেই। দুনিয়ার সব দেশে তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া ইলেকেশন হয়। বাংলাদেশে কেন ইউরোপ-আমেরিকার নেতারা আসেন। আমি জিজ্ঞাসা করি আপনাদের কোন দেশে তত্ত্বাবধায়কে ভোট হয়েছে। ইউরোপ বলতে পারেনি, আমেরিকাও বলতে পারেনি। অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ভোট করব। এ প্রতিশ্রুতি আমি দিতে পারি। গণতান্ত্রিক বিশ্বকে বলব পর্যবেক্ষক দিয়ে এই ভোট পর্যবেক্ষণ করুন।' বিদেশিদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ঢাকা ১৭ আসনের নির্বাচন দেখলেন। এটা মাইনোর সিট অথচ পাঁচটি সিটিতে ইলেকশন হলো শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু। ওই নির্বাচনে ৫০ থেকে ৫৩ পার্সেন্ট ভোট পড়ল।বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'তিনি সজ্জন। কিন্ত কথাবার্তায় বড় বেসামাল। মির্জা ফখরুল কলেজের শিক্ষক, এত মিথ্যা কথা বলতে পারে, এতো গালিগালাজ করতে পারে। তার মুখে এতো বিষ ভাবতেও অবাক লাগে। দেখতে মনে হয় একজন পাকা সাচ্চা ভদ্রলোক। কিন্ত কথা যখন বলে তখন মনে হয় একজন প্যাথলজিকাল লায়ার। এই মিথ্যাবাদী এখন বলে তত্ত্বাবধায়ক আসলে নাকি আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না। ২০০৮ সালে এই ফখরুল এবং তার নেত্রী বলে আওয়ামী লীগকে মাত্র ৩০টি আসন দিয়েছি। কিন্ত নির্বাচনে দেখা গেল ৩০টি আসন বিএনপিই পেয়েছে। তারা যেটা আওয়ামী লীগকে দিতে চেয়েছে আল্লার হুকুম সে ৩০টি তাদের ভাগ্যে জুটেছে। এবার যে কী হবে জানি না। এবার আরও বেপরোয়া, বেসামাল। ফখরুল লন্ডনের হুকুমে চলে। যে দন্ডিত আসামি অর্থপাচার করে। মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গেছে, যে দলের নেতা দন্ডিত আসামি, সেই দলকে এই দেশের মানুষ সমর্থন করতে পারে না।' বিএনপিকে নিয়ে কাদের বলেন, 'বিএনপি আরেকবার ক্ষমতায় গেলে এরা আবারও হাওয়া ভবন তৈরি করবে। গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার আদর্শ, দেশের উন্নয়ন গিলে খাবে। সুযোগ পেলে বাংলাদেশ গিলে খাবে। এই দলের কাছে গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, আইনের শাসন, দেশের নিরাপত্তা, নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা নিরাপদ নয়। বিএনপি মানেই ভোট চুরি, ভোট জালিয়াতি, বিএনপি মানেই ভুয়া ভোটার তালিকা। বিএনপি নালিশ পার্টি। এখন দেখছে নালিশ করতে করতে আর কাজ হচ্ছে না। এখন বিএনপি খাই-দাই পাটি। ক্ষমতার জন্য পাগল ও বেপরোয়া হয়ে গেছে। বিএনপির এখন ক্ষমতার দরকার নেই। তাদের লক্ষ্য একটাই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা।' বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য মওদুদ আহমদের প্রসঙ্গ এনে সেতুমন্ত্রী বলেন, 'কোম্পানীগঞ্জের সিরাজপুর ভোটকেন্দ্রে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে নেতাকর্মীদের মওদুদ বলেন ভোট কি এখনো শেষ হয়নি। বিএনপি বাংলাদেশে এ ভোট করেছে। ভোট চুরি।' মন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি বিদেশিদের কাছে নালিশ করতে করতে কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। ইউরোপ-আমেরিকা এসেছে। বিএনপি ভেবেছে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এই সরকারকে বিদায় দেবে। পাইলেন কি? ঘোড়ার ডিম। ইউরোপ-আমেরিকা কি দিলো। এখন বিএনপি নেতাদের মুখ শুকিয়ে গেছে। নেতারা মুখে বলে না,পত্রিকায় গালিগালাজ করে। নোয়াখালীতে বিএনপির নেতারা এসে প্রধানমন্ত্রী এবং আমাকে ফখরুল নিজেও তার নেতারা গালিগালাজ করেছে। ফখরুল একজন শিক্ষক হয়ে এত খারাপ কথা, এত নোংরা কথা তার মুখ দিয়ে কেমন করে বের হয়।'উন্নয়ন নিয়ে বিএনপি নেতাদের কাদের বলেন, 'বিএনপি বুঝতে পেরেছে ভোট দিলে এখন আওয়ামী লীগই জিতবে। বাংলাদেশের ৭০ পার্সেন্ট মানুষ শেখ হাসিনাকে ভোট দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। আমি যা বললাম বাস্তবে সেটা দিনক্ষণ লিখে রাখুন। কিছই তো দেখেন না। উন্নয়ন দেখেন না। নিজেরা তো কিছু করতে পারেন না। শেখ হাসিনা করেছে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল। দেখলে বিএনপি নেতাদের বুকের জ্বালা বাড়ে।' নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, নিজেদের আচরণ সংযত করুন। শেখ হাসিনা উন্নয়ন করেছে আপনারা ভালো আচরণ করুন মানুষের সাথে। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। ক্ষমতা চিরদিন থাকে না।নেতাকর্মীদের স্লোগানের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, 'আমি একটা স্লোগান শুনেছি। এ স্লোগান যেন আর না শুনি। রক্তের বন্যা মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান না। ভেসে যাবে অন্যায়। এ স্লোগান কেন আমরা দেব, কী প্রয়োজন। রক্তের বন্যা আমরা বওয়াতে যাব কেন। আমরা শান্তি চাই, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। তবে যে আগুন নিয়ে আসবে সেই আগুনে হাত পুড়িয়ে দেবেন। যে হাত ভাঙচুর করতে আসবে সে হাত আমরা ভেঙে দেব। আমরা আক্রমণকারী হব না। আক্রান্ত হলে হলে পাল্টা জবাব দেব।' সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, আগামী ২৭ জুলাই ঢাকাতে বিএনপির মহাসমাবেশ এ নিয়ে আমাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। আমাদের আগস্ট মাস, সেপ্টেম্বর মাস, জুলাইয়ের বাকি কয়দিন ও অক্টোবর মাস নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি জাতীয় উন্নয়ন শোভাযাত্রা। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, ফেনী ২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুর হাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা। সকাল ১১টার দিকে বসুরহাট বাসস্ট্যান্ড ও ৫৩৫টি সোলার বাতি স্থাপন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন সেতুমন্ত্রী।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৩ জুলাই ২০২৩
স্বল্প সময়ের নোটিশে দলের নেতা-কর্মীদের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজপথে নামানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মূলত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের আন্দোলন লক্ষ্য রেখেই এই প্রস্তুতি। এ জন্য আগামী ৬ আগস্ট আওয়ামী লীগের সারা দেশের সর্বস্তরের কমিটির শীর্ষ নেতাদের ঢাকায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। ওই দিন গণভবনে বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৬ আগস্ট বিশেষ বর্ধিত সভাকে দল খুব গুরুত্ব দিচ্ছে। মূলত তৃণমূলের কথা শুনবেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। আবার তৃণমূলকে নির্দেশনা দেবেন তিনি। মূল লক্ষ্য আসন্ন নির্বাচন। ভোটে কেউ বাধা সৃষ্টি করতে চাইলে কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, সে বিষয়ে নির্দেশনা থাকবে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্র বলছে, বর্ধিত সভার মূল লক্ষ্য হচ্ছেন তৃণমূলের নেতারা। তাঁদের আগামী নির্বাচনের বিষয়ে আশ্বস্ত করবেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় প্রধানের বার্তা থাকবে—সংবিধান মেনে সময়মতো। দেশে নির্বাচন হবে। যত বাধা ও চাপ আসুক না কেন, পিছপা হবে না আওয়ামী লীগ। নেতা-কর্মীদের সেভাবেই প্রস্তুত থাকতে হবে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে নির্বাচনে কেউ হারাতে পারবে না—এই বার্তাও দেওয়া হবে। এর বাইরে থাকবে নির্দেশনা। যেমন বিরোধী দল ভোট ঠেকানো ও প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালাবে। তাই নেতা-কর্মীদের স্বল্প সময়ের নোটিশে যেকোনো কর্মসূচি পালন কিংবা রাজপথে অবস্থান নেওয়ার মতো প্রস্তুতি নিতে হবে। আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, নির্বাচন কিংবা বিরোধী দলের আন্দোলন—যেকোনো বিষয়ে লক্ষ্যে পৌঁছাতে দলে ঐক্য দরকার। কিন্তু তৃণমূলে অনেক জায়গায় দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুই ধারায় বিভক্ত। সংসদ সদস্যের সঙ্গে দলের দায়িত্বশীল নেতাদের বিভেদ প্রকট। একজনের সঙ্গে অন্যজনের মুখ-দেখাদেখি বন্ধ—এমনও রয়েছে অনেক এলাকায়। বিবদমান সবাইকে এক জায়গায় এনে ঐক্যের ডাক দেওয়া হবে। ওই নেতা আরও বলেন, এবার নির্বাচনে স্লোগান হবে—নৌকা যাঁর, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর। দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে, তাঁর পক্ষে একযোগে কাজ করার বিষয়ে নির্দেশনা থাকবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিশেষ বর্ধিত সভাকে দল খুব গুরুত্ব দিচ্ছে। মূলত তৃণমূলের কথা শুনবেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। আবার তৃণমূলকে নির্দেশনা দেবেন তিনি। মূল লক্ষ্য আসন্ন নির্বাচন। ভোটে কেউ বাধা সৃষ্টি করতে চাইলে কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, সে বিষয়ে নির্দেশনা থাকবে। দেশে নির্বাচন হবে। যত বাধা ও চাপ আসুক না কেন, পিছপা হবে না আওয়ামী লীগ। নেতা-কর্মীদের সেভাবেই প্রস্তুত থাকতে হবে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে নির্বাচনে কেউ হারাতে পারবে না—এই বার্তাও দেওয়া হবে।আওয়ামী লীগের পাঁচজন কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে বর্ধিত সভার গুরুত্ব নিয়ে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁদের মূল কথা হচ্ছে, মার্কিন ভিসা নীতি, নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের তৎপরতা, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন কর্মসূচিতে বেশি বেশি লোক জমায়েতের চেষ্টা—এসব বিষয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলেছে। জেলা, উপজেলা, এমনকি অনেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁরা ‘সামনে কী হবে?’ এমন প্রশ্নে করেন। তাঁদের কণ্ঠে কিছুটা উদ্বেগ আছে।একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যন্ত সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী। ঢাকায় বর্ধিত সভার মাধ্যমে বিভেদ কমানো এবং আশ্বস্ত করতে পারলে রাজপথে এর ফল পাওয়া যাবে। বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচির কারণে এবার শোকের মাস আগস্টের কর্মসূচিতেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে শোকের কর্মসূচি ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়ক ও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে সীমাবদ্ধ থাকত। এবার সভা-সমাবেশে জোর দেওয়া হচ্ছে।বর্ধিত সভায় যাঁরা থাকবেনবর্ধিত সভাটি ৩০ জুলাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৩০ জুলাই চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচন। ২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রংপুরে সমাবেশ আছে। সব জেলা থেকে প্রতিনিধিদের আসা নিশ্চিত করতেই ৬ আগস্ট বর্ধিত সভার তারিখ পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।সূত্র আরও জানায়, বিশেষ বর্ধিত সভায় তিন হাজারের মতো দলের নেতা অংশ নিতে পারেন। তৃণমূল নেতাদের কাছ থেকে আগামী নির্বাচন ও বিরোধী দলের আন্দোলন সম্পর্কে বক্তব্য শোনা হবে। আর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সরকারের উন্নয়ন-অর্জন প্রচারের জন্য বই, সিডিসহ বিভিন্ন উপকরণ দেওয়া হবে তৃণমূলের নেতাদের। তাঁরা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে নির্বাচনের আগে এর প্রচার চালাবেন। বর্ধিত সভায় দলের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের সবাই অংশ নেবেন। জেলা/মহানগর এবং উপজেলা/থানা/পৌরসভার পর্যায়ের দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। একইভাবে সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা অংশ নেবেন সভায়। এ ছাড়া দলীয় সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের দলীয় নির্বাচিত চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দলীয় মেয়রদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২৩ জুলাই ২০২৩
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নিজেদের অস্তিত্ব পুনরুদ্ধারের মিশন হিসেবে নিয়েছে বিএনপি। বিগত দুটি নির্বাচন এক তরফা হওয়ার পর তৃণমুল নেতাকর্মীদের ধরে রাখতে এই নির্বাচনকেই টার্গেট করা হয়েছে। দলটির নেতারা বলছেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন আয়োজনে সরকার অনড় থাকলেও দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে তাদের নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধ্য করা হবে। তাদের ধারাবাহিক আন্দোলন সেদিকেই যাচ্ছে।বিএনপির জেষ্ঠ্য নেতারা বলছেন,আওয়ামী লীগের বিগত দেড় দশকের দুর্নীতি ও শোষণ-নির্যাতনে সারা দেশের মানুষ অতিষ্ঠ। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের দ্রব্যমূল্যের সিমাহীন উর্ধগতি মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচীতে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরছে। ফলে নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু হলেই বিএনপির মসনদ নিশ্চিত।দলীয় সূত্র বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সাম্প্রতিক কর্মসূচী নিয়ে এমনিতেই সরকারের মধ্যে অশ্বস্তি রয়েছে। সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইতোমধ্যে তারা যে ফর্মুলা দিয়েছে সেটি মূলত বিএনপিরই দাবি। এতোদিন বিএনপি এ বিষয়টি বলে আসলেও তাতে বিন্দুমাত্র কর্নপাত করেনি সরকার। তবে এবারের কূটনৈতিক চাপ তাদের জন্য উপেক্ষা করা সহজ হবে না।যদিও গতকাল দলীয় সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তারা সংবিধানের মধ্যে থেকেই নির্বাচন করবেন। এ ক্ষেত্রে বন্ধু রাষ্ট্রগুলো কে কি বললো সেটি আমলে নেওয়ার সুযোগ নেই। নির্বাচন অংশগ্রহনমূলকই হবে তবে সেটি অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে।তবে ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরও সকরার বহির্বিশ্বের চাপ সামলে পূর্ণ মেয়াদ সম্পন্ন করেছে। তবে এবারের নির্বাচন তার থেকে ব্যতিক্রম হবে। কেননা বিগত নির্বাচনে ভারত যেভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে ভূমিকা রেখেছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শক্ত অবস্থানে থাকায় সেটি সম্ভব হবে না। উপরন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারনে পশ্চিমাদের চাপ আরো বাড়বে বলে মনে করছেন তারা। এদিকে এবারের নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনেই হবে- এমন বদ্ধমূল ধারণা পোষণ করেন বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তৃণমূলের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে আলাপকালে তারা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক চাপ এবং গণ আন্দোলন উপেক্ষা করে এবছর আর আওয়ামী লীগের পক্ষে একতরফা নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে বিএনপিই সরকার গঠন করবে।এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী অ্যানী ডেইলি মেসেঞ্জারকে বলেন, সরকার মুখে যতই বলুক এবার আর তাদের শেষ রক্ষা হবে না। বিএনপির আন্দোলন এখন এদেশের গণমানুষের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এদেশে আর পাতানো নির্বাচন হবে না। জনগণের চাপে নির্দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে এবং বিএনিপই সরকার গঠন করবে।এদিকে বিএনপির ঢাকা সমাবেশের পর আজ শনিবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তারুণ্যের সমাবেশ। দলটির পক্ষ থেকে এই সমাবেশকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারন হিসেবে দলটির নেতারা বলছেন, দেশের ৪ কোটি ৭০ লাখ তরুন জন্মের পর কোনো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। বিগত দুটি নির্বাচন নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে কাছে টানতেই তারা বিভাগীয় শহরগুলোতে তারুণ্যের সমাবেশে করেছে। এ বিষয়ে সমাবেশের আয়োজক জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজকে নতুন ইতিহাস রচিত হবে। অধিকার বঞ্চিত তরুনার এ সমাবেশকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। তারা সরকার ও পুলিশ বাহিনীর চক্রান্তের বিপরীতে এই সমাবেশ সফল করে সরকারের পতনকে তরান্বিত করবে। বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, চলতি মাসের মধ্যে এ ধরনের সমাবেশ শেষ করে আগামী মাসেই সরকার পতনের নতুন কর্মসূচী নিয়ে মাঠে নামবেন তারা। গণআন্দোলন গড়ে তুলে যে কোনো মূল্যে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন বিএনপির একমাত্র লক্ষ্য। কারন হিসেবে তারা বলছেন, বিগত দেড়দশক ধরে বিএনপি ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। দলের সিংহভাগ সিনিয়র নেতার এবারের নির্বাচনই হতে পারে শেষ নির্বাচন। তাই যে কোনো মূল্যে তারা পরিবর্তন চান। এজন্য কূটনৈতিক চাপকে তারা সহায়ক শক্তি হিসেবে দেখছেন। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও একই সুরে কথা বলছেন। সরকার বিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সরকার পতন আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এবার যে আন্দোলন হবে সেটাই চূড়ান্ত আন্দোলন। তিনি বলেন, এবারের চূড়ান্ত আন্দোলনে দেশের সব মানুষ অংশ নেবে এবং তাদের অধিকার আদায় করেই ঘরে ফিরবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২১ জুলাই ২০২৩
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যে দাবির কথা বলছে সে বিষয়ে বিদেশিদের কোনো বক্তব্য নেই। নির্বাচন কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে হোক সেটা নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথা আছে। তারা সংসদের বিলুপ্তি চায়, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চায়। কিন্তু এগুলো নিয়ে বিদেশিরা কথা বলেনি।বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) রাজধানীর বানানীর সেতু ভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশিরা আমাদের অবস্থান জানতে চেয়েছেন, আমরা কীভাবে নির্বাচন করতে চেয়েছি বা করতে চাই। ইলেকশন প্রক্রিয়াটা কেমন হবে। অপজিশনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কেমন? এসব নিয়ে তারা আলোচনা করছে বা করবেই। তিনি আরও বলেন, বিএনপি যে নির্বাচনে আসবে, এমন কোনো ইঙ্গিত ইশারা কি দিয়েছে? তারা যে এক দফা দাবিতে চলে গেছে, সেখানে তারা তো নির্বাচনে আসার অনুকূলে নেই। বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের উসকানি এরইমধ্যে দেওয়া শুরু করেছে। তারা জানান দিচ্ছে, তারা অশান্তির দিকে যাচ্ছে। তাদের অশান্তি হলো সন্ত্রাস করবে, নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করতে চাইবে। এসব লক্ষ্য নিয়ে তারা এগিয়ে যাচ্ছে। এটা তারা জানান দিয়ে ফেলেছে।আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের বলেছি তারা যেন বিএনপির উসকানিতে শান্ত থাকে। তারা উসকানি দেবে কিন্তু আমাদের নেতাকর্মীদের মাথা গরম করা চলবে না। বিএনপি যে কোন পথে যাচ্ছে তা পরিষ্কার। এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে, তাদের যা করার তাই করবে। একটা দেশে কি এক দল সন্ত্রাস করবে, অফিস ভাঙবে, পুলিশকে মারতে যাবে, যেখানে সেখানে মারামারি করতে যাবে, সেখানে কি সরকার চুপ করে বসে থাকবে?
নিজস্ব প্রতিবেদক । ২০ জুলাই ২০২৩
ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে একতারা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় ঢাকার পশ্চিমা মিশনগুলো বিবৃতি দিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ বলেই তারা একটা মগের মুল্লুক পেয়েছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’বুধবার (১৯ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় বিদেশি মিশনগুলোর বিবৃতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা সম্পর্কে (বিবৃতি) আমি জানি না। একটি দেশ সম্পর্কে আমি বলতে চাই, আমেরিকার নিউইয়র্কে যখন-তখন লোক মেরে ফেলা হয়। তারা কি স্টেটমেন্ট দেয় কখনও? জাতিসংঘ কখনও বলেছে আমেরিকাতে লোক মরে যায় কেন? চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ক্যামব্রিজে পুলিশের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থী সাইদ ফয়সাল ওরফে আরিফের প্রসঙ্গ টেনে মোমেন বলেন, একটা বাঙালি ছেলে মারা গেল। এতদিন হলো জাতিসংঘ কখনও বলেছে ওই ছেলের তদন্ত কতদূর হয়েছে? কিংবা রাষ্ট্রদূতরা দলবেঁধে কোনো বিবৃতি দিয়েছেন?গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে মোমেন বলেন, আপনারা কেন জিজ্ঞেস করেন না (পশ্চিমা দূতদের)? প্রতিদিন লোক মারা যায় তখন তারা কোনো স্টেটমেন্ট দেয় না। আর বাংলাদেশ বলেই একটা মগের মুল্লুক পেয়েছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। আপনাদের সঙ্গে তাদের (বিদেশি দূতদের) যখন-তখন সাক্ষাৎ হয়। আপনারা তাদের জিজ্ঞেস করেন না কেন, বাঙালি ছেলে মেরে ফেলল। আমেরিকায় তো যখন-তখন লোক মারা যায়।সাংবাদিকের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, এগুলো নিয়ে আপনি প্রশ্ন করেছেন কখনও? করেছেন? ফয়সালের কথা প্রশ্ন করেছেন? কেন করেন নাই? আপনাদেরও এসব বিষয়ে সজাগ হওয়া উচিত। খালি আমার দেশ হলে হইচই করা শুরু করে দেয়। আর কোথাও হলে এ রকম হয়?পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাকে একটা প্রতিবেদন দেন কোন কোন দেশে তারা (বিদেশিরা) এ রকম বিবৃতি দিয়েছে; ওখানে লোক মারার পরে। কিছু দিন আগে ফ্রান্সে কতগুলো লোক আক্রান্ত হলো, কেউ কি দলবেধে বিবৃতি দিয়েছে? খালি বাংলাদেশ হলেই দেয়। এখন সময় এসেছে এসব প্রচার বন্ধ করার। তারা আমাদের কাছে বিবৃতি না দিয়ে আপনাদের কাছে দেয়। এটা গ্রহণযোগ্য হয়।হিরো আলমের ওপর হামলায় ঘটনায় মোমেন বলেন, কাকে মেরেছে এটা ইনভেস্টিগেট করে দেখতে হবে, কে মারিয়েছে। এমনতো হতে পারে কেউ কেউ এটাতে যুক্ত ছিল। একটা অস্থিতিশীলতা তৈরি করার জন্য, হয়তো কেউ আমাদের আগামী নির্বাচন চায় না। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এ ধরনের অকাম-কুমাম শুরু করে দিয়েছে।ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় বুধবার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ঢাকার পশ্চিমা মিশনগুলো।মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী আশরাফুল আলম, যিনি হিরো আলম নামে পরিচিত, তার ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সহিংসতার কোনো স্থান নেই। আমরা পূর্ণ তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহির দাবি জানাই। আসন্ন নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয় সেজন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাই।বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দূতাবাস ও হাইকমিশনগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেলিগেশন।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৯ জুলাই ২০২৩
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম অভিযোগ করে বলেছেন যে, কিছু লোক তাকে মারার জন্য খুঁজছে। নিরাপত্তা নিয়ে তিনি চিন্তিত।বুধবার দুপুরে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবেন হিরো আলম।তিনি বলেন, আজ ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ৪টি মোটরসাইকেল নিয়ে ৮ থেকে ১০ জন আমার মহানগর প্রজেক্টের অফিসে এসে নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। নিরাপত্তাকর্মীকে তারা বলেছেন, হিরো আলমকে ডাক দে, সে কোথায় থেকে লাইভ করছে, ওকে ডাক দে, ওর খবর আছে।বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জানিয়ে হিরো আলম বলেন, আমি বর্তমানে আশকোনা এলাকায় হাসপাতালে ভর্তি আছি। আজ দুপুরে এখানে সাংবাদিকদের ডেকেছি। আমার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। সেই বিষয় নিয়ে আমি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাই।
নিজস্ব প্রতিবেদক । ১৯ জুলাই ২০২৩